আজঃ রবিবার ১৯ মে ২০২৪
শিরোনাম

এতো প্রাণহানি আগে কখনো দেখেনি করতোয়াবাসী

প্রকাশিত:রবিবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
Image

মো: রেদওয়ানুল হক মিলন, পঞ্চগড় থেকে ফিরে:

প্রতিবছর পূজা শুরুর প্রাক্কালে চণ্ডীপাঠের মাধ্যমে দেবী দুর্গাকে আমন্ত্রণ জানাতে মহালয়ার দিন পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার বড়শশী ইউনিয়নের বোদেশ্বরী মন্দিরে দুর্গার আবাহন উপলক্ষে আয়োজন করা হয় বিশাল অনুষ্ঠান। এতে যোগ দিতে কয়েক উপজেলার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা জড়ো হন আউলিয়ার ঘাটে। নতুন পোশাক আর রঙিন সাজ নিয়ে দেড় শতাধিক মানুষ ওঠেন নৌকায়। কিন্তু মাঝনদীতে গিয়ে গভীর পানিতে তলিয়ে যায় নৌকাটি।

নৌকাডুবিতে ৭১ জনের প্রাণহানি হয় আর এখনো নিখোঁজ রয়েছেন একজন। এ দুর্ঘটনায় শোকে স্তব্ধ করতোয়ারবাসী। ইতিহাসের ভয়াবহ এমন দুর্ঘটনার সাক্ষী উত্তরের এই জনপদ। হঠাৎ শান্ত স্রোতের নদীটি হয়ে উঠবে বিষাদের কারণ তা কেউ জানতো না। মুহূর্তেই স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে আউলিয়া ঘাটের বাতাস।

ভাসমান মরদেহ দেখে সেদিন স্তব্ধ হয়ে ছিলেন নদী তীরের মানুষ। যেন মহালয়াতেই ম্নান পূজার সব আনন্দ। সেদিন যাদের আল্পনা আঁকার কথা ছিল মণ্ডপের আঙিনায়,তারা চন্দনের ফোঁটা একেছে মৃত স্বজনের কপালে। আপনজনের শেষ যাত্রায় অশ্রুর নীবর বহতা। যেখানে ঢাকের বাড়িতে নেচে উঠার কথা, সেখানে অবনত মস্তকে স্বজনের মরদেহের সৎকারে ব্যস্ত ছিলেন পূজারিরা। সেদিন মণ্ডপগুলোতে ঢাকের বাড়ি, শাঁখের আওয়াজ আর গৃহীনির উলুধ্বনির বদলে ছিল শোকস্তব্ধ স্বজনের গুঁমরে উঠা আর ফোঁপানো কান্নার শব্দ।

গত বছরের (২৫ সেপ্টেম্বর) বোদা উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের আউলিয়া ঘাটে দেড় শতাধিক যাত্রী নিয়ে এ নৌকাডুবির আজ এক বছর তারই আদ্যোপ্রান্ত তুলে ধরা হলো:

প্রতিবছর মহালয়ার দিনে কমপক্ষে ২০ হাজারের বেশি মানুষ আউলিয়া ঘাট থেকে নৌকায় করতোয়া পাড়ি দিয়ে বোদেশ্বরী মন্দিরে যান। ৩০ জন ধারণ ক্ষমতার একটি নৌকা শতাধিক যাত্রী নিয়ে মহালয়ার অনুষ্ঠানের উদ্দেশে রওনা দেন। এ সময় নৌকাটি কিছু দূর যাওয়ার পর দুলতে শুরু করলে মাঝি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন। অতিরিক্ত যাত্রীচাপে ডুবে যায় নৌকাটি। মুহূর্তেই উৎসব শোকে পরিণত হয়। অনেকেই সাঁতরে তীরে উঠলেও শিশুসহ বাকিরা গভীর পানিতে তলিয়ে যায়।

এদিকে ডুবে যাওয়ার কয়েক সেকেন্ড আগে হ্যান্ডমাইকে নৌকার মাঝিকে সাবধানও করেছিল পুলিশ। তবে, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সামনেই নৌকাটি অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ছাড়ার ঘটনায় প্রশাসনের গাফিলতি আছে কি-না তা খতিয়ে দেখতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে পৃথক পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছিলো। জেলা প্রশাসনের তদন্ত  প্রতিবেদনে ইজারাদার আব্দুল জব্বারের গাফিলতিসহ নৌকার মাঝি বাচ্চু মিয়া এবং রবিউল ইসলামকে দায়ী করা হয়। পরে পুলিশ তাদের আটক করেন।

