গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের ছয় কারারক্ষীকে বদলির পর এবার জেল সুপার ওবায়দুর রহমানকে বদলি করা হয়েছে। তাকে রাজশাহী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রধান প্রশিক্ষক হিসেবে পাঠানো হয়েছে। এর আগে দায়িত্বে অবহেলার কারণে ৩০ জুলাই কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের ছয় কারারক্ষীকে দেশের বিভিন্ন কারাগারে বদলি করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের (কারা-১ শাখা) উপসচিব তাহনিয়া চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ওই বদলির আদেশ দেওয়া হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কাশিমপুর কারাগারের এক কর্মকর্তা বলেন, ওবায়দুর রহমান মহিলা কারাগারের জেল সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করা অবস্থায় বন্দি নির্যাতনসহ নানা অনিয়ম হয়েছে। এসব বিষয় পাপিয়া-কাণ্ডের পরই জানাজানি হচ্ছে। তিনি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে সঠিক দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। এ কারণে তাকে বদলি করা হয়েছে।
কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, মহিলা কারাগারের কারারক্ষীর দায়িত্ব পালনকালে দায়িত্বে অবহেলার কারণে ৩০ জুলাই পাঠানো একটি আদেশে একযোগে ছয় কারারক্ষীকে তাৎক্ষণিক বদলি করা হয়েছে। বদলি করা ব্যক্তিদের মধ্যে কারারক্ষী আলেয়া চৌধুরীকে লক্ষ্মীপুর, শাম্মী আক্তারকে সুনামগঞ্জ, মোছা. সোহেলা আক্তারকে ঝালকাঠি, সেলিনা আক্তারকে শেরপুর, ঝর্ণা আক্তারকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও লাকী আক্তারকে কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাদের তাৎক্ষণিক কর্মমুক্তির (স্ট্যান্ড রিলিজ) আদেশে কারা মহাপরিদর্শকের পক্ষে স্বাক্ষর করেন অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল শেখ সুজাউর রহমান।
বদলির বিষয়ে জানতে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার ফারহানা আক্তারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি সাড়া দেননি।
কাশিমপুর মহিলা কারগারের ডেপুটি জেলার জান্নাতুন তায়্যিবা বলেন, ‘বদলির বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। এটি জেলারের কাছ থেকে জেনে নিন। আমাদের এখানে তদন্ত কর্মকর্তা এসেছেন আমরা সবাই ব্যস্ত রয়েছি।’
আদালতে নথি চুরির অভিযোগে এক শিক্ষানবিশ আইনজীবীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে কাশিমপুর মহিলা কারাগারে পাঠায়। কারাগারে থাকা অবস্থায় তাকে নির্যাতন করা হয়। গত ২৫ জুন ওই নারী আইনজীবীর ভাই গাজীপুর জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কাছে লিখিত অভিযোগ করে তার বোনকে নির্যাতনের ঘটনার বিচার দাবি করেন।
এই অভিযোগের মাধ্যমে শামীমা নূরের নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। ওই ঘটনার পর পাপিয়াকে কুমিল্লা কারাগারে পাঠানো হয়। এ ছাড়া ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মহিলা কারাগারের মেট্রন ফাতেমাকে প্রত্যাহার করা হয়। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করার সুপারিশ করে গঠিত তদন্ত কমিটি।