আজঃ শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪
শিরোনাম

মানবতাবিরোধী অপরাধে বাগেরহাটের ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
বাগেরহাট প্রতিনিধি

Image

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বাগেরহাটের খান আকরামসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেন।

আদালতে তিন আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন। গত ২৮ নভেম্বর রায় ঘোষণার জন্যে আজকের দিন ধার্য করা হয়।

এ মামলায় মোট আসামি ছিলেন ৯ জন। তাদের মধ্যে ২ জন মারা গেছেন। খান আকরাম হোসেন, মকবুল মোল্লা ও শেখ মো. উকিল উদ্দিন কারাবন্দী রয়েছেন। বাকি ৪ জন পলাতক। পলাতক আসামিরা হলো- খান আশরাফ আলী, রুস্তম আলী মোল্লা, শেখ ইদ্রিস ও শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল।


আরও খবর



অস্ত্র মামলায় যুবকের ১৭ বছরের কারাদণ্ড

প্রকাশিত:রবিবার ১২ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১২ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

Image

লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে জুয়েল চন্দ্র ওরফে জুয়েল রানা (২৭) নামে এক যুবকের ১৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

রবিবার (১২ মে) দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ শাহীন উদ্দিন এ রায় দেন ।

জানা গেছে, দণ্ডপ্রাপ্ত জুয়েল নোয়াখালী জেলার চরজব্বর থানাধীন চরবাটা গ্রামের কৃষ্ণ চন্দ্র দাসের ছেলে। আদালতের রায়ের সময় আসামী অনুপস্থিত ছিলেন। জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, অস্ত্র মামলায় আসামী জুয়েল রানা আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।

আদালত তাকে অস্ত্র আইনের ১৯ ধারায় ১০ বছর ও ১৯ এফ ধারায় সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। আদালত মো. সুজন (৩৩) নামে অপর আসামীকে বেকসুর খালাস দিয়েছে। সুজন রামগতির চরগাজী গ্রামের নুরুল হকের ছেলে। মো. জুয়েল নামে এ মামলার আরেক আসামী কিশোর হওয়ায় তার মামলাটি বিচারের জন্য কিশোর আদালতে পাঠানো হয়।

আদালত ও মামলার এজাহার সূত্র জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১০ জানুয়ারি রাতে লক্ষ্মীপুরের রামগতির হাজিরহাট বাজার থেকে পুলিশ একটি একনলা দেশীয় বন্দুক ও নয়টি কার্তুজসহ জুয়েল রানা ও জুয়েলকে আটক করে।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা জানান, অস্ত্রটি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সস্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য মো. সুজন নামে এক ব্যক্তি জুয়েলের কাছ থেকে অস্ত্র ভাড়া করেন। পরে নির্বাচন শেষে অস্ত্র নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ তাদের আটক করে।

এ ঘটনায় রামগতি থানার সাবেক উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল খায়ের বাদী হয়ে আটক দুজনসহ পলাতক সুজনকে আসামী করে অস্ত্র আইনে মামলা করেন। একই বছরের ১১ এপ্রিল থানার এসআই মামলাটি তদন্ত করে অভিযুক্ত জুয়েল ও সুজনের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত চার্জশিট (অভিযোগপত্র) জমা দেন। অন্য আসামী জুয়েল কিশোর হওয়ার বিচারের জন্য পৃথক তদন্ত প্রতিবেদন কিশোর আদালতে দাখিল করা হয়। 


আরও খবর



ঠাকুরগাঁওয়ে ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় পুড়ে গেছে ৬০ একর ধানখেত

প্রকাশিত:শনিবার ১১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১১ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
রেদওয়ানুল হক মিলন, ঠাকুরগাঁও

Image

উচ্চ তাপপ্রবাহে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করে বোরো ধান আবাদে কৃষক যখন নাজেহাল। ঠিক তখনই ইটভাটার বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার অর্ধশত কৃষকের ৬০ একর জমির ধান পুড়ে গেছে। এ অবস্থায় উপায় না পেয়ে উপজেলা প্রশাসনের কাছে ক্ষতি পূরণের দাবি করেছেন ভুক্তভোগী কৃষকেরা।

