আজঃ বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
শিরোনাম

একুশ বছরেও সংস্কার হয়নি পরৈকোড়া ইউনিয়নের সংযোগ সড়ক

প্রকাশিত:রবিবার ২৮ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ মে ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
মো.আমজাদ হোসেন, আনোয়ারা

Image

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার পরৈকোড়া ইউনিয়নের কৈখাইন চামুদরিয়া শাহ্ আলী রজা (রহঃ) সংযোগ সড়কের ২১ বছরও হয়নি সংস্কার। এতে কাদাপানি জমে দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সংস্কার না করায় সড়কটিতে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

সড়কটির দুরবস্থার কারণে প্রায় এক কিলোমিটারের এ সড়কে ওষখাইন শাহ্ আলী রজা (রহঃ)আলিম মাদ্রাসা, ওষখাইন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাহাতা পাঠনীকোঠা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় আলাদা হয়ে গেছে ইটের খোয়া। কোথাও কোথাও রাস্তার দুপাশ থেকে ভেঙে সামন্য চান্দি টিকলেও বেশির ভাগ জায়গায় পুরো ইট উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় খানাখন্দ। একদিকে সামান্য বৃষ্টি হলেই এসব খানাখন্দে পানি জমে ছোটখাটো ডোবার রূপ ধারণ করে। অপরদিকে রৌদ্রজ্জ্বল দিনে এসব খানাখন্দ পথচারিদের দুর্ঘটনার ফাঁদ হয়ে ওঠে।

শিক্ষার্থীরা জানান, গত এপ্রিল মাসে বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর থেকে সড়কটির অবস্থা খুবই খারাপ। সড়ক জুড়ে কাদাপানি আর বিভিন্ন অংশ গর্তে ভরে গেছে। ওই অংশ এখন একেবারেই যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এছাড়াও বৃষ্টি হলেই হাঁটু সমান কাঁদা-পানির সৃষ্টি হয়। বৃষ্টির পানি ও মাটি মিশে কাদায় একাকার হয়ে যায় পুরো রাস্তা। এতে বিপাকে পড়েন ওই এলাকার শত শত মানুষ।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় ওই সড়কটির অনেক স্থানে ইট উঠে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তার ইট বালি আলাদা হয়ে আগের কাঁচা রাস্তার মাটিও বের হয়ে গেছে। বিভিন্ন স্থানে সড়কের ইটের খোয়া বের হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। একটু বৃষ্টি হলে এ সব গর্তে কাঁদাপানি জমে। বিশেষ করে বৃষ্টি- কাদার দিনে জুতা স্যান্ডেল হাতে নিয়ে এক কিলোমিটার কাদা মাড়িয়ে যাতায়াত করতে হয়। দীর্ঘ ২১বছর পর থেকে আর কোনোদিন হয়নি সড়ক সংস্কারের কাজ। আর কত কাল এ কষ্ট করতে বছরের প্রায় ৫/৬ মাস ভোগান্তির শিকার হতে হয় গ্রামবাসীদের। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে এ রাস্তা দিয়ে চলতে গিয়ে সীমাহীন কষ্ট পোহাতে হয় তাদের। এই এলাকার মানুষের আতঙ্ক ও ভয়ের আরেক নাম হবে কে জানে বৃষ্টি। বৃষ্টি হলেই রাস্তায় জমে হাঁটু সমান কাদা।

কাদার জন্য এ রাস্তায় কোনো অ্যাম্বুলেন্স, মাইক্রোবাস, ভ্যান-রিকশা ঢোকে না। মোটরসাইকেল, বাইসাইকেলে তো দূরে থাক, খালি পায়ে হেঁটে চলাচল করাও দায়। বৃষ্টির দিনে গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনো যানবাহন ও অ্যাম্বুলেন্সও এখানে ঢুকতে পারে না। অনেক সময় কেউ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে কাঁধে করে কর্দমাক্ত রাস্তা পার করা হয় বলেও স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান।