যারা বেঁচে ফিরল: নৌকাডুবির ঘটনায় নির্বাক বেঁচে ফিরে আলো (২৫) ও অর্পিতা (১৭) দুই বোন। বাড়ির ৫ সদস্যকে হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন তারা। কোনো সান্তনাই যেন তাদের বিলাপ থামাতে পারছে না। অন্যদিকে, মৃত্যুর থেকে বেঁচে আসা বিনয় বলেন, আমি আমার বউসহ পরিবারের ৭ সদস্যকে নিয়ে সেদিন নৌকায় চড়ে বোদেশ্বরীর মন্দিরে যাচ্ছিলাম হঠাৎ চোখের পলকে নৌকাটি ডুবে যায়। পরিবারের সবাই মারা গেলেও আমি শুধু বেঁচে আছি। 

রেলমন্ত্রী: নৌকাডুবির খবর শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন রেলমন্ত্রী অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন। তিনি সেদিন স্থানীয় প্রশাসনকে দোষারোপ করে বলেছিলেন, এ দুর্ঘটনায় প্রশাসনের গাফিলতি ছিল। এ ঘটনায় যেমন ঘাটে দায়িত্বরতদের অবহেলা ও গাফিলতি রয়েছে, তেমনি  যাত্রীদেরও রয়েছে। এর ফলেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেনি এটাই চিরন্তন সত্য।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে ঘটনাস্থলে ছুটে যান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান। নিহতদের প্রত্যেককে জেলা প্রশাসক এর পক্ষে ২০ হাজার, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার, ত্রাণ তহবিল থেকে ৫০ হাজার ও রেলমন্ত্রীর পক্ষে থেকে ৫ হাজার টাকা নিহত স্বজনদের হাতে তুলে দেন তিনি।

পঞ্চগড়ের মাড়িয়াগঞ্জ ও কালিয়াগঞ্জ দুটি ইউনিয়নকে পৃথক করেছে করতোয়া নদী। এ অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরেই একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিল স্থানীয়রা।

এত প্রাণহানির পরেও কি আউলিয়া ঘাটে ব্রিজ হবে না?: স্বাধীনতার ৫০ বছরেও পঞ্চগড়ের আউলিয়ার ঘাটে নির্মাণ হয়নি একটি ব্রিজ। এর আগে ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটলেও এবার নৌকাডুবিতে প্রাণ গেল ৭১ জনের। তবে দ্রুত সময়ে ব্রিজ নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছেন পঞ্চগড়-২ আসনের সংসদ সদস্য রেলমন্ত্রী অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন। করতোয়া নদী পারাপারের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে ইংরেজি বর্ণ ওয়াই আকৃতির ব্রিজের কাজ দ্রুত শুরু  হবে বলে সেদিন বামনহাট ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে আয়োজিত শোকসভায় আশ্বাস দিয়েছিলেন মন্ত্রী। ব্রিজ নির্মাণের প্রস্তাবনা একনেকে পাস হয়েছে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এক বছর গত হয়ে গেলেও বাস্তবে কোন কাজ শুরু হয়নি।

এত প্রাণহানির কারণ কী?: ৭১ জনের প্রাণহানির কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, ঘটনার দিন হিন্দু সস্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব মহালয়ার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে প্রচুর মানুষ এসেছিলেন। তাদের নিরাপত্তার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুলিশ, দমকল বাহিনী, আনসার, গ্রাম পুলিশ এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের করতোয়া নদীর দুই পাড়ে মোতায়েন করা হয়েছিল।

মানুষের হুড়োাহুড়ি এবং অসচেতনতা: করতোয়া নদীতে ১২ মাস পানি থাকে এবং এই নদীর ওপর কোনো সেতু নেই। ফলে নদী পারাপারের জন্য নৌকা এবং ট্রলারই ভরসা। নৌকা ডুবির ঘটনায় উদ্ধার অভিযানের নেতৃত্ব দেয়া দমকল বাহিনীর কর্মকর্তা শাজাহান আলী বলেছেন, ঘটনার দিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে তারা নদীর পাড়ে কাজ শুরু করেন। উৎসবের দিন হওয়ায় সেদিন ঘাটে প্রচুর মানুষের ভিড় ছিল। এছাড়া নৌকা দিয়ে পার হতে আসা মানুষকে বারবার সতর্ক করা হয়েছে, এমনকি হ্যান্ডমাইক নিয়েও কিছুক্ষণ পরপর সতর্ক করা হলেও তা কেউ আমলে নেয়নি।

ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী পরিবহন: নদী পারাপারে প্রতিদিন সাধারণত কেবল একটি শ্যালো ইঞ্জিনচালিত ট্রলার চলে আউলিয়া ঘাট থেকে। কিন্তু মহালয়ায় হাজারো লোকের সমাগম হবে, তার প্রস্তুতি হিসেবে তাদের পারাপারে ৬টি নৌকা দেয়ার আবেদন করা হয়েছিল সনাতন সস্প্রদায়ের পক্ষ থেকে। কিন্তু সেদিন বরাদ্দ ছিল ৩টি নৌকা, যে নৌকাগুলো বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল, একেকটির দৈর্ঘ্য ১৮ থেকে ২০ ফুটের মতো। এই আকৃতির একটি নৌযানে সেদিন ১০০ বেশি মানুষ উঠে পড়েছিল, স্থানীয়দের কেউ কেউ মনে করেন নৌকাতে দেড়শোর বেশি মানুষ ছিল।

ওই নৌকাডুবি থেকে বেঁচে ফিরেছেন এমন একজন বলেছেন, ট্রলারে কোনো মানুষের বসার জায়গা ছিল না, তারা সবাই দাঁড়িয়ে ছিলেন।

নদীর গভীরতা কম, কিন্তু স্রোত ছিল বেশি: করতোয়া নদীতে ১২ মাস পানি থাকে ঠিকই, কিন্তু নদীটি খুব বেশি গভীর নয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলেছেন, ঘটনার আগের কয়েকদিন টানা বৃষ্টি হয়েছিল, তার ফলে উজান থেকে পানি নেমে নদীতে পানির প্রবাহ অনেক বেড়েছিল।

ট্রলারে নারী ও শিশুর সংখ্যা বেশি: দুর্ঘটনায় এত প্রাণহানির আরেকটি কারণ হিসেবে স্থানীয়রা মনে করেন, ট্রলারে যাত্রীদের বড় অংশটি ছিলেন নারী ও শিশু।

ঘটনার দিন সকাল থেকেই ওই নদীতে মাছ শিকার করছিলেন গৌতম দাস। ক্লান্ত শরীরে বাড়ি ফেরার সময় হঠাৎ চিৎকারে পেছন ফিরতেই দেখেন নৌকাটি ডুবে যাচ্ছে। নিমিষেই নৌকার যাত্রীরা নদীর পানিতে তলিয়ে যায়। এ দৃশ্য যেন তিনি এখনো ভুলতে পারছেন না। ডুবে যাওয়া নৌকাটিতে কয়েকজন পাথর উত্তোলনের শ্রমিক ছিলেন। তার মতে, তারা খুব ভালো সাঁতার জানতেন। কিন্তু তার পরও কীভাবে এসব শ্রমিক পানিতে ডুবে মারা গেলেন সেই হিসাব মেলাতে পারছেন না তিনি।


আরও খবর



সাবেক ভূমিমন্ত্রীর দুর্নীতির অনুসন্ধান চেয়ে দুদকে আবেদন

প্রকাশিত:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি এবং সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অনুসন্ধান চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) আবেদন করেছেন এক আইনজীবী।

বুধবার (১ মে) এমন একটি চিঠি গণমাধ্যম এর হাতে আসে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, যাচাই বাছাইয়ের পর দুদক সিদ্ধান্ত নেবে।

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন রিগ্যান এই আবেদনটি করেন। চিঠিতে তিনি বলেন, গত ২০ ফেব্রুয়ারি দৈনিক সমকাল পত্রিকায় সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সাম্রাজ্য যুক্তরাজ্যে শিরোনামে এবং মানবজমিন পত্রিকায় ব্রিটেনে বাংলাদেশি রাজনীতিবিদের ২০০ মিলিয়ন পাউন্ডের সাম্রাজ্য" শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ব্লুমবার্গের অনুসন্ধান প্রতিবেদন থেকে এ দুটি সংবাদ প্রকাশিত হবার পরেও কর্তৃপক্ষ যথাযথ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এর ফলে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান দুর্নীতি দমন কমিশনের উপর সাধারণ মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস ক্ষুণ্ণ করে।

এ কারণে চিঠির মাধ্যমে এ বিষয়ে যথাযথ অনুসন্ধান করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য দুদককে বিশেষভাবে অনুরোধ করেন এই আইনজীবী।


আরও খবর



রাফাহ শহরে ইসরায়েলের ব্যাপক গোলাবর্ষণ

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

আন্তর্জাতিক হুঁশিয়ারিকে অবজ্ঞা করে, পরিকল্পিত স্থল অভিযানের অংশ হিসেবে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার রাফাহ শহরের পূর্ব প্রান্তে ইসরায়েল ব্যাপক কামানের গোলাবর্ষণ করছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ তথ্য দিয়েছেন। খবর আলজাজিরার।

