আজঃ বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪
শিরোনাম

আসন্ন রমজানে পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশিত:শনিবার ১৩ জানুয়ারী ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১৩ জানুয়ারী ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

Image

রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে কার্যকারী ও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (১৩ জানুয়ারি) টুঙ্গিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রীর নিজ বাড়িতে নবনির্বাচিত মন্ত্রীদের সাথে বৈঠকে তিনি এ নির্দেশ দেন।

পবিত্র রমজান ঘনিয়ে আসছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ যাতে স্বস্তিতে থাকতে পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিন। এই মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ানো উচিত নয়।

বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, এটি একটি অনানুষ্ঠানিক মন্ত্রিসভার বৈঠক ছিল।

সচিব আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী রমজানের সময় বিশেষ করে বড় মজুতদাররা যাতে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির জন্য জরুরী পণ্য মজুত করতে না পারে সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য মন্ত্রীদের নির্দেশ দেন।

মন্ত্রীদের এই বিষয়ে নিয়মিত মজুত বিরোধী অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখুন যাতে সাধারণ মানুষ স্বস্তিতে থাকতে পারে।

প্রধানমন্ত্রীর সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রথমবারের মতো নবনিযুক্ত মন্ত্রীদের প্রথমে তাদের মন্ত্রণালয়ের সার্বিক বিষয়ে তথ্য জানার জন্য নির্দেশ দেন।

এর আগে সকালে ঢাকা থেকে সড়ক পথে রওনা দিয়ে বেলা ১১টার দিকে দুদিনের সফরে টুঙ্গিপাড়া পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। তার সঙ্গে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা ছিলেন।

টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছানোর পর বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটের দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান তিনি। এরপর সেখানে দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন। পরে মন্ত্রিসভার নতুন সদস্যদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান সরকারপ্রধান।


আরও খবর



ডিজির অনুপস্থিতিতে এডিজি সাত দিনে হাতিয়ে নিলেন সাড়ে ৭ কোটি টাকা

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

অসুস্থতার কারণে গত বছরের ২২ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ছুটিতে ছিলেন ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি)। সেই ৯ দিন অধিদপ্তরের শীর্ষপদের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে ছিলেন অতিরিক্ত মহাপরিচালক সেলিনা বানু। এর মধ্যে অবশ্য দুদিন ছিল সাপ্তাহিক ছুটি। ফলে সেলিনা বানু ভারপ্রাপ্ত ডিজির দায়িত্ব পালন করেন সাত দিন। আর এটুকু সময়েই আঙুল ফুলে কলাগাছ’ বনে গেছেন তিনি। ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বকালে এক দিনেই ছাড় করেন মাল্টিপল পাসপোর্টের ৫০০ ফাইল। নানা কারণে দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা প্রতিটি ফাইল অনুমোদনের জন্য নিয়েছেন দেড় লাখ টাকা করে। সব মিলিয়ে এই কর্মকর্তা হাতিয়ে নিয়েছেন কমপক্ষে সাড়ে ৭ কোটি টাকা। এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের এনফোর্সমেন্ট টিম সেলিনা বানুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের (ডিআইপি) সরাসরি কর্মকর্তা সেলিনা বানু পাসপোর্ট, ভিসা ও ইমিগ্রেশন বিভাগের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বা এডিজির দায়িত্বে রয়েছেন। প্রশাসন বিভাগের এডিজির পদটি শূন্য থাকায় অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ওই বিভাগের এডিজির দায়িত্বও পালন করছেন। পুরো অধিদপ্তরে তার ওপরে শুধু প্রেষণে আসা মহাপরিচালক রয়েছেন। অধিদপ্তরে সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হওয়ায় তার কথাতেই চলে সবকিছু। অনিয়ম-দুর্নীতিতে এই সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছেন তিনি। অভিযোগ রয়েছে, অনেক সময় তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগের নির্দেশনাও অমান্য করে নিজের মতো ডিআইপির কার্যক্রম চালাচ্ছেন।

