আজঃ মঙ্গলবার ০২ জুলাই 2০২4
শিরোনাম

চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেস কীভাবে কাজ করে?

প্রকাশিত:সোমবার ১৭ অক্টোবর ২০২২ | হালনাগাদ:সোমবার ১৭ অক্টোবর ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেস নিয়ে কয়েক মাস ধরে পরিকল্পনা আর আয়োজন নিয়ে আলোচনা চলছিল। বেইজিংয়ে ১৬ অক্টোবর দেশটির কমিউনিস্ট পার্টির পাঁচ বছর পর কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এটি ২০তম কংগ্রেস। ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল এই রাজনৈতিক দলটি। কয়েক দশক ধরে চীন যে অসাধারণ পরিবর্তনের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে তা সত্ত্বেও, কংগ্রেসের কোরিওগ্রাফি অনেকটাই একই রকম রয়ে গেছে। সপ্তাহব্যাপী এই সম্মেলনে সবার কথা শুনতে ২ হাজার ৩০০ প্রতিনিধি দেশের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে গ্রেট হল অব পিপলে জড়ো হয়েছেন।

সর্তকতার সঙ্গে চলছে এই আয়োজন। কমিউনিস্ট পার্টির সম্মেলনকে ঘিরে বেইজিংয়ের তিয়েনআনমেন স্কয়ারের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, পার্টির ক্ষমতাধর নেতা শি জিনপিং তৃতীয় মেয়াদে তার আসন ধরে রাখবেন। আগামী বছরের বার্ষিক অধিবেশনে, সম্ভবত মার্চ মাসে, জাতীয় আইনসভা শি জিনপিংকে চীনের প্রেসিডেন্ট হিসাবে থাকার জন্য আরও পাঁচ বছর সময় দেবে। কংগ্রেসে গুরুত্বপূর্ণ নীতিগুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে, তবে কোনও পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। তাহলে পার্টির কংগ্রেস আসলে কী করে? খুব বেশি না, সংক্ষিপ্ত উত্তর। তারা কী প্রকাশ করে তা আরও গুরুত্বপূর্ণ। এই ঘটনাগুলো এত ঘনিষ্ঠভাবে দেখার একটি কারণ হলো তারা পার্টির নেতৃত্বের বিশাল টার্নওভারকে চিহ্নিত করে।

প্রতিনিধিরা একটি নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি নির্বাচন করতে ব্যালটে ভোট দেবেন। প্রায় ৩৭০ জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, সামরিক কমান্ডার, বৃহৎ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানির কর্তা এবং অন্যান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি সংস্থা হবে এটি। শি জিনপিংয়ের সমর্থকরা এই পদগুলোর অনেকগুলো পূরণ করবে এবং কমিটিতে আধিপত্য বিস্তার করবে। কংগ্রেস শেষ হওয়ার পরের দিন রদবদল করা কমিটি-এর অর্ধেকেরও বেশি সদস্য নতুন হবেন। তারা একটি নতুন পলিটব্যুরো এবং পার্টি মিলিটারি কমিশন নির্বাচিত করবে, যা সশস্ত্র বাহিনীর জন্য নীতি নির্ধারণ করে।

বাস্তবে এসব সংস্থায় কারা আসন পাবে তা আগেই ঠিক হয়ে গেছে। শি জিনপিংকে উভয়ের প্রধান হিসাবে নতুন পাঁচ বছরের জন্য মেয়াদ দেওয়া হবে। পলিটব্যুরোর স্থায়ী কমিটিতে কে যোগ দেবেন, শীর্ষ নেতৃত্বের সংস্থা, যার এখন সাত সদস্য রয়েছে তাও তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন। পলিটব্যুরোর ২৫ জন তাকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য ৭ জন উপদেষ্টা বাছাই করবেন। যাকে বলা হয় স্ট্যান্ডিং কমিটি। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় ২০৫ সদস্যের কেন্দ্রীয় শৃঙ্খলা কমিশনও থাকে। এই কমিশন, পলিটব্যুরো ও স্ট্যান্ডিং কমিটি ১৪১ কোটি মানুষের দেশ পরিচালনা করবে আগামী পাঁচ বছর। ১৬ অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী এই সম্মেলন চলবে।

