আজঃ শনিবার ১৮ মে ২০২৪
শিরোনাম

সাইবার জগতে তিন ব্যক্তির দেশবিরোধী প্রচারণা

প্রকাশিত:বুধবার ০৩ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ০৩ মে ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসি হওয়া ব্যক্তিদের পক্ষ নেওয়া তিন ব্যক্তি এখন দেশের বিরুদ্ধে নানা কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন। এরা হচ্ছেন আবু রেজা আহমেদ ফয়সল চৌধুরী সুয়েব, পিনাকী ভট্টাচার্য ও তাজ হাশমী।

তাদের কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করে গোয়েন্দা সংস্থার একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, কুরুচিপূর্ণ গুজব ছড়ানো, মিথ্যাচার করা এদের পেশা ও নেশা। এরা বিদেশের মাটিতে বসে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন এবং ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রচার করছে। তারা শুধু প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধু পরিবার, বিএনপি চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বা রাজনৈতিক দলের সমালোচনাই নয়, সনাতন হিন্দু ধর্ম থেকে শুরু করে ইসলাম ধর্ম, কোরআন, আল্লাহ কোনো কিছুরই সমালোচনা বাদ দিচ্ছেন না।

এদের বিষয়ে পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করা, দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা, যুদ্ধাপরাধী অপশক্তি এবং জঙ্গিবাদের পক্ষে জনসর্থন আদায় করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য। এদের কেউ কেউ আইএস এবং হিযবুত তাহরীরের সঙ্গেও সম্পৃক্ত বলে তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা। জামায়াতে ইসলামী ও পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট বলেও এদের কাউকে কাউকে সন্দেহ করা হয়।

রেজা আহমেদ ফয়সল চৌধুরী সুয়েব

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার পাঠলী ইউনিয়নের পাটলী গ্রামের বাসিন্দা রেজা আহমেদ ফয়সল চৌধুরী ওরফে সুয়েব। তিনি একসময় চ্যানেল আইয়ের লন্ডনে অবস্থিত ইউরোপ অফিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। দুর্নীতির অভিযোগে চ্যানেল আই থেকে বাদ পড়েন বলে অভিযোগ আছে।

এ বিষয়ে চ্যানেল আইয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, মূলত আয়-ব্যয়ের হিসাব না দেওয়া, অর্থ আত্মসাৎ এবং প্রকাশ্যে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে ও স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় চ্যালেন আইয়ের দায়িত্ব থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

দেশে থাকার সময় বিয়ানীবাজারের ডা. আনোয়ারা আলী নামে একজন নারী চিকিৎসককে বিয়ে করেন সুয়েব। পরে লন্ডনে গিয়ে নিজ অফিসের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীকে বিয়ে করেন। ব্যক্তিগতভাবে বিশৃঙ্খল স্বভাব ও স্ত্রীকে নির্যাতন করায় দ্বিতীয় স্ত্রীও তাকে ছেড়ে চলে গেছেন। যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব নিয়েছেন সুয়েব। তিনি বর্তমানে চ্যানেল ইউরোপ নামে একটি ফেসবুক পেজ চালান। তার কাজ মূলত বাংলাদেশ সরকার, বিচার বিভাগ, সেনাবাহিনী, আওয়ামী লীগ এবং বিভিন্ন শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া।

স্ট্রেইট ডায়ালগ নামে একটি অনলাইন অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সুয়েব। তিনি কানাডার ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজ নাগরিক টিভিতে বিশ্লেষক হিসেবেও উপস্থিত হন। সরকার, প্রধানমন্ত্রী, শিল্পপতি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে বিষোদগার ও গুজব ছড়ানোই তার কাজ। তিনি যাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছেন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ, এস আলম গ্রুপ, এক্সিম ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংকের চেয়ারম্যান প্রমুখ।

