আজঃ রবিবার ১৯ মে ২০২৪
শিরোনাম

মানিকগঞ্জে কবরস্থান থেকে ৯টি কঙ্কাল চুরি

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ৩১ মার্চ ২০২২ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ৩১ মার্চ ২০২২ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image

মানিকগঞ্জের ঘিওরে কবরস্থান থেকে ৯টি কঙ্কাল চুরির ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) ভোরে উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের বড় ধুলন্ডী গ্রামের জান্নাতুল বাকী সার্বজনীন কবরস্থানে এ ঘটনা ঘটে। ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজের পর ধুলন্ডী গ্রামের বাসিন্দা কবরস্থান কমিটির কোষাধ্যক্ষ মো. আবুল হোসেন কবরস্থান পরিষ্কার করতে যান। এ সময় তিনি খেয়াল করেন, কয়েকটি কবর খোঁড়া। এসব কবর থেকে মরদেহের কঙ্কাল তুলে নেয়া হয়েছে এবং একটি লাশ পুরোপুরি পচে না যাওয়ায় লাশটি ফেলে রেখে যায়। এরপর তৎক্ষণাৎ তিনি বিষয়টি ওই কবরস্থান ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও সম্পাদককে জানান। তারা পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে শিবালয় সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লাবনী আক্তার, ঘিওর উপজেলা কমিশনার ভূমি মো. মোহসেন উদ্দিন, ঘিওর থানার ওসি মো. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব, বালিয়াখোড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল আওয়াল খানসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তা উপস্থিত হন।

এ বিষয়ে কবরস্থান ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. আকতার হোসেন খান বলেন, কবর থেকে কঙ্কাল চুরি হওয়ার ঘটনা নিন্দনীয়। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত সময়ের মধ্যে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার অনুরোধ করছি।

ওসি মো. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব জানান, কঙ্কাল চুরির বিষয়টি শোনার পর ঘটনাস্থলে এসেছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


আরও খবর



হবিগঞ্জে ব্যবসায়ী হত্যা মামলায় ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

Image

হবিগঞ্জের হুরগাও গ্রামের হারুন মিয়া হত্যা মামলায় সাতজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং অপর ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। ২১ বছর পর এ মামলার রায় এলো।

হবিগঞ্জের অতিরিক্ত দায়রা জজ-১-এর বিচারক মো: আজিজুল হক মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- জালাল মিয়া, রুহুল আমিন, কুতুব আলী, ফজল মিয়া, রফিক মিয়া, জাকির হোসেন, আব্বাছ উদ্দিন।

আর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- ছায়েদ মিয়া, মিজান মিয়া, আব্দুল মতলিব, কালা মিয়া, জিয়াউল হক, আয়াত আলী, ইছাক মিয়া, কুতুব আলী, জজ মিয়া, ইব্রাহিম মিয়া।

২০০৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি হুরগাও গ্রামে গ্রাম্য বিরোধের জের ধরে হারুন মিয়াকে হত্যা করা হয়। একই দিন তার চাচাতো ভাই সুমন আহমেদ ৪৭ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

২১ বছরে রাষ্ট্রপক্ষ ৩৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৫ জনকে আদালতে উপস্থাপন করে। আসামিদের মধ্যে আটজন বিভিন্ন সময় স্বাভাবিকভাবে মৃত্যুবরণ করায় তাদেরকে হত্যা মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

রায় ঘোষণার সময় একজন ছাড়া সব আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাদেরকে সাজা পরোয়ানা মূলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট সালেহ উদ্দিন আহমেদ।


আরও খবর



সুন্দরবনের আগুন নেভাতে যোগ দিয়েছে নৌ ও বিমানবাহিনী

প্রকাশিত:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বাগেরহাট প্রতিনিধি

Image

বাগেরহাটের সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের আমুরবুনিয়া টহল ফাঁড়ি-সংলগ্ন লতিফের ছিলা নামক এলাকায় লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিস। রবিবার (৫ মে) সকাল ৯টা থেকে বনরক্ষী-ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি এ কাজে যোগ দিয়েছে নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার।

