আজঃ বৃহস্পতিবার ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
শিরোনাম

রাবির ভর্তি পরীক্ষা বিভাগীয় শহরে নয় কেন?

প্রকাশিত:রবিবার ২৮ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ২৮ মে ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

Image

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভর্তি পরীক্ষা শুরু হতে যাচ্ছে আগামীকাল ২৯ মে থেকে৷ এতে ৩৯৩০টি আসনের বিপরীতে তিনটি ইউনিটে চূড়ান্ত পর্যায়ে আবেদন করেছেন ১ লক্ষ ৭৮ হাজার ৫৭৪ জন শিক্ষার্থী।

রাবি'র এই ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে রাজশাহীতে প্রতিবারের ন্যায় এবারও কমপক্ষে তিন লক্ষ মানুষের আগমন ঘটতে যাচ্ছে। তবে, ছোট্ট শহর রাজশাহীতে হঠাৎ করে এতো মানুষের আগমনকে কেন্দ্র করে তৈরি হয় নানাবিদ সংকট। এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী-অভিভাবকের আবাসন নিয়ে পড়তে হয় মহা সংকটে। সেই সাথে যাতায়াতের ক্ষেত্রেও আছে নানা ভোগান্তি। ইতোমধ্যেই, মহানগরের বেশির ভাগ হোটেল-মোটেলের কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে। যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের মেস এবং আবাসিক হলগুলোতে তীব্র আবাসন সংকটের। গাদাগাদি করেও থাকার সুযোগ হয় না অনেকের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।

এমতাবস্থায়, প্রশ্ন উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা বিভাগীয় শহরে আয়োজন করতে বাঁধা কোথায়?

গত বছর ভর্তি পরীক্ষার আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার জানিয়েছিলেন, শিক্ষার্থী-অভিভাবকগণের ভোগান্তি এড়াতে বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের চিন্তাভাবনা আছে। তবে, এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।

জানা গেছে, ক্যাম্পাসের বাইরে পরীক্ষা নিতে রাজি নন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র অধ্যাপকগণের একটি বড় অংশ। তবে গুঞ্জন আছে, রাজশাহী মহানগরের স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও ব্যবসায়ীদের একটি প্রচ্ছন্ন চাপও আছে যেন পরীক্ষা রাবি ক্যাম্পাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দাবি প্রশ্নফাঁসের শঙ্কা, জনবল সংকট, একক ভর্তি পরীক্ষার প্রজ্ঞাপনের কারণেই বিভাগীয় পর্যায়ে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না

তাঁরা বলছেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় এযাবৎকালে প্রশ্নফাঁসের কোনো ঘটনা ঘটেনি। বেশ কিছু জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গেলেও, ক্যাম্পাসেই ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র থাকায় প্রশ্নের নিরাপত্তা রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। ঢাবি'র মতো বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা আয়োজন করতে গেলে প্রশ্নফাঁসের আশঙ্কা করছেন তাঁরা।

এছাড়া পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একক ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে রাষ্ট্রপতির অভিপ্রায় অনুযায়ী একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় গত ১৫ এপ্রিল। তবে, তারও আগে থেকেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে, যেহেতু সামনের বছরগুলোতে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন নিয়ে নিশ্চিতভাবে কিছুই বলা যাচ্ছে না, তাই আলাদা করে শুধু একটি শিক্ষাবর্ষের জন্য বিভাগীয় শহরে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের সিদ্ধান্ত থেকে অনেকটাই সরে আসে রাবি প্রশাসন।

তবে প্রশাসনের এমন দাবি মানতে নারাজ বিশ্ববিদ্যালয় কিছু শিক্ষক। এদের মধ্যে একজন হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দীন খান। এবিষয়ে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যদি বিভাগীয় শহরে সফলভাবে ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন করতে পারে, তবে রাবি কেন পারবে না? প্রশ্নফাঁস এড়ানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বিধান করবে;  এবং  আমি মনে করি এই কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য আমাদের প্রয়োজনীয় লোকবল রয়েছে। বিশ্বিবদ্যালয় প্রশাসন চাইলেই শিক্ষার্থীদের এই ভোগান্তি নিরসন করতে পারতো।