সুয়েব কনজারভেটিভ পার্টির হয়ে লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়র পদে নির্বাচন করে বিপুল ভোটে পরাজিত হন। এর আগে তার প্রথম স্ত্রী ডা. আনোয়ারা আলী মেয়র পদে নির্বাচন করেন। সুয়েবের স্ট্রেইট ডায়ালগ নামক অনুষ্ঠানে নিয়মিত অংশ নেন বিতর্কিত আইনজীবী ব্যারিস্টার সরোয়ার হোসেন, এম রহমান মাসুম, টিটো রহমান, নাজমুস সাকিবসহ চিহ্নিত সাইবার অপরাধীরা।

সুয়েব সম্পর্কে জানতে চাইলে সুনামগঞ্জের একজন সিনিয়র সাংবাদিক বলেন, সুয়েবের কাছে কেউ ভালো নন। তার কাছে শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয়, খালেদা জিয়া, তারেক রহমান কেউ ভালো নন। সুয়েব কখন কী বলেন আর কী করেন তা নিজেও জানেন না। ফেসবুক-ইউটিউবে সস্তা জনপ্রিয়তা পেতে প্রতিনিয়ত কথা বলে যান। চ্যানেল আইয়ের ইউরোপ অফিসে সুয়েব কাজ করতেন ছোট্ট একটি কক্ষে। সেখানে টক শোর নামে বিভিন্নজনকে ডেকে নিয়ে অর্থ আদায় ও নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিতেন সুয়েব।

পিনাকী ভট্টাচার্য

বগুড়া জিলা স্কুলের প্রয়াত শিক্ষক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শ্যামল ভট্টাচার্যের বড় ছেলে ডা. পিনাকী ভট্টাচার্য। মায়ের নাম সুপ্রীতি ভট্টাচার্য। তার ভাই অপূর্ব ভট্টাচার্য ঢাকায় থাকেন এবং বোন বুলবুল ভট্টাচার্য থাকেন বগুড়ায়। পিনাকী সনাতন ধর্ম, দেশের প্রচলিত রাজনীতি, ধর্মীয় সম্প্রীতির বিপক্ষে কথা বলায় বাবা তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। ফ্রান্সে রাজনৈতিক আশ্রয় নেওয়া এই ব্যক্তি ২০২০ সালে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যান। যাওয়ার আগে তিনি নিজেই গুম হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে বিভিন্ন প্রপাগান্ডা ছড়ান।

পিনাকী ভট্টাচার্য ধর্মীয় উসকানি ছড়াতে ইউটিউবে তার নিজ চ্যানেলে সনাতন ধর্মের বিভিন্ন বিধান নিয়ে কট্টর সমালোচনা করেন। গো-হত্যার পক্ষে অবস্থান নিয়ে সনাতন ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে বিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টা করছেন তিনি। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বিদ্রুপ করেছেন। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের বিপক্ষে প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি আইনের সমালোচনার পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় নিয়ে বিদ্রুপ করে আদালত অবমাননা করে চলেছেন। পিনাকী ভট্টাচার্য মঙ্গল শোভাযাত্রা ও বাংলা নববর্ষ পয়লা বৈশাখ উদযাপন বর্জনের ডাক দিয়েছেন।

পিনাকী ২০১৮ সালে পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযানের কঠোর সমালোচনা করেন। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমর্থন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের নামে গুজব ছড়িয়ে স্কুল-কলেজের কোমলমতি শিশু-কিশোরদের উসকানি দিয়ে তাদের জীবন হুমকির মুখে ফেলে দেন। বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে ২০১৮ সালের ৫ আগস্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাকে তলব করে। এর পরই তিনি স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে চলে যান। দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি অবস্থায় তিনি গোপনে সীমান্ত পার হয়ে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে ব্যাংকক যান এবং সেখানে কিছুদিন অবস্থান করে ফ্রান্সে পালিয়ে গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় চান। বর্তমানে ফ্রান্সে বসে তিনি ধর্ম, দেশের কৃষ্টি-কালচার, সরকার, সেনাবাহিনী, বঙ্গবন্ধু পরিবারের বিরুদ্ধে ক্রমাগত বিদ্বেষ ছড়িয়ে যাচ্ছেন। তিনি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীতের মতো বিষয়গুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা করছেন। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিজের লেখা ভগবানের সহিত কথোপকথন সিরিজে সৃষ্টিকর্তাকে নিয়েও রসিকতা করেন পিনাকী। এ ছাড়া ব্লগার আসিফকে কোপানো ও অভিজিৎ রায়কে হত্যার পক্ষে কথিত যুক্তি তুলে ধরেন তিনি।