কংগ্রেস অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্র বিষয়ে দলের দীর্ঘমেয়াদী অগ্রাধিকারের সূত্রও দিতে পারে। সমাবেশের প্রথম দিনে শি জিনপিং একটি প্রতিবেদন উচ্চস্বরে পড়বেন। ২০১৭ সালে এই ভাষণে তিন ঘণ্টারও বেশি সময় নেওয়া হয়েছিল। প্রথমে তার এক দশকের ক্ষমতায় থাকা পার্টির সাফল্যের প্রশংসা করা এবং অর্থনীতি ও সম্পত্তির সংকটসহ সমস্যাগুলো তুলে ধরা হয়। বেশিরভাগই মতাদর্শের ওপর ফোকাস করা হবে এবার। অর্থনৈতিক নীতি বা জিরো-কোভিড কৌশল সম্পর্কে কিছু বিবরণ থাকবে। চীনের পর্যবেক্ষকরা শি কীসে জোর দেন তা জানার জন্য তাকিয়ে আছেন।

অতীতে শি জিনপিং দুর্নীতি ও বৈষম্যের দিকে নজর দিয়েছেন। পাঁচ বছর আগে কংগ্রেসে তিনি বৈশ্বিক বিষয়ে চীনকে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলে পশ্চিমা দেশগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। এবার তিনি উদারনৈতিক বিশ্বব্যবস্থার প্রতি চীনের চ্যালেঞ্জকে আবারও জোরালো করতে পারেন এবং আমেরিকার তাইওয়ানকে সমর্থন করার বিরুদ্ধে আরও সতর্ক করতে পারেন। এই কংগ্রেসের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হলো যে এটি একজন ব্যক্তির ক্ষমতা ও কৃতিত্ব কতটা তা প্রদর্শন করে। দলটি এরই মধ্যে শির কর্তৃত্ব বাড়ানোর জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে, যেমন তাকে নেতৃত্বের মূল হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করা এবং তার রাজনৈতিক চিন্তাধারাকে পথপ্রদর্শক আদর্শে নিয়ে যাওয়া।

প্রতিনিধিরা পার্টির চার্টারে পরিবর্তনগুলোকেও সমর্থন করতে পারেন। যেমন, শির দর্শনের নাম শি জিনপিং থট অন সোশ্যালিজম উইথ চায়নিজ ক্যারেক্টারিস্টিকস ফর এ নিউ এরা থেকে শি জিনপিং থট এ সংক্ষিপ্ত করা। এটি পার্টির প্রতিষ্ঠাতার দর্শন জাগিয়ে তুলবে, যেটি ছিল মাও সেতুং চিন্তাধারা। রাষ্ট্রীয় মিডিয়ায় শির জন্য প্রশংসার ঝড় তোলার উদ্দেশ্য হলো ক্ষেত্র তৈরি করা যে শুধু তিনিই চীনকে একটি পুনর্জীবনের দিকে নিয়ে যেতে পারেন এবং তাই তাকে অবশ্যই পার্টির নেতা থাকতে হবে।


আরও খবর



আদালতে লোহার খাঁচায় থাকা অত্যন্ত অপমানজনক: ড. ইউনূস

প্রকাশিত:বুধবার ১২ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১২ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আদালত প্রতিবেদক

