আজঃ শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪
শিরোনাম

ইউক্রেন যুদ্ধে পশ্চিমারা কত টাকা খরচ করেছে?

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৯ ডিসেম্বর ২০২২ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৯ ডিসেম্বর ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির ২৪ তারিখ থেকে ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাহায্য ছাড়া ইউক্রেন কোনোভাবেই তাদের রক্ষণভাগ টেকসইভাবে টিকিয়ে রাখতে পারতো না। কিন্তু কী পরিমাণ সাহায্য ইউক্রেন পেয়েছে, আর এই সাহায্য কতটুকু পার্থক্য গড়ে দিয়েছে?

গত সপ্তাহেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনের জন্য আরেকটি ৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন, যেটি নিয়ে কংগ্রেসে আলোচনা হবে। যদি প্রস্তাবটি অনুমদিত হয়, তবে ইউক্রেনকে সাহায্য নিয়ে এই নিয়ে চতুর্থবার মার্কিন সাহায্য যাবে, সব মিলিয়ে যার আর্থিক মূল্য ১০০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি।  এই আকাশছোঁয়া অঙ্ক তাই অনেক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন এটি ইউক্রেনকে ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য ইন্ডেপেন্ডেন্টেও তাদের মার্কিন প্রতিনিধি একটি মতামত প্রকাশ করেছেন, যেখানে বলা হয়েছে, ইউক্রেনে যে মার্কিন প্রক্সিযুদ্ধ চলছে না এমন ভান করা থেকে সরে আসার সময় এখনই।

তবে, অনেক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে একমত নন। রিডিং বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রভাষক ভ্লাদিমির রাউতা  বলেন, এটা যে কোনো প্রক্সিযুদ্ধ নয় তা স্পষ্ট। প্রক্সিযুদ্ধতে গোপনভাবে সাহায্য করা হয়, আন্তর্জাতিক আইনের বাইরে গিয়ে কাজ করা হয়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেনের সম্পর্ক সামরিক ও অর্থনৈতিক সাহায্যের এক আদর্শ উদাহরণ। প্রক্সিযুদ্ধ হলো ওটাই, যখন রাশিয়া ২০১৪ সাল থেকে ইউক্রেনের দনবাস অঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীদেরকে সমর্থন করেছে, সাহায্য করেছে এবং তাদেরকে ট্রেনিং করিয়েছে।

যুদ্ধের খরচ: যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ইউরোপও ইউক্রেনের পেছনে যথেষ্ট টাকা ঢেলেছে। তবে ঠিক কতটুকু খরচ করেছে তা বলা বেশ শক্ত।  সৌভাগ্যক্রমে জার্মান গবেষণা সংস্থা কিয়েল ইনিস্টিউট ফর দ্য ওয়ার্ল্ড ইকোনমি (আইএফডব্লিউ) ইউক্রেন সাপোর্ট ট্র্যাকার তৈরি করেছে, যেখানে কে কত সাহায্য করেছে তা নথিভুক্ত করা আছে, যার মধ্যে সামরিক সাহায্য, মানবাধিকার সার্ভিস এবং অর্থসাহায্য  রয়েছে। তারপরেও এই হিসাব করা বেশ জটিল বলে জানিয়েছেন আইএফডব্লিউ-এর একজন অর্থনীতিবিদ আন্দ্রে ফ্রাঙ্ক।  প্রাথমিক সমস্যা হলো তথ্যের পর্যাপ্ততা, বিশেষ করে দেশগুলোর সরকারি তথ্য এবং বিভিন্ন পণ্যের আর্থিক মূল্য, বিশেষ করে সামরিক পণ্যগুলোর আর্থিক মূল্য বের করা। আমরা প্রথম সমস্যাটি বিভিন্ন পদ্ধতিতে খুঁজে বের করে সমাধান করেছি।

