আজঃ রবিবার ১৯ মে ২০২৪
শিরোনাম

বিএনপির আন্দোলন এখন চোরাগুপ্তা হামলা : ওবায়দুল কাদের

প্রকাশিত:শুক্রবার ১০ নভেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১০ নভেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

বিএনপির আন্দোলন এখন চোরাগুপ্তা হামলা বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে তারা শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে হটাতে চায়।

শুক্রবার (১০ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর গুলিস্তানে শহীদ নূর হোসেন চত্বরে (জিরো পয়েন্ট) শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা সবার সামনে পরিষ্কার যে, আমাদের দেশের গণতন্ত্র একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করছে। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িক ও গণতন্ত্রবিরোধী শক্তি, অতীতে যারা গণতন্ত্রকে বার বার আঘাত করেছে, তারাই এখন গণতন্ত্রের নামে আন্দোলন করছে। যে আন্দোলনকে তারা ব্যর্থতার আগ পর্যায়ে অগ্নি-সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসী তৎপরতায় নিয়ে গেছে। নির্বাচনে সামনে রেখে সেই ২০১৩-১৪ ও ২০১৫ সালের মতো গণপরিবহন পোড়ানোর সেই অগ্নি-সন্ত্রাস তারা করছে। 

আরও পড়ুন>> গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ১১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত

তিনি বলেন, আসলে তারা (বিএনপি) গণতন্ত্র ও নির্বাচন চায় না। আজকে তারা আন্দোলন করছে। জন-সম্পৃক্ততার অভাবে ব্যর্থতার এই আন্দোলন তারা চোরাগুপ্তা হামলার দিকে নিয়ে গেছে। এখন তাদের আন্দোলন চোরাগুপ্তা হামলা। চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে তারা শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে হটাতে চায়, নির্বাচন বানচাল করতে চায়। এটাই হচ্ছে বিএনপির নেতৃত্বে বিরোধীদলের আন্দোলনের প্রধান লক্ষ্য।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার লড়াই আমাদের চলছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা বিরামহীন লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।


আরও খবর



সড়ক দুর্ঘটনায় ‘অড সিগনেচার’ ব্যান্ডের পিয়াল নিহত

প্রকাশিত:শনিবার ১১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১১ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে ব্যান্ড অড সিগনেচার। এ দুর্ঘটনায় ব্যান্ডটির গায়ক ও গিটারিস্ট আহাসান তানভীর পিয়াল ও গাড়িচালক নিহত হয়েছেন। খবরটি অড সিগনেচার ব্যান্ডের ফেসবুক পেজ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। আজ (১১ মে) ভোর সাড়ে ৫ টায় মহাসড়কের চৈতাব এলাকায় ড্রীম হলিডে পার্কের সামনে হানিফ পরিবহণ ও মাইক্রোবাস মুখোমুখি সংঘর্ষে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।

অড সিগনেচারের পেজ থেকে এদিন সকালে একটি পোস্টে বলা হয়, সিলেট যাওয়ার পথে নরসিংদীর ড্রিম হলিডে পার্কের সামনে অড সিগনেচারের গাড়ি মারাত্মক দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়। এতে ব্যান্ডের সকল সদস্য মারাত্মকভাবে আহত হয়। ড্রাইভার সাহেব সালাম আর ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য আহাসান তানভীর পিয়াল এই দুর্ঘটনায় নিহত হন। বাকিদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

নরসিংদী ইটাখোলা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইলিয়াস হোসেন জানায়, সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী হানিফ পরিবহণ একটি যাত্রীবাহী বাস ড্রীম হলিডে পার্কের সামনে পৌঁছালে সে সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সিলেটগামী একটি মাইক্রোবাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

এতে ঘটনাস্থলেই মাইক্রোবাসের চালক ও এক যাত্রী নিহত হন। আহত হয়েছেন মাইক্রোবাসের আরও তিন যাত্রী। দুর্ঘটনার পর হানিফ পরিবহনের বাসটি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয় লোকজন তার পিছু নিয়ে নারায়ণগঞ্জের ভুলতা এলাকা থেকে আটক করে। তবে এরইমধ্যে বাসের চালক ও সহকারী পালিয়ে যায়।