স্থানীয় বাসিন্দা জিকু বড়ূয়া বলেন, আমাদের দুঃখ-কষ্ট, দুর্ভোগের কথা কেউ শুনে না। আমাদের ভোগান্তির কথা বলে বোঝানো যাবে না। নিজ চোখে দেখতে হবে। আমরা ঠিকমতো হাটবাজারে যেতে পারি না। রাস্তার বেহাল দশার কারণে কৃষকরা সময়মতো পণ্য বাজারজাত করতে পারেন না। ফলে ফসলের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে কি করে চলাচল করব আমরা কিছুই বুঝেতে পারি না। জনপ্রতিনিধিদের কাছে অনুরোধ আমাদের এই রাস্তার দিকে একটু নজর দেয়ার জন্য।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল হক চৌধুরী বাবুল বলেন, রাস্তাটি দীর্ঘ দিন ধরে জরাজীর্ণ খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। যার কারণে যাতায়াতে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। সড়কটি টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আশা করি খুব শীগ্রই কাজ শুরু করা হবে।


আরও খবর



রমজানে স্কুল খোলা থাকবে : আপিল বিভাগ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১২ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১২ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আদালত প্রতিবেদক

Image

রোজায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ফলে স্কুল খোলাই থাকছে।

মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি শুরু করেন আইনজীবীরা।

আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এ এম) আমিন উদ্দিন। অন্যদিকে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ কে এম ফয়েজ।

গত ১০ মার্চ পবিত্র রমজানে বিদ্যালয় খোলা রাখার সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ পরের দিন সোমবার (১১ মার্চ) স্থগিত হয়নি। হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন। তারই ধারাবাহিকতায় আজ সেটি শুনানি শুরু হয়।


আরও খবর



পহেলা বৈশাখে ঢাবিতে মানতে হবে যেসব নির্দেশনা

প্রকাশিত:রবিবার ২৪ মার্চ 20২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৪ মার্চ 20২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

বাংলা নববর্ষ-১৪৩১ সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আগমনকারীদের জন্য বেশকিছু নির্দেশনা দিয়েছে ঢাবি কর্তৃপক্ষ।

সভায় জানানো হয়, আগামী ১৪ এপ্রিল উদযাপিত হবে বাংলা নববর্ষ-১৪৩১ এর প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ। সেদিন সকাল ৯টায় চারুকলা অনুষদের মঙ্গল শোভাযাত্রা দিয়ে শুরু হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্ষবরণের অনুষ্ঠান। গত বছরের মতো এবারও বর্ষবরণের আয়োজন বিকেল ৫টার মধ্যে শেষ করতে বলেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেদিন বিকেল ৫টার পর ক্যাম্পাসে ঢোকা যাবে না, শুধু বের হওয়া যাবে।

রোববার (২৪ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।

সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে আমরা তো তিমিরবিনাশী প্রতিপাদ্য নিয়ে এবছর মঙ্গল শোভাযাত্রা চারুকলা অনুষদ থেকে সকাল ৯টায় বের করা হবে। মঙ্গল শোভাযাত্রা শাহবাগ মোড় হয়ে শিশুপার্কের সামনে থেকে ঘুরে শাহবাগ হয়ে টিএসসিতে শেষ হবে।

পহেলা বৈশাখে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের মুখোশ পরা এবং ব্যাগ বহন করা যাবে না। তবে চারুকলা অনুষদের প্রস্তুত করা মুখোশ হাতে নিয়ে প্রদর্শন করা যাবে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভুভুজিলা বাঁশি বাজানো ও বিক্রি করা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ক্যাম্পাসে নববর্ষের অনুষ্ঠান বিকাল ৫টার মধ্যে শেষ করতে হবে। নববর্ষের দিন ক্যাম্পাসে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ঢোকা যাবে। এরপর শুধু বের হওয়া যাবে। নববর্ষের আগের দিন ১৩ এপ্রিল (শনিবার) সন্ধ্যা ৭টার পর ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত গাড়ি ছাড়া অন্য কোনো গাড়ি প্রবেশ করতে পারবে না। নববর্ষের দিন ক্যাম্পাসে যানবাহন চালানো যাবে না। মোটরসাইকেল চালানোও সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

নববর্ষের দিন টিএসসির সামনের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেট বন্ধ থাকবে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢুকতে চারুকলা অনুষদের সামনের ছবির হাটের গেট, বাংলা একাডেমির সামনের গেট এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের পাশের গেট ব্যবহার করা যাবে।