পাসপোর্ট অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সেলিনা বানু ভারপ্রাপ্ত ডিজির দায়িত্ব পেয়েই দীর্ঘদিন আটকে থাকা মাল্টিপল পাসপোর্টের ফাইলগুলো ছাড় করাতে তোড়জোড় শুরু করেন। অধিদপ্তরে তার সিন্ডিকেটে থাকা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ফাইলগুলো অনুমোদন দিয়ে পাসপোর্ট প্রিন্ট করতে পাঠানো হয়। প্রতি পাসপোর্ট থেকে দেড় লাখ টাকা করে নিয়ে তা সিন্ডিকেটে ভাগবাটোয়ারা হয়। কথিত আছে, ওই সময়ে পাসপোর্ট ভবনের তলায় তলায় কোরবানি ঈদ’ চলেছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অবগত হলেও বিষয়টি রহস্যজনক কারণে নিশ্চুপ রয়েছেন।

এক ব্যক্তির নামে একাধিক পাসপোর্টকে মাল্টিপল পাসপোর্ট হিসেবে অভিহিত করা হয়। অনেকেই বিদ্যমান পাসপোর্টের তথ্য গোপন রেখে নতুন করে পাসপোর্টের আবেদন করেন। তবে আঙুলের ছাপ নেওয়ার পর স্বয়ংক্রিয় মেশিনে মেলানোর সময় তা আটকে যায়। আবার অনেকে প্রকাশ্যেই তথ্য পরিবর্তন করার জন্য আবেদন করেন। তখন কাগজপত্র যাচাই ও তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, এ ধরনের অন্তত ১২ হাজার আবেদন তদন্তের জন্য জমা পড়ে আছে। এসব আবেদন যাচাই করে পুলিশের বিশেষ শাখার তদন্ত প্রতিবেদন ইতিবাচক হলে আবেদনকারীর বিপরীতে পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগ থেকে সে ধরনের নির্দেশনাও রয়েছে; কিন্তু সেই নির্দেশনা অমান্য করে প্রশাসন বিভাগের দায়িত্বে থাকা এডিজি সেলিনা বানু অধিদপ্তর থেকে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক পরিপত্র জারি করে আটকে থাকা মাল্টিপল পাসপোর্টের আবেদনের বিষয়ে জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন। এরপর নিজের ক্ষমতাবলে টাকার বিনিময়ে পছন্দমতো ফাইল ছাড় করেন।

ওই কর্মকর্তা বলেন, বছরের পর বছর ধরে আটকে থাকা মাল্টিপল পাসপোর্টের হাজার হাজার ফাইলের মধ্যে ৫০০ ফাইল অনুমোদন দেওয়া নিয়ে খোদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যেই সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। তবে সেলিনা বানু প্রভাবশালী কর্মকর্তা হওয়ায় তার বিষয়ে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খোলেন না। অধিদপ্তরের সমন্বয় সভায় এসব বিষয়ে প্রশ্ন তুললেই তার রোষানলে পড়তে হয়। পরে টার্গেট করে কর্মকর্তাদের বদলি বা ন্যূনতম কারণেও বিভাগীয় মামলা ও বদলির মতো হয়রানিতে পড়তে হয়।

অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, সেলিনা বানু পাসপোর্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ পদে রয়েছেন। বদলিজনিত চাকরি হলেও তিনি ঢাকার বাইরে খুব বেশি দায়িত্ব পালন করেননি। এ সুযোগে তিনি একটি শক্তিশালী দালাল সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। তাছাড়া দেশের প্রায় প্রতিটি পাসপোর্ট অফিসে তার নিজস্ব বলয়ের কর্মকর্তা বা কর্মচারী রয়েছেন। বিদেশি মিশনগুলোর কয়েকটিতে পাসপোর্ট অধিদপ্তরেও কর্মী রয়েছে। সেলিনা বানু অধিদপ্তরের প্রশাসনিক প্রধান হওয়ায় সবাই তাকে অতি সমীহ’ করে চলেন। বিভিন্ন পাসপোর্ট অফিস থেকে তার অনুগতরা মাল্টিপল আবেদনগুলো বাছাই করে দিয়েছেন। সেগুলোই মূলত তিনি প্রশাসনিক ক্ষমতাবলে ছাড় করিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

