আজঃ রবিবার ১৯ মে ২০২৪
শিরোনাম

চীনের অর্থনীতি চাঙ্গা হলেও শঙ্কা বেড়েছে বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২০ ডিসেম্বর ২০22 | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২০ ডিসেম্বর ২০22 | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

জিরো কোভিড নীতি থেকে চীনের ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চাঙ্গা করলেও বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির শঙ্কা বাড়িয়েছে। যদিও সম্প্রতি বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি স্বাভাবিক হওয়ার পথে এগোচ্ছিল। এ রকম দ্বিমুখী সংকট উদ্বেগ বাড়িয়েছে চীনসহ অন্যান্য বৃহৎ অর্থনীতির।

কোভিড-১৯ পরিস্থিতি থেকে বিশ্বের অন্যান্য অংশের তুলনায় স্বাভাবিক অবস্থায় আসেনি চীন। বরং ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব ঘিরে এখনো লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে দেশটি। তবে চীন সরকারের জিরো কোভিড নীতির বিপরীতে জনসাধারণের প্রতিবাদের পর উল্লেখযোগ্যভাবে বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়, যা পুনরায় বহির্বিশ্বের সঙ্গে তাদের পুরোপুরি সংযোগ স্থাপনের ইঙ্গিত দেয়। প্রায় তিন বছর ধরে চীন সরকারের জিরো কোভিড নীতির প্রয়োগ বিশ্বজুড়েই ব্যাপক অর্থনৈতিক সংকট তৈরি করেছে। যেমন তা জ্বালানি তেল, গ্যাস ও কাঁচামালের চাহিদার লাগাম টেনে ধরে। কারণ চীন এ জাতীয় পণ্যের অন্যতম বৃহত্তম আমদানিকারক।

তবে এখন পর্যন্ত অনেক কিছুই অনিশ্চিত। কেননা দেশটি এখনো নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি থেকে পুরোপুরি বের হতে পারেনি বরং ক্রমবর্ধমান সংক্রমণের মুখোমুখি। বিশ্লেষকরা বলছেন, লকডাউন তুলে নেয়া এবং ব্যাপক হারে করোনাভাইরাস পরীক্ষার কর্মসূচিগুলো বাতিলের ফলে চীনে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব বাড়তে পারে। তৃতীয় প্রান্তিকে চীনের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ। যা দ্বিতীয় প্রান্তিকের শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধির তুলনায় বেশি। তবে কেবল কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নয়, দেশটির অর্থনীতিতে আবাসন খাতের বেহাল দশারও ভূমিকা রয়েছে।

তাছাড়া ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের ফলে বৈশ্বিক পণ্যের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়, দাম বেড়ে যায়। যা খানিকটা শান্ত হয়েছে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয়। এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল কমোডিটি ইনসাইটস রিপোর্ট অনুসারে, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির ফলে ২০২৩ সালে চীনের মোট জ্বালানি চাহিদা প্রতিদিন প্রায় ৩৩ লাখ ব্যারেল তেলের সমপরিমাণ হতে পারে। যা আগামী বছরের সামগ্রিক বৈশ্বিক চাহিদার ৪৭ শতাংশের প্রবৃদ্ধির প্রতিনিধিত্ব করবে এবং পণ্যের দামকে বাড়িয়ে দেবে বলে মনে করছেন বাজার তথ্য ও জ্বালানি বিশ্লেষক ড্যান ক্লেইন।

ক্লেইন আরো বলেন, চীনের কোভিড নীতি ২০২৩ সালে পণ্য ও জ্বালানির বৈশ্বিক চাহিদা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও মৌলিক অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে। ২০২২ সালে লকডাউনের কারণে চীনের বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা কমে যায়। বিশেষ করে ইউরোপ যখন রাশিয়ার ওপর তাদের জ্বালানিনির্ভরতা কাটাতে মরিয়া হয়ে অন্য উপায় খুঁজছিল তখন তেল, গ্যাস এবং কয়লার বাজারে চীনের চাহিদা হ্রাসের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ সুরক্ষা কবচ হিসেবে কাজ করে। তবে চলতি বছর টিকা ও লকডাউন নিয়ে জনগণের ক্রমবর্ধমান অসন্তোষের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৩ সালেও চীন সরকার কোভিড নিয়ন্ত্রণ নীতির ক্ষেত্রে শিথিলতা বজায় রাখবে বলে মনে করছেন তিনি। ফলে দেশটিতে জীবাশ্ম জ্বালানির আমদানি পুনরায় বাড়বে বলে আশা করা যায়। আমেরিকা-ফ্রান্সভিত্তিক বৈশ্বিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান নাটিক্সিসের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ গ্যারি এনজির প্রত্যাশা একই রকম। চীনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুরোপুরি চালু হলে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ভ্রমণ বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছেন তিনি। এটি হবে মূলত একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রত্যাবর্তন। নিম্নমুখী প্রবণতার মধ্যে বর্তমানের ৮০ ডলারের তুলনায় যা ২০২৩ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে তেলের দামকে ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলার পর্যন্ত ঠেলে দিতে পারে।

