আজঃ শনিবার ০৪ মে ২০২৪
শিরোনাম
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম

প্রধানমন্ত্রীর সফলতা ও জাতীয় উন্নয়ন

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী

Image

কত দিন পেরিয়ে এলাম তেমন বুঝতেই পারলাম না মহান স্রষ্টা রাব্বুল আল আমিনের সৃষ্টি কৌশল। যাকে কোলে নিয়েছি, কাঁখে নিয়েছি তারা দাদা-দাদি, নানা-নানি, তাঐ-মাঐ। অথচ কখনো মনেই হয় না এই তো সেদিন আমি গ্রামের ধুলোপথে ছুটোছুটি করছি। কিন্তু কীভাবে সময় বয়ে চলেছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বোন হাসিনা ২ সেপ্টেম্বর শের-ই-বাংলা নগর, পুরাতন বাণিজ্য মেলা মাঠে এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করেছেন। সবকিছুই বেশ ভালো হয়েছে। ঢাকার দিক থেকে এক্সপ্রেসওয়ে প্রথম ব্যবহার করেছি ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ সাল। গিয়েছিলাম গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর ইকবাল সিদ্দিকী এডুকেশন সোসাইটির সভায়।

সময় লেগেছিল সাড়ে ৭ মিনিট। আবার ৯ সেপ্টেম্বর একই জায়গায় গিয়েছিলাম। আগের দিন ধীরে গেছি। কিন্তু ৯ তারিখ চালককে বলেছিলাম, তুমি ৯০ কিলোমিটারে যাও।

দরকার পড়লে আরও বেশি। এক্সপ্রেসওয়েতে উঠে দেখলাম প্রায় সবাই আমাদের পিছে ফেলে যাচ্ছে। গতিসীমা ৬০ কিলোমিটার। কিন্তু মুখ্য প্রস্তাবে ৮০ কিলোমিটার ছিল। ৬০ কিলোমিটার হলে আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা তাতে নিশ্চয়ই ১০ কিলোমিটার রেয়াত পেতে পারি।

বীরউত্তম খেতাব পেয়েছি তাতেও ১০ কিলোমিটার। সবার আগে একমাত্র কাদেরিয়া বাহিনীর প্রধান হিসেবে দেশের পিতার পায়ের কাছে লাখ লাখ অস্ত্র বিছিয়ে দিয়েছি। তার জন্যেও তো ২-৪-১০ কিলোমিটার রেয়াত হতে পারে। তাই গতি বাড়াতে কোনো আপত্তি ছিল না। রাস্তাটা ভালো থাকলে ৬০ তো দূরের কথা ১২০ কিলোমিটারেও ছোট গাড়ি চললে সমস্যা হবে না।

এর আগে গত বছর ২৫ জুন পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। খুব গুরুত্বপূর্ণ দাওয়াতপত্র দেওয়া হয় ঠিকই কিন্তু কোনো রাষ্ট্রাচার নেই। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্যরাও সামনের সিট দখল করে বসে থাকে। কে একজন একেবারেই পশ্চিমের শেষ আসনে আমাকে বসিয়ে ছিলেন। বামে হুইলচেয়ারে ছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, পেছনেই ছিলেন ভারতের রাষ্ট্রদূত বিক্রমকুমার দোরাইস্বামী, এরপর ডানদিকে কয়েক মন্ত্রী, হুইপ, ৫ বা ৬ জনের পর বহুদিন পর পুতুলকে দেখেছিলাম। কিন্তু ও যেমন ওঠে এসে বলেনি, মামা কেমন আছ? আমিও কেন যেন ওঠে যাইনি। পরে মনে হয়েছে ভুলটা আমারই হয়েছে। আমি কখনো অমন করি না। সেই অনুষ্ঠানে পদ্মার উল্টা পাড়ে ১০ লাখ লোকের জমায়েত করতে চেয়েছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু তা হয়নি। তবে সম্মানজনক উপস্থিতি ছিল। আমার যা চোখে বাধে তা বলি। আমার বন্ধু যেমন আছে, শত্রুও আছে অনেক। কারণ এখনো বহু লোক পাকিস্তানের জন্য কাঁদে। কারণ পশ্চিমাদের গলগ্রহই তাদের সম্বল। আমরা পরাজিত হলে বঙ্গবন্ধুর যেমন ফাঁসি হতো, যেভাবে অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম আমাকেও চুমা খেত না। ফাঁসির কড়কড়ে দড়িতে ঝুলাত। তাই রক্ত দিয়ে অর্জন করা দেশের জন্য বড় বেশি লাগে।