মুক্তমনা ব্লগে পিনাকী ভট্টাচার্যকে নিয়ে একজন ব্লগার লেখেন, পিনাকী ভট্টাচার্য, আপনি যে কোনো বৈধ রাজনৈতিক মতবাদে বিশ্বাসী হতেই পারেন। সেটি আপনার গণতান্ত্রিক অধিকার। সেটি নিয়ে আমার কোনো ধরনের বক্তব্য নেই। আপনি দ্বিমুখী চরিত্র এ কারণে, আপনি জন্মসূত্রে হিন্দু, নিজেই বলেন আপনি একজন অজ্ঞেয়বাদী (অজ্ঞেয়বাদ হচ্ছে একটি মতবাদ অথবা কতিপয় যুক্তির সমন্বয়ে গঠিত একটি ধারণা, এটি কোনো ধর্ম নয়, যদিও এটি ঈশ্বরের অস্তিত্ব অস্বীকার করে না আবার স্বীকারও করে না)। আপনি ইসলাম ধর্মও গ্রহণ করেননি, কিন্তু দাড়ি রাখেন, টুপি ও পাঞ্জাবি পরেন, মাদরাসা শিক্ষা যে খুবই উঁচু মানের শিক্ষা তা প্রমাণ করতে রাজা রামমোহন রায়ের উদাহরণ টানেন। কিন্তু নিজের ছেলে-মেয়ে, আত্মীয় কাউকে মাদরাসায় পড়ান না, ইসলামিক শিক্ষা এত ভালো হওয়া সত্ত্বেও আপনি নিজে ও আপনার পরিবারের কেউ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেননি। এই দিকে বিবাহ নামক ধর্মীয় আচার না মেনে ওপেন রিলেশনশিপে আছেন, যেটা অবশ্য একজন অজ্ঞেয়বাদী হিসেবে আপনি করতেই পারেন, কিন্তু সেই আপনি ইসলামিক রীতির প্রশংসা করেন অথচ নিজের জীবনে তার কোনো প্রয়োগ নেই!

উইমেন চ্যাপ্টার নামে একটি ওয়েবসাইটে লেখক শেখ তাসলিমা মুন লিখেছেন, পিনাকী বুঝতে পেরেছেন এ অঞ্চলে মৌলবাদই একটি উদীয়মান শক্তি। পিনাকী অ্যানালাইসিস করে দেখেছেন, এদের ক্ষমতা ও শক্তি বাংলাদেশের যে কোনো সরকারের চেয়ে শক্তিশালী। সরকার যাবে, সরকার বদলাবে, কিন্তু এদের ক্ষমতা কেবল বাড়তেই থাকবে এবং এটাই তার সব সাহসের মূল উৎস। পিনাকী আমাদের কাছে অসৎ, অসাধু এবং একটি ভয়ংকর সন্ত্রাসের নাম। তিনি এমন একটি গ্রুপকে উপজীব্য করে বলয় গড়ে তুলেছেন, যা দেশের মুক্তবুদ্ধির চর্চা ও গণতন্ত্রের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে। আর পিনাকী, আপনাকে বলব, সব খেলার শেষ আছে। গেম ওভার আছে। আমরাও আপনাদের দেখছি আগ্রহ নিয়ে। মনে রাখবেন, কেউই দিন শেষে বিবেক ও বিচারের ঊর্ধ্বে নয়।