দুর্ঘটনার পর খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

এ খবর শুনে মুহূর্তেই শোকের ছায়া নেমে এসেছে সংগীতাঙ্গনে। ব্যান্ডটির অনুরাগীরা নেট দুনিয়ায় নিহত পিয়ালের জন্য শোক প্রকাশের পাশাপাশি বাকি সদস্যদের সুস্থতা কামনা করেছেন।

অড সিগনেচার তরুণ প্রজন্মের কাছে খুব অল্প সময়ে জনপ্রিয়তা পাওয়া একটি ব্যান্ড। ২০১৭ সালে এর আত্মপ্রকাশ। শ্রোতাদের কাছে গল্প ভিত্তিক গানের কারণে জনপ্রিয় দলটি। ব্যান্ডটির গানগুলোর মধ্যে ঘুম, আমার দেহখান, দুঃস্বপ্ন অন্যতম।


আরও খবর



ব্রাজিলে গেস্টহাউসে অগ্নিকাণ্ড, নিহত ১০

প্রকাশিত:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

দক্ষিণ ব্রাজিলের পোর্তো অ্যালেগ্রে শহরে এক গেস্টহাউসে আগুন লেগে কমপক্ষে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধার অভিযানে অংশ নেওয়া কর্মীরা ১০ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

রিও গ্র্যান্ডে ডো সুল প্রদেশের ফায়ার বিভাগ বলেছে, শুক্রবার(২৬ এপ্রিল) রাজধানী পোর্তো আলেগ্রে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যমের ছবিতে দেখা গেছে তিনতলা ভবনটি আগুনে পুড়ছে দমকলকর্মীরা আগুন নেভানোর জন্য চেষ্টা করছেন। ফায়ার বিভাগের পক্ষ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা ক্ষতিগ্রস্তদের শনাক্ত করতে এবং আগুনের কারণ অনুসন্ধান করতে ঘটনাস্থলে রয়েছেন।

প্রদেশের গভর্নর এডুয়ার্ডো জানান, অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনা তাকে গভীরভাবে বিচলিত করেছে। তিনি এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম 'এক্স' এ পোস্টে জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের কয়েক ডজন কর্মীসহ ৫টি ইউনিট কাজ করছে। ভয়াবহ এ ট্র্যাজেডির কারণ অনুসন্ধান করা হবে। নিহতদের পরিবারের প্রতি তার সমবেদনা। শহরের মেয়র সেবাস্তিয়াও মেলো এক্স-এ লিখেছেন, একাধিক আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।


আরও খবর



উপজেলা নির্বাচন সংসদ নির্বাচনের চেয়েও ভালো হবে: ইসি আলমগীর

প্রকাশিত:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | হালনাগাদ:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | অনলাইন সংস্করণ
জেলা প্রতিনিধি

Image

সংসদ নির্বাচনের চেয়ে উপজেলা নির্বাচন আরও ভালো হবে বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। তিনি বলেছেন, সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীর স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী না হওয়ার নির্দেশনা রাজনৈতিক দলের সিদ্ধান্ত। এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কোনো মতামত নেই। তবে নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার যে কোন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।

শনিবার দুপুরে (২০এপ্রিল) মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও দুটি উপজেলার প্রার্থীদের সঙ্গে দুটি পৃথক মতবিনিময় সভা করেন ইসি আলমগীর। এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর এসব কথা বলেন।

ইসি মো. আলমগীর বলেন, একটা হচ্ছে দলীয় সিদ্ধান্ত। আরেকটা হলো নির্বাচন কমিশনের আইন। নির্বাচন কমিশনের আইনে আত্মীয় অনাত্মীয় কোনো সম্পর্ক নেই। তাই এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের প্রার্থী না হওয়ার নির্দেশনা তাদের দলীয় সিদ্ধান্ত, তাদের পলিসি। তবে যে কোনো দল অথবা যে কেউ বলুক না কেন যেটা করলে নির্বাচন সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ হবে, সেটাকে আমরা ওয়েলকাম জানাই।

তিনি আরও বলেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশন সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। যেখানেই প্রভাব বিস্তার অথবা প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে, সেখানেই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