বহু জায়গায় বহুবার বলেছি, আজও বলছি রাজনীতিতে না এলে বঙ্গবন্ধুকে না পেলে দেশকে চিনতাম না, জননী জন্মভূমি স্বর্গাদপি গরীয়সী শুধু শুনতাম হৃদয়ে লালন করতে পারতাম না। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ প্রেম। জীবে প্রেম করে যেইজন, সেইজন সেবিছে ঈশ্বর এসবই হতো কথার কথা, হৃদয়ের কথা হতো না। বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকীর কারণে রাজনীতিতে এসেছিলাম। রাজনীতিতে এসেই বঙ্গবন্ধুর আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেছিলাম। তার ভালোবাসা ¯ন্ডেœহ মমতায় দেশকে, দেশের মানুষকে ভালোবাসতে শিখেছিলাম। আজ আমার কাছে আমার মায়ের সান্নিধ্য সন্তান-সন্ততির উত্তাপ, সহধর্মিণীর আগলে রাখার মতো আমার মাতৃভূমি। গাছপালা, তরুলতা, কীটপতঙ্গ, পশুপাখি সবকিছুকে আল্লাহর দান হিসেবে বুকের মধ্যে আপনা-আপনি স্থান করে নিয়েছেন। ৩-৪ বছর আগে আমার কুশি ১০০ টাকা দিয়ে কারও কাছ থেকে একটা বিড়াল এনেছিল। বাইরের বিড়ালরা প্রায় সব সময় মারপিট করে। ছোট বলে মার খেয়ে ঘরে ফিরত। আস্তে আস্তে বড় হয়েছে। আমি খেতে বসলেই আমার চেয়ার অথবা পায়ের ওপর সামনের দুপা উঁচু করে তাকিমাকি করে। সে আজ কদিন হাসপাতালে। আমি অবাক হয়েছি আমাদের বাড়ির পাশের এক মহিলা জাফরিন জান্নাত পশু ডাক্তার। তাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেছে, অপারেশন করেছে। প্রায় ১৫ দিন বিড়ালটি বাড়ি নেই। মাঝেমধ্যেই দেখতে ইচ্ছা করে। কেন বিড়ালকে দেখতে ইচ্ছা করে আমি তার জবাব দিতে পারব না, কিন্তু করে। পরিবারের সমাজের একেবারে অপদার্থ সন্তান আমি। আল্লাহর দয়ায় এতদূর এসেছি। কত মানুষ হাত চেপে ধরে, কত মানুষ দোয়া কামনা করে, কত মানুষ দোয়া করে। তাই মনের ভিতরের কোনো কান্না চেপে রাখি না, চেপে রাখতে পারি না। অন্তরাত্মা হৃদয় যখন যা বলে তার বাইরে যাই না। ইদানীং আমাকে গুলি করে মেরে ফেলা যত সহজ, মতের বাইরে কথা বলানো তত সহজ নয়। খুবই সত্য দুই যুগ আওয়ামী লীগ ছেড়েছি। আওয়ামী লীগ সরকারের অনেক কর্মকান্ডের সঙ্গে আমার দ্বিমত আছে। কিন্তু এক মুহূর্তের জন্য পিতাকে ছাড়িনি, বঙ্গবন্ধুকে ছাড়িনি, আমৃত্যু ছাড়বও না। বঙ্গবন্ধুই আমার আদর্শ, আমার দলের আদর্শ, আমাদের নেতা, দলের নেতা। এটা কেউ যদি না বুঝে বা বুঝতে না চায় তাহলে আমার কিছু করার নেই। ভবিষ্যতে কোনো দিন বোন হাসিনার সফলতা ব্যর্থতা নিয়ে যখন চুলচেরা বিশ্লেষণ হবে ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই নেবেন তখন পদ্মা সেতু নির্মাণ বোন শেখ হাসিনার জন্য অন্যতম প্রধান কীর্তি হিসেবে পরিগণিত হবে। সম্রাট শাজাহান যেমন তাজমহলের জন্য অমর হয়ে আছেন, ঠিক তেমনি পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য আমার বোন বাংলাদেশ তথা বিশ্বের ইতিহাসে একজন প্রধানতম ব্যক্তি হিসেবে আলোচিত হবেন অথবা প্রতিষ্ঠা পাবেন। পদ্মা সেতু শুভ উদ্বোধনে যাকে নিয়ে এত কথাবার্তা উলোটপালট সেই সৈয়দ আবুল হোসেনকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বোন হাসিনা পাশে নিয়েছিলেন। এটা শুধু সৈয়দ আবুল হোসেনকে সম্মান নয়, এটা তার কর্মকে সম্মান, সমগ্র জাতিকে সম্মান। এক্সপ্রেসওয়েরও শুরুর দিকে সৈয়দ আবুল হোসেন ছিলেন। সূচনার সময় প্রস্তরফলক উন্মোচনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পাশে যেহেতু তিনি ছিলেন সমাপ্তি অনুষ্ঠানেও তাকে যথাযথ মর্যাদা দেওয়া হলে মঞ্চে ডেকে নিলে দেশবাসীর সামনে দুকথা বলবার সুযোগ দিলে যারা অনুষ্ঠান করেছেন তারা লাভবান হতেন। এ সম্মান শুধু সৈয়দ আবুল হোসেনের হতো না, এটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ আমাদের সবার হতো। ওই দিনের অনুষ্ঠানে মাননীয় মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক আসন পাচ্ছিলেন না। আমার খুব খারাপ লেগেছে। তিনি এখন এক নম্বর মন্ত্রী। বোনের পরেই তার স্থান। একটি সরকারি অনুষ্ঠানে যদি মর্যাদা না পান তাহলে রাষ্ট্রাচার কোথায় গিয়ে ঠেকেছে একটু তো ভাবতেই হবে।