সাধারণত, আমরা সরকারের অফিশিয়াল সূত্রগুলোকেই উৎস হিসেবে নিয়েছি।যদিওর্থদানের ব্যাপারে সরকার কোনো তথ্য প্রকাশ না করে, সেক্ষেত্রে আমরা সেগুলোর শূণ্য জায়গা পূরণ করেছি গণমাধ্যমে আসা বিশ্বাসযোগ্য প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে। একটি বড় সমস্যা হলো, বেশ কিছু দেশের অফিশিয়াল প্রেস রিলিজে যে তথ্য থাকে তা বেশিরভাগ সময়েই অসম্পূর্ণ থাকে। একটি দেশ তাদের তথ্যগুলো কতটুকু বিস্তারিত বা সংক্ষেপে প্রকাশ করে, তার ওপর নির্ভর করে আমাদের কাজ সহজ বা কঠিন হয়ে পড়ে। সাহায্যদাতা দেশগুলো তথ্যতেও অনেকসময় স্বচ্ছতা রাখে না। যেমন: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের ডেটাবেজে কী কী জিনিস দান করেছে, কতটুকু দান করেছে, তার বিস্তারিত বিবরণ উল্লেখ করে। সামরিক সাহায্যগুলোও বিস্তারিতভাবে উল্লেখ থাকার ফলে সেগুলোর অর্থের একটি সঠিক পরিমাণ বের করা যায়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্ষেত্রে আবার এই চিত্র দেখা যায় না। পূর্ব ইউরোপ, বাল্টিক অঞ্চল এবং স্ক্যান্ডিনেভিয়া অঞ্চলের দেশগুলো কী কী ধরনের সামরিক সরঞ্জাম কয়টি করে দান করেছে তা পরিষ্কারভাবে বললেও স্পেন, ইতালি আর পর্তুগালের মতো দেশগুলো তা প্রকাশ করে না এবং ইচ্ছা করেই সেই তথ্য চেপে রাখে।

সবচেয়ে বড় সাহায্যদাতা যুক্তরাষ্ট্র: ইউরোপের ডি ফ্যাক্টো নেতা জার্মানি এই সাহয্য হিসাবের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। কারণ বার্লিন দীর্ঘদিন ধরে বাতিল বা ব্যবহার করা হয়নি এমন সব সামরিক সরঞ্জাম তাদের স্টক থেকে দান করেছে যার বর্তমান আর্থিক মূল্য নির্ধারণ করা বেশ কঠিন। জার্মানি কেবল ট্যাঙ্ক-বিরোধী সরঞ্জাম বা বিমান-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের মতো ভারি অস্ত্রই সরবরাহ করেনি, মেশিনগান, হ্যান্ড গ্রেনেড এবং অন্যান্য গোলাবারুদের মতো হালকা অস্ত্রও সরবরাহ করেছে। আবার, একদিকে তারা সশস্ত্র বাহিনী বা বুন্দেসভেরের স্টক থেকে সামরিক সরঞ্জাম দিয়েছে।

আবার, ফেডারেল সরকারের অর্থায়ন করা স্টক থেকেও দিয়েছে। জার্মানির মতো দেশগুলো তাদের বিতরণ করা পণ্যগুলোর সংখ্যার একটি বিস্তারিত তালিকা প্রদান করলেও তাতে সেগুলোর মূল্যের ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি।। এটি আমাদের কাজকে অবিশ্বাস্যভাবে চ্যালেঞ্জিং করে তুলেছে। কারণ জার্মানির কিছু পণ্য বুন্দেসভেরের স্টক থেকে এসেছে, যেগুলো ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সশস্ত্র বাহিনী ব্যবহার করছে। যার ফলে এগুলোর সঠিক মূল্য অনুমান করা প্রায় অসম্ভব, বলে জানান ফ্রাঙ্ক। স্বাভাবিকভাবেই, আইএফডব্লিউর তালিকায় সবচেয়ে উপরের স্থানটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দখলেই, যারা অনান্য দেশের তুলনায় বেশ বড় ব্যবধানে সর্বাধিক সামরিক সহায়তা প্রদান করেছে।

ফ্রাঙ্ক জানান, সামরিক সাহায্যের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তারা ২২.৮৬ বিলিয়ন ইউরো বা ২৪.৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমপরিমাণ সাহায্য করেছে। যুক্তরাজ্য রয়েছে দ্বিতীয় অবস্থানে, তার করেছে ৪,১৩ বিলিয়ন ইউরো বা ৪.৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। প্রকৃতপক্ষে, যুক্তরাজ্য ইউক্রেনের অন্যতম বৃহত্তম অস্ত্র সরবরাহকারী। লন্ডনের সরকার ইউক্রেনকে সামরিক সরঞ্জামের মধ্যে এম২৭০ মাল্টিপল রকেট লঞ্চার, হাজার হাজার অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক অস্ত্র, শত শত স্বল্প-পাল্লার মিসাইল, সাঁজোয়া যান এবং কিছু স্টারস্ট্রিক অ্যান্টি-এয়ারক্রাফ্ট সিস্টেম সরবরাহ করেছে বা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক আরও ১২৫টি বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। জার্মানি, সামরিক সাহায্যের অবস্থানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের পরে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। এখনও পর্যন্ত তারা ২.৩৪ বিলিয়ন ইউরো বা ২.৪৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সাহায্য করেছে।

