চলতি বছরের শুরু থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ছয় মাসে সারাদেশে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে ৩৮৯ শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ সময়ে দুর্ঘটনা ছিল ২৮৭টি।
বেসরকারি সংস্থা সেইফটি অ্যান্ড রাইটস সোসাইটি (এসআরএস) জাতীয় দৈনিকগুলোর খবর থেকে এ তথ্য পেয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে। এক্ষেত্রে ১৫টি জাতীয় এবং ১১টি স্থানীয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরের তথ্য নিয়েছে এসআরএস।
এসআরএস জানায়, গত বছর একই সময়ে সারাদেশে ২৪১টি কর্মক্ষেত্র দুর্ঘটনায় ৩৩৩ জন শ্রমিক নিহত হয়েছিল।
কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনার তথ্য বিশ্লেষণ করে সংস্থাটি জানায়, গত ছয় মাসে পরিবহন খাতের সর্বোচ্চ ১২৮ শ্রমিক নিহত হয়েছেন। আর নির্মাণ খাতে নিহত শ্রমিকের সংখ্যা ৮৬ জন। ওয়ার্কশপ, গ্যাস, বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রতিষ্ঠানসহ সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের কর্মরত ৮৫ শ্রমিক নিহত হন। কলকারখানা ও অন্যান্য উৎপাদনশীল প্রতিষ্ঠানে এই সংখ্যা ৫০ জন এবং কৃষি খাতে ৬২ জন।
আরও পড়ুন: সুগন্ধা নদীতে উদ্ধার অভিযানে নৌবাহিনী
মৃত্যুর কারণ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সড়ক দুর্ঘটনায় ১৭৩ জন; বিস্ফোরণে ৫০ জন; বজ্রপাতে ৪০ জন; মাঁচা বা উপর থেকে পড়ে মারা গেছেন ৩২ জন; বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ৩০ জন; শক্ত বা ভারী কোনো বস্তুর দ্বারা আঘাত বা তার নিচে চাপা পড়ে ২২ জন; রাসায়নিক দ্রব্য বা সেপটিক ট্যাংক বা পানির ট্যাংকের বিষাক্ত গ্যাসে আক্রান্ত হয়ে ১২ জন; আগুনে পুড়ে ৮ জন; পানিতে ডুবে ৫ জন; পাহাড় বা মাটি, ব্রিজ, ভবন বা ছাদ, দেয়াল ধসে ৪ জন এবং অন্যান্য কারণে ৮ জন।
তথ্য প্রকাশকালে এসআরএসের নির্বাহী পরিচালক সেকেন্দার আলী মিনা বলেন, কর্মক্ষেত্রের দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। বিভিন্ন ছোট বড় বিস্ফোরণের ঘটনাও এই ছয় মাসে পরিলক্ষিত হয়েছে। বজ্রপাতে কৃষিখাতের শ্রমিকদের মৃত্যু বেড়েছে এবং সেই সঙ্গে নির্মাণ খাতের নিরাপত্তা ঘাটতি রয়েছে।
আরও পড়ুন: ফেনীতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল মামা-ভাগনের
তিনি বলেন, কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি আরও বাড়াতে হবে। তা না হলে দুর্ঘটনা বাড়তেই থাকবে। পরিবহন, নির্মাণ, উৎপাদন ও সেবাখাতে দুর্ঘটনা বেশি ঘটেছে। কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকের নিরাপত্তা নিয়ে মালিকদের অবহেলা এবং সরকারি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর যথাযথ পরিদর্শনের ঘাটতি কর্মদুর্ঘটনা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।
কারখানা ও প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক নিরাপত্তা নির্দেশনা প্রণয়ন, ঝুঁকি নিরূপনসহ দুর্ঘটনার মূল কারণ চিহ্নিত করে তা কীভাবে কমিয়ে আনা যায় সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ শিগগিরই ব্যবস্থা নেবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এসআরএসের নির্বাহী পরিচালক।