ভারতে ছিলাম ১৬ বছর। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মহামান্য রাষ্ট্রপতি, এমনকি অনেক জাতীয় অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ অতিথি হিসেবে গেছি। সেখানে প্রবীণদের যে অসাধারণ সম্মান দেখেছি গুরুত্ব দেখেছি তা ভাবা যায় না। আজ যিনি মন্ত্রী, কাল নাও থাকতে পারেন। নতুন এমপি হতে পারেন, নতুন মন্ত্রী হতে পারেন। কিন্তু তিনি যদি যথার্থ নেতা হন, তার জায়গা মন্ত্রী থাকতে যা, মন্ত্রিত্ব না থাকতেও তাই থাকা দরকার। আজ থেকে বেশ কয়েক বছর আগে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের এক অনুষ্ঠানে লক্ষ্য করেছিলাম, জননেতা তোফায়েল আহমেদ বাঁশের বেড়ার বাইরে দর্শকের আসনে বসেছিলেন আর মঞ্চে ছিলেন নূহ-উল আলম লেনিন। তিনি তখন খুব সম্ভবত প্রেসিডিয়ামের সদস্য। ৬৯-এর ২২ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু কারাগার থেকে বেরিয়ে ছিলেন। ২৩ ফেব্রুয়ারি জাতির পক্ষ থেকে ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের মহানায়ক তোফায়েল আহমেদের মাধ্যমে শেখ মুজিবকে বঙ্গবন্ধু খেতাবে ভূষিত করা হয়। ২৩ ফেব্রুয়ারি আর ২৪ মার্চ মাত্র এক মাসের মধ্যে কোনো দিন ঢাকা পল্টন ময়দানে কোনো এক জনসভায় এই নূহ-উল আলম লেনিন তারস্বরে বলেছিলেন, এই তোফায়েল, তগোর বঙ্গবন্ধু না চঙ্গবন্ধু এই তাকে টুকরো টুকরো করলাম। বলেই তার হাতে থাকা বঙ্গবন্ধুর নামের বেশ কয়েকটি লিফলেট ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে উড়িয়ে দেওয়ার ছবি আজও আমার চোখে ভাসে, কানের ভিতর অনুরণন সৃষ্টি করে। তাই না বলে থাকতে পারি না। আমি ইন্টারনেটের কিছু বুঝি না। মোবাইলের তেমন কোনো সুবিধা নিতে পারি না। কিন্তু তবু হঠাৎ হঠাৎ চোখের সামনে কিছু ভেসে উঠলে তা এড়িয়ে যেতে পারি না। মনে হয় অল্পবয়সী কারও স্ট্যাটাস দেখলাম। তিনি বলেছেন, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম মাঝেসাজে বলেন ছাত্র ইউনিয়ন নেত্রী মতিয়া চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর পিঠের চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বাজাতে চেয়েছেন, জুতা বানাতে চেয়েছেন। অন্য কোনো কোনো নেতা নাকি বলেছেন, তোমাদের জাতির পিতা আমাদের জুতার ফিতা। কিন্তু অনেক ঘাঁটাঘাঁটি করে গুগল, ইউটিউবে কোনো প্রমাণ বের করতে পারলাম না। ছোট্ট বন্ধুটিকে কী বলব? এর আবার প্রমাণ! আপনি এখনই পাকিস্তান হোম মিনিস্ট্রিতে চিঠি লিখুন। আইবি, ডিআইবি রিপোর্টে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের কর্মকান্ড সব পেয়ে যাবেন। বোন মতিয়া চৌধুরী আমার থেকে ৫-৬ বছরের বড়। উনি আওয়ামী লীগে এসেছেন ৮৩ সালে। আমাদের পিতাকে হত্যা করা হয়েছে ৭৫ সালে। খুব সম্ভবত ৭৬ থেকে ৭৮-৭৯ সাল পর্যন্ত ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জে স্বেচ্ছাশ্রমে ব্রহ্মপুত্র নদ খনন করার কাজ হয়েছে। সেখানে মতিয়া চৌধুরী তার দল নিয়ে সাধারণ অংশগ্রহণকারীদের উদ্বুদ্ধ করতে না হলেও ১০-১২ বার গেছেন। আমরা তখন বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিরোধে সীমান্তে ছিলাম। সেখানে তার বক্তৃতার স্বকণ্ঠ রেকর্ড এখনো আছে। আর শুধু রেকর্ড লাগবে কেন, ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা নালিতাবাড়ীর বাদশা, যদিও সে মারা গেছে। মুক্তিযুদ্ধে কাদেরিয়া বাহিনীতে প্রচুর ভূমিকা রেখেছে। যুদ্ধ আরও দীর্ঘস্থায়ী হলে নিশ্চয়ই আরও অনেক ভালো কাজ করত, বিরাট নাম করত। বর্তমান কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক তখনো ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলেন। মনে হয় তাকে জিজ্ঞেস করলেও তিনি কিছু না কিছু অবশ্যই বলতে পারবেন। এ ছাড়া ছাত্রনেতা প্রদীপ আমেরিকায় আছে। খোঁজ নিয়ে দেখা যেতে পারে। তা যাক। এসব নিয়ে আজ তেমন আলোচনা করতে চাইনি। তবু এসে গেল তাই দুকথা লিখলাম। স্বাধীনতার পর পল্টনে চারজন নারী হরণকারী লুটেরাকে সভায় উপস্থিত দুই-আড়াই লাখ জনগণের নির্দেশে কাদেরিয়া বাহিনী মৃত্যুদন্ড দিয়েছিল। সে নিয়ে কত তোলপাড়। স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল কাদের সিদ্দিকীর নামে। এ আমার ভাগ্য না দুর্ভাগ্য বলতে পারি না। দেশ স্বাধীন হয়েছে ১৬ ডিসেম্বর। স্বাধীন বাংলাদেশের পিতা আমাদের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কাদেরিয়া বাহিনীর অস্ত্র নিতে টাঙ্গাইল গিয়েছিলেন ৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি। ৭২ সালের ২৩ দিন আর ৭১ সালের ১৬ দিন। স্বাধীনতার ৩৯ দিন যেতে না যেতেই আমরা আমাদের পিতার পায়ের কাছে অস্ত্র বিছিয়ে দিয়েছিলাম। তিনি সেখানে বলেছিলেন, কাদের পল্টনে এরকম চারজনকে গুলি করে শাস্তি দিয়েছে। যারা নারীর সম্মানহানী করে লুটতরাজ করে অশান্তি সৃষ্টি করে তাদের আরও এক হাজার জনকে কাদের যদি শাস্তি দিত তাহলেও সে আমার ধন্যবাদ পেত। আজ তো আর বঙ্গবন্ধু নেই, আমার আশ্রয় কোথায়? কে বলবে কাদের সারাজীবন ত্যাগ স্বীকার করেছে, দেশকে ভালোবেসেছে, মানুষকে ভালোবেসেছে, কখনো ক্ষমতার দাপট দেখায়নি। এসব বলার কেউ নেই কিছু নেই।