Image

আদালতে শুনানি চলাকালে একজন নিরপরাধ নাগরিকের লোহার খাঁচার ভেতরে দাঁড়িয়ে থাকার বিষয়টি অত্যন্ত অপমানজনক বলে মন্তব্য করেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে সবাই মিলে একটু আওয়াজ তুলুন, যাতে বিষয়টা নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। একটা সভ্য দেশে কেন এ রকম হতে যাবে!  আদালতে শুনানিকালে কেন একজন নাগরিককে খাঁচার ভেতরে পশুর মতো দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। যেখানে এখনও বিচার শুরুই হয়নি, যেখানে অপরাধী সাব্যস্ত হওয়ার কোনো সুযোগই হয়নি। নিরপরাধ নাগরিককে কেন খাঁচার ভেতরে থাকতে হবে এ প্রশ্নটা তুললাম।

আজ বুধবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ প্রাঙ্গণে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ প্রশ্ন তোলেন।

ড. ইউনূস বলেন, আমি আগেও প্রশ্নটা তুলেছি, আবারও সবার জন্য তুলছি। আমার বিষয় না, যেকোনো আসামি; যার বিরুদ্ধে একটা করতে যাচ্ছে, তাকে খাঁচায় নিয়ে যাওয়া। আমি যতটুকু জানি, যত দিন আসামি অপরাধী প্রমাণিত না হচ্ছে, তত দিন তিনি নির্দোষ-নিরপরাধ। একজন নিরপরাধ নাগরিককে একটা লোহার খাঁচার ভেতরে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে আদালতে শুনানি চলাকালে, এটা আমার কাছে অত্যন্ত অপমানজনক। অত্যন্ত গর্হিত কাজ বলে মনে হয়েছে।

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস আরও বলেন, অনেক হয়রানির মধ্যে আছি। সেটারই অংশ, এটা চলতে থাকবে।

আজকে সারাক্ষণ খাঁচার মধ্যে ছিলাম, আমরা সবাই মিলে ছিলাম। যদিও আমাকে বলা হয়েছিল যে, আপনি থাকেন। আমি বললাম, সবাই যাচ্ছে, আমিও সঙ্গে থাকি। সারাক্ষণই খাঁচার ভেতরে ছিলাম। যোগ করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।


আরও খবর



পদ্মা সেতুর ঋণের ৭ম ও ৮ষ্ঠ কিস্তি পরিশোধ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৭ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৭ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য নেওয়া ঋণের ৭ম ও ৮ষ্ঠ কিস্তি পরিশোধ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এই দুই কিস্তি বাবদ ৩১৪ কোটি টাকার চেক হস্তান্তর করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চেক হস্তান্তর করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

৭ম ও ৮ষ্ঠ কিস্তি বাবদ ৩১৪ কোটি ৬৪ লাখ ৮৬ হাজার ৯৬৩ টাকা হস্তান্তর করা হয়েছে। পদ্মা সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩২ হাজার ৬০৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা। এ নির্মাণ ব্যয়ের প্রায় পুরো অর্থই ঋণ হিসেবে দিয়েছে অর্থ বিভাগ।

এর আগে গত ৫ এপ্রিল ১ম ও ২য় কিস্তি বাবদ মোট ৩১৬ কোটি ৯০ লাখ ৯৭ হাজার ৫০ টাকা পরিশোধ করা হয়। এরপর গত ১৯ জুন ৩য় ও ৪র্থ কিস্তির ৩১৬ কোটি ২ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩ টাকা এবং ২০২৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর ৫ম ও ৬ষ্ঠ কিস্তি বাবদ ৩১৫ কোটি ৭ লাখ ৫৩ হাজার ৪৪২ টাকা অর্থ বিভাগকে বুঝিয়ে দেয় সেতু কর্তৃপক্ষ।

স্বপ্নের এই সেতু নির্মাণে অর্থ বিভাগ ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে স্বল্প সুদে ঋণ নেওয়া হয়। শেখ হাসিনা ২০২২ সালের ২৫ জুন প্রমত্ত পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ দেশের বৃহত্তম এই সেতু উদ্বোধন করেন।


আরও খবর



আনার হত্যা: সীতাকুণ্ড পাতাল মন্দিরে ২৩ দিন আত্মগোপনে ছিল ফয়সাল-মোস্তাফিজ

প্রকাশিত:বুধবার ২৬ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৬ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যার ঘটনায় অন্যতম দুই পলাতক আসামি ফয়সাল ও মোস্তাফিজকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।