ইউরোপীয় সমর্থনের বেশিরভাগই এসেছে লন্ডন এবং বার্লিন থেকে। আইএফডব্লিউ-এর মতে, ইইউ সদস্য দেশগুলো সামরিক সহায়তা হিসেবে মোট ৮.৬১ বিলিয়ন ইউরো প্রদান করেছে।

পশ্চিমা সাহায্যের অনস্বীকার্য প্রভাব: ইউরোপীয়দের সাহায্য কেবল সামরিক সমর্থন দিয়েই শেষ হয়নি। যদি আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরিচালিত সামরিক প্রতিদান প্রকল্প ইউরোপীয় শান্তি সুবিধাকে অন্তর্ভুক্ত করি, তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সামরিক সহায়তা হিসেবে আরও ৩.১ বিলিয়ন ইউরো যোগ হবে, মোট অর্থ বেড়ে দাঁড়াবে ১১.৭১ বিলিয়ন ইউরোতে। ফ্র্যাঙ্ক উল্লেখ করেন। তবে সামরিক সাহায্য বাদ দিলেও ইউক্রেনের প্রতি দেশগুলোর মানবিক সহায়তা, আর্থিক সহায়তাও কম নয়। জানুয়ারি থেকে ইউক্রেনকে আরও ১৮ বিলিয়ন ইউরো সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো। এটি কার্যকর হলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাহায্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যাবে।

এর ফলে ইউরোপ তখন কিয়েভকে মোট ৫২ বিলিয়ন ইউরো সহায়তা করবে, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সামরিক, আর্থিক এবং মানবিক সহায়তার পরিমাণ ৪৮ বিলিয়ন ইউরো, আইএফডব্লিউ জানায়। গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি থেকে শুরু করে সম্প্রতি অনুমোদন করা ১.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সাহায্যের প্যাকেজ ইউক্রেনকে রুশ আগ্রাসন মোকাবেলার করার অনুমতি দিয়েছে কিছু প্রত্যাশিত উপায়ে।

রিডিং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক রাউতা বলেন, প্রায়শই, যুক্তি দেওয়া হয় যে ইউক্রেনের জন্য সাহায্য রাশিয়ার প্রতিরক্ষা বাজেটের তুলনায় অনেক বেশি। কিন্তু, ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ গোয়েন্দা আপডেট অনুযায়ী, পুতিন ২০২৩ সালে ইউক্রেনে তার যুদ্ধের জন্য ১১৬ বিলিয়ন পাউন্ড বা ১৪০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি খরচ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। রয়টার্সের সাম্প্রতিক বিশ্লেষণেও ২০২৩ সালে রাশিয়ার মোট প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বাজেট হিসেবে ১৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ধরা হয়েছে।

রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এই যুক্তফ্রন্ট অটল থাকতে পারে কিনা, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসে যখন রিপাবলিকান নেতৃত্ব রয়েছে, সেটাই দেখার বিষয়। একদিকে, সাফল্য-পরাজয়ের ভারসাম্য এখনও কোনও দেশের যায়নি, প্রতি মাসেই যুদ্ধের অবস্থা পরিবর্তন হচ্ছে। ইউক্রেন একদিকে আরও এলাকা পুনরুদ্ধার করলেও রাশিয়া অবকাঠামোর ওপর ক্রমাগত আক্রমণ চালিয়ে আচ্ছে। এছাড়াও রুশরা জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে কিয়েভ দখলের জন্য নতুনভাবে এগোবে বলে শোনা যাচ্ছে। আবার, ইউক্রেনও তাদের দেশকে রক্ষার জন্য অটল সংকল্প ধরে রেখেছে, রুশরাও শান্তিচুক্তিতে এগোতে চাচ্ছে না। ২০২৩ সালে যা-ই হোক না কেন, রুশরা যদি শান্তিচুক্তি কররার ভান করে, তবে সেটি হবে সময় কেনা, নিজেদের সংগঠিত করা এবং পুনরায় সংগঠিত করার উপায়ের জন্য। ২০২৩ সালে ইউক্রেনের জন্য আটলান্টিকের দুই পাশ থেকে আরও সাহায্য আসবে বলা আশা করাই যায়, যখন তাদের কয়েক দশকের মধ্যে নিরাপত্তাগতদিক থেকে সবচেয়ে বড় হুমকিতে পড়তে হচ্ছে।