বিশ্লেষকদের মতে, পিনাকী ভট্টাচার্য হিন্দু নাম ব্যবহার করে হিযবুত তাহরীর, আল-কায়েদা ও আইএসআইএসের মতো উগ্রবাদের পক্ষে সমর্থন আদায়ের অপচেষ্টা করছেন। এটি উগ্রবাদীদের একটি অপকৌশল মাত্র। তিনি যেসব বক্তব্য প্রচার করেন, বাস্তব জীবনে এর কোনো প্রতিফলন নেই।

তাজ হাশমী

তাজ হাশমী থাকেন কানাডার মন্ট্রিল শহরে। নিজেই দাবি করেন তার জন্ম হয়েছে ভারতের আসামে। তিনি সিরাজগঞ্জ বিএল কলেজ থেকে ম্যাট্রিক পাস করে পরে ভর্তি হন ঢাকা কলেজে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি নেওয়ার দাবিদার তাজ হাশমী এখন ফেসবুক-ইউটিউবভিত্তিক বিভিন্ন চ্যানেলের  বিশ্লেষক। ধর্মীয় উসকানি ছড়ানো, দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে সদা তৎপর এই ব্যক্তি। অনেকে তাকে পাকিস্তানের এজেন্ট বা পাকি দালাল হিসেবেও অভিহিত করেন। স্বাধীনতার আগেই তিনি চলে যান পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে। দেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী তাজ হাশমী কানাডায় বসে প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়েছেন যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সালাফি মতাদর্শের সমর্থক তাজ হাশমী দেশে জঙ্গিবাদ ও আইএসআইএসের মতাদর্শ প্রসারের জন্য এজেন্ট হিসেবে কাজ করেন। তিনি আফগান উগ্রবাদী জামাল আল-দীন আফগানির বিভিন্ন বক্তব্য উদ্ধৃত করে ফেসবুকে লিখে জঙ্গিবাদের পক্ষে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন। তাজ হাশমীর বিকৃত মানসিকতা ও ধর্মীয় উসকানির প্রমাণ মেলে তার নিজ ফেসবুকে দেওয়া কয়েকটি উদ্ধৃতি দেখলেই। তিনি ৩০ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হওয়া মুফতি কাজী ইবরাহিমকে নিজের ফেসবুক পেজে কৌতুক অভিনেতা বলে বিদ্রুপ করেন।

তাজ হাশমী ২৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতাকে বেহুদা বক্তব্য বলে মন্তব্য করে বিষোদগার ছড়ান। ৪ জুলাই নিজ ফেসবুক পেজে তিনি তথাকথিত যুদ্ধাপরাধী ট্রাইব্যুনাল নিয়ে কিছু পুরনো কথা শিরোনামে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল নিয়ে বিষোদগার ছড়ান। ১ জুলাই গণজাগরণ মঞ্চের সমালোচনা করে তিনি লেখেন, মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও কাদের মোল্লার মতো নিরীহ মানুষকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। ৭ মে তার ফেসবুক পেজে লেখেন, দেশের নামাজি ও রোজাদারদের ৯০% পাকা চোর। ৪ মে লেখেন, ২০১৩-এর ৫/৬ মে রাতের আঁধারে হেফাজতের ৩০০ কর্মীকে (সরকার) গায়েব করেছিল। তেঁতুল হুজুর (আল্লামা আহমদ শফীকে কটাক্ষ করে) টাকা খেয়ে, আর জাতি কিছু না খেয়েই ভুলে গেল! ১৭ এপ্রিল তিনি সাধারণ মানুষকে উসকানি দিতে লেখেন, নারীবিদ্বেষ, সৌদি রাজবংশ, হাসিনা সরকার ও ভারতবন্ধু ভালো মানুষ হতে পারে না।