বিএনপির ভোট বর্জনের ডাকের বিষয়ে জানতে চাইলে মো. আলমগীর বলেন, জাতীয় নির্বাচনেও ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। তারপরও সবার সহযোগিতায় একটি ভালো নির্বাচন হয়েছে। সংসদ নির্বাচনের চেয়েও উপজেলা নির্বাচন আরও ভালো হবে।

অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. তরিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজন সরকার, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আমিনুর রহমান মিঞা সহ সিংগাইর ও হরিরামপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

নিউজ ট্যাগ: মো. আলমগীর

আরও খবর



জাতীয় আইটি প্রতিযোগিতায় অটিজম বিভাগের প্রথম রায়াত

প্রকাশিত:সোমবার ১৩ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৩ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
তারিক লিটু, কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি

Image

জাতীয় আইটি প্রতিযোগিতায় অটিজম বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন কয়রা উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সরদার আব্দুর রাজ্জাকের দৌহিত্র ওয়াজিহ তৌসিফ রায়াত। এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ফিলিপাইনে অনুষ্ঠেয় আন্তর্জাতিক আইটি প্রতিযোগিতার জন্য নির্বাচিত হয়েছেন ওয়াজিহ তৌসিফ রায়াত।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) কর্তৃক ৮ম বারের মতো যুব প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য জাতীয় আইটি প্রতিযোগিতা শনিবার  আয়োজন করা হয়।

দিনব্যাপী এই প্রতিযোগিতাটি সেন্টার ফর সার্ভিসেস অ্যান্ড ইনফরমেশন অন ডিজ্যাবিলিটি (সিএসআইডি) এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) সহযোগিতায় রাজধানী ঢাকার মিরপুর রূপনগরে অবস্থিত বিইউবিটি ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়।

অটিজম বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করায় ওয়াজিহ তৌসিফ রায়াত আগামী অক্টোবর ২০২৪ -এ ফিলিপাইনে অনুষ্ঠেয় আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন। প্রতিযোগিতার সমাপনী অনুষ্ঠানে পুরস্কার তুলে দেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন।


আরও খবর



বনের জমিতে দেড় শতাধিক কারখানা, উচ্ছেদে সংশ্লিষ্টদের ভূমিকা কী

প্রকাশিত:সোমবার ০৬ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০৬ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
গাজীপুর প্রতিনিধি

Image

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি এলাকার বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেম লিমিটেড (বিবিএস) কেবলের বার্ষিক বিক্রির পরিমাণ এক হাজার ২০০ কোটি টাকার বেশি। ২০১৭ সালে কারখানা নির্মাণের জন্য গাছপালা কেটে সাতখামাইর ফরেস্ট বিটের তেলিহাটি মৌজার আরএস ২৯২৩, ২৯২৪ ও ২৯২৫ দাগের ১.৬১ একর সংরক্ষিত বনের জমি দখল করে নামি এই কেবল প্রতিষ্ঠানটি। দখল করা ওই জমির বর্তমান বাজারমূল্য অন্তত আড়াই কোটি টাকা। বন বিভাগ দখল করা ওই জমি এখনো উদ্ধার করতে পারেনি। এরই মধ্যে নতুন করে কারখানার মূল ফটকের সামনে প্রতিষ্ঠানটির  প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. হাসনাইন ওরফে হাসান বনের জমি দখল করে নির্মাণ করেছেন মার্কেট। ওই মার্কেট থেকে মাসে ভাড়া তুলছেন ৩০ হাজার টাকা।

অন্যদিকে, গাজীপুর সদরের নলজানী এলাকার অভিজাত ভাওয়াল রিসোর্ট অ্যান্ড স্পার মাসিক আয় কোটি টাকার বেশি। শীত, গ্রীষ্ম এমনকি হরতাল-অবরোধেও এই রিসোর্টের ভিলা খালি থাকে না। ৯-১০ বছর আগে নির্মাণের সময় ভাওয়াল রিসোর্টের পাশে থাকা সংরক্ষিত বনের বাড়ইপাড়া মৌজার এসএ সিএস ৩, ২৭৯ ও ২৭১ দাগের ৩.৬৮ একর জমি দখল করে নেয় প্রতিষ্ঠানটি। এ ঘটনায় বন বিভাগ গ্রিনটেক রিসোর্টের দখল থেকে জমি উদ্ধারের জন্য গাজীপুরের জেলা প্রশাসকের কাছে উচ্ছেদ মামলা করে। কিন্তু সেই জমি এখনো উদ্ধার হয়নি। এভাবে গাজীপুরে সংরক্ষিত বনের জমিতে কারখানা, খামার, আলিশান রিসোর্ট, পিকনিক ও শুটিং স্পট নির্মাণ করে বছরে শতকোটি টাকার বাণিজ্য করছে পৌনে দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠান।