বুধবার (২৬ জুন) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত খাগড়াছড়ির পাতাল কালী মন্দিরের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় হেলিকপ্টার দিয়ে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিবি জানায়, নাম-পরিচয় গোপন করে খাগড়াছড়ির পাতাল কালীমন্দির এলাকায় সনাতন ধর্মাবলম্বী সেজে লুকিয়ে ছিলেন গ্রেপ্তার ফয়সাল ও মোস্তাফিজ। তারা পলাশ রায় ও শিমুল রায় নাম ধারণ করেছিলেন। সনাতন ধর্মাবলম্বী সেজে তারা ২৩ দিন ওই কালী মন্দিরে ছিলেন। 

গ্রেপ্তারের পর খাগড়াছড়ি থেকে দুই আসামিকে হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা হয়। রাজধানীর পূর্বাচলে হেলিকপ্টারে নেমে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার খবর পাওয়া যায়, খাগড়াছড়ির দুর্গম পাহাড়ে লুকিয়ে রয়েছেন ফয়সাল ও মোস্তাফিজ। খবর পেয়ে ডিবির একটি টিম আগেই পাহাড়ে গিয়ে অভিযান শুরু করে। পরে আজ আমরা গিয়ে হেলিকপ্টার দিয়ে সাঁড়াশি অভিযান চালাই। অজ্ঞান করার জন্য সংসদ সদস্য আনারের নাকে ক্লোরোফরম দেন ফয়সাল। আর মোস্তাফিজ আনারকে উলঙ্গ করে চেয়ারে বেঁধে রাখেন। শিমুল ভূঁইয়ার মূল দুই সহযোগী ছিলেন আজ গ্রেপ্তার ফয়সাল ও মোস্তাফিজ। 

ডিবিপ্রধান আরও বলেন, খাগড়াছড়ির পাতাল কালী মন্দির এলাকায় সনাতন ধর্মাবলম্বী সেজে পলাশ রায় ও শিমুল রায় নাম ধারণ করেন ফয়সাল ও মোস্তাফিজ। নাম-পরিচয় গোপন করে ছদ্মবেশে সেই কালী মন্দিরেই থাকতেন দুজন। তারা ২৩ দিন ওই কালী মন্দিরে ছিলেন। আনারকে হত্যার পর ১৯ মে ফয়সাল ও মোস্তাফিজ দেশে ফেরেন।

১৯ মে রাতে আক্তারুজ্জামান শাহীনের সঙ্গে কথা বলেন ফয়সাল ও মোস্তাফিজ। এরপর শাহীন তাদের মাত্র ৩০ হাজার টাকা দেন। এরপর তারা দুর্গম পাহাড়ের ওই কালী মন্দিরে চলে যান। তাদের দুজনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে আরও তথ্য-উপাত্ত বের করা হবে বলেও জানান হারুন অর রশীদ। 

হারুন বলেন, কলকাতার যে ফ্ল্যাটে এমপি আনারকে হত্যা করা হয়, সেই কিলিং মিশনে ছিলেন সাতজন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত শিমুল ভূঁইয়ার পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় হলেন ফয়সাল ও মোস্তাফিজ। হত্যাকাণ্ডে মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীনকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা এখন আমাদের মূল কাজ। এ ছাড়া এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আরও যারা জড়িত, তাদের প্রত্যেককে আমরা আইনের আওতায় আনব। বাংলাদেশ, ভারত ও নেপাল মিলিয়ে মোট নয়জন গ্রেপ্তার হলেন হত্যার ঘটনায়। 

আনার হত্যার ঘটনায় ডিবির ওপর কোনো চাপ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, না, এ পর্যন্ত কোনো চাপ নেই। যাদের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট প্রমাণ আছে, শুধু তাদেরই আমরা আইনের আওতায় আনছি। কোনো নির্দোষ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হবে না। আবার কোনো দোষী ব্যক্তিকে কেউ চাপ দিয়ে ছাড়াতে পারবে না।