আসলে শুধু পদ্মা সেতু নয়, ২ সেপ্টেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বোন হাসিনা যে এক্সপ্রেসওয়ের শুভ উদ্বোধন করেছেন সেটাও এক সফলতা। আমার আলোচনা অনেকের চোখে লাগে। বিপক্ষদের তো শরীর জ্বালা করে। কিন্তু আমি আমার ভুল স্বীকার করতেও এক মুহূর্ত বিলম্ব করি না। যেটা চোখে দেখি কাকের মতো ঠোঁট পোছে চোখ বন্ধ করে থাকতে পারি না। সেদিন প্রথম যখন এক্সপ্রেসওয়েতে গেলাম মনে হয় দুপাশে প্রটেক্টর বা গার্ডার, মাঝখানে ডিভাইডারের ওপরটা খুব একটা সমান হয়নি। ১১ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়েতে মনে হয় তিন এগারো তেত্রিশ কোটি খরচ করে প্লাস্টার করলে বিশ্রী উঁচুনিচু দেখা যেত না। কোনো কোনো জায়গা কিন্তু একেবারে শিল্পীর হাতের তুলি দিয়ে আঁকার মতো সুন্দর হয়েছে। সেদিন ১ ঘণ্টা ২০ মিনিটে গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুরে গিয়েছিলাম। ফিরতে ৩ ঘণ্টা লেগেছে। এক্সপ্রেসওয়ে থেকে নামার পরই সে যে কি ভোগান্তির মুখে পড়েছিলাম বলে শেষ করা যাবে না, লিখে তো একেবারেই নয়। টঙ্গী কলেজের পর থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত লাঞ্ছনার শেষ নেই। একবার উঠছে, একবার নামছে। প্রয়োজন-অপ্রয়োজনে উড়ালসড়ক করেছে। পৃথিবীর কোথাও রাস্তার মাঝে কোনো স্টপেজ নেই। কিন্তু টঙ্গী টু গাজীপুর না হলেও ১০-১২টা স্টপেজ রাস্তার মাঝে। গাড়ি থেকে নেমে যাত্রীরা যখন দুপাশে যেতে থাকবে প্রত্যেক দিনই প্রত্যেক স্টপেজে কেউ না কেউ দুর্ঘটনায় পড়বে। এখন বিশেষ করে রাস্তাঘাটের পরিকল্পনা সবই বিদেশিরা ড্রয়িং ডিজাইন করে। পাকিস্তান আমলে টাঙ্গাইলের জেলা শহর হওয়ার সময় আমেরিকান ডিজাইনারের কারণে এখনো সবকটি দালানে প্রবল বৃষ্টিতে পানি ঢুকে। আমাদের দেশের জলবায়ুর কারণে আমরা দক্ষিণমুখী ঘরের দরজা করি। দক্ষিণ দুয়ারী ঘরের রাজা, পুব দুয়ারী তাহার প্রজা, পশ্চিম দুয়ারীর মুখে ছাই, উত্তর দুয়ারীর খাজনা নাই। কিন্তু আমেরিকান আর্কিটেক্ট সব উত্তরমুখী করেছে। আমার মনে পড়ে এক সময়ের সড়ক সচিব রেজাউল হায়াত। ভদ্রলোক খুবই সজ্জন মানুষ। ৮৯ সালে তার সঙ্গে আমার ইংল্যান্ডে প্রথম দেখা হয়েছিল। তারপর সব সময় কাছাকাছি ছিলেন।