ব্যক্তিগত প্রভাব এবং অসাধু বন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ব্যক্তিগত জমির সঙ্গে থাকা বনের জমি দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে এসব প্রতিষ্ঠান। সংরক্ষিত বনে বা বন ঘেঁষে তৈরি করা এসব প্রতিষ্ঠানের অনেকের নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। বন বিভাগের তালিকা অনুযায়ী, গাজীপুরের শ্রীপুর, কালিয়াকৈর ও সদর উপজেলায় ১২ হাজার ৩২১ একর বনের জমি অবৈধ দখল হয়ে গেছে। এর মধ্যে ১৭৪টি প্রতিষ্ঠানের দখলে রয়েছে ৫০০ একর জমি। গত এপ্রিল মাসে বন বিভাগ ও জেলা প্রশাসন শ্রীপুর ও গাজীপুর সদর উপজেলায় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করেছে মাত্র ৮.৭৯ একর বনভূমি। অবশিষ্ট ভূমি রিসোর্ট, বাড়িঘর-দোকানপাট, হাটবাজার ও কৃষিজমি হিসেবে দখল করা হয়েছে। ব্যক্তিমালিকানাধীন বাড়িঘর তৈরি করে ২৩ হাজার ব্যক্তি দখল করেছে ১০ হাজার একরের বেশি বনভূমি। এতে বনভুমি উজাড় হয়ে হুমকির মুখে পড়েছে এলাকার পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য। অথচ এই আগ্রাসন ঠেকাতে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই বন বিভাগের। বরং নানা ফন্দিতে নতুন করে দখল হচ্ছে বনভূমি।

