আজঃ রবিবার ১৯ মে ২০২৪
শিরোনাম

শান্তির বাণীর পরেও সহিংসতা থামছে না

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৩ জুলাই ২০২৩ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৩ জুলাই ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

মঙ্গলবার পঞ্চায়েত ভোটের ফল প্রকাশের দিনই শান্তির কবিতা লিখলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। বুধবার তৃণমূলের মুখপত্র 'জাগো বাংলা'য় সেই কবিতা প্রকাশ হয়েছে বলে নিজেই জানান মুখ্যমন্ত্রী।

এদিন বিকালে রাজ্যের সচিবালয় নবান্ন থেকে সংবাদ সম্মেলন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "জাগো বাংলায় আমার একটা কবিতা বেরিয়েছে 'শান্তি'।

কবিতাবিতানে আমার যত কবিতা দেখবেন তার অধিকাংশই আমি শান্তি, সম্প্রীতি, সংহতি, সংস্কৃতি, সভ্যতা নিয়ে কলম ধরেছি। কারণ এটাই আমার প্রিয়। উদ্ধার্য জীবনের উপহার নয়। নমনীয়তাই জীবনের অলংকার।

কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর এই শান্তির বাণীর পরেও সহিংসতা থামছে না। গত ৮ জুন রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ঘোষণা হয়। কার্যত সেই দিন থেকেই শুরু হয়ে যায় সহিংসতা। বুধবার পর্যন্ত ওই সহিংসতায় অন্তত অর্ধশতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে খবর।

যদিও সরকারের পক্ষ থেকে এই মৃত্যুর কথা স্বীকার করা হয়নি। মঙ্গলবার পঞ্চায়েত ভোটের গণনায় ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিপুল জয়ের পরেও বিরোধীদের উপর হামলা অভিযোগ উঠেছে, সেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

তার উদাহরণ বুধবারই দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে তিন জনের মৃত্যু। এদের মধ্যে দুইজন 'ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট' (আইএসএফ) কর্মী বলে জানা গেছে- এরা হলেন রেজাউল গাজী, হাসান মোল্লা। বাকিজন রাজু মোল্লা।

আরও পড়ুন<< পাকিস্তানে সামরিক ঘাঁটিতে হামলা, নিহত ৮

মঙ্গলবার গভীর রাতে আইএসএফ কর্মীদের সাথে সংঘর্ষ বাধে পুলিশের। তাতেই পুলিশের কর্মীরা ছাড়াও জখম হন এই টিউন জন। বুধবার তাদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে পুলিশ। এই জেলার কুলপিতে মুড়ি মুড়কির মত বোমা নিক্ষেপ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সেই সব ছবি সামনেও এসেছে।

মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘীতে রাজেশ শেখ নামে এক কংগ্রেস কর্মীর মৃত্যু হয়। শনিবার নির্বাচনের দিন ছাপ্পা ভোটকে কেন্দ্র করে কংগ্রেস ও তৃণমূলের সংঘর্ষ হয়। তাতে গুরুতরক আহত হন রাজেশ এরপর বুধবার কলকাতার হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যায় তিনি।

মালদহে চাচোলের খেমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পরানপুর এলাকায় মঙ্গলবার রাতে তৃণমূলের বিজয় মিছিলে হামলার ঘটনায় মারা জায় এক তৃণমূল কর্মী। তার নাম মফিজ উদ্দিন শেখ। এদিন সকালে চাচোল হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

এছাড়াও কোথাও তাজা বোমা উদ্ধার করা হয়েছে, কোথাও বোমাবজি, বিজয় মিছিলের উপর হামলা, কোথাও জেতার পরও বিজেপি প্রার্থীদের জয়ের সনদ দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

আরও পড়ুন<< নেপালে পর্যটকবাহী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত, নিহত ৬

শুধু তাইই নয়, কোচবিহার জেলার তুফানগঞ্জ বিধানসভার অন্তর্গত বলরামপুর-২, চিলাখানা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপির জয়ী প্রার্থীরা প্রাণভয়ে প্রতিবেশী আসামে আশ্রয় নিয়েছেন বলে খবর। মঙ্গলবার রাতে গ্রাম পঞ্চায়েতে জয়ী বিজেপির ৯ প্রার্থীকে তৃণমূলের তরফে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এরপরে তারা নিজেদের প্রাণ সংশয়ের বিয়ে বুধবার ভোরে সীমান্ত পেরিয়ে তারা অসমের ধুবরিতে বিজেপির কার্যালয়ে আশ্রয় নেয়।  স্বাভাবিকভাবে রাজ্যজুড়ে এই সহিংসতা ও মৃত্যুর ঘটনায় সরব হয়েছে বিরোধীদল গুলি।

সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী কটাক্ষ করে বলেন 'এত শান্তিপূর্ণ ভোট কেউ কখনো দেখেনি, এত কারচুপি, লুঠের ভোটও গোটা ভারতে কেউ দেখেনি।

মমতা যে নিজেই অপরাধী সেটা ধরা পড়ে গেছে, গোটা রাজ্যের মানুষ বুঝে গেছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের যা ফলাফল এসছে তার কোন বৈধতা নেই (legitimacy).