ঢাকা-টাঙ্গাইল রাস্তায় বিদেশি ডিজাইন অনুসারে লিয়াকৈর-গোড়াইর-ধেরুয়া-দেউহাটা-মির্জাপুর-ধল্যা-শুভুল্যা-নাটিয়াপাড়া-করাতিপাড়া-ক্ষুদিরামপুর-বাইপাস-এলেঙ্গা এ রকম ১২-১৫ জায়গায় নানা রকমের ডিভাইডার বাইপাস নানা নকশা করেছিলেন। যে কারণে প্রতিদিন ধেরুয়া রেলক্রসিংয়ের কাছে ১-২টি গাড়ি উল্টেপাল্টে ধ্বংস হয়ে যেত। লোক মারা যেত ১০-৫০ জন। সব থেকে বেশি দুর্ঘটনা ঘটত ধেরুয়া-দেউহাটা-ক্ষুদিরামপুর-নাটিয়াপাড়া-নগর জলপাই এসব জায়গায়। সংসদে প্রশ্ন তুলেছিলাম। তখন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ছিলেন সড়ক পরিবহন মন্ত্রী। সড়ক ও জনপদ প্রধান প্রকৌশলীসহ ২০-২৫ জন প্রকৌশলী নিয়ে রেজাউল হায়াত যমুনার বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত গিয়েছিলেন। দুদিন পর সেই নকশা ডিভাইডার আইল্যান্ড উঠিয়ে দিয়েছিলেন। সে তো প্রায় ২৫ বছরের কম নয়। এই ২৫ বছরে সেসব জায়গায় বড়সড় ২৫টা দুর্ঘটনা ঘটেনি, ২৫ জনের জীবনহানি হয়নি। অথচ বিদেশি ওইসব নকশা থাকলে এতদিনে আরও ২৫ হাজার নিরীহ মানুষ মারা যেত। গাজীপুর-টঙ্গী সড়কে ঠিক তেমন হবে। আমি ততদিন বেঁচে থাকব কি না জানি না। কিন্তু আমার অভিজ্ঞতা যদি মিথ্যা হয় তাহলে মরণোত্তর শাস্তি দিলেও কোনো কিছু মনে করব না। হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে ৫০০-৭০০ মিটার বা এক কিলোমিটার উড়াল পুল করা হয়েছে। ৯ তারিখ ফিরবার সময়ই দেখলাম একেবারে গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে এক্সপ্রেসওয়ে পর্যন্ত ওপর নিচে সব জায়গায় যানজট। গাজীপুরে দেখলাম চৌরাস্তাকে পার হতে ৭০-৮০ ফুট ওপর দিয়ে ময়মনসিংহের দিক থেকে উড়ালসড়ক করা হয়েছে। সড়কের পাশ হবে বড়জোর ২৮-৩০ ফুট। ৭ বাই ৭ এক কলামের ওপর দাঁড়ানো। দুই কলাম করে ৪৫-৫০ ফুট করলে বা ৬০ ফুট করলে চার লেন করা যেত। দুই লেনে দুর্ঘটনা ঘটবে। সব সময় ভূমিকম্প হচ্ছে এবং হবে। মেনেই নিলাম যে ভূমিকম্পে এসব কনস্ট্রাকশন ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। কিন্তু ৬ রিখটার স্কেলের ওপরে ভূমিকম্প হলেই ৭০-৮০ ফুট ওপরে উড়ালসড়ক থেকে গাড়ি-ঘোড়া যে ছিটকে পড়বে না তার নিশ্চয়তা কে দেবে? সাধারণ মানুষ হয়তো সামনে ২-৪-৫ বছর ভাবতে পারে না। কিন্তু এত বিদ্বান বিদেশি স্থপতিদের শত শত বছর পরে কী হবে তা তো ভাবা উচিত। এক্সপ্রেসওয়েতে সেদিন মহাখালীতে এসে নেমেছিলাম। গতিসীমা মান্য করিনি, প্রায় কোনো গাড়িই করেনি। ৮০ টাকার টোল দিতে সময় লেগেছে ৫ মিনিট। সেখান থেকে মহাখালী এসে টাঙ্গাইলের বাসস্ট্যান্ডের কাছে নামতে লেগেছে ৬ মিনিট। এক্সপ্রেসওয়ে থেকে নেমে মহাখালীর রাস্তায় ডিভাইডার দিয়ে আটকানো। আবার উত্তরে এক-দেড় কিলোমিটার গিয়ে মহাখালী ওভারব্রিজের নিচ দিয়ে ইউটার্ন নিয়ে এক্সপ্রেসওয়ের মুখ পর্যন্ত যেতে আসতে প্রায় ৫০ মিনিট লেগেছে। ইঞ্জিনিয়ার বাবারা যদি মহাখালীর ওখানে শুধু ২০-২৫ ফুট রাস্তা খুলে দিতেন তাহলে সময় লাগত এক মিনিট। গ্যাস বা পেট্রল-অকটেন-ডিজেলের এক লিটারের ১০ ভাগের এক ভাগ খরচ হতো। তেলের দাম বাঁচত, সময় বাঁচত, পরিবেশ দূষণ কমত। চোখ এবং জ্ঞান না থাকায় সবক্ষেত্রে এমন হয়। শুধু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বোন শেখ হাসিনা একা দেখলেই চলবে না, সবার চোখ থাকা দরকার। সেদিন ঢাকা-ভাঙ্গা পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে সরাসরি রেল যাতায়াত করেছে। সেতু পার হতে সময় লেগেছে ৮ মিনিট। সেতু পার হতে ৮ মিনিট আর সে সময় অন্যদিক থেকে গাড়ি আসার জন্য কমবেশি আরও ৫ মিনিট। মোটামুটি ১৫ মিনিট যদি একটা গাড়ির জন্য সময় নির্ধারণ করা হয় বা প্রয়োজন হয় তাহলে ঘণ্টায় গাড়ি পারাপার হবে ৪টা। রাতদিন ২৪ ঘণ্টায় ৯৬টা। কিন্তু ১০ বছর পর এমন সময় আসবে দিনরাতে ৪০০-৫০০ গাড়ি পারাপার করার দরকার হবে। কারণ পদ্মা সেতু শুধু আমাদের জন্য নয়, পদ্মা সেতু আন্তর্জাতিক সেতু হিসেবে ব্যবহৃত হবে। পৃথিবীর বহু দেশের রেল আগামী ১০-২০ বছরের মধ্যে ছোটাছুটি শুরু করবে। সেতুর ভিতর একটা লাইন না বসিয়ে অন্তত ৩টা লাইন বসানো যেত। খুব সম্ভবত ৬৩ ফুট সেতুর পাশ। ঠিক আছে ৩টা না হলে ২টা লাইন বসলেও যাওয়া আসার জন্য গাড়িকে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো না। পন্ডিতেরা বেশি বুঝেন তাদের বুঝাবে কে? যমুনায় বঙ্গবন্ধু সেতুর কয়েক শ গজ উত্তর দিয়ে প্রায় পদ্মার মতোই একটি রেলসেতু হচ্ছে। তাতে কিন্তু ডাবল লাইনই বসানো হয়েছে। আমি বলেছিলাম একটু বিবেচনা করে সেতুর ওপরেও একটা সড়ক সেতু বানিয়ে রাখা যায়। কখনো প্রচন্ড দুর্যোগ দুর্বিপাক দেখা দিলে জরুরি অবস্থার সৃষ্টি হলে কিংবা যুদ্ধবিগ্রহ লাগলে রাস্তাটা ব্যবহার করা যেত। শুধু কংক্রিটের ছাড়া খুব বেশি একটা খরচ লাগত না। তাতে রেলসেতুর ইস্টিমেটেড কস্টের চাইতে হয়তো ২৫ শতাংশ, ৩০ শতাংশ বা ৩৫ শতাংশ বেশি খরচ হতো না। কে শুনে কার কথা। কেউ কেউ মনে করেন, এসব টাকা-পয়সা বাপ-দাদার জমিদারি। আসলে কিন্তু তা নয়। সব উন্নয়নের অর্থের দায় সাধারণ মানুষের। আমাদের এখন মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণ লাখ টাকার কয়েক হাজার বেশি। যে সন্তানটি মায়ের পেটে এখনো ভূমিষ্ঠ হয়নি তাকেও কিন্তু এই বিপুল ঋণ মাথায় নিয়ে পৃথিবীর আলোতে আসতে হবে। আমার বড় বিপদ। কোনো কথা বললেই দল বেঁধে আমার প্রিয় বোনের কান ভারী করার চেষ্টা করে। সব কানকথা যে তিনি শোনেন তা নয়। অত চাপের মধ্যে আমাদের প্রয়োজনীয় মর্যাদা রক্ষা করে চলা সব সময় সম্ভব হয়না ব্যাপারটা যে বুঝি না তা নয়। খুব কঠিন সমস্যায় আছি। সেদিন জি২০ সম্মেলনে যোগ দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরেছেন। যে যাই বলুন, জি২০ সম্মেলনে যোগ দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেমন নিজের মর্যাদা ও গুরুত্ব বৃদ্ধি করেছেন তেমনি দেশেরও সম্ভাবনা ও মর্যাদা অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে গেছেন। তবে এটা সত্য, তিনি যদি বিপুল ভোটারের অংশগ্রহণে উৎসবমুখর নির্বাচন করতে না পারেন ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। নির্বাচনে কে এলো কে এলো না, কোন বড় রাষ্ট্র কাকে সমর্থন করল সেটাও খুব একটা বিবেচ্য নয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমেরিকা-চীন-সৌদি আরবসহ বিশ্বের বহু দেশ আমাদের সরাসরি বিপক্ষে ছিল। হ্যাঁ এটা সত্য, আমাদের রাজনৈতিক, কূটনৈতিক সফলতায় বিশ্বের সব দেশের জনসাধারণের সমর্থন আমরা পেয়েছিলাম। বর্তমানে অনেকটা সেই রকম। তাই মানুষকে গুরুত্ব দিতে হবে, মানুষের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে, ভোটারকে গুরুত্ব দিতে হবে। তবে এ কথা সত্য, মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তির হাতে দেশের শাসনক্ষমতা যাক এটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী কেউ মেনে নিতে পারে না। সফল ভারত সফরের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বোন শেখ হাসিনাকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে তেত্রিশ বছর পর ফ্রান্সের মহামান্য রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বাংলাদেশে তার ঝটিকা সফর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বোন শেখ হাসিনার বিশ্বরাজনীতিতে তার উচ্চতার পরম স্বাক্ষর। মহান ফ্রান্সের মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে অভিনন্দন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে এ জন্য প্রাণঢালা শুভ কামনা।


