রাজধানীর বেইলি রোডের কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্ট
ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নারী-শিশুসহ ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে রিপোর্ট লেখা
পর্যন্ত সবশেষ মিনহাজ উদ্দিন (২৬) নামের এক যুবকের মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়। শনিবার
(০২ মার্চ) সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গ থেকে পরিবারের কাছে মৃতদেহ হস্তান্তর
করা হয়।
এ নিয়ে এ ঘটনায় নিহত ৪৬ জনের মধ্যে ৪৪
জনের মৃতদেহ হস্তান্তর করা হলো। মিনহাজ রাজধানীর বেসরকারি একটি আইটি প্রতিষ্ঠানের সফটওয়্যার
প্রকৌশলী ছিলেন। বেসরকারি ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ালেখা শেষ করেন তিনি।
পরিচয় নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় শনিবার
মিনহাজের ডিএনএ টেস্ট করা হয়। তবে এর আগেই শুক্রবারই তার পরিবার মৃতদেহের হাতে ঘড়ি,
সামনের একটি বাঁকা দাঁত ও পেটে পুরাতন একটি অপারেশনের দাগ দেখে এটি তাদের ছেলে মিনহাজের
মৃতদেহ বলে শনাক্ত করে।
এদিকে, অন্য একটি পরিবার মিনহাজের মৃতদেহকে
তাদের সন্তানের মৃতদেহ বলে দাবি করে বসেন। এ নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়।
রমনা থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. হাবিবুর
রহমান জানান, শুক্রবারই মিনহাজের পরিবার মৃতদেহের হাতে ঘড়ি, সামনের একটি বাঁকা দাঁত
ও পেটে পুরাতন একটি অপারেশনের দাগ দেখে এটি তাদের ছেলে মিনহাজের মৃতদেহ বলে শনাক্ত
করে। তবে অন্য একটি পরিবারও সেটি তাদের পরিবারের সদস্যের মৃতদেহ হিসেবে দাবি করায় ময়নাতদন্ত
ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে শনিবার মর্গে মিনহাজসহ তিনটি মৃতদেহের
ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, মিনহাজের মৃতদেহ দাবি করা
অন্য পরিবারটি পরবর্তীতে মর্গে বলেছেন, এটা তাদের মৃতদেহ না। তাদেরটা অন্য একটি হতে
পারে। এরপর মিনহাজের পরিবারকে মৃতদেহটি হস্তান্তর করা হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গ থেকে মিনহাজের
মৃতদেহ শনাক্ত করেন তার বড় ভাই আমিনুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, তাদের বাড়ি চাঁদপুর সদর
উপজেলার ইসলামপুর গাছতলা গ্রামে। বর্তমানে সবুজবাগ বাসাবো খেলারমাঠ এলাকায় থাকতেন মিনহাজ।
কারওয়ান বাজার এলাকায় একটি প্রতিষ্ঠানে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করতেন। তিন
ভাইয়ের মধ্যে মিনহাজ ছিল ছোট।
তিনি বলেন, মিনহাজ হাতে যেই ঘড়ি ব্যবহার
করেন, মৃতদেহের হাতেও সেই ঘড়িটি দেখতে পেয়েছি। এছাড়া ছোটবেলায় তার পেটে একটি অপারেশন
হয়েছিল সেই দাগও দেখা গেছে। মিনহাজের সামনের অংশের একটি দাঁত বাঁকা ছিল, এসব দেখেই
নিশ্চিত হয়েছি এটি মিনহাজের মৃতদেহ।
আমিনুল ইসলাম খান জানান, ঘটনার দিন বন্ধুদের
সাথে বেইলি রোডের ওই ভবনে তৃতীয় তলায় খানাজ রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়েছিলেন মিনহাজ। ঘটনার
কয়েক মিনিট আগেও সেই বন্ধু মিনহাজকে নিয়ে একটি সেলফি তুলেছিলেন। আগুন লাগার পর সেই
বন্ধু বেরিয়ে আসতে পারলেও অন্ধকারে ও আটকে পড়া অনেক মানুষের ভিড়ে আটকে পড়েন মিনহাজ।
সেখানেই পুড়ে মারা যান তিনি।