এগুলো তাজ হাশমীর ধর্মীয় উসকানি ও রাজনৈতিক বিদ্বেষ ছড়ানোর নমুনা মাত্র। তিনি খোলা চিঠি লেখার নামে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিতর্কিত ও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অপচেষ্টা করেছেন। তাজ হাশমী কানাডায় অবস্থানকারী টিটো রহমান ও নাজমুস সাকিবের সঙ্গে ইউটিউব চ্যানেল নাগরিক টিভিতে বিশ্লেষণে অংশ নেন। সেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বঙ্গবন্ধু পরিবার, দেশের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, শিল্পগ্রুপসহ বিভিন্নজনের নামে অশালীন, মিথ্যা ও আজগুবি মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ থেকে স্বেচ্ছায় পালিয়ে যাওয়া কয়েকজন ব্যক্তি ও ইউটিউবার ফেসবুকে তার সঙ্গে নিয়মিত টকশোতে অংশ নেন।

তাজ হাশমীর বিষয়ে জানতে চাইলে গোয়েন্দা সংস্থার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, মূলত ধর্মীয় উসকানি ছড়ানো এবং উগ্রবাদের পক্ষে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন তাজ হাশমী।


আরও খবর



যুক্তরাষ্ট্র থেকে কোটি টাকার মাদকের পার্সেল, আটক ৩

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের বৈদেশিক ডাক শাখায় আসা একটি পার্সেলে প্রায় কোটি টাকা মূল্যের বিপুল পরিমাণ টেট্রাহাইড্রো ক্যানাবিনল যুক্ত কুশ, কেনাবিনয়েড চকলেট ও কেনাবিস কেক জব্দ করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) ঢাকা মেট্রো উত্তর কার্যালয়।

এ ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তিনজন মাদক কারবারিকে আটক করেছে ডিএনসি।

সোমবার (২২ এপ্রিল) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএনসির সহকারী পরিচালক মো. মেহেদী হাসান।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্য থেকে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের বৈদেশিক ডাক শাখায় একটি পার্সেল আসে। পার্সেলে প্রায় কোটি টাকা মূল্যের বিপুল পরিমাণে টেট্রাহাইড্রো ক্যানাবিনল যুক্ত কুশ, কেনাবিনয়েড চকলেট ও কেনাবিস কেক জব্দ করা হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত তিনজনকে আটক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মুস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকী সেগুনবাগিচা ডিএনসি প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানাবেন।


আরও খবর



অনির্দিষ্টকালের জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কলেজ বন্ধ

প্রকাশিত:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | হালনাগাদ:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা বিবেচনায় পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সব কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার (২০ এপ্রিল) জানিয়ে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর।

এতে বলা হয়, তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে পরবর্তী তারিখ ঘোষণা না করা পর্যন্ত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজসমূহে ক্লাস বন্ধ থাকবে।

এর আগে শনিবার দুপুরে চলমান তাপদাহে শিশু শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা বিবেচনায় ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত সব প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামী ২৮ এপ্রিল থেকে খুলবে স্কুল-কলেজ।

এর আগে তীব্র গরমের কারণে সাত দিন মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজের ছুটি ঘোষণা করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। মাউশির পক্ষ থেকে বলা হয়, সারাদেশের ওপর দিয়ে চলমান দাবদাহ ও আবহাওয়া দপ্তরের সতর্কতা জারির প্রেক্ষিতে মাউশি অধিদপ্তরের আওতাধীন সকল সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামী ২৮ এপ্রিল খুলবে। এ প্রতিষ্ঠানগুলো ঈদের ছুটি শেষে ২১ এপ্রিল থেকে খোলার কথা ছিল।

দাবদাহের কারণে তিন দিন হিট অ্যালার্ট জারি করে আবহাওয়া অফিস। আবহাওয়া অফিস বলছে, আজ শনিবার থেকে তাপমাত্রা বেশি থাকবে। এ সময় সবাইকে গরম থেকে বাঁচতে সতর্কতার সঙ্গে চলার নির্দেশনা দেয়া হয়।