ইসরায়েলি বাহিনী গাজা উপত্যকার মধ্যাঞ্চলে তাদের হামলার লক্ষ্যবস্তু নতুন করে নির্ধারণ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষ করে শরণার্থী শিবিরগুলো এখন আক্রমণের প্রধান লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এক্ষেত্রে হামলার প্রধান লক্ষ্যবস্তু এখন নুসেইরাত ও বুরেজি শরণার্থী শিবির ও দেইর এল-বালাহ শহর।

এদিকে, গাজার গণকবর পাওয়ার খবরে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র বলেছেন, সব ধরনের ফরেনসিক প্রমাণ সংরক্ষণ করা এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক তদন্ত আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘকে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ উপাদানের আইনি দখল নেওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য এখন আইন প্রণয়ন বিভাগের আদেশ নিতে হবে।

অন্যদিকে, গাজা উপত্যকায় সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহের জন্য আন্তর্জাতিক তদন্তকারীদের প্রবেশে বাধা দিচ্ছে ইসরায়েল।

এ প্রসঙ্গে প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির ভিজিটিং প্রফেসর ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সাবেক পরিচালক রথ বলেছেন, যুদ্ধের মধ্যেও তদন্তের জন্য গণকবর থেকে প্রমাণ সংগ্রহ করা অসম্ভব নয়। বিষয়টি দুই পক্ষের সহযোগিতার ওপর নির্ভর করছে। তবে ইসরায়েল এমন স্বাধীন তদন্ত হোক, তা চাইবে না।

জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন গাজার গণকবরে ৩৯২টি মরদেহ পাওয়ার ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়ে আসছে।


আরও খবর



দুই যুগ পর এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ

প্রকাশিত:সোমবার ১৩ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৩ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
শহীদুল ইসলাম, ধর্মপাশা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি

Image

চেষ্টা আর ইচ্ছে শক্তি থাকলে বয়স কোন ব্যাপার না সেটার প্রমাণ করে দিলেন সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার আঃ শহীদ মজুমদার। ৩৮ বছর বয়সে তিনি এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে জিপিএ ৪.৫৪ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।

আব্দুস শহীদ মজুমদার উপজেলার সদর ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মোতালিবের পুত্র। এছাড়া তিনি সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। ব্যাক্তিগত জীবনে তিনি দুই কন্যা সন্তানের জনক।

আজ সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার নিজস্ব আইডিত থেকে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে। এক স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, দুই যুগ পর এস এস সি পরীক্ষা পাস করি। জিপিএ ৪.৫৪ পেয়েছি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।

আব্দুস শহীদ মজুমদারের সাথে প্রতিবেদকের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে ১৯৯৪ সালে ৮ম শ্রেণি পাশ করার পর পড়াশোনা ছেড়ে দেই এরপর থেকেই মনের মধ্যে একটা ইচ্ছাশক্তি কাজ করছিল যে এসএসসি পাস করতে হবে। সেই ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে দুই বছর আগে নেত্রকোনা রাজুর বাজার কলেজিয়েট স্কুলে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হই। এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হয়ে বহুদিনের স্বপ্ন পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি।


আরও খবর



গরম কমাতে কী কী করেছেন, জানালেন চিফ হিট অফিসার

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

গরমের তীব্রতা বাড়ায় শনিবার থেকে সারা দেশে চলছে তিন দিনের হিট অ্যালার্টের সতর্কতা। সোমবার সেটি আরও ৭২ ঘণ্টার জন্য বাড়ানো হয়েছে। তীব্র গরমে রাজধানী ঢাকাসহ গোটা দেশের মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। এমন পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক কারণেই প্রশ্ন উঠছে, কী করছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিন?

এক বছর আগে দায়িত্ব নেওয়া বুশরা দেশের একটি টিভি চ্যানেলের মুখোমুখি হয়ে নিজের কাজ ও বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কথা জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, সবাইকে একসাথে নিয়ে হিট মোকাবিলা করবো, এটাই আমার কাজ। তবে আমি স্বাধীনভাবে কাজ করছি না, আমাকে সিটি করপোরেশনের অধীনে কাজ করতে হচ্ছে। উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে প্রায় ৩০ মিলিয়নের বেশি মানুষের বসবাস, শহর খুব দ্রুত বড়ো হচ্ছে। পরিস্থিতিও খুব দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে, হিট নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে এখানে প্রচুর বিনিয়োগের প্রয়োজন।