শুক্রবার (১০ মে) বিকেলে পীরগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রমিজ আলমসহ কৃষি কর্মকর্তারা ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের পুড়ে যাওয়া ধান পরিদর্শন করেন।

জানা গেছে, জেলার পীরগঞ্জ পৌর শহরের গুয়াগাঁও গ্রামের ফসলি জমির আশেপাশের ঢাকাইয়া শাহজাহান, বেলাল ও আকবর আলী নামে তিন ব্যক্তি তিনটি ইটভাটা গড়ে তুলেছেন। তাদের ভাটার বিষাক্ত ধোঁয়া আর তীব্র গরম বাতাসে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি ফসল ও বাগানের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। গত কয়েক দিনে ইটভাটার ধোঁয়া আর গরম বাতাসে প্রায় ৬০ একর বোরো ধানখেত পুড়ে গেছে। পরবর্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা ইটভাটা মালিককে ক্ষতি পূরণ দিতে অনুরোধ জানালেও তাদের কথায় কোন কর্ণপাত করেন নি। উপায় না পেয়ে ক্ষতিপূরণ চেয়ে বুধবার (৮ মে) উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ক্ষতিগ্রস্তরা।

কৃষকরা জানান, তীব্র দাপদাহের মধ্যে ঋণ মহাজন করে অতিরিক্ত খরচে ধান আবাদ করেছি। এখন ধানের শীষ বের হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ঠিক এই সময়ে ভাটার বিষাক্ত ধোঁয়া আর গরম বাতাসে তাদের ধানের পাতা পুড়ে হলুদ হয়ে গেছে। আর যেসব ধানের শীষ বের হয়েছে তার সবটাই আঠালো হয়ে গেছে। শীষে কোনো ধান নেই। এ অবস্থায় চরম দুশ্চিন্তায় আছেন তারা।

এদিকে পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে কৃষি বিভাগ মাঠ পরিদর্শন করে বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রেখেছেন জানান কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা নিহার রঞ্জন রায়।

এ বিষয়ে ইট ভাটা মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

এদিকে ফসলি জমির ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে আরও ক্ষতির মুখে পড়বে কৃষি অর্থনীতি এবং ক্ষতিগ্রস্ত হবে কৃষক। তাই এসব ভাটার মালিকের বিরুদ্ধে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকার কৃষক।

আর কৃষকের ক্ষতি পূরণ প্রদানে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রমিজ আলম।


আরও খবর



মুখের ক্যান্সারের লক্ষণ জেনে নিন

প্রকাশিত:শনিবার ১১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১১ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জীবন ধারা ডেস্ক

Image

ক্যান্সার এমন একটি রোগ যে শরীরে বাসা বাঁধলেও শুরুতে কিছুই টের পাওয়া যায় না। যখন বুঝতে পারা যায়, ততক্ষণে দেরি হয়ে যায় অনেকটাই। তাই সুস্থ অবস্থায়ও শরীরের বিভিন্ন লক্ষণের দিকে খেয়াল রাখা জরুরি। মুখের ক্যান্সারের লক্ষণ বুঝতে হলে আপনাকে আগেভাগেই খেয়াল রাখতে হবে কিছু বিষয়ের প্রতি। নিয়মিতভাবে খেয়াল রাখলে লক্ষণ থাকলে তা বুঝতে পারা সহজ হবে। এই অসুখ যত আগে বোঝা যায় তত দ্রুতই সুস্থতা লাভের আশা করা যায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন বিষয়গুলোর প্রতি খেয়াল রাখবেন-

মুখে অস্বাভাবিক ক্ষত : আপনার মুখে যদি কদিন পরপরই ঘা হতে থাকে তবে সতর্ক হোন। কারণ এটি হতে পারে উদ্বেগের বিষয়। এমনিতে মুখে ঘা হওয়া অস্বাভাবিক নয়। তবে সেই ঘা আবার দ্রুত সেরেও যায়। যদি মুখে ঘা হওয়ার তিন সপ্তাহ পরও ঘা না সারে তবে হতে পারে তা আপনার জন্য সতর্ক সংকেত। এক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