আরও খবর



নারীদের জন্য জিপিএইচ ইস্পাতের ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প

প্রকাশিত:শনিবার ০৮ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৮ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
রাহুল সরকার, চট্টগ্রাম ব্যুরো

Image

জিপিএইচ ইস্পাত লিমিটেডের চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড কুমিরাস্থ প্ল্যান্টে কর্মরত নারী ও পুরুষ কর্মকর্তাদের পরিবারের নারী সদস্যদের জন্য সম্প্রতি দিনব্যাপী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

জিপিএইচ ইস্পাতের সিওও টি মোহন বাবু এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করে বলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে জিপিএইচ নারীদের জন্য এ ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করেছে।

এতে নারীদের সেবা দেন অ্যাপোলো ইমপেরিয়াল হাসপাতালের গাইনি বিভাগের চিকিৎসক ডা. সাবিনা ইয়াসমিন ও ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের ডা. অনামিকা দত্ত।  

জিপিএইচ ইস্পাতের চিফ পিপল অফিসার শারমিন সুলতান বলেন, পরিবারের নারী সদস্যরা সুস্থ থাকলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দুশ্চিন্তাহীন থাকবেন এবং দক্ষতার সঙ্গে কাজ করবেন।

জিপিএইচ ইস্পাতের মিডিয়া অ্যাডভাইজার অভীক ওসমান বলেন, মানুষের সেবায় সবসময়ই জিপিএইচ কাজ করে চলেছে। অতীতে করোনাকালীন জিপিএইচ ফ্রি অক্সিজেন সেবা ছাড়াও বর্তমানে স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য সেবায় হেলথ চেকআপ, বিশেষায়িত চিকিৎসা হেলথটক, চক্ষু শিবির, ডায়াবেটিস স্ক্রিনিং, শিশু স্বাস্থ্যসেবা ও খৎনা সম্পন্ন করেছে।

নিউজ ট্যাগ: জিপিএইচ ইস্পাত

আরও খবর



মিয়ানমার আগ্রাসন: উৎকণ্ঠা ও খাদ্য সংকটে সেন্টমার্টিনবাসী

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৩ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৩ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মোহাম্মদ ফারুক, কক্সবাজার

Image

মিয়ানমার আগ্রাসনে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে ট্রলার চলাচল বন্ধ থাকায় দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। টেকনাফ থেকে কোনো নৌযান সেন্টমার্টিনে যেতে পারছে না। সেখান থেকে আসতেও পারছে না। নৌযান দেখলেই মিয়ানমার থেকে ছুটে আসে গুলি। সাত দিন ধরে চলছে এই পরিস্থিতি। পরপর তিন দফা গুলির ঘটনার পর এমন অবস্থায় সেন্টমার্টিনের ১০ হাজারের মতো অধিবাসী খাদ্য ও নিত্যপণ্য নিয়ে সংকটে পড়েছেন। তাদের মধ্যে চরম উৎকণ্ঠাও বিরাজ করছে।

আর কয়েকদিন পরেই ঈদুল আজহা। এদিকে, টেকনাফে আটকা পড়েছেন প্রায় চার শতাধিক বাসিন্দা। এটি দ্রুত সমাধান না হলে বড় ধরনের অভাব দেখা দিতে পারে দ্বীপে। শুধু তাই নয়, যদি কোনো রোগব্যাধি হয়, তাহলে বিনা চিকিৎসায় দ্বীপেই মৃত্যুবরণ করতে হবে বাসিন্দাদের।