তার অভিমত 'রাজ্যজুড়ে যে সহিংসতার বলি হচ্ছে এটা এড়াতে এক্ষুনি মমতা ব্যানার্জির সরকারকে উৎখাত করতে হবে। কারণ এখানে গুন্ডা, দুর্বৃত্তদের রাজত্ব চলছে।

তিনি বলেন 'দুর্বৃত্তদের দল হল তৃণমূল কংগ্রেস। আর তার নেত্রী বানানো হয়েছে মমতা ব্যানার্জিকে। তার নেতৃত্বে রাজ্যে যে হিংসার রাজনীতি চলছে এটা বাংলার ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সর্বনাশের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যারা মারা গেছেন তারা যে দল, জাতি বর্ণেররই হোক না কেন এই মানুষের মৃত্যুর দায় মমতার। মমতার কান ধরে উঠবস করা উচিত।'

এক ধাপ এগিয়ে বিরোধীদল বিজেপি আবার তাদের তথ্যানুসন্ধান দল (ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম) পাঠিয়েছে রাজ্যে। সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবি শংকর প্রসাদের নেতৃত্বে ৪ সদস্যের এই দলে রয়েছেন রেখা বর্মা, রাজদীপ রায়, সত্যপাল সিং। রাজ্যের বিভিন্ন স্পর্শকাতর ও হিংসা কবলিত এলাকাগুলিতে তারাবপরিদর্শন করবেন, নিগৃহীত মানুষদের সাথে কথা বলবেন। হিংসা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট তৈরি করে তা কেন্দ্রকে পাঠাবে এই দল। এ ব্যাপারে রবিশঙ্কর প্রসাদের প্রশ্ন 'বিহার, উত্তরপ্রদেশেও এত সহিংসতা হয় না। কিন্তু বাংলায় এত হিংসা কেন? কেন এত খুনোখুনির ঘটনা ঘটে?

গত কয়েক দিনের সহিংসতার ঘটনায় ঘরে বাইরে চাপে পড়ে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এদিন সংবাদ সম্মেলন করে তিনি বলেন 'আমি দুঃখিত যে কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনায় কয়েকজন নিহত হয়েছে। যে জায়গাগুলোতে এই ঘটনা ঘটেছে সেগুলি আজ থেকে নয় গত ২৫-৩০ বছর ধরে ওই জায়গা গুলিতে গন্ডগোল হয়।

আরও পড়ুন<< পাকিস্তানে অগ্নিকাণ্ডে একই পরিবারের ১০ জনের মৃত্যু

মুর্শিদাবাদের ডোমকলে গন্ডগোল হয়েছে আমাদের কর্মীরা মারা গিয়েছেন। ভাঙ্গড়ে গন্ডগোল হয়েছে সেখানে বিরোধীরা করেছে। আমরা তো ওখানে জিতিনি আমাদের আসনটা ওরা (আইএসএফ) ছিনিয়ে নিয়েছে। রাজ্যের প্রায় ৭১ হাজার বুথে ভোট হয়েছে। কিন্তু বড়জোর সাতটি বুথে এই ঘটনা ঘটেছে। এগুলিকে ঘটানো হয়েছে।'

গোটা সহিংসতার ঘটনায় বিরোধীদের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে মমতা বলেন 'আমি দুঃখিত যে রাম-বাম-শ্যাম (বিজেপি-কংগ্রেস-সিপিআইএম) এরা তিনজন প্লাস আরও একজন (আইএসএফ) জোট বেঁধে মহাঘোট বেঁধে ছিল। এদের পরিকল্পনাই ছিল গন্ডগোল তৈরি করার।

যদিও সহিংসতার মৃত্যুর ঘটনায় শোক প্রকাশ করে তিনি বলেন 'যারা মারা গিয়েছেন তাদের পরিবারকে আমি সমবেদনা জানাই। তারা পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন। কিন্তু আমি পুলিশক ফ্রি হ্যান্ড দিচ্ছি। যারা এসবের সাথে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে যেন কঠোর ব্যবস্থা নেয়।'