আরও খবর
একাদশের ক্লাস শুরুর তারিখ ঘোষণা

বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪




৮০ কিমি বেগে ঝড়ের আশঙ্কা, নদীবন্দরে সতর্ক সংকেত

প্রকাশিত:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

দেশের ২ অঞ্চলের ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। একইসঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টিও হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রবিবার (৫ মে) দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া এক পূর্বাভাসে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ সময় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। তাই এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ২ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বেশকিছু অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। এই অবস্থায় নতুন করে হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। শনিবার (৪ মে) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার জন্য এই সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

অপর এক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টিও হতে পারে।


আরও খবর
বৃষ্টির পর আসছে হিট ওয়েভ

শনিবার ১৮ মে ২০২৪




সন্ধ্যার মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের শঙ্কা, নদীবন্দরে সতর্কসংকেত

প্রকাশিত:সোমবার ১৩ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৩ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

দেশের ৩ অঞ্চলের ওপর দিয়ে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়সহ বজ্রবৃষ্টি হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে ১ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সোমবার (১৩ মে) সকাল পৌনে ৯ থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেওয়া এক পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা, ময়মনসিংহ, এবং সিলেট অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে ১ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে পাবনা ও চুয়াডাঙ্গায় রোববার (১২ মে) দেশের সর্বোচ্চ ৩৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। এদিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে।

আবহাওয়া অফিস বলছে, সারা দেশে সোমবার দিন ও রাতের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়বে। আগামীকাল মঙ্গলবার (১৪ মে) দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়বে। এ ছাড়া এদিন রাত ও পরদিন বুধবার (১৫ মে) দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে।


আরও খবর
বৃষ্টির পর আসছে হিট ওয়েভ

শনিবার ১৮ মে ২০২৪




ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ

প্রকাশিত:সোমবার ০৬ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০৬ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে ও এর পক্ষে থাকায় নিপীড়নের শিকার যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে দেশজুড়ে সর্ববৃহৎ সংহতি সমাবেশ পালিত হয়েছে। ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের আহ্বানে সারা দিয়ে সোমবার (৬ মে) বেলা ১১টা থেকে দেশজুড়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ সংহতি সমাবেশ করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঐতিহাসিক মধুর ক্যান্টিন থেকে এ সংহতি সমাবেশের শুরু হয়। এ সময় ফিলিস্তিনি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর পদযাত্রা শুরু করেন শিক্ষার্থীরা; যা সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

এ ছাড়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় , ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ও ছাত্রলীগের সংহতি সমাবেশ হয়েছে।

এ সমাবেশে ছাত্রলীগের পাশাপাশি যোগ দেন সাধারণ শিক্ষার্থীরাও। সমাবেশে শিক্ষার্থীরা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবি জানান। সেইসঙ্গে ইসরায়েলের গণহত্যার নিন্দা জানানো হয়। শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার্থীদের ওপর দেশটির পুলিশ দ্বারা চলমান দমন ও নিপীড়নের তীব্র নিন্দা জানান। অতি দ্রুত শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে এ ধরণের হামলা বন্ধের আহ্বান জানান তারা।

এর আগে রোববার (৫ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে স্বাধীন ফিলিস্তিন ইস্যুতে দেশজুড়ে সংহতি সমাবেশ ডাক দেয় আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।

গত অক্টোবরে ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের হামলায় নিরস্ত্র মানুষদের হত্যা ও বেসামরিক বহু মানুষকে জিম্মি করার কথা বলে গাজায় সামরিক অভিযান চলছে। এই অভিযানে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও প্রাণহানির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পক্ষে বিক্ষোভে নামেন।

যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি আন্দোলনে যোগ দিচ্ছেন শিক্ষকরাও। নজিরবিহীন এ আন্দোলন ঠেকাতে মারমুখী দেশটির পুলিশ প্রশাসনও। বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের নির্যাতন, ধরপাকড়ের পাশাপাশি করা হচ্ছে বহিষ্কারও। এত কিছুর পরও দমানো যাচ্ছে না আন্দোলনকারীদের। ধীরে ধীরে আরও তীব্র হচ্ছে আন্দোলন। এমন প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তেজনা বেড়েই চলেছে ক্রমশ।