ওই সূত্রটি জানায়, প্রতিটি মাল্টিপল পাসপোর্টের ক্ষেত্রে সেলিনা বানু ও অধিদপ্তরে সিন্ডিকেট নিয়েছে দেড় লাখ টাকা করে। তবে দালাল চক্র ও অন্যান্য জেলা অফিসে তার অনুগত কর্মীরা আবেদনকারীদের কাছ থেকে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা করে নেন। বছরজুড়েই সেলিনা বানু টাকার বিনিময়ে এ ধরনের পাসপোর্ট ইস্যু করে থাকেন। তবে ডিজির অনুপস্থিতিতে একসঙ্গে ৫০০ আবেদন অনুমোদন করায় বিষয়টি জানাজানি হয়।

পাসপোর্ট অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মাল্টিপল আবেদনের সবকিছু ঠিক থাকলেও একজন আবেদনকারী টাকা না দেওয়ায় পাসপোর্ট পাননি। এরপর ওই আবেদনকারী দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) সেলিনা বানুর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। পরে গত ২৫ জানুয়ারি দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম সেলিনা বানুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।

সূত্র জানায়, শুধু মাল্টিপল পাসপোর্টই নয়, সেলিনা বানু সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিদেশি পাসপোর্টধারীদের নো ভিসা রিকোয়ার্ড (এনভিআর) সিল দেওয়ার জন্যও টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এ কাজের জন্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক নাদিরা আক্তারকে ভিসা শাখার দায়িত্বে রেখেছেন। এই কর্মকর্তা সেলিনা বানুর অনুগত হওয়ায় তাকে পার্সোনালাইজেশন সেন্টার থেকে ভিসা শাখার মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সংযুক্ত করে রেখেছেন। প্রতিটি পাসপোর্টের এনভিআর দেওয়ার জন্য ৫০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা করে নিচ্ছে এই সিন্ডিকেট। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কোনো বিদেশি পাসপোর্টধারী দেশে এসে নো ভিসা রিকোয়ার্ডের আবেদন করলে তার আর বাংলাদেশে আসতে কোনো ভিসার প্রয়োজন হয় না।

ওই সূত্রটি জানায়, এই সিন্ডিকেট অবৈধভাবে দেশে বসবাসকারী বিদেশিদেরও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে টাকার বিনিময়ে ভিসা এক্সটেনশন বা মেয়াদ বাড়িয়ে দিচ্ছে। বিশেষ করে আফ্রিকার নাগরিকরা টাকার বিনিময়ে ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে দেশে মাদক কারবারসহ না অনিয়ম করছে।

মাল্টিপল পাসপোর্ট ইস্যু করে সাড়ে ৭ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়ে জানতে এডিজি সেলিনা বানুর দপ্তরে দেখা করার অনুমতি চাওয়া হয়; কিন্তু তিনি সময় দেননি। পরে তাকে খুদে বার্তা পাঠিয়ে অভিযোগের বিষয়ে টেলিফোনে তার বক্তব্য চাওয়া হয়। তবে তিনি গণমাধ্যমে কোনো কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এরপর তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পর্কে জানানো হলে তিনি বলেন, আমার বিষয়ে অভিযোগ থাকলেও আমি তো বক্তব্য দিতে পারব না, আমি তো পত্রিকায় বক্তব্য দিতে পারি না।’

বেনামি চিঠিতে গুরুতর তথ্য সেলিনা বানুর বিরুদ্ধে:

এদিকে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী অভিযোগ তুলেছেন, সেলিনা বানুর অপকর্ম নিয়ে কথা বললেই তাদের ওপর খড়্গ নেমে আসে। এ জন্য মুখ না খুলে আতঙ্কিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সম্প্রতি মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও দেশের প্রায় সব পাসপোর্ট অফিসে বেনামি চিঠি দিয়ে এই কর্মকর্তার দৌরাত্ম্য থেকে নিস্তার চেয়েছেন। এসব চিঠিতে সেলিনা বানুর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, সেলিনা বানু পাসপোর্ট অধিদপ্তরে ৩০ বছর ধরে চাকরি করলেও তিনি ৬৪ জেলার কোথাও বদলি হননি। একবার অনিয়মের কারণে তাকে ঢাকার বাইরে বদলি করা হলেও বেশি দিন থাকতে হয়নি। তার স্বামী ঢাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক এ কে এম মাসুদুল হক রিজভী জামায়াতের পদধারী। যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হওয়া কামারুজ্জামান তাদের স্বজন। শুধু তাই নয়, জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর পর হাসপাতালেও ছুটে গিয়েছিলেন এই দম্পতি।

চিঠিতে বলা হয়, এডিজি সেলিনা বানুর বাড়ি জামালপুরে। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুরে রেলে নাশকতার ঘটনায় তার স্বজনরাও জড়িত।

ওই চিঠির সূত্র ধরে সেলিনা বানুর গ্রামের বাড়িতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তার পরিবারের কেউ সরকার সমর্থক নয়। তার স্বামী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সময়ে শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তার পরিচিত কয়েক শিক্ষক এবং সরকার সমর্থিত শিক্ষকদের একাধিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে, হিসাববিজ্ঞানের শিক্ষক মাসুদুর রহমান কখনো স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বলয়ে ছিলেন না। তবে প্রকাশ্যে তাকে রাজনীতিতে সক্রিয় দেখা যায় না।

সেলিনা বানু আতঙ্কে পুরো পাসপোর্ট অধিদপ্তর:

অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গত দুই বছরে এডিজি সেলিনা বানু আইফোন ও ল্যাপটপ নিয়ে কর্মকর্তাদের কয়েকটি প্রাইজ পোস্টিং দেন। তার আর্থিক চাহিদা পূরণ করতে না পারলে দেশের প্রত্যন্ত জেলাগুলোতে বদলি হতে হয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। দেওয়া হয় কম গুরুত্বপূর্ণ পদ। কয়েক বছর আগে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে তার ভাইয়ের চিকিৎসার খরচ চালাতে হয়েছে ময়মনসিংহসহ ওই এলাকার বিভিন্ন পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তাদের। বিভিন্ন সময়েই কর্মকর্তাদের উপঢৌকন দিতে হয়। তিনি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তার অনুগত করতে সামান্য ভুলেও বিভাগীয় মামলা, নানা সংস্থা দিয়ে তদন্ত করার ভয় দেখানোসহ নানাভাবে হুমকি দেন। উড়ো চিঠিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব অনিয়ম থেকে রক্ষা পেতে আবেদন জানিয়েছেন।

পাসপোর্ট অধিদপ্তরে সেলিনা বানুর নানা অনিয়ম কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মুখে মুখে। তবে কেউ গণমাধ্যমে প্রকাশ্যে মুখ খোলেন না। সবাই নাম প্রকাশ না করে তার অপকর্ম তুলে ধরেন।

সরকার সমর্থক না হয়েও সেলিনা বানু এত প্রভাবশালী কীভাবে? সে বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা সব সময়েই কৌশলে চলেন। যখন যে মহাপরিচালক দায়িত্বে আসেন, তিনি কৌশলে তার লোক হয়ে যান। নিজেকে সৎ কর্মকর্তা হিসেবে প্রচার চালায় তার অধিনস্তরা। তা ছাড়া মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগেও কিছু কর্মকর্তাকে নানাভাবে ম্যানেজ করে তিনি পুরো অধিদপ্তরই নিজের নিয়ন্ত্রণে রেখে নানা অনিয়ম করে চলেছেন।


আরও খবর



গাজায় শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলা, নিহত ১৪

প্রকাশিত:বুধবার ১০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১০ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজার একটি শরণার্থী শিবিরে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েল। এতে চার শিশুসহ অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১০ এপ্রিল) সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ তথ্য জানায়।

এতে বলা হয়, মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের একটি বাড়িতে বোমা হামলা চালালে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে। এছাড়া হামলায় আরও অনেকে আহত হয়েছেন। ইসরায়েলি বর্বর এই হামলার শিকার বাড়িটি ছিল আবু ইউসুফ পরিবারের।