দাঁত পড়ে যাওয়া : বড় হওয়ার পর কোনো কারণ ছাড়া দাঁত পড়বে না। যদি আপনার দাঁত এভাবে কোনো কারণ ছাড়াই পড়ে যায় বিশেষ করে মাড়ির দাঁত, তাহলে সতর্ক হোন। হতে পারে এটি মুখের ক্যান্সারের লক্ষণ। আবার যদি মুখ খুলতে সমস্যা হয় তাহলে দ্রুত পরীক্ষা করিয়ে নিন। সাবধানতার বিকল্প নেই।

গলার স্বর বদলে গেলে : গলার স্বর বদলে গেলে তা আপনার জন্য দুঃসংবাদ বয়ে আনতে পারে। কারণ সুস্থ মানুষের গলার স্বর হঠাৎ করে পরিবর্তন হয়ে যাওয়ার কথা নয়। এক্ষেত্রে এটি আপনার কণ্ঠনালীতে বড় কোনো সমস্যার সংকেত হতে পারে। এর পাশাপাশি যদি খাবার খেতে অসুবিধা হয় তবে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা পেলে দ্রুত সুস্থ হওয়া সম্ভব।

মুখে ফোলাভাব দেখা দিলে : মুখের ভেতরে মাঝে মাঝে আঙুল দিয়ে পরীক্ষা করে দেখবেন। যদি কখনো মুখের ভেতরে কোনো পিণ্ড বা ফোলাভাব দেখা দেয় তাহলে সতর্ক হোন। দাঁত এবং মাড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝার চেষ্টা করুন কোনো সমস্যা রয়েছে কি না। এছাড়াও মাড়ি দিয়ে কোনো কারণ ছাড়াই রক্ত পড়লে বা দাঁতের ভেতরে ফাঁকা হতে শুরু করলে তা আপনার জন্য হতে পারে সতর্ক সংকেত। এক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।


আরও খবর



সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করতে শিক্ষামন্ত্রীর সুপারিশ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ বছর করার প্রস্তুতি নিচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি চিঠি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পাঠিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) চিঠি পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবুল খায়ের।

তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, শিক্ষামন্ত্রী চিঠিতে সরকারি চাকরিতে আবেদনের সময়সীমা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ করার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে চিঠি পাঠিয়েছেন। তবে এটা মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত নয়। শিক্ষার্থীদের পক্ষে একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে তিনি এই সুপারিশ করেছেন। সিদ্ধান্ত নেবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে সরকারি, আধা-সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে সব ধরনের চাকরিতে প্রবেশে বয়সসীমা ৩০ বছর মানদণ্ড হিসেবে অনুসরণ করা হয়। এ অবস্থায় চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী ৩৫ বছর করার দাবিতে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন।

সরকার বিষয়টি উপলব্ধি করে ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে পাতা নম্বর ৩৩-এর শিক্ষা, দক্ষতা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি অনুচ্ছেদে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে মেধা ও দক্ষতা বিবেচনায় রেখে বাস্তবতার নিরিখে যুক্তিসংগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল।

দীর্ঘদিন ধরে চাকরিপ্রার্থী শিক্ষার্থীদের একটি অংশ চাকরিতে আবেদনের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। তারা বলে আসছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ থেকে ৫৯ বছর পর্যন্ত। অর্থাৎ বয়স নয়, যোগ্যতাই একজন প্রার্থীর একমাত্র মাপকাঠি। ওই দেশের আলোকে বাংলাদেশেও চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছর করা দাবি করে আসছেন। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ওই সব শিক্ষার্থী দফায় দফায় কর্মসূচি পালন করে এলেও এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি। এখন শিক্ষামন্ত্রীও একই ধরনের সুপারিশ করলেন।


আরও খবর



উপজেলা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় নেতাদের ‘হস্তক্ষেপ’ নিয়ে চিন্তিত প্রার্থীরা

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৮ মে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর প্রথম অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনের দিকে নজর সবার। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা তৃণমূল থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত বেশ তৎপর। যেহেতু দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হচ্ছে না, তাই এবার দল থেকে কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না।