অর্থনীতিবিদ গ্যারি এনজি নিক্কেই এশিয়াকে বলেন, চীনের অর্থনীতি যদি পুরোপুরি খুলে যায় তাহলে তা নিশ্চিতভাবে বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির ওপর প্রভাব ফেলবে। এ সম্পর্কে ভন্টোবেল অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের নিউইয়র্কভিত্তিক পোর্টফোলিও ম্যানেজার জিন ঝাং বলেন, জ্বালানি উৎসের বৈচিত্র্য এবং খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য চীনের প্রচেষ্টা দেশটির অর্থনীতি পুরোপুরি খুলে যাওয়ার পর মূল্যস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণসাধ্য রাখতে সহায়তা করতে পারে। তবে তিনি চীনের সম্ভাব্য মূল্যস্ফীতি নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নন, কারণ বেইজিং যথেষ্ট সতর্কতার সঙ্গে বিদ্যমান পরিস্থিতির মোকাবেলা করছে বলে মনে করেন তিনি।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্য সফর করেন। এ সফরকে জ্বালানি উৎসের বৈচিত্র্যকরণ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া বৈদ্যুতিক যানবাহন শিল্প তৈরির দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে দেশটি। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে যে তারা সৌদি আরবের সঙ্গে জ্বালানি নীতি ও অনুসন্ধান বিষয়ক সমন্বয় জোরদার করতে ইচ্ছুক। জিন ঝাং তাই মনে করছেন, মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতি অবশ্যই নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে।


আরও খবর



ট্রাম্পকে জরিমানা, জেলে পাঠানোর হুমকি

প্রকাশিত:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

আদালত অবমাননার দায়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ৯ হাজার মার্কিন ডলার জরিমানা করা হয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ১০ লাখ টাকা। এমনকি এই জরিমানা করার পরও তিনি আদালত অবমাননা থেকে বিরত না থাকলে কারাগারে পাঠানোর হুমকি দিয়েছেন বিচারক।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার পর্নো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে বিপুল পরিমাণ ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে করা মামলার বিচারকাজের সময় এ নির্দেশ দেন বিচারক।

বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানায়- এক লিখিত আদেশে বিচারক জুয়ান মার্চান বলেছেন, এই জরিমানা ট্রাম্পকে আদালতের আদেশ মান্য করাতে যথেষ্ট না-ও হতে পারে। তবে এর চেয়ে বেশি জরিমানা করার ক্ষমতা আমার নেই।’

তবে তিনি এ-ও বলেছেন, ট্রাম্প যদি ইচ্ছে করে আদেশ অমান্য করেন তাহলে তা আদালত সহ্য করবেন না। প্রয়োজনে হলে এবং আদালত সঠিক মনে করলে তাকে কারাগারে পাঠানোর সাজা দেওয়া হতে পারে।’

সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ২০০৬ সালে স্টর্মি ড্যানিয়েলস নামে এক পর্ন স্টারের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক গড়েন। পরে ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে স্টর্মির মুখ বন্ধ রাখতে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার ঘুষ দেওয়া হয়। তবে এ ঘুষ দেওয়ার কথা মার্কিন নির্বাচন কমিশনের কাছে চেপে যান ট্রাম্প। সেবার নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে পারলেও এবার ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই এসব অভিযোগে দায়ের করা মামলার বিচারকাজ শুরু হয়েছে।