বাংলা বিভাগের অধ্যাপক এবং রাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক সফিকুন্নবী সামাদী বলেন, বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে; তবে আমাদের বুঝতে হবে যেই বলয়ের মধ্যে আমরা ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রমটি সম্পন্ন করে থাকি, সেটা যেন দুর্বল না হয়ে যায়।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় অধিকাংশ শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের প্রচ্ছন্ন চাপকেই বেশি দায়ি করছেন। তারা বলছেন, বিভাগীয় শহরে ভর্তি পরীক্ষা না হাওয়ার পেছনে প্রশাসনের উপর স্থানীয় ব্যবসায়ীদের চাপকেই বেশি দায়ি বলে মনে করছেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভর্তি পরীক্ষাকে ঘিরে চাঙ্গা হয়ে উঠে রাজশাহী মহানগরীর হোটেল-মোটেল, পরিবাহন ও ম্যাস মালিকদের ব্যবসা-বাণিজ্য। জানা গেছে, শুধু এই সময়টুকুতেই হোটেলগুলো সবচেয়ে বেশি আয় করে থাকে। আবাসন সংকটকে কাজে লাগিয়ে হোটেলে রুম ভাড়া তিন থেকে চার গুণ বাড়িয়ে দেন হোটেল মালিকরা। ভর্তি পরীক্ষা বিভাগীয় শহরে হলে এই আয় অনেকটাই কমে যাবে। গুঞ্জন আছে, মহানগরের আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতারা ও ব্যবসায়ীদের একটি প্রচ্ছন্ন চাপও আছে বিভাগীয় শহরে যেন পরীক্ষা না হয়।

এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দীন খান বলেন, গত দুবছর ধরে দেখছি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে সমন্বয় সভা হয় রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের কার্যালয়ে। অথচ এটা হওয়ার কথা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে। এটি একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান; ভর্তি পরীক্ষা সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয় স্বাধীনভাবে নেওয়ার ক্ষমতা রাখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তিকে পুঁজি করে একটা বড় বাণিজ্য হয় রাজশাহী শহরেএটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

বিভাগীয় শহরে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের প্রশ্নে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী সংকট রয়েছে। এছাড়া, আগামীতে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে কী সিদ্ধান্ত আসতে যাচ্ছে তাও বলা যাচ্ছে না।

ইতোমধ্যেই আপনারা জেনে গেছেন, রাষ্ট্রপতির অভিপ্রায় অনুযায়ী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একক ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা শুরু হয়েছে। এসব বাস্তবতায় এ বছর বিভাগীয় শহরে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করা সম্ভব হয়নি।


আরও খবর



সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের ব্যাংক হিসাব জব্দ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৩ আগস্ট ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৩ আগস্ট ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও তার স্ত্রী সন্তানদের ব্যক্তিগত ও তাদের মালিকানাধীন সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ফিন্যান্সিয়াল)। একই স‌ঙ্গে তা‌দের হিসাবের সব ধরনের লেনদেনের তথ্য চে‌য়ে‌ছে সংস্থা‌টি।

মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) বিএফআইইউ সংশ্লিষ্ট এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিএফআইইউয়ের পক্ষ থেকে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পাঠা‌নো চি‌ঠি‌তে বলা হ‌য়ে‌ছে আসাদুজ্জামান খাঁন, তার স্ত্রী লুৎফুল তাহমিনা খান, ছেলে সাফি মুদ্দাসির খান এবং মেয়ে সাফিয়া তাসনিম খানের নামে থাকা সব ধরনের ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক অ্যাকাউন্ট বন্ধ থাক‌বে। চিঠিতে আসাদুজ্জামান খাঁন ও তার পরিবারের নাম ও জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য দেওয়া হয়েছে।

অর্থ পাচার নিরোধসংক্রান্ত ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী এ আদেশ দিয়েছে বিএফআইইউ।

প্রাথমিকভাবে আগামী ৩০ দিন এসব হিসাবে কোনো ধরনের লেনদেন করতে পারবেন না সংশ্লিষ্টরা। পরবর্তীদের প্রয়োজনে জব্দ রাখার সময় আরও বাড়ানো হবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।


আরও খবর



বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে বিশ্বকাপ চান না অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক

প্রকাশিত:সোমবার ১৯ আগস্ট ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৯ আগস্ট ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক

Image

বাংলাদেশের মাটিতে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে দোলাচল কাটছেই না। এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) দেওয়া আইসিসির সময় শেষ হচ্ছে আগামীকাল তথা ২০ আগস্ট। অন্তবর্তীকালীন সরকার বিশ্বকাপ আয়োজনে আশাবাদী হলেও কয়েকটি দেশের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে শেষ পর্যন্ত এটি বাংলাদেশ থেকে সরেও যেতে পারে।

ইতোমধ্যে একাধিক দেশ নারী ক্রিকেটের এই মেগা ইভেন্ট আয়োজনে আগ্রহ দেখিয়েছে। তবে এখন বিসিবির সিদ্ধান্ত জানার অপেক্ষায় বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

