নির্বাচনের পর বিরোধী দল নিয়ে রাজনীতিতে জোড় আলোচনা চলছে। আওয়ামী লীগের পর দলগতভাবে সবচেয়ে বেশি ১১টি আসন পেয়েছে জাতীয় পার্টি। সর্বোচ্চ ৬২ আসন পেয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তাদের ৫৯ জনই আওয়ামী লীগের নেতা। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিরোধী দল গঠন করতে হলে নিয়ম অনুযায়ী কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে জোট গঠন করতে হবে। টানা দুই মেয়াদে থাকা বিরোধী দল জাতীয় পার্টি এবারও একই ভূমিকায় থাকতে চায়।
সংসদে বিরোধী দল হতে ২৫টি আসনের প্রয়োজন জানিয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব চুন্নু বলেছেন, এটা একটা টেকনিক্যাল বিষয়। বিরোধীদল হতে গেলে সংসদে ২৫ জন এমপির একটি বিষয় আছে।
বুধবার (১০ জানুয়ারি) সংসদে শপথ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। ১১টি আসনের জয় নিয়েই সংসদে বিরোধী দলের আসনে বসে ‘নিজেদের দায়িত্ব’ পালন করতে চান চুন্নু।
তিনি বলেন, আমরা কোনো শরিক না। আমরা সংসদে অপজিশনে বসে নিজেদের দায়িত্ব পালন করব। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, সংসদে জনগণের পক্ষে যদি ভূমিকা রাখতে হয়, তবে গ্রুপওয়াইজ হওয়া লাগবে, তা তো কোনো কথা না। নিজে থেকে দায়িত্ব নিয়েই আমরা কথা বলতে পারব বিরোধীদলীয় এমপি হিসেবে। বিরোধী দল গঠন নিয়ে আলোচনা হবে। আমরা কোনঠাসা সেটা তো বিষয় না। আমরা যে আসন পেয়েছি, সেটি নিয়েই আমরা সংসদে আমাদের ভূমিকা পালন করব।
সংসদে সরকারের সমালোচনা করতে কোনো ‘গ্রুপের প্রয়োজন নেই’ বলে মনে করেন তিনি। জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, সরকারের বিরোধী ভূমিকায় যেহেতু সংসদে আছি, সেহেতু সরকারের সমালোচনা করা, সরকারের ত্রুটি ধরিয়ে দেওয়া, এটার জন্য গ্রুপ লাগে না, ইনডিভিজুয়ালি আমরা করতে পারি।
গত সংসদে আমি ইনডিভিজুয়ালি অনেক কথা বলেছি। এবারও বলব। এতে তো কোনো বাধা নাই। গ্রুপ থাকলে যে কথা বলা যাবে, তা তো না। এটা হচ্ছে ইচ্ছা ও দায়িত্ববোধ। বিরোধী দলের একজন এমপি, কেউ স্বতন্ত্রে যদিও থাকেন, সে যদি সরকারের ত্রুটি নিয়ে জনগণের পক্ষে কথা বলতে চান, অবশ্যই পারেন।
গত দুই সংসদে প্রধান বিরোধী দলের আসনে বসা জাতীয় পার্টি শেষ পর্যন্ত ১১ আসনে জয় পেয়েছে। আর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিকদের মধ্যে জাসদ একটি, ওয়ার্কার্স পার্টি একটি এবং এক সময় বিএনপির জোটে থাকা কল্যাণ পার্টি একটি করে আসন পেয়েছে।
এবার রেকর্ড সংখ্যক স্বতন্ত্র প্রার্থী জয় পাওয়ায় সংসদে বিরোধী দলের আসনে কারা থাকবে, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয় নির্বাচনের পর থেকে।
চুন্নু বলেন, আমাদের পার্লামেন্টারি পার্টির মিটিংয়ে স্বতন্ত্ররা মিলে যদি আমরা ২৫ জন বসতে পারি, তাহলে সেটা সম্ভব। আরও কোনো ফাঁক আছে কিনা সেটা আমরা দেখব। বিষয়টা কী হবে, এখনো সিদ্ধান্ত আমাদের হয়নি। আমরা স্পিকারের সাথে আবার বসব। তারপর আপনাদের পরিষ্কার সিদ্ধান্ত জানাতে পারব।