এছাড়া, টিএসসির সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের হেল্প ডেস্ক, কন্ট্রোল রুম এবং অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্প থাকবে। হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল মাঠ সংলগ্ন এলাকা, টিএসসি সংলগ্ন এলাকা, দোয়েল চত্বরের আশ-পাশের এলাকা ও কার্জন হল এলাকায় মোবাইল পাবলিক টয়লেট স্থাপন করা হবে।


আরও খবর



ফের টেকনাফ সীমান্তে গোলাগুলি, আতঙ্কে স্থানীয়রা

প্রকাশিত:শনিবার ০২ মার্চ 2০২4 | হালনাগাদ:শনিবার ০২ মার্চ 2০২4 | অনলাইন সংস্করণ
কক্সবাজার প্রতিনিধি

Image

কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে নাফ নদীর ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তর থেকে আবারও তীব্র বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছে। শনিবার (০২ মার্চ) সকাল ৬টা থেকে উপজেলার হোয়াইক্যংয়ের ও হ্নীলা ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী মিয়ানমার এলাকায় থেমে থেমে বিস্ফোরণের শব্দ শোনার কথা জানিয়েছেন সীমান্ত এলাকায় বসবাসরতরা। এ সময় মিয়ানমারের অভ্যন্তরে আগুনের কালো ধোঁয়াও দেখেছেন তারা।

হ্নীলা এলাকার বাসিন্দা তারেক মাহমুদ রনি বলেন, ২০১৭ সালের পর আবারও দাউদাউ আগুনে পুড়ছে মিয়ানমারের আরকান রাজ্য। গত দুদিন (বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার) ধরে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। সীমান্তের কাছাকাছি বাসিন্দারা অনেক আতঙ্কে আছেন।

হোয়াইক্ষং এলাকার বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম বলেন, ভোর থেকে উনছিপ্রাং সীমান্তে ব্যাপক গোলাগুলি হচ্ছে। কালকেও বিমান থেকে হামলা হয়েছে। এতে সীমান্তের বাসিন্দাদের মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী বলেন, সকাল থেকে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। একই সঙ্গে আগুনের কালো ধোঁয়াও দেখা যায়। মিয়ানমারের কয়েকটি এলাকায় আগুন জ্বলছে। কালো ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে।


আরও খবর



টস হেরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৫ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৫ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক

Image

শ্রীলংকার বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয়টিতে মুখোমুখি বাংলাদেশ। যেখানে টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন লংকান অধিনায়ক কুসল মেন্ডিস।

আজ শুক্রবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে খেলবে দুদল। বাংলাদেশ সময় দুপুর আড়াইটায় ম্যাচটি শুরু হবে।

এ ম্যাচে বাংলাদেশের একাদশ অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে লংকান শিবিরে একটি পরিবর্তন হয়েছে। মহেশ থিকশানার বদলে একাদশে এসেছেন দুনিথ ওয়েলালাগে।

এর আগে বাংলাদেশ সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ৬ উইকেটে জিতে নেয়। এই জয়ে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় তারা।

বাংলাদেশ একাদশ: নাজমুল হোসেন (অধিনায়ক), লিটন দাস, মুশফিকুর রহিম, তাওহিদ হৃদয়, সৌম্য সরকার, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, শরীফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, মাহমুদউল্লাহ ও তানজিম হাসান।

শ্রীলংকা একাদশ: কুসল মেন্ডিস (অধিনায়ক), পাথুম নিসাঙ্কা, আভিশকা ফার্নান্দো, সাদিরা সামারাউইক্রামা, চারিথ আসালাঙ্কা, জানিথ লিয়ানাগে, দুনিথ ওয়েলালাগে, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, প্রামোদ মাদুশান, লাহিরু কুমারা, দিলশান মাদুশানকা।


আরও খবর
ডি মারিয়াকে হত্যার হুমকিদাতা গ্রেফতার

বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪




এস আলমের পোড়া চিনি-কেমিক্যালে কর্ণফুলীতে মরছে মাছ

প্রকাশিত:বুধবার ০৬ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৬ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

Image

চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তীর ঘেঁষেই এস আলম গ্রুপের চিনি পরিশোধন কারখানা। দুদিন আগে সেখানে গুদামে আগুন লাগার পর অপরিশোধিত চিনির পোড়া-গলিত বর্জ্য কারখানার ড্রেন দিয়ে কর্ণফুলী নদীতে গিয়ে পড়ছে। এতে নদীর পানিতে বিষাক্ত কেমিক্যাল মিশে ভেসে উঠছে নদীর মাছ।