এদিকে, আসন্ন নারী বিশ্বকাপ নিয়ে কথা বলেছেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক অ্যালিসা হিলি। তার মতে, মানবিক কারণেই এই মুহূর্তে বাংলাদেশে বিশ্বকাপ আয়োজনের বিপক্ষে তিনি। বলেন, এই মুহূর্তে সেখানে (বাংলাদেশে) খেলাটা আমার কাছে মনে হয় কঠিন হবে, একজন মানুষ হিসেবে আমার মনে হয় এটা ভুল হতে পারে।

ব্যাপারটা আইসিসির ওপরই ছাড়লেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক, যেসব মানুষ মারা যাচ্ছে, তাদের সহায়তায় এখন সবাইকে প্রয়োজন। বাংলাদেশে একটি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজনের চেয়ে বড় ব্যাপার ঘটছে নিশ্চিতভাবে। তবে এটি আইসিসির ওপর ছেড়ে দেব আমি।

বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে এরই মধ্যে বাংলাদেশে খেলে গেছেন অস্ট্রেলিয়ার মেয়েদের দল। সেই অভিজ্ঞতা বিশ্বকাপে কাজে লাগবে বলে জানালেন অ্যালিসা হিলি, বাংলাদেশের কন্ডিশন আর ধীরগতির টার্নিং উইকেটে খেলে অভ্যস্ত হওয়া ভালো অবস্থানে নিয়ে গেছে আমাদের। বাংলাদেশে বিশ্বকাপ হোক বা না হোক, আমাদের যা আছে তাতে মনে হয় না এটা তেমন প্রভাব ফেলবে।

এদিকে, বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে সম্প্রতি কথা বলেছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। তিনি বলছিলেন, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন করতে পারা আমাদের জন্য ভালো মাইলফলক হবে। কিন্তু যেহেতু বাংলাদেশ একটা সংকটকালীন সময় পার করছে, আবার একইসঙ্গে যারা আমাদের মেহমান হয়ে আসবেন, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও আমাদের দায়িত্ব। সবকিছু বিবেচনায় এটা ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের হাতে নেই, এখন এটা রাষ্ট্রীয় ব্যাপার।

বিষয়টি নিয়ে আইসিসির সঙ্গে আলোচনা চলমান থাকার কথা জানিয়ে ক্রীড়া উপদেষ্টা আরও বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস (অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা) স্যার আছেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নতুন নিয়োগ পেয়েছেন। সবার সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেব। আইসিসির সঙ্গেও আমাদের আলোচনা চলমান আছে। তারপর এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে পারব।

আরও খবর
ভারত সফরের জন্য বাংলাদেশ দল ঘোষণা

বৃহস্পতিবার ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪




বন্যার্তদের সহায়তায় রাজনৈতিক-ধর্মীয় পরিচয় নয়: তারেক রহমান

প্রকাশিত:শনিবার ২৪ আগস্ট 20২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ২৪ আগস্ট 20২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

দেশের বন্যাদুর্গত মানুষদের সহায়তায় রাজনৈতিক বা ধর্মীয় পরিচয় না দেখার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

শুক্রবার (২৩ আগস্ট) এক ভিডিও বার্তায় দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে এই আহ্বান জানান তিনি।

তারেক রহমান বলেন, আপনারা সমন্বীতভাবে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়ান। তাদের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিন। বন্যাকবলিত অঞ্চলের মানুষের জন্য খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা ও ওষুধের সহায়তা দিন এবং ব্যবস্থা নিন।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, আপনাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানাব যে, দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচার দেশে মানুষে মানুষে হিংসা-বিরোধী-বিভেদ তৈরি করেছিল। কিন্তু আপনাদের প্রতি একান্ত অনুরোধ, মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রে আপনারা দয়া করে কারও রাজনৈতিক ও ধর্মীয় পরিচয়কে প্রাধান্য দেবেন না। একই সঙ্গে আপনারা ব্যক্তিগত ও দলীয় উদ্যোগের পাশাপাশি বন্যার্তদের সহায়তার জন্য সরকার ও প্রশাসন আপনাদের কাছে কোনো সহযোগিতা চাইলে দয়া করে সাধ্যমত সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিন।

দেশবাসীর উদ্দেশে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, দলমত নির্বিশেষে আমরা যদি ঐক্যবদ্ধভাবে বন্যাকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়াই, যার যার সাধ্যমত বিপদগ্রস্ত মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসি আল্লাহর রহমতে অবশ্যই এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সক্ষম হবো।