বন বিভাগের তথ্যানুযায়ী, শ্রীপুরে ধনুয়া মৌজায় আরএকে সিরামিকস চার একর, রশোওয়া স্পিনিং মিল চার একর, ডিবিএল সিরামিকস আট একর, অটো স্পিনিং মিলস ২.২০ একর, সাতখামাইর মৌজায় আকন্দ গার্ডেন ১৬ একর, রিফাত ব্যাগ ২৫ শতক, পটকা মৌজায় ট্রেড ম্যানেজমেন্ট করপোরেশন ৭.৬৪ একর, কেওয়া মৌজার মিতা টেক্সটাইল ২.২০ একর, মেঘনা কম্পোজিট ৪০ শতাংশ, জোবায়ের স্পিনিং এক একর, ওমেগা সুয়েটার এক একর, সোলার সিরামিকস ৯০ শতাংশ, ইকো কটন ৪.৮৬ একর, ভাওয়াল ইন্ডাস্ট্রিজ দুই একর, অনটেক লিমিটেড ৪.৯৪ একর, হাউআর ইউ টেক্সটাইল এক একর, অরণ্যকুটির ২.২২ একর, উইষ্টেরিয়া টেক্সটাইল ৫.৩৩ একর, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল দুই একর, এপেক্স নিট কম্পোজিট ১১.৬২ একর, গ্রেটওয়াল সিরামিকস ৭.৩৮ একর, টেপিরবাড়ি মৌজায় ডিবিএল গ্রুপ ছয় একর, তেলিহাটি মৌজায় কুঞ্জু বিথি এক একর, আলিফ অটো ব্রিকস ৭০ শতাংশ, টেপিরবাড়ী মৌজায় চায়না বাংলা প্যাকেজিং এক একর, প্রাইম ফার্মাসিউটিক্যালস ৭৬ শতাংশ, এইচ এস অ্যাগ্রো দেড় একর, রেক্স অটো ব্রিকস এক একর ৭০ শতাংশ, টেংরা মৌজায় শিশুপল্লী প্লাস সাড়ে ১২ একর, মম পোলট্রি ৭০ শতাংশ ও ওয়ারবিট স্টিল বিল্ডিং দুই একর বনের জমি দখল করেছে। পেলাইদ মৌজায় সিসিডিভি পাঁচ একর, সাইটালিয়া জামান পোলট্রি দুই একর, মাওনা মৌজার মনো ফিড ২.২৫ একর, এইচ পাওয়ার লিমিটেড ৩৩ শতাংশ, হোম ডিজাইন ১.২২ একর ছাড়াও বিবিএস কেবল, দি সোয়েটার, ইকো কটন মিলস, সিটিসেল লিমিটেডও বনের জমি দখল করেছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গাজীপুর সদর উপজেলায় বনভূমি দখলে সবচেয়ে এগিয়ে পারটেক্স গ্রুপ। পারটেক্স কটন লিমিটেড সদর উপজেলার ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান রেঞ্জের বাহাদুরপুর মৌজায় সিএস ২৫৪, ২৮৯, ২৯৪ ও ৩০০ নম্বর দাগে ১১.৬৭ একর, পারটেক্স হোল্ডিংস লিমিটেড একই মৌজার সিএস ২০৮, ৫৮৫, ২০৮ ও ৫৮৬ নম্বর দাগে ৫.০৯ একর, আম্বার ডেনিম লিমিটেড আড়াইশ প্রসাদ মৌজায় আরএস ৮ থেকে ১৮ এবং ২৮ থেকে ৩২ নম্বর দাগে ২৬.২৪ একর মিলিয়ে ৪৩ একর বনভূমি দখলে রেখেছে। তবে এসব বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি পারটেক্স গ্রুপের কোনো কর্মকর্তা। মণিপুর এলাকায় বোকরান মণিপুর মৌজায় সিএস ৪২৮ ও ৫৯৮  নম্বর দাগে ৬.৫৭ একর সংরক্ষিত বনভূমি দখল করেছে সান পাওয়ার সিরামিকস লিমিটেড। এসব বনভূমি উদ্ধার করতে ২০০৭, ২০০৯ ও ২০১৩ সালে উচ্ছেদ মামলা করা হয়।

বনভূমি দখল প্রসঙ্গে সান পাওয়ারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেলিম ভূঞা বলেন, কারখানার জমির এসএ ও আরএস রেকর্ড আমাদের নামে। কিন্তু শুধু গেজেটে নাম থাকায় বন বিভাগ ওই জমি তাদের দাবি করছে। কারখানাটি বিদেশি বিনিয়োগে স্থাপিত। বনের দাবি করা জমির সমপরিমাণ জমি অন্যত্র কিনে বনায়ন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এ বিষয়ে এখনো কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।’

বোকরান মণিপুর মৌজায় সিএস ৫৯৮ নম্বর দাগে ফু-ওয়াং সিরামিক ও ফু-ওয়াং ফুডের দখলে রয়েছে ৪.৪০ একর সংরক্ষিত বনভূমি। ২০০৭ সালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উচ্ছেদ মামলা করে বন বিভাগ। কিন্তু ওই সময় দায়সারা মামলা করায় আজও জমি উদ্ধার হয়নি। এ প্রসঙ্গে ফু-ওয়াং গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানে বনের কোনো জমি নেই।’