মঙ্গলবার থেকে নদীতে মারা যাচ্ছে মাছ, কাঁকড়াসহ নানা জলজ প্রাণী। স্থানীয় লোকজন নদীতে নেমে মাছ ধরছে। বুধবার সকাল থেকে নদীতে মরা মাছ ভেসে উঠতে দেখা যাচ্ছে। সেই মরা মাছ ধরার জন্য অনেকে জাল নিয়ে গেছেন কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সেতুর নিচে ব্রিজঘাট এলাকায়।

এস আলম সুগার রিফাইনারির অবস্থান নদীর দক্ষিণপাড় থেকে ৭০০ মিটার দূরত্বে। সেতু পার হয়ে মইজ্জারটেক এলাকায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে কারখানাটি। এস আলমের নিজস্ব জেটি আছে। সাগরে বড় জাহাজে পণ্য আনার পর ছোট জাহাজে করে প্রথমে সেই ঘাটে ভেড়ানো হয়। সেই ঘাট থেকে মাটির নিচে স্থাপিত পাইপলাইনে ভোজ্যতেল এবং ট্রাকে করে অপরিশোধিত চিনি কারখানার ভেতরে নেওয়া হয়।

সোমবার বিকালে আগুন লাগে কারখানার চিনির গুদামে ১ লাখ টন চিনি পুড়ে গেছে বলে এস আলম কর্তৃপক্ষ জানায়। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ১৪ ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে পানি ছিটাচ্ছিল। পরে যোগ দেয় সেনাবাহিনী, নৌ বাহিনী, বিমানবাহিনীও। বুধবার সকালেও আগুন পুরোপুরি নেভানো যায়নি।

কর্ণফুলী হচ্ছে জোয়ার-ভাটার নদী। ফলে পোড়া চিনি নালা দিয়ে কর্ণফুলী নদীতে পড়লে একটি স্থানে সীমাবদ্ধ থাকছে না। জোয়ার-ভাটার সঙ্গে পুরো নদীর অন্তত দুই কিলোমিটার জুড়ে ছড়িয়েছে চিনি।

মঙ্গলবারও এস আলম গ্রুপ দাবি করেছিল যে, নদীতে মিশলেও আমরা এখন বিশেষজ্ঞ সাথে বসে একটা প্ল্যান করবো। কর্ণফুলীতে আগেও মাছ কি মরতো না। তবে এখন অপরিশোধিত চিনি গিয়ে পোড়া চিনি নদীতে ছড়ালেও মাছ মরার সম্ভাবনা কম।

কর্ণফুলী নদীতে ছোট জাহাজের শ্রমিক মো: বেলাল বুধবার জাল দিয়ে মাছ ধরছিলেন কর্ণফুলী নদীতে। তিনি বলেন, মঙ্গলবার বিকাল থেকেই দেখেছি নদীর পানি কিছুটা কালো রঙ ধারণ করেছে। জোয়ার থাকা পানি একস্থানে স্থির ছিল না। সকাল থেকেই দেখি জাহাজের পাশেই চিংড়ি, মইল্লা মাছ ভেসে উঠেছে। পরে জাহাজের পাশে থাকা ছোট ডিঙ্গিতে নেমে জাল নিয়েই মাছ ধরেছি। বেশ কিছু মাছ ধরা পড়েছে জালে।

নদী পাড়ের বাসিন্দারা বলেন, সবচেয়ে বেশি মাছ ধরা পড়েছে শিকলবাহা খালের পাশে। কারণ পোড়া চিনি সরাসরি সেখানেই নদীতে পড়েছে।

সকাল মাছ ধরা পড়ার খবর পেয়ে এলাকার সবাই নদীতে যায়। কেউ আবার জাল নিয়ে গেছে। কিন্তু বেশিরভাগ মাছ ধরা পড়েছে ।

নদীতে মাছের মরার খবর দেখেছেন বলে জানান চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ। তিনি বলেন, নদীর পাশেই কারখানা গড়ার আগে দূষণ ঠেকানোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন ছিল।

