ফরিদপুরের বোয়ালমারীর রূপাপাত ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মোল্লা ওরফে সোনা মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরের বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোশারেফ হোসাইন চেয়ারম্যানকে বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের ইউনিয়ন পরিষদ-১ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমীন প্রধান সই করা প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি জানানো হয়।
গত ১৫ জুন স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, বোয়ালমারী উপজেলাধীন রূপাপাত ইউপির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মোল্লার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইন-২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় ২০১৯ সালের ৮ সেপ্টেম্বর দুদক মামলা দায়ের করে। আদালত আমলে নিয়ে বিচারকার্য শুরু করায় স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৪(১) ধারা অনুযায়ী মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করেন। মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) আদালত কর্তৃক গৃহীত হওয়ায় তার দ্বারা ইউপির ক্ষমতা প্রয়োগ প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণে সমীচীন নয় মর্মে সরকার মনে করে। চেয়ারম্যানের সংঘটিত অপরাধমূলক কার্যক্রম ইউপিসহ জনস্বার্থের পরিপন্থী বিবেচনায় স্থানীয় সরকার (ইউপি) আইন ২০০৯ এর ৩৪(১) ধারা অনুযায়ী তাকে স্বীয় পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
বোয়ালমারী ইউএনও মোশারেফ হোসাইন বলেন, সাময়িক বরখাস্তের চিঠি বুধবার (২১ জুন) হাতে পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তাকে জবাবও দিতে বলা হয়েছে।
ফরিদপুরের দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক রেজাউল করিম আজকের দর্পণকে বলেন, ২০১৯ সালে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলার চার্জশিট ২০২৩ সালে আদালতে দাখিল করা হয়। অতঃপর চার্জশিট আদালতে গৃহীত হওয়ার পর তাকে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে সাময়িক বরখাস্তের চিঠি দিয়েছে বলে তিনি জানান।
বরখাস্তকৃত চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মোল্লা বলেন, আমি বরখাস্তের কোনো কাগজপত্র এখনও হাতে পাইনি। দুদকের একটি মামলা চলমান। কিন্তু ওই মামলার রায় হয়নি। রায় দেওয়ার আগেই আমাকে বরখাস্ত করা হলে আমি আইনি ব্যবস্থা নেব।
স্থানীয় সূত্র মতে, বোয়ালমারি উপজেলার রূপাপাত ইউনিয়নের কদমী গ্রামের আবুল হোসেন মোল্লার ছেলে মিজানুর রহমান মোল্লা ওরফে সোনা মোল্লা। স্কুল জীবনের গন্ডি পেরিয়ে লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে এলাকায় নানা ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ড জরিয়ে পরে। যে কারণে জনগণ ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠায় এলাকা ছেড়ে পালিয়ে ঢাকায় চলে যান তিনি। সম্প্রতি এলাকায় এসে গরুর ফার্ম, কৃষি খামার, মাছের খামার, অ্যাপার্টম্যান্ট ব্যবসা, মার্কেটসহ তিন বছরের ব্যবধানে রহস্যজনকভাবে সম্পদ গড়ে তোলেন সোনা মোল্লা। সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশন দেশের যেসকল মাদকের কারবারীর নামের তালিকা প্রণয়ন করে ওই তালিকায় সোনা মোল্লার নাম উঠে আসে। এ খবরে তার নিজের এলাকার জনমনে ব্যাপক কৌতুহলের সৃষ্ট হয় চেয়ারম্যান সোনা মোল্লাকে নিয়ে।