নিউজ ট্যাগ: ইউক্রেন যুদ্ধ

আরও খবর



বাসমতি চালের বিকল্প হতে পারে ‘বিনা ধান-২৫’

প্রকাশিত:বুধবার ১৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৫ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ফিরোজ মাহমুদ, মিরসরাই (চট্টগ্রাম)

Image

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়েবিনা ধান-২৫এর পরীক্ষামূলক চাষাবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে। কম সময়ে ধানের বাম্পার ফলনে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা জুগিয়েছে। নতুন উদ্ভাবিত প্রিমিয়াম কোয়ালিটির বোরো জাতেরবিনা ধান-২৫ বাসমতি চালের বিকল্প হিসেবে ধান চাষাবাদে চিকন চাল আমদানি কমাতে পারে বলে জানিয়েছে কৃষি অফিস।

মিরসরাইয়ের হিঙ্গুলী ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামেবিনা ধান-২৫জাতের প্রদর্শনীতে গিয়ে দেখা যায়, ধানের শীষে সোনালি আভা। সবগুলো ধানের গোচা সোজা সারি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ধান গাছের প্রতি শীষে ধরে আছে চিকন ধান। ইতোমধ্যে ধান কাটা শুরু হয়েছে। দুই একর জমিতে জামালপুর গ্রামের বাবুল কান্তি মজুমদার, পলাশ দত্ত, রাজু মজুমদার, সুমন চন্দ্র দে কমল কান্তি দে পার্টনারশিপ প্রকল্পের আওতায় পরীক্ষামূলকভাবেবিনা ধান-২৫চাষ করেছেন। ধানের ফলন দেখে তাদের মুখে হাসি দেখা গেছে।

কৃষক পলাশ দত্ত বলেন, ‘আমরা কৃষি প্রণোদনা পেয়ে দুই একর জমিতে পরীক্ষামূলক বিনা-২৫ ধানের আবাদ করেছি। এই প্রথম নতুন জাতের চাষাবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে। ধান গাছের শিষ প্রতি ৩০০ থেকে ৩৫০টি ধান ধরেছে। অন্য জাতের তুলনায় জাতে শীষ প্রতি ধানের পরিমাণও বেশি। বিঘাপ্রতি ২০-২৫ মণ উৎপাদনের পাশাপাশি বাজারমূল্য বেশি হওয়ায় বেশি লাভের আশাবাদী আমরা।

মিরসরাই উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন, এন্টারপ্রেনরশিপ অ্যান্ড রেসিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় মিরসরাইয়ে প্রথমবারের মতো ক্লাস্টার প্রযুক্তি প্রদর্শনী (বোরো) ‘বিনা ধান-২৫আবাদ করা হয়েছে।

উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়নের জামালপুর, মিরসরাই সদর ইউনিয়নের তালবাড়িয়া দুর্গাপুর ইউনিয়নের রায়পুর গ্রামে জাতের ধানের প্রদর্শনী করা হয়েছে। প্রতিটি প্রদর্শনীতে পার্টনারশিপে একাধিক কৃষককে একর জমির জন্য ২০ কেজি করে মাদার সিড দেওয়া হয়। পরীক্ষামূলক আবাদে এবার সুবিধাভোগী কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে ধানের বীজ সরবরাহ করা হয়েছিল।

হিঙ্গুলী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. এমরানুল হক বলেন, ‘জামালপুর গ্রামের পাঁচজন কৃষক পরীক্ষামূলকবিনা ধান-২৫প্রদর্শনী দেখে এখানকার অনেক কৃষক উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। প্রথমবারে বাম্পার ফলন এবং বাসমতি চালের বিকল্প ধানের বাজারমূল্য বেশি হওয়ায় অনেক চাষি ধান চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

মিরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, ‘বিনা ধান-২৫জাতটি মিরসরাইয়ে পরীক্ষামূলকভাবে চাষাবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে। উচ্চ ফলনশীল ধান প্রিমিয়াম কোয়ালিটির এবং সুগন্ধি। ধানটি দেশে বাসমতি চালের বিকল্প হতে পারে। কৃষিকে বহুমুখীকরণ কৃষকদের ভালো লাভের মাধ্যমে কৃষিকাজে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে জাত আবাদে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।