মূলত এ মামলার সাক্ষী ও মামলা সম্পর্কিত ব্যক্তিদের ট্রাম্পের হাত থেকে রক্ষা করতেই এ গ্যাগ অর্ডার জারি করেছেন বিচারক জুয়ান মার্চান। একই সঙ্গে তাদের উদ্দেশ্য করে দেওয়া বেশ কয়েকটি বিবৃতি ট্রাম্পকে ট্রুথ সোশ্যাল ও নির্বাচনী প্রচারাভিযানের ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।


আরও খবর



নরসিংদীতে বাস-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে নিহত দুই

প্রকাশিত:শনিবার ১১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১১ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নরসিংদী প্রতিনিধি

Image

নরসিংদীতে বাস-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও তিনজন। শনিবার (১১ মে) ভোরে ড্রিম হলিডে পার্কের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- মাইক্রোবাস চালক সালাম (৪৩) ও যাত্রী পিয়াল (২৬)। আহতরা হলেন, আকিব(২৬), সাকিব (২৬) ও অমিত (২৭)। তারা প্রত্যেকেই মাইক্রোবাসের যাত্রী।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঢাকা থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা একটি মাইক্রোবাস ড্রিম হলিডে পার্কের সামনে এলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ২ জন মারা যান।

ইটাখোলা হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইলিয়াছ আহমেদ বলেন, ঘাতক বাসটি পালিয়ে যাওয়ার সময় ভুলতা এলাকা থেকে আটক করেছে হাইওয়ে থানা পুলিশ। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।


আরও খবর



দেশের সর্বোচ্চ আকারের বাজেট ঘোষণা হবে ৬ জুন

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

আগামী ৬ জুন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব সংসদে পেশ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এদিন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জাতীয় বাজেট উত্থাপন করবেন।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে জানান, আগামী ৬ জুন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট উত্থাপনের দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজেট পেশের দিনক্ষণ ঠিক করে ইতোমধ্যে কর্মকর্তাদের দায়িত্ব বণ্টন করে দেওয়া হয়েছে।

অর্থ বিভাগ সূত্র জানায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট হবে প্রায় ৮ লাখ কোটি টাকার, যা হবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ আকারের বাজেট।

এবারের বাজেটে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পচ্ছে বলে ওই কর্মকর্তা জানান।


আরও খবর



চুয়াডাঙ্গা ও পাবনায় হিটস্ট্রোকে দুজনের মৃত্যু

প্রকাশিত:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | হালনাগাদ:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

তীব্র দাবদাহ পুড়ছে সারাদেশ। অসহনীয় গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। এ অবস্থায় চুয়াডাঙ্গা ও পাবনায় হিটস্ট্রোকে দুজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

আজ শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকাল ৩টায় চুয়াডাঙ্গা জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বলেও দাবি করছে দপ্তরটি।

এদিকে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার ঠাকুরপুর গ্রামে মাঠে কাজ করার সময় হিট স্ট্রোকে জাকির হোসেন (৩৩) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। মৃত জাকির হোসেন দামুড়হুদার কুড়ালগাছি ইউনিয়নের ঠাকুরপুর গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে। তিনি ঠাকুরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী ছিলেন।

তাছাড়া আজ শনিবার পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪১.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা পাবনা জেলায় চলতি মৌসুমের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এদিন তীব্র দাবদাহে হিট স্ট্রোক করে মারা গেছেন একজন। শনিবার দুপুরে পাবনা শহরের রুপকথা রোডে একটি চায়ের দোকানে চা খাওয়ার সময় হিট স্ট্রোক করেন তিনি। এসময় আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত সুকুমার দাস (৬০) পাবনার শহরের শালগাড়িয়া জাকিরের মোড়ের বাসিন্দা।


আরও খবর
বৃষ্টির পর আসছে হিট ওয়েভ

শনিবার ১৮ মে ২০২৪




মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত হলে প্রভাব পড়বে বাংলাদেশে: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত:বুধবার ০৮ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৮ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত হলে তার প্রভাব বাংলাদেশে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে সরকার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টির যে আভাস দেখা যাচ্ছে, তা সারাবিশ্বের পাশাপাশি বাংলাদেশের সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা যায়। দেশের অর্থনীতিতে এই সংঘাতের কিছুটা প্রভাব আসতে পারে। তবে সরকার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

