এই স্বীকৃতি দেয়ার মাধ্যমে পূর্ব ইউরোপের দেশ আর্মেনিয়া ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার এবং স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে তাদের বৈধ অবস্থানকে সমর্থন জানিয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যে
শান্তি ফেরাতে ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে পূর্ব ইউরোপের
দেশ আর্মেনিয়া। শুক্রবার (২১ জুন) দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘোষণা দিয়েছে
বলে খবর প্রকাশ করেছে আরব নিউজ। সেই সঙ্গে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে চলা ইসরায়েলি
বাহিনীর বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে দেশটি। প্রতিবেশী দেশ আজারবাইজানের
সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধে জর্জরিত আর্মেনিয়া সংঘাতের ভয়াবহতা কী তা জানে।
গাজাসহ রাফাহতে
সহিংসতার অবসান ঘটাতে ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন দেশের বৃহত্তর প্রচেষ্টার
অংশ হিসেবে আর্মেনিয়ার এই পদক্ষেপকে দেখা হচ্ছে। গত আট মাসে গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে
যুদ্ধ করছে ইসরায়েল। ইতোমধ্যে ইসরায়েলি হামলায় ৩৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
তাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। এ ছাড়া ৮৮ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। এই যুদ্ধ ও ইসরায়েলি
অবরোধের কারণে গাজায় এখন ভয়াবহ মানবিক সংকট বিরাজ করছে।
এর আগে, ৩০
মে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করে স্লোভেনিয়া
সরকার। গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ এবং সব ইসরায়েলি বন্দির
মুক্তিও দাবি করেছেন স্লোভেনীয় প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এটা শান্তির বার্তা।’ এর আগে, ২৮ মে ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে
স্বীকৃতি দেয় ইউরোপীয় দেশ স্পেন, নরওয়ে ও আয়ারল্যান্ড। দেশগুলোর নেতারা জানান, মধ্যপ্রাচ্যে
শান্তির জন্য তাদের দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়।
এই স্বীকৃতি
দেয়ার মাধ্যমে পূর্ব ইউরোপের দেশ আর্মেনিয়া ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার
এবং স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে তাদের বৈধ অবস্থানকে সমর্থন জানিয়েছে। আর্মেনিয়ার এই
পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে, যা মধ্যপ্রাচ্যে
শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।
ফিলিস্তিনের
প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস আর্মেনিয়ার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং এটি ফিলিস্তিনি
জনগণের জন্য একটি বড় অর্জন বলে অভিহিত করেছেন। ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ
আল-মালিকি আর্মেনিয়ার সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এবং বলেছেন, এই স্বীকৃতি
ফিলিস্তিনিদের সংগ্রামে নতুন উদ্দীপনা যোগাবে।
আর্মেনিয়া
ও ফিলিস্তিনের মধ্যে এই নতুন কূটনৈতিক সম্পর্ক দুই দেশের জনগণের মধ্যে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার
নতুন দ্বার উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। আর্মেনিয়া ফিলিস্তিনের সার্বভৌমত্ব ও
স্বাধীনতাকে সমর্থন জানিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ নজির স্থাপন করেছে, যা ভবিষ্যতে অন্য
দেশগুলোর জন্যও একটি উদাহরণ হতে পারে।
এই স্বীকৃতি
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজরে এসেছে এবং বিভিন্ন দেশে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আর্মেনিয়ার এই সিদ্ধান্ত ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকারের প্রতি আন্তর্জাতিক
সমর্থন জোরদার করবে এবং মধ্যপ্রাচ্যের জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে একটি ইতিবাচক প্রভাব
ফেলবে।