শুরুতেই নৌবাহিনীর মোংলা ঘাঁটির লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আরফাতুল আরেফিনের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি ফায়ার ফাইটিং টিম আগুন নেভানোর কাজে নেমে পড়েন। এরপর ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা পাশের ভোলা নদী থেকে পানি ওঠানোর জন্য পাইপ সংযোগ দেন। তবে নদীতে জোয়ার না থাকায় পানি সরবরাহে বিলম্ব হচ্ছে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বাগেরহাটের উপপরিচালক মামুন আহমেদ জানান, সকালেই সুন্দরবনের আগুন নেভাতে তাদের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসেছে। এর মধ্যে মোংলা, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলার তিনটি ইউনিট কাজ শুরু করেছে। বাকি দুটি ইউনিট স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে। তবে বনের পাশে ভোলা নদীতে এখন ভাটা থাকায় আগুন নেভানোর কাজে পাইপসহ অন্যান্য সরঞ্জাম নেওয়া যাচ্ছে না। জোয়ার হলে এগুলো পার করা হবে। তবে আগুন অল্প অল্প করে জ্বলছে। শুকনো পাতা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলেও আগুন ভয়াবহ আকার ধারণ করার শঙ্কা নেই।

পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী নুরুল করিম গণমাধ্যমকে বলেন, শনিবার নানা প্রতিকূলতায় আগুন নেভানোর কাজ শুরু করা যায়নি। তবে আজ সকাল থেকে এ কাজ শুরু করা হয়েছে। এতে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার যোগ দিয়েছে। স্থানীয় এলাকাবাসীরাও সব রকমের সহযোগিতা করছেন।

এদিকে আগুন লাগার কারণ, কী পরিমাণ এলাকায় আগুন লেগেছে ও ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বনবিভাগ। চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক রানা দেবকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে। আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।


আরও খবর



তীব্র গরমে যে পরামর্শ সাবিলা নূরের

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বিনোদন ডেস্ক

Image

দেশে তীব্র দাবদাহ চলছে। সারা দেশে হিট অ্যালার্টও জারি করা হয়েছে। তীব্র গরমে ঢাকাসহ সারা দেশের মানুষ হাঁসফাঁস করছে। এমন অবস্থার জন্য পর্যাপ্ত গাছপালা ও বনায়ন না থাকাকে দায়ী করছেন অনেকে। এই অসহনীয় তাপপ্রবাহ মোকাবিলায় সবাইকে গাছ লাগানোর আহ্বান জানাচ্ছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

এবার ভক্তদের গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাবিলা নূর। নিজের ফেসবুক পাতায় একটি স্ট্যাটাসে এ আহ্বান জানান তিনি।স্ট্যাটাসে ভক্তদের পরামর্শও দিয়েছেন এই অভিনেত্রী।

সাবিলা নূর লিখেছেন, আসুন, আমরা সবাই মিলে একটা উদ্যোগ নিই। নিজ নিজ এলাকায় অন্তত ১০টি করে গাছ লাগাই। আর এটাকে একটা ইভেন্টে পরিণত করি। পরিবার-বন্ধুবান্ধব সবাই একসঙ্গে মিলিত হই। সেলফি/রিল/টিকটকে ট্রেন্ডিংয়ে নিয়ে আসি গাছ লাগান, পরিবেশ বাঁচান- এই ধরনের কোনো ইভেন্টকে। কেমন হবে বলুন তো?

অভিনেত্রীর এমন পোস্টে ব্যাপক সাড়া দিয়েছেন তার ভক্তরা। তারাও এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। অনেকে মন্তব্যের ঘরে লিখেছেন, খুব ভালো উদ্যোগ।

নিউজ ট্যাগ: সাবিলা নূর

আরও খবর



৫ ড্রিংকস নিষিদ্ধ চেয়ে মামলা, মালিকদের তলব

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

বাজারে বিক্রি হওয়া অনুমোদনহীন পাঁচটি কোম্পানির ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকসের মালিককে তলব করেছেন আদালত।ড্রিংকগুলো হলো- এসএমসি প্লাস, প্রাণের এক্টিভ, ব্রুভানা, আকেজের রিচার্জ এবং টারবো।

আজ মঙ্গলবার বিশুদ্ধ খাদ্য আদালতের বিচারক আলাউল আকবরের আদালত এ আদেশ দেন। সেই সঙ্গে পাঁচটি কোম্পানির মালিকদের আগামী ৫, ৬ এবং ৯ জুন আদালতে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। এসএমসি প্লাস, প্রাণের এক্টিভ, ব্রুভানা, আকেজের রিচার্জ এবং টারবো- এগুলো ওষুধ নাকি এনার্জি ড্রিংকস সে বিষয়ে তারা ব্যাখ্যা দিবেন।

এর আগে সকালে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের ক্ষমতাপ্রাপ্ত নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক মো. কামরুল হোসেন বিশুদ্ধ খাদ্য আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। এ সময় নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক বলেন, এগুলোর একটিরও অনুমোদন নেই।