প্রথম ধাপের নির্বাচনে বেশিরভাগ উপজেলায় আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগই। তাই-তো তৃতীয় কোনো প্রার্থী থাকলে সেদিকেও নজর দিতে হচ্ছে তাদের। অন্যদিকে, স্থানীয় সংসদ সদস্যরা (এমপি) তাদের নিজস্ব বলয়ে রাখতে চাইছেন উপজেলাগুলো। আবার ক্ষমতাসীন দলের কেন্দ্রীয় নেতারাও চাচ্ছেন, তাদের বলয়ের মধ্যে থাকুক উপজেলার চেয়ার। এমন এক বা একাধিক বলয়ের বিরুদ্ধে লড়তে হচ্ছে প্রার্থীদের।

তবে, একাধিক প্রার্থী জানিয়েছেন, তারা স্থানীয় সরকার নির্বাচনে এমপি-মন্ত্রী কিংবা কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপ চান না। কোনো রকম প্রভাব ছাড়াই প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন প্রত্যাশা তাদের।

বর্তমান সংসদ সদস্যরা উপজেলার চেয়ারম্যান পদটিও অনেক স্থানে ভাগিয়ে নিতে চাচ্ছেন। নিজের পছন্দ মতো প্রার্থী দিচ্ছেন। যদিও ক্ষমতাসীনরা এবার দলীয় প্রতীক দেয়নি। সেই সুযোগ নিতে যাচ্ছেন ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য ও স্বতন্ত্র এমপিরা। এতে তৃণমূল রাজনীতিতে গ্রুপিংটা আরও প্রকাশ পাচ্ছে।

জানা গেছে, আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ১৫০টি উপজেলায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এসব উপজেলার চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন মোট ৬৯৬ জন। তার মধ্যে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের অন্তত ৪৬৬ জন নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বাকিরা বিএনপি, জামায়াত ও অন্যান্য দলের প্রার্থী। তবে, বিএনপি ও জামায়াত দলীয়ভাবে নির্বাচন থেকে সরে যাচ্ছে। কিন্তু তাদের অনেক প্রার্থী এখনও নির্বাচনে অংশ নেওয়ার দৌড়ে আছেন। এ নিয়ে চিন্তিত ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা। তাদের এক পক্ষ হস্তক্ষেপ চান, অপর পক্ষ হস্তক্ষেপ চান না বলে জানা গেছে।

দলীয় সূত্র মতে, উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থীর পক্ষে-বিপক্ষে থাকার রেষ কাটতে না কাটতে উপজেলা নির্বাচন। জাতীয় নির্বাচনের সব জের যেন উপজেলা নির্বাচনে প্রকাশ পাচ্ছে। অনেকের মতে, তৃণমূলে আরও বড় হচ্ছে বিভেদের দেয়াল। গেল সংসদ নির্বাচনে নেতাকর্মীদের মধ্যে মনোমালিন্যের যে বাঁক-বদল হয়েছিল, আসছে উপজেলার ভোটে তা আরও নতুন মাত্রা পাচ্ছে। বর্তমান সংসদ সদস্যরা উপজেলার চেয়ারম্যান পদটিও অনেক স্থানে ভাগিয়ে নিতে চাচ্ছেন। নিজের পছন্দ মতো প্রার্থী দিচ্ছেন। যদিও ক্ষমতাসীনরা এবার দলীয় প্রতীক দেয়নি। সেই সুযোগ নিতে যাচ্ছেন ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য ও স্বতন্ত্র এমপিরা। এতে তৃণমূল রাজনীতিতে গ্রুপিংটা আরও প্রকাশ পাচ্ছে।

আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে বিভিন্ন জায়গায় নিকটাত্মীয়দের মনোনয়ন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রার্থিতা উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন উন্মুক্ত মানে উন্মুক্ত পরিবেশে নির্বাচন করার ইচ্ছা-বাসনা অনেকেরই থাকতে পারে। আমাদের বক্তব্য হলো, এমপি সাহেবরা বা মন্ত্রী-মহোদয়রা কোথাও কোনো প্রভাব বিস্তার করবেন না। প্রশাসন নিরপেক্ষ থাকবে। প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কেউ হস্তক্ষেপ করলে তা যেন সফল করতে না পারে। আর প্রার্থিতা চূড়ান্ত হওয়ার পর কেউ দলীয় নির্দেশ অমান্য করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

নিকটাত্মীয়ের মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মো. আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে উপজেলা আওয়ামী লীগের অভিযোগ প্রসঙ্গে কাদের বলেন, আমরা এগুলো জানি। তদন্ত করে খোঁজখবর নিচ্ছি।’