আরও খবর



চাঁদপুরে উপজেলা নির্বাচনে কোস্টগার্ড মোতায়েন

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চাঁদপুরের উপকূলীয় নির্বাচনী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মোতায়েন রয়েছে কোস্ট গার্ড। মঙ্গলবার (৭ মে) দুপুরে কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার খন্দকার মুনিফ তকি এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ৮ মে  বুধবার আসন্ন উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠ, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড গত ৬ মে থেকে মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে।

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড চাঁদপুর-২ আসনের মতলব উত্তর উপজেলার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে। মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা নদীর তীরবর্তী কেন্দ্রগুলোতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের প্লাটুন এবং ২টি জাহাজ ও ৩টি উচ্চ গতিসম্পন্ন টহল বোটের মাধ্যমে সার্বোক্ষণিক টহল কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের এ কার্যক্রম নির্বাচন পূর্ববর্তী, নির্বাচনকালীন ও নির্বাচন পরবর্তী সময় পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।


আরও খবর



গরমে ক্লান্তি দূর করবে চিয়া সিড

প্রকাশিত:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জীবন ধারা ডেস্ক

Image

গরমে লেবুর ঠান্ডা পানি মন জুড়িয়ে দেয়। কিন্তু অনেকেই গলা ভেজান কোল্ড ড্রিংসে। এই ধরনের পানীয় স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ওজন বাড়িয়ে দেয় এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে কোল্ড ড্রিংস ছাড়ুন। এই গরমের ফল আর সুপারফুড চিয়া সিড দিয়ে শরবত বানিয়ে খান। এতে ক্লান্তি দূর হবে।

এই বীজে প্রচুর ফাইবার রয়েছে। চিয়া সিডের পানি শরীরকে হাইড্রেটেড রাখার পাশাপাশি ওজন কমাতে সাহায্য করে। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা মুক্তি দেয়। রক্তে সুগার লেভেল ও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

চিয়া সিডের মধ্যে থাকা ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড নামের এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। এতে হৃদরোগের ঝুঁকিও কমে।

চিয়া সিডের শরবত বানাতে বেশি কষ্ট করতে হয় না। এক গ্লাস পানিতে এক চামচ চিয়া সিড ভিজিয়ে রাখলেই কাজ শেষ। তবে, এই চিয়া সিড পানিকে আরও মজাদার বানাতে পারেন।

লেবু ও চিয়া সিডের পানি : পাতিলেবুর রস দিয়ে লেবুর পানি বানিয়ে নিন। চিনির বদলে এই পানিতে মধু মেশান। কয়েকটা পুদিনা পাতা পানিতে মিশিয়ে দিন। একদম শেষে এক চামচ ভেজানো চিয়া সিড মিশিয়ে দিন। এবার এই মিশ্রণটি ফ্রিজে রেখে দিন। রোদ থেকে বাড়ি ফিরে এই লেবুর পানিতে চুমুক দিন। এক নিমেষে সমস্ত ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে।

তরমুজ ও চিয়া সিডের পানীয় : তরমুজের শরবত শরীরকে ঠান্ডা ও হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে। তরমুজের শরবতের সঙ্গে চিয়া সিড মিশিয়ে দিলে এর স্বাস্থ্য গুণ বেড়ে যায়। ব্লেন্ডারে তরমুজ ব্লেন্ড করে নিন। এবারে এতে পুদিনা পাতা ও লেবুর রস মিশিয়ে দিন। একদম শেষে এক চামচ ভেজানো চিয়া সিড মিশিয়ে দিন। এই পানীয় ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করুন। তারপর খান। শরীরে সতেজতা এনে দেবে এই পানীয়।

নিউজ ট্যাগ: চিয়া সিড

আরও খবর



‘নারীদের এগিয়ে নিতে কার্যকর পরিকল্পনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী’

প্রকাশিত:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | হালনাগাদ:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারীদের এগিয়ে নিতে কার্যকর পরিকল্পনা করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে নারীদের প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে।

শনিবার (২০ এপ্রিল) রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অপরাজিতা নেটওয়ার্কের উদ্যোগে আয়োজিত 'জাতীয় অপরাজিতা সম্মেলন' এর উদ্বোধনী  অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

বাগেরহাট জেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান ও বাগেরহাট জেলা অপরাজিতা নেটওয়ার্কের সভাপতি শরীফা খানমের সভাপতিত্বে খান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট রোকসানা খন্দকারের সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন দিনাজপুর জেলা অপরাজিতা নেটওয়ার্কের সদস্য জেসমিন আক্তার রিভা এবং হেলভেটাস বাংলাদেশের প্রকল্প পরিচালক প্রশান্ত ত্রিপুরা।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আসাদুজ্জামান নূর, আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, আরমা দত্ত, নাছিমা জামান ববি এবং সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেটো রেঙ্গলি। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ঝালকাঠির উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও বরিশাল বিভাগীয় অপরাজিতা নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক ইসরাত জাহান সোনালী।