কর্ণফুলী নদীর পাড়ে গিয়ে দেখা যায়, আগুনে পুড়ে যাওয়া কেমিক্যাল মিশ্রিত অপরিশোধিত চিনির বিষাক্ত পানি সোজা কর্ণফুলী নদীতে পড়ছে। এরপর নদীতে কেমিক্যাল মিশে পানি দূষিত হচ্ছে। এতে নদীর মাছ মারা যাচ্ছে। নদী থেকে স্থানীয়রা হাত দিয়ে টেংরা, পোয়া ও চিংড়িসহ ভেসে ওঠা নানা ধরনের মাছ ধরছেন। এছাড়া স্থানীয়রা হাত জাল ফেলেও মাছ ধরছেন। প্রায় ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এভাবে মাছ ধরতে দেখা গেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কর্ণফুলীর ইছানগর এলাকার সুগার মিলে পুড়ে যাওয়া চিনি ও কেমিক্যাল নদীতে গিয়ে পড়ায় মাছ মারা যাচ্ছে। অপরিশোধিত চিনি আগুনে পুড়ে গিয়ে বর্জ্য হিসেবে কর্ণফুলী নদীতে পড়েছে। নালার মাধ্যমে সরাসরি নদীতে পড়ায় পরিবেশগত প্রভাব পড়বে। পানির মাত্রা মান কমে গিয়ে ইকোলজিক্যাল অসামঞ্জস্যতা তৈরি হয়েছে। আর পানিতে অক্সিজেন লেভেল কমে যাওয়ায় মাছগুলো মারা পড়ছে। চিনির দাহ্য পদার্থ যখন ৩৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে থাকে তখন বিষাক্ত কেমিক্যালে রূপ নেয়। আর সেখানে পানি ছাড়া হলে অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন কার্বন তৈরি হয়। যার কারণে কারখানায় আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে। সেই আগুনে অপরিশোধিত চিনি গলে সেই লাভা নদীতে এসে পড়েছে। এতেই পানি দূষিত হয়ে মাছ মরছে। চিনির কেমিক্যালে নদী দূষণ তো হয়েছে। এছাড়া নদী দূষণের অন্যতম কারণ হলো ১৭টি খালের বর্জ্য।

স্থানীয় ইছানগর এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, আগুনে পোড়া চিনিতে কারখানার পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। ফায়ার সার্ভিসের ছিটানো পানি চিনির সঙ্গে মিশে নদীতে পড়েছে।

এস আলম গ্রুপের মানবসম্পদ কর্মকর্তা মো: হোসেন বলেন, আগুনে পোড়া চিনি কর্ণফুলীতে কিছুটা গেছে। এসব নিজস্ব জমিতে ডাম্পিং করা হচ্ছে। নদীতে গেলেও জীব-বৈচিত্র্যের কোনও ক্ষতি হবে না। এখানে কোনও ক্ষতিকর রাসায়নিক নেই।

এ প্রসঙ্গে পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের পরিচালক ফেরদৌস আনোয়ার বলেন, সুগার মিলের পোড়া চিনি কর্ণফুলী নদীতে পড়ছে এমন তথ্য পেয়ে মঙ্গলবার আমাদের ল্যাব থেকে লোকজন গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিভিন্ন স্থান থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ল্যাবের রিপোর্ট পাওয়ার পর বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাওয়ার কারণে মাছসহ অন্যান্য জীববৈচিত্র্য মারা যাচ্ছে বা দুর্বল হয়ে পড়ছে। অবশ্যই এটি নদীর জন্য ক্ষতির কারণ।

চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক এম ডি আবদুল মালেক বলেন, চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে সুগার মিলের আগুন ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে ব্যবহার করা হচ্ছে অগ্নিনির্বাপক রোবট লুফ-৬০। এ রোবট দিয়ে মিনিটে এক হাজার লিটার স্পিডে পানি ছিটানো হচ্ছে। চিনির কাঁচামালে দাহ্য পদার্থ থাকায় গুদামের ভেতরের আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে। সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে আরো ৭২ ঘণ্টা লাগতে পারে।

উল্লেখ্য, গত সোমবার বিকেল ৪টার দিকে কর্ণফুলীর ইছাপুর এলাকার একটি মিলে আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রথমদিকে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি স্টেশনের ১৫টি ইউনিট। পরে তাদের সঙ্গে আগুন নেভাতে যোগ দেয় বিমান, নৌ, সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহনীর সদস্যরা।

নিউজ ট্যাগ: কর্ণফুলী নদী

আরও খবর