এ ছাড়া প্যানাস অটোক্রিয়েশ গার্মেন্টস, ম্যাগডোনালস বাংলাদেশ, হেলথ কেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, এনএজেড গার্মেন্টস বাংলাদেশ, ওয়ান্ডার ল্যান্ড টয়েস, বেন্টলী সুয়েটার, ওয়ান ডেনিম, ওয়ান স্পিনিং মিলস, এমআই ইয়ার্ন ডাইং, শরীফ বাড়ি খামার ও রেস্ট হাউস, ইপিলিয়ন স্টাইল, এটলাস ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, এবি সিদ্দিক পলিমার ইন্ডাস্ট্রিজ, বেন ফিক্সস্টীল বিল্ডিং ডেভেলপমেন্ট, এসএম নিটিং ইন্ডাস্ট্রিজ, বিডি কালেকশন, বাংলাদেশ মেইজপ্রডাক্ট, ইভিল টেক্স, তিতাস স্পিনিং, বেঙ্গল গার্মেন্টস, মালা পোলট্রি ফার্ম, মাসকাত পোলট্রি ফার্ম, টিএস ট্রান্সফরমার, ন্যাশানাল ফিড, মডার্ন ফিড, লিথি গ্রুপ, প্যারাগন পোলট্রি, স্কিন গ্রাফ, গর্ডন স্টিল মিলস, মোশারফ কম্পোজিট, প্যাকলাইন, আর্টিসান সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ, বিটি লিমিটেড, মিলেনিয়াম স্টিল মিলস লিমিটেড, কুইন্স পোলট্রি ফার্ম লিমিটেড, অমনী অ্যাগ্রো কমপ্লেক্স, ঢাকা ফিশারিজ, রেডিয়াম এক্সেসরিজ, নির্জনা অ্যাপারেলস, গোলাম কিবরিয়া মৎস্য খামার, ইনডেক্স কনস্ট্রাকশন, সাহাবা ইয়ার্ন, এটিআই সিরামিক, গিভেন্সি ডেনিমস, খোরশেদ আলম অ্যাগ্রো কমপ্লেক্স, বেঙ্গল হরিকেন ডাইং প্রিন্টিং লিমিটেড, নেসলে বাংলাদেশ এবং আদি অ্যাগ্রো ফার্মের দখলে রয়েছে কোটি কোটি টাকার বনভূমি।

কালিয়াকৈর সোহাগ পল্লী রিসোর্ট, চন্দ্রা বিটের কালামপুর এলাকার রাঙ্গামাটি ওয়াটার ফ্রন্ট ও চন্দ্রার শিল্পী কুঞ্জ, কোকোলা ফুড প্রডাক্টস, কৌচাকুড়ি মৌজায় সিএস ৯৪২ নম্বর দাগে ১৫.০৫ একর বনভূমিতে ঘরবাড়ি বানিয়ে দখল করে রাখা হয়েছে। এসব বনভূমি উদ্ধার করতে বন বিভাগের পক্ষ থেকে ২০১৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসকের কাছে উচ্ছেদ মামলার প্রস্তাব দেওয়া হয়। গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, গাজীপুরে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে হাজার হাজার একর বনভূমি জবরদখল হয়েছে। বন বিভাগ উচ্ছেদ মামলা করলেও নানা কারণে অভিযান এগোয়নি। বন বিভাগের পক্ষ থেকেও জোরালো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। গত ১৭ এপ্রিল থেকে উচ্ছদ অভিযান শুরু হয়েছে। শ্রীপুর ও সদর উপজেলায় ৮.৭৯ একর বনভূমি উদ্ধার হয়েছে। অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

বন বিভাগের বক্তব্য

বিবিএস কেবলের বনভূমি দখল প্রসঙ্গে শ্রীপুর ফরেস্ট রেঞ্জ কর্মকর্তা মোখলেসুর রহমান বলেন, বনভূমি দখলে বন বিভাগের নতুন যে তালিকা করা হয়েছে সেটিতে বিবিএস কেবলসও রয়েছে। সেখানে উচ্ছেদের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই উচ্ছেদ করে জমি পুনরুদ্ধার করা হবে।’

বনভূমি দখল প্রসঙ্গে ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সাজ্জাদুল হোসেন বলেন, এসব জমি অনেক আগে দখল হয়েছে। গত কয়েক বছরে নতুন করে কোনো দখল হয়নি। এরই মধ্যে বন বিভাগ নিজস্ব উদ্যোগে শতাধিক বিঘা জমি উদ্ধার করে বনায়ন করেছে। তা ছাড়া দখল করা জমি উদ্ধারে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। যৌথভাবে উচ্ছেদ অভিযানও শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব জমি উদ্ধার করে বনায়ন করা হবে।’

বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা শারমীন আক্তার বলেন, দখল হওয়া বনভূমি উদ্ধারের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে উচ্ছেদ মামলার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তালিকা ধরে উচ্ছদ কার্যক্রম চলছে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’


আরও খবর