তারেক রহমান বলেন, হঠাৎ করেই আকস্মিক বন্যায় দেশের উত্তর-পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পূর্বাঞ্চলে জেলার পর জেলা প্লাবিত হওয়ায় মানবেতর জীবন-যাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন লাখ লাখ মানুষ। জীবন ও যানমালের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এরইমধ্যে জীবন গেছে কয়েকজন মানুষের। ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে জনজীবন।

বাংলাদেশের এই আকস্মিক বন্যার জন্য ভারতকে দায়ী করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের এই বন্যা দেশের অভ্যন্তরে উদ্ভূত কোনো কারণে নয়। বন্যা কবলিত অঞ্চলে ভারি বৃষ্টিপাত হলেও সেটি পূর্বাঞ্চলের বন্যার মূলকারণ নয়। বরং এবারের বন্যার মূল কারণ উজানের দেশ প্রতিবেশী ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য প্রশানের দায়িত্বহীনতা ও খামখেয়ালিপনা। হঠাৎ করে বাঁধ খুলে বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ এলাকা ডুবিয়ে দিলেও একটি বারের জন্যও বাংলাদেশকে আগাম কোনো সতর্কতা দেইনি তারা। ফলে বিস্তীর্ণ এলাকা ভাসিয়ে নিলেও বন্যা মোকাবিলায় বাংলাদেশ সামন্যটুকু প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ পর্যন্ত পায়নি।

বন্যা কবলিত এলাকার মানুষগুলো এখন সহায়সম্বল হারিয়ে লাখ লাখ মানুষ এখন নিদারুন অসহায় বলে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, এমন পরিস্থিতিতে কোনো অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ করে এখন সময় ক্ষেপণেরও সময় নেই। বিএনপি বিশ্বাস করে বন্যাকবলিত মানুষের জীবন সম্পদ রক্ষা করাই এই মুহূর্তে প্রধান অগ্রাধিকার। দেশের বন্যা পরিস্থিতিতে আমি সারা দেশে বিশেষ করে যেসব এলাকা এখনো আক্রান্ত হয়নি, সেসব এলাকার বিএনপি এবং এর অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলতে চাই, আপনারা সমন্বিতভাবে বন্যা কবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ান, সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিন। তাদের নিরাপত্তায় পাশে দাঁড়ান।


আরও খবর



২৭ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ করে গোমতীর পানি বিপৎসীমার ১১৩ সেন্টিমিটার উপরে

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২২ আগস্ট ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২২ আগস্ট ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
রবিউল বাশার খান, কুমিল্লা

Image

অতিবৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা পানিতে রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছে কুমিল্লার গোমতী নদী। গত ২৭ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ করে আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে বিপৎসীমার ১১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে গোমতীর পানি।

কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জমান বলেন, এর আগে ১৯৯৭ সালে গোমতীর পানি বিপৎসীমার ৯৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। কিন্তু গত দুই দিনে পানি বাড়ার হিসাব অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে।

তবে গতকালের তুলনায় আজ বৃহস্পতিবার পানি বাড়ার গতি কিছুটা কমে এসেছে। পাউবো কর্মকর্তার ভাষ্য, আমাদের দেশে ও ভারতে বৃষ্টি এবং সেখানকার (ভারত) নদীর পানি প্রবাহের দিকে আমরা চেয়ে আছি। কারণ, গোমতীতে পানি বাড়া অব্যাহত থাকলে বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ অংশগুলো রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে।

পাউবোর তথ্যমতে, গোমতী নদীর ডান পাশে ৬৫ এবং বাম পাশে ৭৬ দশমিক ৩ কিলোমিটার প্রতিরক্ষা বাঁধ আছে। উভয় তীরের বাসিন্দারা বাঁধ ভাঙ্গার আশঙ্কায় আতঙ্কে আছেন।

এদিকে আজ দুপুরে বাঁধের সদর উপজেলার ভাটপাড়া, আমড়াতলী ও আড়াইওড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় লোকজন বালুর বস্তা ফেলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আমড়াতলী এলাকার বাসিন্দা গোলাম মোস্তফা বলেন, উৎসুক হাজার হাজার লোক পানি দেখতে আসছেন। অনেকেই আসছেন গাড়ি নিয়ে, এতে বাঁধ আরও বেশী ঝুঁকিতে পড়ছে।


আরও খবর



নতুন স্বাধীনতা পেয়ে সব ব্যাথা ভুলে গেছি : গুলিবৃদ্ধ আবু সাঈদ

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৩ আগস্ট ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৩ আগস্ট ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
রেদওয়ানুল হক মিলন, ঠাকুরগাঁও