স্পিকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারীদের এগিয়ে নিতে কার্যকর আইনগত মডেল ও পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে নারীদের প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে যেন ডিজিটাল সুযোগ প্রাপ্তিতে কোন ধরনের বৈষম্য তৈরি না হয়। দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী। এ দেশে নারী ভোটারের সংখ্যাও বেশি। নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে যা ইতিবাচক প্রভাব রাখতে পারে।

স্পিকার বলেন, অপরাজিতা নেটওয়ার্ক ৯ হাজার নারীর একটি সমন্বিত প্ল্যাটফর্ম। এক সঙ্গে কাজ করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ, সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও ঐক্য বজায় রেখে এই নেটওয়ার্ককে এগিয়ে যেতে হবে। বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে এই নেটওয়ার্ক নারীদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে- যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।

এ সময় ১৬ জেলার ১৬ জন নারীকে অগ্রগামী অপরাজিতা হিসেবে এবং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের পথিকৃৎ অপরাজিতা হিসেবে সম্মাননা প্রদান করা হয়। জাতীয় অপরাজিতা সম্মেলনে দেশের ১৬টি জেলার ৩০০ জন অপরাজিতা, বিশিষ্ট নারী নেতৃবৃন্দ, আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ, গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।


আরও খবর



জাতিসংঘে বাংলাদেশ উত্থাপিত ‘শান্তির সংস্কৃতি’ প্রস্তাব গৃহীত

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বৃহস্পতিবার (২ মে) বাংলাদেশ উত্থাপিত শান্তির সংস্কৃতি’ প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবদুল মুহিত বাংলাদেশের পক্ষে প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন।

এ সময় তিনি বলেন, আজ বিশ্ব ক্রমবর্ধমান দ্বন্দ্ব এবং মানবিক মর্যাদা অবজ্ঞার মুখোমুখি। এই সংঘাত ও সহিংসতা উত্তরণে মানবমনে সম্প্রীতি ও সহমর্মিতার ভাবকে পুনরুজ্জীবিত করতে হবে। যুদ্ধের চেয়ে শান্তিকে লাভজনক করে তুলতে হবে।

যুদ্ধ ও ধ্বংসযজ্ঞে বাংলাদেশের নিজস্ব অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতিসংঘে শান্তির সংস্কৃতির ধারণা প্রবর্তনের বাংলাদেশের উদ্যোগটি আমাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকে অনুপ্রাণিত। বৈষম্য, বর্ণগত অসহিষ্ণুতা এবং পরাধীনতা আমাদের একটি ধ্বংসাত্মক যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য করে। এ কারণেই আমরা শান্তির প্রসারকে আমাদের পররাষ্ট্রনীতির একটি মৌলিক নীতিতে পরিণত করেছি।

১১২টি দেশ বাংলাদেশের এই রেজুল্যুশনটিকে কো-স্পন্সর করেছে, যা শান্তির সংস্কৃতি’ শীর্ষক রেজ্যুলেশনটির প্রতি জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অব্যাহত সমর্থনের সাক্ষ্য বহন করে।

রেজ্যুলেশনটির বিবেচনার পূর্বে শান্তির সংস্কৃতির ওপর সাধারণ পরিষদে বহু সদস্য রাষ্ট্র বক্তব্য প্রদান করে। এ সময় তারা জাতিসংঘে শান্তির সংস্কৃতির ধারণাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক নেতৃত্বের কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান।

উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম মেয়াদের সরকারের সময় ১৯৯৯ সালে সাধারণ পরিষদে প্রস্তাবটি প্রথমবারের মতো গৃহীত হয়। এরপর থেকে প্রতিবছর বাংলাদেশ শান্তির সংস্কৃতি’ প্রস্তাবটি সাধারণ পরিষদে উপস্থাপন করে আসছে।

এছাড়া সাধারণ পরিষদের সভাপতির নেতৃত্বে ২০১২ সাল থেকে শান্তির সংস্কৃতি’ বিষয়ে বাংলাদেশ জাতিসংঘে একটি উচ্চ পর্যায়ের ফোরামের আয়োজন করে আসছে।


আরও খবর