আরও খবর



চৈত্র সংক্রান্তি আজ

প্রকাশিত:শনিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

চৈত্র সংক্রান্তি বা চৈত্র মাসের শেষদিন আজ শনিবার। বাংলা মাসের সর্বশেষ দিনটিকে সংক্রান্তির দিন বলা হয়। এছাড়া আগামীকাল রোববার পহেলা বৈশাখ, নতুন বাংলা বর্ষ ১৪৩১।

আবহমান বাংলার চিরায়িত বিভিন্ন ঐতিহ্যকে ধারণ করে আসছে এই চৈত্র সংক্রান্তি। বছরের শেষ দিন হিসেবে পুরাতনকে বিদায় ও নতুন বর্ষকে বরণ করার জন্য প্রতিবছর চৈত্র সংক্রান্তিকে ঘিরে থাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠান-উৎসবের আয়োজন। মনে করা হয়, চৈত্র সংক্রান্তিকে অনুসরণ করেই পহেলা বৈশাখ উদযাপনের এত আয়োজন। তাই চৈত্র সংক্রান্তি হচ্ছে বাঙালির আরেক বড় অসাম্প্রদায়িক উৎসব।

চৈত্র সংক্রান্তির দিন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা শাস্ত্র মেনে স্নান, দান, ব্রত, উপবাস করে থাকেন। নিজ নিজ বিশ্বাস অনুযায়ী, অন্য ধর্মাবলম্বীরাও নানা আচার-অনুষ্ঠান পালন করেন।