এদিকে, যোগাযোগ বিচ্ছিন্নের ফলে সেন্টমার্টিনে দেখা দিচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য সংকট। দ্বীপে বসবাসরত ১০ হাজার বাসিন্দার মধ্যে যারা দিনে এনে দিনে খায় বেশি সমস্যায় পড়েছেন তারাই। খাদ্য ও পণ্যবাহী বোট চলাচল করতে না পারায় সেন্টমার্টিনের দোকানগুলোতে যেমন মজুত করা খাদ্যপণ্য শেষ হতে চলেছে, তেমনি সেই সুযোগে কিছু ব্যবসায়ী পণ্যের দাম দ্বিগুণ নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। দ্রুত সমাধান না হলে দ্বীপবাসী খাদ্য, চিকিৎসাসহ অন্যান্য সমস্যায় বাড়তে পারেন বলে ধারণা স্থানীয়দের।

গত ১১ জুন টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে সাগরের ঘোলচর এলাকায় একটি স্পিডবোটকে নৌযান নিয়ে ধাওয়া করে গুলি করা হয়। মিয়ানমারের সৈন্যরাই গুলি চালিয়েছে বলে স্থানীয়দের ধারণা। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। এ বিষয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার উইংয়ের মহাপরিচালক মিয়া মো. মাইনুল কবির বলেছেন, প্রথম যেদিন এই ঘটনা ঘটে, সেদিনই আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি। ১১ জুনের ঘটনার পর কূটনৈতিক চ্যানেলে আবারও প্রতিবাদ জানাবো। তবে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে যে এখন স্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে না, সেটা তো আমরা বুঝতেই পারছি। ওই এলাকা এখন কাদের নিয়ন্ত্রণে সেটিও পরিষ্কার নয়। তবে আমাদের কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত আছে।’

সেন্টমার্টিন স্পিড বোট মালিক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম বলেন, আগের গুলির ঘটনার পর আমরা নদীতে যাইনি। প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার পর মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রাম থেকে চিকিৎসা নিয়ে ফেরত আসা অসুস্থ এক রোগীকে নিয়ে সেন্টমার্টিন যাচ্ছিল আমাদের একটি স্পিডবোট।সাগরের ঘোলচর এলাকায় পৌঁছালে মিয়ানমার সীমান্তের একটি ট্রলার থেকে ওই স্পিডবোট লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করা হয়। পরে স্পিডবোটটি কোনোরকমে সেন্টমার্টিন পৌঁছে যেতে সক্ষম হয়। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। আগে আমরা নিশ্চিত ছিলাম না, কারা এটি করছে। কিন্তু আজকে যখন ছোট ছোট নৌযান নিয়ে আমাদের স্পিডবোটে গুলি করা হয় তখন সেখানে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর জাহাজ ছিল। ফলে আমরা ধারণা করছি, জান্তার সৈন্যরাই এটা করছে।’

তিনি বলেন, ‌টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে নাফ নদীর মোহনার শেষে নাইক্ষ্যংডিয়া এলাকা অতিক্রম করার সময় মিয়ানমারের প্রান্ত থেকে বোটগুলো লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়া হচ্ছে। আমরা এখন সেন্টমার্টিনে চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করছি। কারণ, ওই এলাকায় আমাদের বিজিবি বা কোস্টগার্ডের কোনো টহল নেই। তারা উপকূলে চলে এসেছে। ফলে জান্তা সৈন্যরা চাইলে যেকোনো সময় আমাদের সেন্টমার্টিনেও চলে আসতে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। আমরা এখন খুবই নিরাপত্তাহীনতায় আছি। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দীর্ঘদিন ধরে সংঘাত চলছে। এই পরিস্থিতিতে সে দেশের সীমান্ত এলাকা থেকে বাংলাদেশের দিকে গুলি ছোঁড়া হচ্ছে। এ কারণে সাত দিন ধরে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে দ্বীপের প্রায় ১০ হাজার বাসিন্দা খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সংকটে পড়েছেন।’

সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা সাবেক মেম্বার হাবিবুর রহমান বলেন, সেন্টমার্টিনে অতিরিক্ত খাদ্য রাখার কোনো ব্যবস্থা নেই। প্রতিদিনই টেকনাফ থেকে ট্রলারে করে নানা ধরনের নিত্যপণ্য আসে। কিন্তু সাত দিন হলো কিছুই আসছে না। এখন সেন্টমার্টিনে কাঁচামাল কিছুই নেই। চাল-ডাল দিয়ে কোনোভাবে দিন চলছে। আবার যা আছে, তার দামও ব্যবসায়ীরা দ্বিগুণ-তিনগুণ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছেন। ফলে আমরা অনেক কষ্টে আছি। এভাবে আর দুই-একদিন হয়ত চলা যাবে। এরপর আমাদের না খেয়ে থাকতে হবে। আমরা প্রশাসনকে বারবার ব্যবস্থা নিতে বলছি, কিন্তু এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ আমরা দেখতে পাইনি। গত ৫ জুন টেকনাফ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষে ফেরার পথে নির্বাচন কর্মকর্তা ও ৮ জুন সেন্টমার্টিনে ইট-বালু ও খাদ্যসামগ্রী বহনের ট্রলার লক্ষ্য করে মিয়ানমার সীমান্ত থেকে গুলি বর্ষণ করা হয়েছিল। সর্বশেষ মঙ্গলবার আবারও গুলি চালানো হয়।’

সেন্টমার্টিন সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি রশিদ আহমদ বলেন, আমাদের বিকল্প রুট ব্যবহারের কথা বলা হচ্ছে। কেউ কেউ ইনানী থেকে যাওয়ার কথাও বলছেন। কিন্তু এভাবে তো সেখানে পৌঁছানো কঠিন। সাগরের ঢেউ এবং পানি বেড়ে যাওয়ায় ওই রুটটি ঝুঁকিপূর্ণ। খবরচও অনেক বেশি হবে। আর আমরা তো মিয়ানমারে যাচ্ছি না। তাহলে আমাদের দেশের সীমান্তের মধ্যে ঢুকে তারা কেন গুলি করবে? সরকারের পক্ষ থেকে তো এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। তা নাহলে সেন্টমার্টিনের বাসিন্দারা সংকটে পড়বেন।’

দ্বীপের মুদির দোকানি আমিনুল ইসলাম বলেন, ট্রলার চলাচল বন্ধ থাকার কারণে টেকনাফ থেকে কোনো ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য আনতে পারেনি। এর ফলে দোকানে থাকা সবকিছু শেষের পথে। শুধু চাল ছাড়া কোনো মালামাল নেই। এভাবে চলতে থাকলে দ্বীপের মানুষদের না খেয়ে থাকতে হবে।’

সেন্টমার্টিন দ্বীপ ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, বিষয়টি এখনও সুরাহা না হওয়ায় দ্বীপে খাদ্যপণ্যের অভাব দেখা দিয়েছে। এটি দ্রুত সমাধান না হলে বড় ধরনের অভাব দেখা দিতে পারে দ্বীপে। শুধু তাই নয়, আমাদের যদি কোনো রোগব্যাধি হয়, তাহলে বিনাচিকিৎসায় আমাদের এখানে মৃত্যুবরণ করতে হবে। এই পরিস্থিতি তো দিনের পর দিন চলতে পারে না। আমি নিজে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। বিকালে হেলিকপ্টার যোগে বিজিবি মহাপরিচালক সেন্টমার্টিন দ্বীপে এসেছিলেন। কিন্ত এ ব্যাপারে কী ব্যাবস্থা নেওয়া হয়েছে তা জানতে পারিনি।’

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী বলেন, মিয়ানমার থেকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে স্পিডবোট ও ট্রলারে গুলির ঘটনায় নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে আপৎকালীন রুট হিসেবে শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিমে জেটি ঘাট চালু করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আমি নিজে নৌযান মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। ৯ জুন কক্সবাজারের ডিসি অফিসেও বৈঠক হয়েছে। আমরা নৌযান মালিকদের ডেকে বলেছি, বিকল্প রুট দিয়ে আপাতত খাদ্য পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে।’


আরও খবর