এর আগে, গত মাসেও গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে হামলা চালিয়ে ১৩ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। নিহতদের সবাই ছিল নারী ও শিশু।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর গাজার ইরেজ সীমান্ত দিয়ে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জন মানুষকে হত্যা করে হামাস। পাশপাশি জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় ২৪২ জনকে। এরপর গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী।

দখলদারদের এমন হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৩ হাজার ছাড়িয়েছে। এরমধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই ২৪ হাজারের বেশি। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ২০ লাখ মানুষ। ২২৯টি মসজিদ সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে।


আরও খবর



ভারতীয় মসলায় ক্যানসারের উপাদান, নিষিদ্ধ হংকং-সিঙ্গাপুরে

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ক্যানসার সৃষ্টিকারী ইথিলিন অক্সাইডের উচ্চ-মাত্রার উপস্থিতি মেলায় ভারতীয় কোম্পানি এমডিএইচ ও এভারেস্টের গুঁড়া মসলা বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে হংকং ও সিঙ্গাপুর।

এ ঘটনার পর ভারতের মশলা রফতানি নিয়ন্ত্রক সংস্থা প্রতিষ্ঠান দুইটিতে তাদের মশলার গুণগত মান যাচাইয়ের বিস্তারিত তথ্য সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছে। ভারতে এ দুই কোম্পানির গুঁড়া মশলা ব্যাপক জনপ্রিয় এবং ইউরোপ, এশিয়া ও উত্তর আমেরিকাতেও রফতানি করা হয়।

এমডিএইচ-এর মাদ্রাজ কারি পাউডার, সম্বার মসলা ও কারি পাউডার মসলা ও এভারেস্ট ফুড প্রোডাক্ট লিমিটেডের ফিশ কারি মসলা, মোট এই চারটি প্রোডাক্টকে ঘিরে তৈরি হয়েছে এই সমস্যা।

ইথিলিন অক্সাইড একটি গন্ধহীন রাসায়নিক। অত্যধিক পরিমাণে থাকলে তা মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর।

হংকং ও সিঙ্গাপুরের কর্তৃপক্ষ বলেছে, ভারতীয় ওই দুই কোম্পানির গুঁড়া মসলায় উচ্চ মাত্রার ইথিলিন অক্সাইড রয়েছে। যা মানুষের খাওয়ার জন্য অনুপযোগী। আর দীর্ঘ সময় ধরে ইথিলিন অক্সাইডের ব্যবহারে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

ভারতের মশলার বাজারের অন্যতম বৃহৎ দুই কোম্পানি এমডিএইচ ও এভারেস্ট স্পাইসেস। দেশটির বাজার গবেষণা সংস্থা জিওন মার্কেট রিসার্চের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে এই দুই কোম্পানি ১০ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মশলা বিক্রি করেছে। দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশটি ২০২২-২৩ সালে ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের মশলা রফতানি করেছে বলে জানিয়েছে ভারতের মশলা বোর্ড।


আরও খবর



ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো: গ্রেপ্তার ৯০০

প্রকাশিত:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার প্রতিবাদে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস বর্জন করেছেন শিক্ষার্থীরা। এমন পরিস্থিতিতে আন্দোলন দমাতে শত শত বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ।

গত ১৮ এপ্রিল নিউইয়র্ক পুলিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থী একটি শিবির সরিয়ে নেয় এবং শতাধিক বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করে। এর পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাম্পাসগুলো থেকে অন্তত ৯০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এরপর থেকে কয়েক ডজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গাজার বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে শিবির স্থাপন করেছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রিকারী কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়েছে।

আল জাজিরার খবর অনুসারে, শনিবার বোস্টনের নর্থইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটি, ব্লুমিংটনের ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি এবং সেন্ট লুইসের ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভ থেকে ২৯০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এছাড়া ক্যালিফোর্নিয়া, জর্জিয়া এবং টেক্সাসের বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ সদস্যরা তাদের নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা ভোট গ্রহণ করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গণহত্যা থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। যেসব প্রতিষ্ঠান অস্ত্র উৎপাদনসহ নানা উপায়ে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় সহযোগিতা করছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের বৃত্তি না দেওয়ার দাবিও তুলেছেন তারা।