তিনি আরও বলেন, ওষুধ প্রশাসনও বলতে পারেনা এগুলো ওষুধ না ড্রিংকস। এর মধ্যে এসএমসি প্লাসের মডেল হয়ে পণ্যর প্রসারে প্রচারণা করছেন ক্রিকেটার তামীম ইকবাল। নিরাপদ খাদ্য আইন অনুযায়ী এটি অপরাধ। আমরা বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ করতে বলেছি, শোনেনি কোনো কোম্পানি। কাজেই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।


আরও খবর



মিল্টন সমাদ্দারের বৃদ্ধাশ্রমে ‘টর্চার সেল’ আবিষ্কার

প্রকাশিত:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

মানুষের দানের টাকায় নির্মাণ করা বৃদ্ধাশ্রমের মধ্যেই তিন কক্ষ বিশিষ্ট টর্চার সেল গড়ে তুলেছেন মিল্টন সমাদ্দার। চাইল্ড এন্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ নামের প্রতিষ্ঠানের ভবনের ওই টর্চার সেলে মানুষকে ধরে নিয়ে পেটানো হয় নির্মমভাবে। টর্চার সেলের মধ্যে মানুষ পেটানোর জন্য রয়েছে নানা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র। সেলের মধ্যে নির্যাতনের একাধিক ঘটনা উঠে এসেছে অনুসন্ধানে। সেখানে কিভাবে নির্যাতন চালানো হয় সেই বর্ণনা দিয়েছেন নির্যাতনের শিকার হওয়া একাধিক ব্যক্তি।

সর্বশেষ গত ঈদুল ফিতরের আগের দিন ১০ এপ্রিল সাভারের কমলাপুর এলাকার বাহেরটেকে নিজের কেনা জমি দেখতে গিয়ে বেধড়ক মারধরের স্বীকার হন মো. সামসুদ্দিন চৌধুরী নামের ৬৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন মেয়ে এবং মেয়ের জামাই। বাধা দিতে গিয়ে মারধরের স্বীকার হন তারাও। মারধরে মেয়ের জামাই ফয়েজ আহমেদের হাতের লিগামেন্ট ছিঁড়ে যায় এবং সামসুদ্দিন চৌধুরীর একটি চোখ নষ্ট হয়ে যায়। সামসুদ্দিনের মেয়ে সেলিনা বেগমও মারধর থেকে রক্ষা পাননি। স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে প্রায় এক ঘণ্টা পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

ওই দিনের ঘটনা সম্পর্কে ভুক্তভোগী সেলিনা বেগম জানান, আমাদের জমি সে কম দামে ক্রয় করতে চেয়েছে। জমি না বিক্রি করায় সে আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত ছিল। মিল্টন সরকারি রাস্তায় বাঁশ দিয়ে বেড়া দিয়ে রেখেছে। যে কারণে আমাদের গাড়ি যাচ্ছিল না। পরে সরকারি রাস্তায় বেড়া দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তার লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালায়। প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে এসে বেধড়ক মারধর করে। এরপর আমার বাবা আর স্বামীকে মিল্টনের আশ্রমের ভেতরে নিয়ে একটি রুমের মধ্যে আটকে রাখে। ওখানে ৩টা রুম পাশাপাশি, একটা দিয়ে আরেকটায় যাওয়া যায়। রুমের মধ্যে অনেক লাঠিসোঁটা, পাইপ ও ছুরি ছিল। পাইপ দিয়ে একজনের পর একজন করে পেটাতে থাকে। মিল্টন নিজেও একটু পরপর এসে মারধর করে। আমি তখন মিল্টনের পায়ে ধরে আমার স্বামী ও বাবাকে ছেড়ে দিতে বললে আমাকেও বেধড়ক মারধর করা হয়। পরে লোকজন এগিয়ে এলে আমাদের ছেড়ে দেয়।

মিল্টন সমাদ্দার নিজেকে মানবতার ফেরিওয়ালা এবং বয়স্কদের সেবা করার দাবি করলেও নিজের হাতেই বৃদ্ধদের নির্যাতন চালান তিনি। এমনকি হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকেও কোনো দয়া দেখায়নি এ কথিত মানবতার ফেরিওয়ালা।

মিল্টনের হাতে মারধরের শিকার ইঞ্জিনিয়ার ফয়েজ বলেন, আমার হার্টে রিং বসানো; আমার স্ত্রী এটা বারবার তাদের বলে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা আমার বুকে দফায় দফায় লাথি মারে। আমার স্ত্রী মিল্টনের হাতে-পায়ে ধরলেও কাজ হয়নি।

