দুই চোখ যেদিকে যায়, সেদিকে শুধু তরমুজ আর তরমুজ। মাঠের পর মাঠজুড়ে তরমুজখেত। চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় কৃষকরা অর্থনৈতিক সচ্ছলতা অর্জনে কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় তরমুজ চাষে ঝুঁকছেন তাঁরা। গত বছর ৩০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ করলেও এ বছর ৪২ হেক্টর জমিতে কৃষকরা তরমুজ চাষ করেছে। দিন রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন চাষিরা। পৌষ-মাঘ মাস তরমুজ চাষের উপযোগী সময়। চাষের জমি প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় কাটছে তাদের। তরমুজ সুস্বাদু ফল হওয়ায় বাজারে এর চাহিদাও ব্যাপক।
গত বছর বাম্পার ফলন ও দাম ভালো হওয়ায় এ বছর ৪২ হেক্টর জমিতে আবাদ করছেন তারা। তবে অসময়ে বৃষ্টিতে চাষীরা বেশ ক্ষতির মুখে পড়েছেন বলে জানান। নভেম্বরে চারা রোপণ করে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি ফলন আসে। পারকি সৈকতের ফুলতলী ও শঙ্খ নদীর মোহনায় গত ১৫ বছর ধরে চলছে তরমুজ চাষ। এ ছাড়াও হাইলধর, বারখাইন, চাতরী, জুইদন্ডী ও পরৈকোড়া ইউনিয়নে তরমুজ চাষ করা হয়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, চাষিরা ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত। ক্ষেতে তরমুজ পাকা শুরু করেছে। কিছু কিছু গাছ ফুল ও ফলসহ মারা গেছে। অধিকাংশ গাছে ফুল ও ফলে ভরে গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, আনোয়ারা উপকূলে ১৫ বছর ধরে তরমুজের চাষ করছে কৃষকরা, এখানকার আবহাওয়া ও মাটি ভাল হওয়ায় ফলনও ভাল হয়, চলতি বছর উপজেলার রায়পুর, বারশত, হাইলধর, বরুমচড়া, বারখাইন, জুইঁদন্ডী ও চাতরী ইউনিয়নে ৪২ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ করা হয়। গ্লোরী, সুইট ড্রাগন, বিগ ফ্যামমেলি, চ্যাম্পিয়ন ও পাকিজা জাতের তরমুজ এখানে বেশি হয়।
চাষিদের মধ্যে রয়েছে আইয়ুব, আবদুস সবুর, ফোরকান, মোতালেব, নুরুল আলমসহ অন্তত ১৫ জন কৃষক ৩০ কানি জমিতে তরমুজ চাষ করেছে। উৎপাদিত তরমুজের ফলন সাইজে যেমন বড় তেমনি মিষ্টিও। তাই এলাকায় এ তরমুজের চাহিদাও দিনদিন বেড়ে যাচ্ছে।
চাষিরা জানান, পানি ও বীজ সমস্যা দূরীকরণে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ফেলে এ এলাকার উৎপাদিত তরমুজ দেশের চাহিদা মিটাতে যেমন বড় ভূমিকা রাখবে তেমনি কৃষকেরাও অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে।
রায়পুর ইউপি চেয়ারম্যান আমিন শরীফ জানান, উপকূলের ফুলতলী মৌজা ও পূর্বগহিরা সঙ্খ নদীর মোহনায় উৎপাদিত তরমুজ মিষ্টি ও সুস্বাদু হওয়ায় এলাকার মানুষের মাঝে বেশ কদর বেড়েছে। সরকারি সহযোগিতা পেলে এ অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বাজারের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে।
আনোয়ারা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমজান আলী বলেন, উপজেলার উপকূলে তরমুজ উৎপাদন দিনদিন বাড়ছে। গত বছর ৩০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ করলেও এ বছর ৪২ হেক্টর জমিতে কৃষকরা তরমুজ চাষ করেছে। এখানকার আবহাওয়া ও মাটি তরমুজ চাষের উপযোগী। উৎপাদিত তরমুজ সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে এ তরমুজের চাহিদাও বেশি।