আরও খবর



জবি শিক্ষার্থী অবন্তিকার আত্মহত্যা, এক মাসেও শেষ হয়নি তদন্ত

প্রকাশিত:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

Image

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের ছাত্রী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনার এক মাস পার হলেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠিত কমিটি।

তবে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে না পারার কারণ হিসেবে পুলিশের কাছে কিছু তথ্য চেয়ে পাওয়া যায়নি বলে জানান কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক জাকির হোসেন।

গত ১৫ মার্চ রাত ১০টার দিকে সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকী ও সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে অভিযুক্ত করে ফেসবুকে পোস্ট দেন জবি ছাত্রী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা। এরপরই কুমিল্লার বাগিচাগাঁও নিজ বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেন তিনি। অভিযুক্ত সহকারী প্রক্টর ও সহপাঠী বর্তমানে কুমিল্লা কারাগারে আটক আছেন।

আত্মহত্যার পরদিনই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি জাকির হোসেনকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটিকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন আবুল হোসেন, আইন অনুষদের ডিন মাসুম বিল্লাহ, সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান ঝুমুর আহমেদ এবং সদস্যসচিব ডেপুটি রেজিস্ট্রার (আইন) রঞ্জন কুমার।

তদন্ত কমিটি সূত্রে জানা যায়, কমিটির সদস্যরা কুমিল্লায় গিয়ে অবন্তিকার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাদের মতামত জানার চেষ্টা করেছেন। পরে কারাগারে আটক সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীর সঙ্গেও কথা বলেন তারা।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন আমরা গুছিয়ে আনছি। কিছু তথ্য আমরা কুমিল্লার স্থানীয় থানা পুলিশের কাছে চেয়েছি। সেগুলো দেওয়ার কথা থাকলেও এখনো পাইনি। তদন্তের স্বার্থে আমাদের কিছু ডিজিটাল এভিডেন্স যেমন- অবন্তিকার মোবাইলের কল লিস্ট, সর্বশেষ কল রেকর্ড, ফেসবুক- ম্যাসেঞ্জারের চ্যাটিং স্ক্রিনশট প্রয়োজন। এছাড়াও মোবাইলে আরও গুরুত্বপূর্ণ কোনো তথ্য থাকলে সেটা এবং ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন চেয়ে পুলিশের কাছে আবেদন করেছি। এগুলো পেলে কাজের সুবিধা হবে।

কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির পাঠানো চিঠি আমরা পেয়েছি। আইনানুযায়ী যতটুকু তথ্য আমরা দিতে পারি, তা অবশ্যই দিব। তাছাড়া আমাদের গঠিত তদন্ত কমিটির কার্যক্রম এখনো চলমান আছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শিবেন বিশ্বাস বলেন, তদন্ত কার্যক্রম চলছে। তদন্তে যদি অন্য কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়, তবে তাকে আমরা গ্রেফতার করব। মোবাইল ফরেনসিক ও পোস্টমর্টেম প্রতিবেদন পেলে আমরা পরবর্তী কাজ করতে পারব। আমাদের তদন্ত কার্যক্রম কবে শেষ করতে পারব- তা পুরোপুরি নির্ভর করছে ফরেনসিক প্রতিবেদন এবং পোস্টমর্টেম প্রতিবেদন পাওয়ার ওপর।

উল্লেখ্য, আত্মহত্যার আগে দেওয়া ফেসবুক পোস্টে সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে অনলাইন ও অফলাইনে হুমকি-ধামকি দেওয়ার অভিযোগ করেন ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা। প্রতিকার চেয়ে সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের কাছে বারবার অভিযোগ দিলেও প্রতিকার পাননি। উল্টো সহকারী প্রক্টর তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন বলেও উল্লেখ করেন সেই ফেসবুক পোস্টে।


আরও খবর