“প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, মন্ত্রী-এমপিরা যেন প্রভাব বিস্তার না করেন। নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে হয়, কেউ কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করবে না। প্রশাসন কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করবে না। নির্বিঘ্নে ভোটদানের ব্যবস্থা করেছে নির্বাচন কমিশন।

আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন নেতাকর্মীরা। কারণ, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দল থেকে প্রতীক ও কোনো প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়া হচ্ছে না। এতে যে যার মতো নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। কেউ কাউকে ছাড় দিচ্ছেন না। এজন্য নেতাকর্মীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়ছে। আবার কেন্দ্র থেকেও পছন্দের প্রার্থী সমর্থনের ইশারা দিচ্ছেন কেউ কেউ। এতে সুষ্ঠু নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।

বর্তমান সংসদ সদস্য ও তার আশেপাশের নেতাকর্মীরা উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে পারে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থী ব্যারিস্টার সোহরাব খান চৌধুরী বলেন, তারা (ক্ষমতাসীন দল) একশ ভাগ প্রভাব বিস্তার করবে। আমি নিরপেক্ষ নির্বাচন চাচ্ছি, প্রভাবমুক্ত নির্বাচন চাচ্ছি, যেখানে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে। ভোট দিতে পারে।”

২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এখনও আইনে দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান আছে। কিন্তু ক্ষমতাসীনদের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সংসদ নির্বাচনের মতো উপজেলা নির্বাচনও বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। তাদের অনুপস্থিতিতে নির্বাচনকে প্রতিযোগিতামূলক করতে আওয়ামী লীগ এবার উপজেলায় দলীয় প্রতীকে প্রার্থী দিচ্ছে না।

এদিকে, মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, মন্ত্রী-এমপিরা যেন প্রভাব বিস্তার না করেন। নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে হয়, কেউ কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করবে না। প্রশাসন কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করবে না। নির্বিঘ্নে ভোটদানের ব্যবস্থা করেছে নির্বাচন কমিশন। বিএনপি প্রকাশ্যে উপজেলা নির্বাচনের বিরোধিতা করলেও আমাদের জানা মতে তাদের অনেকেই অংশগ্রহণ করবেন।”

জানা গেছে, ২০১৫ সালে আইন সংশোধন করে চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীকে প্রার্থী দেওয়ার বিধান যুক্ত করা হয়। ২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এখনও আইনে দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান আছে। কিন্তু ক্ষমতাসীনদের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সংসদ নির্বাচনের মতো উপজেলা নির্বাচনও বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। তাদের অনুপস্থিতিতে নির্বাচনকে প্রতিযোগিতামূলক করতে আওয়ামী লীগ এবার উপজেলায় দলীয় প্রতীকে প্রার্থী দিচ্ছে না। দলটির নেতারা প্রার্থী হচ্ছেন। অন্যদিকে, শুরুতে এ নির্বাচনে কিছু জায়গায় প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও শেষ পর্যন্ত সেখান থেকে সরে এসেছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির যেসব নেতা মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন, তাদের তা প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা মহানগরের পাশের এক উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জাতীয় নির্বাচনে যে সমস্যা হয়েছিল, উপজেলাতেও সেটা হচ্ছে। স্বতন্ত্র এমপিরা মাঠ দখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন। কেন্দ্রীয় নেতারাও বসে নেই। তারাও নিজেদের বলয় টিকিয়ে রাখতে চাচ্ছেন। এতে অন্যান্য প্রার্থীরা বিপদের মুখে পড়েছেন। কেউ দেখাচ্ছেন সাংগঠনিক ভয়, আবার কেউ দেখাচ্ছেন এমপির ভয়। কেউ ঢাকায় বসে, আবার কেউ এলাকায় বসে রাজত্ব চাচ্ছেন। ভোট সুষ্ঠু করতে প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে। কারও ইশারায় কাজ করা যাবে না। সবাই হস্তক্ষেপ করতে চাইবে, কিন্তু প্রশাসনকে নিরপেক্ষ থাকতে হবে।

নিউজ ট্যাগ: উপজেলা নির্বাচন

আরও খবর