বুধবার (৮ মে) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুলের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ববাজারের অস্থিতিশীলতা, বাজার ব্যবস্থাপনায় অসামঞ্জস্যতা এবং বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সূত্রে দেশের মূল্যস্ফীতি কিছুটা বাড়ার শঙ্কা থাকে। এছাড়া, সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে পণ্য সরবরাহের সাপ্লাই-চেইন ক্ষতিগ্রস্ত হলে মূলত ইরান বা পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে রপ্তানি সংশ্লিষ্ট পরিবহন খরচ বাড়তে পারে। এতে পণ্য তৈরি ও সরবরাহ ব্যয় বাড়ায় রপ্তানিকারকরা কঠিন প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে পারেন।

মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতের আশঙ্কার বিষয়ে দেশের সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়ার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্দেশ দিয়েছি যাতে প্রত্যেকে মধ্যপ্রাচ্যের চলমান ঘটনাপ্রবাহের ওপর নজর রাখে এবং এ বিষয়ে নিজ নিজ করণীয় নির্ধারণ করে। সংঘাত দীর্ঘ হলে কোন কোন সেক্টরে প্রভাব পড়তে পারে তা বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি।

তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের যে কোনো সংঘাত বা সংঘাতের খবর জ্বালানি তেলের বাজারকে প্রভাবিত করে। এতে পণ্যের জাহাজ ভাড়া বাড়ে। যা আমদানি ব্যয়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। সার আমদানি ব্যয়ে প্রভাব পড়ে। এতে বিকল্প উৎস হিসেবে চীন, মরক্কো, তিউনেশিয়া, কানাডা, রাশিয়া ইত্যাদি দেশের সঙ্গে বিদ্যমান সম্পর্ক আরও জোরদার করা হবে।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের সংকট আরও ঘনীভূত ও দীর্ঘায়িত হলে তা বাংলাদেশের ওপর অর্থনৈতিক প্রভাব ফেলতে পারে। সরকার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে টিসিবির কার্যক্রম সম্প্রসারণ প্রশ্নে ড. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুলের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, টিসিবিতে যে লোকবল আছে সেটা দিয়ে আমরা মানুষের যে সেবা করে যাচ্ছি সেটাই যথেষ্ট। আর সাধারণ মানুষের যাতে কষ্ট না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। হ্যাঁ, দ্রব্যমূল্য বেড়েছে। যার প্রভাব আছে। বিশেষ করে যারা সীমিত আয়ের তাদের জন্য কষ্ট হচ্ছে। তবে গ্রামে যারা নিজেরা উৎপাদন করতে পারেন বা করছেন তাদের জন্য খুব একটা কষ্ট নেই। হাহাকারও নেই। তারপরও আমাদের সবসময় প্রচেষ্টা যে দ্রব্যমূল্য যেন নিয়ন্ত্রণে থাকে। এ কারণে যথাযথভাবে যে যে পণ্যের প্রয়োজন সেটা দেশে যেমন উৎপাদনের পদক্ষেপ নিয়েছি, পাশাপাশি আমদানিও করে যাচ্ছি। তাতে যত টাকাই লাগুক না কেন, আমরা কিন্তু খরচ করে যাচ্ছি। যার ফলে আমাদের রিজার্ভেও চাপ পড়ছে। মানুষের কল্যাণ আমাদের সব থেকে বড় কথা, সেদিকে লক্ষ্য রাখছি।

সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টায় সারাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে এবং জনসাধারণ উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার সুফল ভোগ করতে পারছে।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আবুল কালামের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের মূল্য স্বাভাবিক রাখতে সব ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। ভোগ্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিকে অনেকাংশে সংযত করতে পেরেছি।