এছাড়াও চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে নানা ধরনের মেলা ও উৎসব হয়। হালখাতার জন্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সাজানো, লাঠিখেলা, গান, সংযাত্রা, রায়বেশে নৃত্য, শোভাযাত্রাসহ নানা অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে উদযাপিত হয় চৈত্র সংক্রান্তি।

চৈত্র সংক্রান্তির প্রধান উৎসব চড়ক। চড়ক গাজন উৎসবের একটি প্রধান অঙ্গ। এ উপলক্ষে গ্রামের শিবতলা থেকে শোভাযাত্রা শুরু করে অন্য গ্রামের শিবতলায় নিয়ে যাওয়া হয়। একজন শিব ও একজন গৌরী সেজে নৃত্য করে এবং অন্য ভক্তরা নন্দি, ভৃঙ্গী, ভূত-প্রেত, দৈত্য-দানব সেজে শিব-গৌরীর সঙ্গে নেচে চলে।

চৈত্র সংক্রান্তির মাধ্যমে পুরোনো বছরকে বিদায় জানিয়ে আগামী রোববার সফলতা ও সমৃদ্ধির প্রত্যাশায় দেখা দেবে নতুন ভোর। পুরোনো বছরের সব জরাজীর্ণতা মুছে ফেলে রোববার বাঙালি মিলিত হবে পহেলা বৈশাখের সর্বজনীন উৎসবে। জরাজীর্ণতা, ক্লেশ ও বেদনার সব কিছুকে বিদায় জানানোর পাশাপাশি সব অন্ধকারকে বিদায় জানিয়ে আলোর পথে এগিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার থাকবে গোটা জাতির।


আরও খবর
লিপি চক্রবর্তীর ‘আকণ্ঠ মরেছি’

বৃহস্পতিবার ০২ মে 2০২4




সেনাবাহিনী বান্দরবানের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্ষম: সেনাপ্রধান

প্রকাশিত:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
বান্দরবান প্রতিনিধি

Image

সেনাপ্রধান এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বান্দরবানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্ষম সেনাবাহিনী। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যৌথ অভিযানে কয়েকজন সন্ত্রাসী আটক ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

রোববার (৭ এপ্রিল) বান্দরবানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা জানান।

সেনাপ্রধান বলেন, গতকাল (শনিবার) রাতে কিছু সন্ত্রাসীকে ধরতে সক্ষম হয়েছে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কিছু অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে। একটা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

তিনি বলেন, বান্দরবানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্ষম সেনাবাহিনী। দৃশ্যমান কিছু কার্যক্রম আপনারা দেখতে পাবেন। এর ফল আপনারা সময়মতো পাবেন। আমি আপনাদের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে চাই, আমার কাছে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা খুবই পরিষ্কার।

শফিউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, বাংলাদেশের জনগণের শান্তির জন্য, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য যা যা করণীয়, প্রধানমন্ত্রীর কড়া নির্দেশ সেটাই করতে হবে। সেটা বাস্তবায়নে আমরা সক্ষম হব বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। এর আগে সকাল ১০টার দিকে ব্যাংকে সন্ত্রাসী হামলা ও ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণের ঘটনায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলা পরিদর্শনে যান সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।


আরও খবর



তফসিল ঘোষণা

চতুর্থ ধাপের উপজেলা নির্বাচন ৫ জুন

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চতুর্থ ধাপের তফসিল ঘোষণা করছে নির্বাচন কমিশন। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে চতুর্থ ধাপের উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন ইসি সচিব জাহাংগীর আলম।

তিনি বলেন, ৫৪টি উপজেলা পরিষদে ৫ জুন চতুর্থ ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

এরই মধ্যে উপজেলা নির্বাচনের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের তফসিল ঘোষণা করেছে ইসি। তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৮ মে প্রথম ধাপে ১৫০ উপজেলায় ভোট হবে। দ্বিতীয় ধাপে ১৬০ উপজেলার ভোটগ্রহণ ২১ মে। এছাড়া তৃতীয় ধাপের ১১২ উপজেলায় ভোটগ্রহণ ২৯ মে।


আরও খবর



কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী ২ দিনের রিমান্ডে

প্রকাশিত:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ২১ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আদালত প্রতিবেদক

Image

বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আলী আকবর খানের স্ত্রী মোছা. সেহেলা পারভীনের (৫৪) দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রোববার (২১ এপ্রিল) ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালত তার রিমান্ডের আদেশ দেন।

এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা লালবাগ গোয়েন্দা বিভাগের পরিদর্শক মো. আমিরুল ইসলাম তাকে আদালতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। তার পক্ষে আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত ১ এপ্রিল একই অভিযোগে গ্রেপ্তার হন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট প্রকৌশলী এ কে এম শামসুজ্জামান। শামসুজ্জামানকে জিজ্ঞাসাবাদে শেহেলা পারভীনের নাম উঠে আসে। শনিবার সেহেলা পারভীনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।


আরও খবর



ঈদের আগে এলো না জিম্মি নাবিকদের মুক্তির প্রহর

প্রকাশিত:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ঈদের দিনও কাটাতে হবে জাহাজেই জিম্মি অবস্থায়। বিষণ্নতা, অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা তাই আরও জেঁকে বসেছে জিম্মি নাবিক ও পরিবারের সদস্যদের মধ্যে। উল্লেখ্য ভারত মহাসাগরে গত ১২ মার্চ জলদস্যুদের কবলে পড়া বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর ২৩ নাবিকের ঈদের আগেও মুক্তি মিলছে না। এ পরিস্থিতিতে জিম্মি পরিবারের সদস্যরা কাঁদছেন স্বজনদের ঈদের আগেও ফিরে না পেয়ে। আর জিম্মিরা মন খারাপ করে আছেন এক মাসেও মুক্তি না পেয়ে।

