ইসরায়েলি হামলায়
বিগত ২৯ দিন ধরে স্বাভাবিক রাতযাপনের কথা যেন ভুলেই গেছে গাজাবাসী। আক্রমণের তীব্রতা
এত বেশি যে, বিগত দিনগুলোতে সব মিলিয়ে ৯ হাজার ৩০০ জন ফিলিস্তিন প্রাণ হারিয়েছে। আহত
হয়েছে আরও অন্তত ২৬ হাজার। এদিকে, নির্বিচারে ইসরায়েলি বোমা হামলায় প্রতিনিয়তই হতাহত
হচ্ছেন বিপুল পরিমাণ মানুষ। গাজাবাসীর অভিজ্ঞতা বলছে, চারপাশের বাতাসে কেবল বারুদ আর
রক্তের গন্ধ।
ফিলিস্তিনি
কর্তৃপক্ষের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে
৯ হাজার ২৯৯ জনে। নিহতদের মধ্যে ৯ হাজার ১৫৫ জনই গাজার এবং বাকি ১৪৪ জন ইসরায়েল অধিকৃত
ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড পশ্চিম তীরের। এ ছাড়া, ইসরায়েলি হামলায় আহত হয়েছে অন্তত ২৬ হাজার
২০০ জন। আহতদের মধ্যে ২৪ হাজার জনই গাজার অধিবাসী, বাকিরা পশ্চিম তীরের।
গাজায় ইসরায়েলি হামলার তীব্র নিয়ে কথা বলেছেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক হিন্দ খুদরী। এক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে গাজার শিফা হাসপাতালের ভয়াবহ পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, তিনি, তাঁর সহকর্মীসহ একটি এলাকায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেখানে হঠাৎ করেই ইসরায়েলি বাহিনী ড্রোন থেকে বিস্ফোরক ফেলে। ইসরায়েলি সেই হামলায় তিনি হিন্দ আহত না হলেও তাঁর এক চাচাতো বোন আহত হন। পরে তাঁকে নিয়ে সেখান থেকে তাঁরা আল-শিফা হাসপাতালে যান।
আরও পড়ুন>> ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে নিহতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়ালো
শিফা হাসপাতালের
পরিস্থিতি প্রসঙ্গে হিন্দ খুদরী বলেন, হাসপাতালটির চারদিকে কেবল মানুষের দেহের ছড়াছড়ি।
কিন্তু তাদের কোনো ধরনের সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কোনো বেড নেই, কোনো স্ট্রেচার
নেই, নেই কোনো ডাক্তার। চারদিকে কেবল রক্ত আর রক্তের গন্ধ।
এদিকে, গাজার
প্রশাসনের জনসংযোগ বিভাগের বরাত দিয়ে তুরস্কের সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে,
মাত্র ২৪ দিনে অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী ১৮ হাজার টনের বেশি বোমা ফেলেছে। গত ৩০
অক্টোবর গাজার জনসংযোগ বিভাগ এ তথ্য দেয়।
সে হিসাবে ২৪
দিনে গাজার প্রতি বর্গকিলোমিটারে গড়ে অন্তত ৫০ টন বা ৫০ হাজার কেজি বিস্ফোরক ফেলেছে
ইসরায়েল। এই পরিমাণ বিস্ফোরক দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের হিরোশিমায় ফেলা পারমাণবিক
বোমার চেয়ে অন্তত দেড় গুণ বেশি ক্ষতি করতে সক্ষম।
জনসংযোগ বিভাগের
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ২৩ থেকে ৩০ অক্টোবর ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় অন্তত ১২ হাজার
টন বোমা ফেলেছে। যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের হিরোশিমায় ফেলা পারমাণবিক বোমা
যে পরিমাণ ক্ষতিসাধনে সক্ষম, তার প্রায় সমান।