Image

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অসহযোগ আন্দোলনে অংশ নেন শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। রোববার (৪ আগস্ট) সকাল থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চললেও এরপর শুরু হয় তাণ্ডব লীলা। চলে আন্দোলনকারী ও পুলিশের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আন্দোলনকারীদের উপর পুলিশ গুলি ছুড়লে আবু সাঈদের ডান পায়ে গুলি লাগে। গুলিবিদ্ধ হয়ে সড়কে পরে যায় সাঈদ। পরে আন্দোলনকারীরা তাকে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায় চিকিৎসার জন্য।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের জুলফিকার আলী ও বিলকিস বানু দম্পতির একমাত্র ছেলে আবু সাঈদ। হাসপাতালে ছাত্রলীগের ভয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রিলিজ দেয় চিকিৎসক। তীব্র ব্যাথা আর অচল পা নিয়ে বাড়িতে ফিরেন আবু সাঈদ।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সোমবার (৫ আগস্ট) নতুন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজে নিয়ে যায় পরিবার। সেখানেও কোন কারণ ছাড়াই দেয়া হয় রিলিজ। বর্তমানে তীব্র ব্যাথা ও পায়ে ভর দিতে পারছে না সাঈদ ৷ পায়ে গুলি থেকে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছে তার পরিবার। উন্নত চিকিৎসার স্বার্থে সরকারকে এগিয়ে আসার আহবান তাদের।

আবু সাঈদের সহপাঠীরা বলেন, গুলি লাগার পরে দিনাজপুরে চিকিৎসা করা হয়েছে। কিন্তু এখনো সাঈদ পা ফেলতে পারতেছে না। তার পায়ে অনেকগুলো ছিটা গুলি আছে। সেগুলো থাকায় হাটতে পারতেছে না। বন্ধুর উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। সেজন্য সকলের সহযোগীতা প্রয়োজন।

সাঈদের স্বজনরা বলেন, সাঈদ তার বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে। হাটতে না পারলে তার পরিবারের দায়িত্ব কিভাবে নিবে সে। পড়ালেখা করা সাঈদ এখনো হাটাচলা করতে পারছে না। তার ভালো চিকিৎসার প্রয়োজন যেন সে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে।

আন্দোলনের প্রতিটি কর্মসূচিতে যুক্ত ছিলেন আবু সাঈদ। বাঁধা দিলেও শোনেননি মায়ের কথা। একমাত্র ছেলের পা স্বাভাবিক না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় তাঁর মা বিলকিস বানুর। তিনি, বলেন, আমার এক ছেলে আর এক মেয়ে। ছেলেকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন আমাদের। এখন ডান পায়ের এমন অবস্থায় আমাদের পরিবারের সবাই ভেঙ্গে পড়েছি। ছেলের পা যেন দ্রুত ঠিক হয় সেজন্য সকলের সহযোগিতা চান।

চিকিৎসক আটটি গুলি বের করলেও এখনো অনেক ছিটা গুলি পায়ে রয়েছে। যা প্রতিনিয়তই তাকে পিড়া দিচ্ছে। চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে হাসপাতালে দৌড়ালেও নেই কোন আফসোস। পায়ের বিনিময়ে হলেও দেশের স্বাধীনতার স্বাদে তৃপ্তি পেয়েছেন আবু সাঈদ।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ জানান, সকাল থেকে ভালো ভাবেই আন্দোলন চলছিল। দুপুরের পরে পুলিশের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। আমাকে শহরের চৌরাস্তায় কাছ থেকে পুলিশ গুলি করে। পরে আমি পড়ে গেলে আশেপাশের সকলে ধরে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক বলে সমস্যা নেই। পরে বাসায় চলে আসি। কিন্তু সমস্যা দেখা দিলে দিনাজপুরে গিয়ে আটটি ছিটা বুলেট বের করে। এখনো অনেক বুলেট আছে। বুলেট থাকায় পা মাটিতে ফেলতে পারছি না। বাকি বুলেট বের করার জন্য উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। সেজন্য রংপুর বা ঢাকা যেতে হবে।

তিনি আরো বলেন, পায়ের ব্যাথার জন্য যত কষ্ট পাচ্ছি তার থেকে বেশি কষ্ট পাচ্ছি আমার শহীদ ভাইদের জন্য। তারপরেও স্বাধীনতা পেয়েছি সেজন্য অনেক ভালো লাগছে।

নিউজ ট্যাগ: ঠাকুরগাঁও

আরও খবর