তিনি বলেন, বিশ্ববাজারের কয়েকটি পণ্য যেমন জ্বালানি তেল, ভোজ্য তেল, গম, সারসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য, ভোগ্যপণ্য ও শিল্পের কাঁচামালের মূল্য বাড়ায় আমাদের দেশে আমদানিজনিত মূল্যস্ফীতির চাপ অনুভূত হচ্ছে। পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘাতের ফলে সংকট ঘনীভূত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে এ পরিস্থিতেও আমরা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও জনগণের ওপর এর প্রভাব প্রশমনে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। টাকার বিনিময় হারের সাম্প্রতিক পতন অভ্যন্তরীণ মূল্যস্ফীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। এক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারে স্থিতিশীলতা আনতে শিগগির ক্রলিং পেগ ভিত্তিক মুদ্রা বিনিময় নীতি গ্রহণ করা হবে। নির্ধারিত করিডোরভিত্তিক এ ব্যবস্থা বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারের অস্বাভাবিক উত্থান-পতন রোধ করবে বলে আশা করা যায়। ফলে এটি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক হবে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, মূল্যস্ফীতির ওপর বাহ্যিক প্রভাব কমিয়ে আনার লক্ষ্যে বিলাস দ্রব্য বা অপেক্ষাকৃত কম প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যে এলসি সহজ করা হয়েছে।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আবদুর রউফের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বীর মুক্তিযোদ্ধা সম্মানি ভাতা বৃদ্ধির বিষয়টি পর্যালোচনাধীন।

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে পদক্ষেপের বিষয়ে জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নুর প্রশ্নের জবাবে সরকার প্রধান বলেন, আমাদের ট্রাফিক পুলিশ দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে। তাদের ঈদ বা ঝড়-বৃষ্টি-রোদ বলে কিছু নেই। তারা তাদের কর্তব্য পালন করে যান। কিন্তু মানুষের সচেতনতা না এলে কী করবেন? হেলপার যদি গাড়ি চালায় বা যার লাইসেন্স নেই সে কখন যে কোন গাড়িতে বসে চালাতে শুরু করে এটা তো বোঝাও দুষ্কর। আর এভাবে গাড়ি চালাতে গিয়েই দুর্ঘটনা ঘটে। এরা নিজেও মরে, যাত্রীদেরও মারে।

দেশে ব্যক্তিগত গাড়ি বৃদ্ধি পেয়েছে এমনটা জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে। আমরাও গাড়ি কেনার সুযোগ দিয়েছি মানুষকে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও সুযোগ দিয়েছি। এখন আমাদের গাড়ির সংখ্যা এত বেশি কিন্তু সেই তুলনায় ড্রাইভারের সংখ্যা খুব কম। আমরা চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও নিচ্ছি। এখন শুধু হাতে কলমেই ট্রেনিং নয়, একেবারে কম্পিউটারাইজড। এটা ডিজিটাল সিস্টেমে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে যাতে লাইসেন্স দেওয়া হয় সেই পদক্ষেপ নিচ্ছি। এই প্রশিক্ষণটা নেওয়া.. আর যাদের ভারী গাড়ি চালানোর কোনো লাইসেন্স নেই তারা যেন সেটা চালাতে না যান। এটা করতে গেলে তা হবে আত্মঘাতী। এই আত্মঘাতী ব্যবস্থা থেকে মানুষকে বিরত রাখতে হবে। এ ব্যাপারে সবাই সচেতন ও স্বোচ্চার হলে এটা অনেকটা কমবে। তারপরও বলবো দুর্ঘটনা দুর্ঘটনাই। এটা আমাদের দেশ বলে নয়, সারা বিশ্বে অন্য দেশে যান কী পরিমাণ মানুষ দুর্ঘটনায় মারা যায়? এটা খুবই দুঃখজনক। আমরা দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা সুনির্দিষ্ট করে দুর্ঘটনামুক্ত করার পদক্ষেপ নিয়েছি। যার জন্য অনেক এলাকায় দুর্ঘটনা হচ্ছে না। এই ড্রাইভারের ব্যাপারটা নিয়ে সমস্যা।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, চালকদের দীর্ঘ সময় যাতে একটানা গাড়ি চালাতে না হয়- এজন্য আমরা বিশ্রাম করার ব্যবস্থা নিচ্ছি। এজন্য অনেকগুলো বিশ্রামাগার তৈরি করা হচ্ছে। এটা হলে চালকরা কিছু স্বস্তি পাবেন। আর সবাইকে বলবো আপনারা চালকদের দিয়ে গাড়ি চালান। সে সময়মতো গেলো কি না, বিশ্রাম নিতে পারলো কি না? অনেকে সেটা করেন না। আপনারা গাড়ি চালাতে বলে দেন। গাড়ি চলতেই থাকে। আপনি পার্টি করে আসেন, দাওয়াত খেয়ে আসেন কিন্তু ড্রাইভার খেলো কি না সে খবরটা রাখেন না।

আরও খবর