মানবসেবার নামে গড়ে তোলা প্রতিষ্ঠানে মানুষকে নির্যাতনের জন্য মিল্টন সমাদ্দারের রয়েছে বিশেষ সন্ত্রাসী বাহিনী। যাদের মানুষের দানের টাকা দিয়ে পেলেপুষে রাখেন মিল্টন সমাদ্দার। জমি দখল ও নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে এই বাহিনীকেই ব্যবহার করেন তিনি।

ইঞ্জিনিয়ার ফয়েজ আরও জানান, মিল্টন সমাদ্দার নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে বিশেষ সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছে। যাদের মাসিক ভাতাও দেওয়া হয়। এই সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে বিভিন্ন জমি দখল ও আধিপত্য বজায় রাখে।

আরেক ভুক্তভোগী হেমন্ত রোজারিও জানান, আমি গরিব মানুষ। মিল্টন আমার জমি কিনতে চাইছে। আমি বেচি নাই। আমার জমি জোর করে দখল করে একটা ঘর বানাইছে। বাধা দেওয়ায় আমারে ধইরা মারছে। পরে আমারে বলছে, তুই ওই জমিতে আসবি না। এলে তোরে মাইরালামু।

নন্দন রোজারিও নামের আরেক ব্যক্তি জানান, ওকে এখানে আশ্রম বানাতে আমরাই সাহায্য করেছি। আমার জায়গায় জিনিসপত্র রেখে আশ্রমের কাজ করেছে। ভালো কাজ করে বলে আমরা কিছু বলিনি। পরে দেখি এসবের আড়ালে তার অন্য উদ্দেশ্য। তিনি এখানকার খ্রিস্টানদের জমি দখলের উদ্দেশ্যে এসেছে। কেউ জমি বেচতে না চাইলেই তার ওপরে নেমে আসে নির্যাতন। ওর লোকজন তাকে মারধর করে।

মিল্টনের মারধরের হাত থেকে রক্ষা পায়নি তার জন্মদাতা পিতাও। ২০০১ সালে নিজের পিতাকে বেধড়ক মারধর করে মিল্টন। সেই ঘটনার জেরে তাকে গ্রাম থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল বলে এলাকাবাসীরা জানান।

মিল্টন সমাদ্দারের গ্রামের শাহাদাত হোসেন পলাশ নামে একজন জানায়, মিল্টন সমাদ্দার তার বাবাকে বেধড়ক মারধর করে। এ কারণে তাকে গ্রাম থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরে সে পালিয়ে ঢাকায় গিয়ে ওঠে। এখন শুনতাছি, ও না কি মানবতার ফেরিওয়ালা। এটা শুনে আমরা আশ্চর্য হয়েছি।

বরিশালে চন্দ্রকোনা খ্রিস্টান মিশনারি চার্চ’ দখল চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে। দখলের উদ্দেশ্যে তিনি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিল-স্বাক্ষর জাল করে চার্চের নতুন কমিটি গঠন করে বরিশাল জেলা প্রশাসকে একটি চিঠি দেন। ওই কমিটিতে সভাপতি করা হয় মিল্টন সমাদ্দারকে। কমিটির বাকি সদস্যদের প্রায় সবাই মিল্টনের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজন। তবে এ বিষয়ে কিছুই জানতেন না চার্চের দায়িত্বরত যাজকরা। পরে তারা ধর্ম মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করলে মন্ত্রণালয় থেকে তাদের জানানো হয়, এ ধরনের কোনো চিঠি ইস্যু করা হয়নি। এরপর তারা কোর্টে মামলা করলে কোর্ট জালিয়াতি করে চার্চ দখল করতে চাওয়া ব্যক্তিদের ওই চার্চের সীমানায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেন।

হেনসন দানিল হাজরা নামে এক সহকারী যাজক বলেন, চার্চ দখল করার জন্য আমাকে গুম করে যাজকদের নামে মামলা দিয়েছিল মিল্টন। মামলায় আমি গুম হয়ে গেছি দেখানো হয়। আসামি করা হয় আমার সহকর্মীকে। আমার বাবাকে ম্যানেজ করে মিল্টন এ কাজ করে। তারা আমাকে গুম করে ফেলতে চেয়েছিল; কিন্তু পারেনি। পরে আমি পালিয়ে এসপি অফিসে হাজির হয়ে জানাই, আমি গুম হইনি।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিল্টন ও তার বড় ভাই মোল্লা বাড়ির ব্রিজের ওপরে মসজিদের পাশে আমাকে একবার বেধড়ক মারধর করেন।

অন্য আরেক যাজক বলেন, এই চার্চ দখল করার জন্য মিল্টন সমাদ্দার আমাদের শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করেছে। মারধর করেছে। আমাদের নামে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ একাধিক মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। যদিও সব মামলাই কোর্টে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। আমাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।


আরও খবর