অনুন্নত এলাকায় গরমের প্রকোপ বেশি জানিয়ে তিনি বলেন, গত বছর আমরা শহরের অনুন্নত অন্তত ১৫টি এলাকায় সবুজায়ন প্রোগ্রাম করেছি। যেখানে পাঁচ হাজারেরও বেশি বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। পাশাপাশি তাদেরকে সবুজায়নের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও সচেতনতা সৃষ্টির কাজ করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের আমরা বুঝিয়েছি, নিজে ও পরিবারের সদস্যদের কীভাবে তীব্র গরম থেকে বাঁচাতে পারবো।

গত বছর হিট মওসুমে নিয়োগ হওয়ায় তখন বেশি কাজ করতে পারেননি জানিয়ে বুশরা বলেন, কাজ শুরু করলে রাতারাতি পরিবর্তন হবে না। আস্তে আস্তে এই পরিবর্তনের ফল পাওয়া যাবে। তবে পরিকল্পনা তিনি নিজে বাস্তবায়ন করতে না পারায় সময় বেশি লাগছে বলে দাবি করেন তিনি। পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের বরাদ্দ পেলেও টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ করতে বেশি সময় লেগে যায়। এছাড়া আমলাতন্ত্রও কাজের ক্ষেত্রে বড় বাধা বলে জানান বুশরা।

চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিন তীব্র গরম থেকে বাঁচতে জীবনযাত্রায় পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি চাইলেও একরাতে সব পরিবর্তন করে দিতে পারবো না। গরমে বেশি বেশি পানি পান ও শরীরের প্রতি নজর রাখতে হবে। যেহেতু এমন গরম আগে বাংলাদেশে ইতিহাসে হয়নি, তাই এই পরিস্থিতি মানিয়ে নিতে আগের অভ্যাস বাদ দিতে হবে।

মানুষকে সচেতন করতে একটি সহজ ভাষায় ছবি সম্বলিত বুকলেট প্রকাশের কাজ চলছে বলে জানান এই চিফ হিট অফিসার। তিনি বলেন, বিদ্যমান পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তন হবে, এমন প্রত্যাশা করা উচিত হবে না। আমি মনে করি, সব আলোচনাই ইতিবাচক। সমালোচনার দিকে নজর না দিয়ে কাজ করেই সময় পার করছেন বলেও জানান বুশরা আফরিন।

নিউজ ট্যাগ: বুশরা আফরিন

আরও খবর



পাবনার বেড়া ও সুজানগরে কেন্দ্রে যেতে ভোটারদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ

প্রকাশিত:বুধবার ০৮ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৮ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মামুন হোসেন, পাবনা

Image

পাবনার বেড়া উপজেলা নির্বাচনে ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে যেতে বাধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। পায়না সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ অভিযোগ করেন ঘোড়া প্রতীকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আব্দুল বাতেন।

তিনি জানান, উপজেলা নির্বাচনকে প্রভাবিত করছেন স্থানীয় এমপি শামসুল হক টুকুর ছেলে বেড়া পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আসিফ শামস রঞ্জন। তিনি হেলিকপ্টার প্রতীকের প্রার্থী রেজাউল হক বাবুর পক্ষে গত কয়েকদিন ধরে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছেন।

বুধবার (৮ মে) সকালে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। পায়না কেন্দ্রে রঞ্জনের অনুসারী ও বেলা পৌরসভার কাউন্সিলর কিরণের নেতৃত্বে ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে বাধা দেয়া হচ্ছে। কেবলমাত্র হেলিকপ্টার প্রতীকে ভোট দিতে রাজি না হওয়ায় মোল্লাপাড়ায় ভোটারদের অবরুদ্ধ করে রেখেছে সন্ত্রাসীরা। কেন্দ্রে অপকর্ম করতে না পেরে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করছে রঞ্জনের ক্যাডার বাহিনী। বিষয়টির নিন্দা জানিয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আব্দুল বাতেন।

পায়না সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ডাক্তার আসাদুজ্জামান বলেন, ভোটকেন্দ্রের ভেতরে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সকালে এজেন্টদের বের করে দেয়ার চেষ্টা হলেও আমরা তা প্রতিহত করেছি। কেন্দ্রের বাইরে কোন ঘটনা ঘটলে সেটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেখবে।

পাবনার বেড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে। মোবাইল টিম সক্রিয় রয়েছে। ভোটারদের বাধা দেয়ার তেমন কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে, সুজানগর উপজেলায় মথুরাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটারদের যেতে বাধা দেয়ার অভিযোগ করেছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল ওহাব। তবে বাধা দেয়ার কোন ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেছেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী শাহিনুজ্জামান শাহিন।


আরও খবর