সাম্প্রতিক ইতিহাসে এত বড় ছাত্র আন্দোলন দেখেনি যুক্তরাষ্ট্র। ক্যালিফোর্নিয়া থেকে বোস্টন, নিউইয়র্ক থেকে ওয়াশিংটন; হার্ভার্ড থেকে জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি, ওহাইও থেকে নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি একের পর বিশ্ববিদ্যালয় শামিল হচ্ছে গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবিতে।

পাশাপাশি ইসরায়েল ও গাজা যুদ্ধকে সমর্থন করে, এমন কোম্পানির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবিও তোলা হচ্ছে। এ ধরনের বিক্ষোভ প্রথম শুরু হয়েছিল কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে। এরপর অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও সফল হয়নি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে পুলিশ নির্মম দমন ও পীড়নের চেষ্টা চালায়।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিবাদের অধিকার হরণ, বাকস্বাধীনতায় সীমাবদ্ধতা এবং ইহুদিবিদ্বেষের অভিযোগ তুলে গেল ১৮ এপ্রিল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলো থেকে দুই হাজারের বেশি শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ এবং মুখোশধারীদের হামলার কারণে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রের শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে।

যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের ওপর দমনপীড়ন এবং ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে ইউরোপ, এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

গাজায় ইসরায়েলের হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের আঁচ পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেশী কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়েও। দেশটির মন্ট্রিলের ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে তাঁবু টাঙিয়ে বিক্ষোভ করছেন ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীরা।

অস্ট্রেলিয়ায় শত শত মানুষ সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভে অংশ নেন। সেখানে বিক্ষোভকারীরা তাঁবু স্থাপন করে অবস্থান নেন। তাদের হাতে বড় বড় শব্দে লেখা ফ্রি প্যালেস্টাইন’ প্ল্যাকার্ড। অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্তত সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁবু টাঙিয়ে অবস্থান নিয়েছেন যুদ্ধবিরোধী ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীরা। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে শত শত শিক্ষার্থীরা গাজায় গণহত্যার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। এরমধ্যে ব্রিসবেনে কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয় (ইউকিউ) বিক্ষোভের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এই ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনপন্থিদের ১০০ মিটার দূরত্বে ইসরায়েল সমর্থক বিক্ষোভকারীরাও অবস্থান নিয়েছেন। সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়েও প্রায় ৫০টি তাঁবু টাঙিয়ে অবস্থান নিয়েছেন যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভকারীরা। সেখানে ১০০ জনের মতো বিক্ষোভকারী রাতেও অবস্থান করছেন।

যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়া ছাত্র বিক্ষোভের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে ভারতেও। দেশটির খ্যাতনামা নয়াদিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়েও (জেএনইউ) কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভকারীরা গাজায় হামলা ও হত্যাযজ্ঞ থামানোর দাবিতে জড়ো হন। ২৯ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়টি পরিদর্শনে যাওয়ার কথা ছিল ভারতে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত এরিক গারসেটির। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের কারণে তার ওই কর্মসূচি স্থগিত করা হয়।

এক বিবৃতিতে জেএনইউ স্টুডেন্ট ইউনিয়ন বলেছে, ইসরায়েলের সন্ত্রাস ও গণহত্যার সঙ্গে যুক্ত প্রশাসন ও দেশের প্রতিনিধিত্বকারী ব্যক্তিকে জেএনইউর আঙিনা ব্যবহার করতে দেয়া হবে না। বিক্ষোভ থামাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে এক হাজার ২০০ জন নিহত হয়। এরপর থেকে গাজায় বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। প্রায় সাত মাস ধরে চলা এই হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।


আরও খবর
একাদশের ক্লাস শুরুর তারিখ ঘোষণা

বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