জিম্মি নাবিক ও স্বজনদের মন খারাপ করা ঈদের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে, এমনটি চায়নি এমভি আব্দুল্লাহর মালিকপক্ষ। নাবিকদের জিম্মিদশা শুরুর ৯ দিন পর জলদস্যুরা যোগাযোগ শুরু করার পর থেকেই মালিকপক্ষ ঈদের আগেই এ-সংক্রান্ত আলোচনা শেষ করার আশা নিয়ে তৎপর হয়েছিল। বিভিন্ন সময় জাহাজ মালিকপক্ষ এবং সরকারপক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে যে আশার আলো দেখা যাচ্ছে। সর্বশেষ গতকাল শনিবারও চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ পুনরায় বলেন, এম ভি আব্দুল্লাহ উদ্ধারে আলোচনার বেশ অগগ্রতি হয়েছে।

রাষ্ট্র এবং জাহাজ মালিকপক্ষ আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে বলে জানালেও তা কতদূর হয়েছে, সে ব্যাপারে স্পষ্ট কিছুই জানানো হচ্ছে না। জাহাজ মালিকপক্ষ জানাচ্ছে, মুক্তিপণের টাকা দিয়ে নাবিক ও জাহাজ মুক্তি করতে হবে। কিন্তু মুক্তিপণ কত? কোথায়, কীভাবে তা দিতে হবে? এ ধরনের প্রশ্নগুলোর কোনো উত্তর মিলছে না। রাষ্ট্রের পক্ষ থেকেও কোনো তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে না। ফলে একধরনের তথ্য ঘাটতির মধ্যে রয়েছেন এমভি আব্দুল্লাহর ২৩ নাবিকের পারিবারিক সদস্যরা

তবে ঈদের আগে নাবিকসহ জাহাজ মুক্ত হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, ঈদের আগে নাবিকসহ জাহাজটি মুক্ত হচ্ছে না। এটা প্রায় নিশ্চিত। তবে ঈদের পরপরই দ্রুত সময়ের মধ্যে মুক্তি পাওয়ার জোরালো সম্ভাবনা আছে। সেই লক্ষ্যে কাজ এগিয়ে নিচ্ছে কোম্পানি।

এখন আলোচনা কত দূর গিয়ে আটকে গেছে? যার কারণে ঈদের আগেই মুক্তি মিলছে না? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আলোচনা আটকে নেই। থেমে যায়নি। চলছে। বেশ অগ্রগতিও ঘটেছে। কিন্তু এখানে অনেকগুলো ধাপ পার হতে হচ্ছে। তাই সময় লাগছে। তিনি বলেন, জাহাজে নাবিকরা ভালো আছে। কিছুটা পানির সংকট থাকলেও তা ক্যাপ্টেন রেশনিং পদ্ধতিতে ব্যবস্থা করে নিচ্ছেন। নাবিকদের সঙ্গে পরিবার ও জাহাজ মালিকপক্ষের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে।

সাধারণ সময়ে নাবিকরা জাহাজ নিয়ে ঈদের সময়ে গভীর সমুদ্রে থাকলে ঈদের নামাজ কীভাবে পড়েন? এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশে কর্মরত ক্যাপ্টেন নূর মোহাম্মদ বলেন, গভীর সমুদ্রে নামাজ কসর পড়লে হয়। নাবিকরা সেভাবেই পড়েন। তবে ঈদের সময়ে সাধারণত নিজেদের মধ্যে একজন খুতবা পড়েন এবং জামায়াতে নামাজ আদায় করেন। জাহাজের সহকর্মীরা কোলাকুলি করে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করেন। আর সুযোগ থাকলে পার্টির আয়োজন হয়। জিম্মি জাহাজে বন্দি নাবিকদের ঈদ কেমন হতে পারে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জলদস্যুরা সদয় হয়ে যদি তাদের ঈদের নামাজ পড়তে দেয়, তাহলে তো ভালো কথা। তবে জিম্মি অবস্থায় জাহাজে তো পার্টি করার সুযোগ নিশ্চয়ই পাওয়া যাবে না। নিজেরা কোলাকুলি করে আনন্দ ভাগাভাগি হয়তো করতে পারবেন। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে তাদের মুক্তিই আমাদের কাছে প্রধান বিষয়।

জিম্মি নাবিকদের একজনের পরিবারের সদস্য জানিয়েছেন, এখন দুই-তিন দিন পরপরই নাবিকরা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছেন। তারা ভালো আছেন। জলদস্যুরা সশস্ত্র পাহারা দিচ্ছে। নাবিকরা নিয়মিত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। গত কয়েক দিনের মধ্যে জাহাজটির নোঙর আর তোলা হয়নি। একই স্থানে আছে। তিনি বলেন, নাবিকরা বুঝতে পারছেন, মালিকপক্ষ জলদস্যুদের সঙ্গে আলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। তবে অর্থ লেনদেন শেষ না হওয়া পর্যন্ত মুক্তি মিলবে না সেটাও তারা বোঝেন। তাই মানসিকভাবে শক্ত থেকে জিম্মিজীবন শেষ করার প্রহর গুনছেন তারা।


আরও খবর