তিনি এও জানান 'পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল জয় পেলেও আগামী একুশে জুলাই কোন সেলিব্রেশন হবে না। ওই দিনটিকে আমরা শ্রদ্ধা দিবস হিসেবে পালন করব।' এমনকি নিহতদের পরিবারের একজনকে হোম গার্ডের চাকরি ও আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

মমতা আরো জানান 'পঞ্চায়েত ভোট শেষ হয়ে গিয়েছে। আমার যদি সত্যিই কোন অপরাধ থাকে যে শাস্তি মানুষ আমাকে দেবে মাথা পেতে নেব। দাম্ভিকতা কোন রাজনৈতিক দলের উদ্ধত হতে পারে না। মানুষের আশীর্বাদ শুভেচ্ছা দোয়া পেলে আরো নম্র হতে হয়।'

এদিকে মঙ্গলবারের পর বুধবারও রাজ্যের একাধিক জেলায় পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির আসনে ভোট গণনা চলছে। তবে গণনার যা পরিস্থিতি তাতে তৃণমূলের জয় নিশ্চিত। সেক্ষেত্রে আরো একবার গ্রাম বাংলার দখল তৃণমূলের হাতেই থাকছে।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গোটা রাজ্যে ৩৩১৭ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ২৬৪৪ টিতে জয় পেয়েছে তৃণমূল, বিজেপি ২২০, বামফ্রন্ট ৩৮, কংগ্রেস ৪ এবং অন্যরা ৪১১ গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করেছে।

৩৪১টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে তৃণমূল ৩১৭, বিজেপি ৬, বামফ্রন্ট ২ এবং অন্যরা ১৬ টিতে জয়লাভ করেছে। আর ২০ জেলা পরিষদের সবকয়টিতে জয় পেয়েছে শাসক দল তৃণমূল।


আরও খবর



দেশের বিভিন্ন শহরে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করার সুপারিশ

প্রকাশিত:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

দেশের বিভিন্ন শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম গ্রহণ ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা করার সুপারিশ করেছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত কমিটি। বুধবার (২৪ এপ্রিল) সংসদ ভবনে কমিটির সভাপতি মুহিবুর রহমান মানিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়।

কমিটির সদস্য মো. মুজিবুল হক, রফিকুল ইসলাম, কামাল আহমেদ মজুমদার, মুহম্মদ শফিকুর রহমান, এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান এবং ফজিলাতুন নেসা বৈঠকে অংশ নেন।

বৈঠকের শুরুতেই অনুষ্ঠিত হয় পরিচিতি পর্ব। এরপর একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সম্প্রতি সমাপ্ত অধিবেশন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির বিবরণ, প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের সর্বশেষ হালনাগাদ অবস্থা এবং গৃহীত প্রকল্পগুলোর বিবরণ উপস্থাপন এবং বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

বৈঠকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী ৪৮টি প্রতিশ্রুতির মধ্যে ১১টি বাস্তবায়িত হয়েছে, ৩৫ বাস্তবায়নাধীন রয়েছে এবং দুটি স্থগিত রয়েছে মর্মে জানানো হয়। বাস্তবায়নাধীন ও প্রক্রিয়াধীন প্রতিশ্রুতিগুলোর বিপরীতে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় গৃহীত কার্যক্রমগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য কমিটির পক্ষ থেকে সুপারিশ করা হয়।

দেশের বিভিন্ন শহর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম গ্রহণ ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা করণের প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়। মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহিত প্রকল্পের কাজের গুণগতমান ও বাস্তবায়ন অগ্রগতি সরেজমিনে পরিদর্শন করে পর্যবেক্ষণ ও মতামত দেওয়ার জন্য বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগকে (আইএমইডি) জোর সুপারিশ করা হয়।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, প্রধান প্রকৌশলী, অতিরিক্ত সচিব, সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর প্রধান, বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) অতিরিক্ত সচিব, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।


আরও খবর



ভারতীয় তিন কোম্পানির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ইরানের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কে জড়িত থাকায় তিনটি ভারতীয় কোম্পানিসহ এক ডজনেরও বেশি সংস্থা, ব্যক্তি এবং জাহাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, ইরানের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে অবৈধ বাণিজ্য থাকা এবং ড্রোন সরবরাহের কারণে ওই তিনটি কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া ইরানের কাছ থেকে যেসব ড্রোন পেয়েছে তা গোপনে বিক্রিতে সহায়তা করেছে নিষেধাজ্ঞা পাওয়া কোম্পানিগুলো। ইরানের এ বাণিজ্যিক কাজকে সামনে থেকে সমর্থন দিয়েছে ইরানি কোম্পানি সাহারা থান্ডার। এর সঙ্গে জড়িত থাকায় তিনটি ভারতীয় কোম্পানিকে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।

এ কোম্পানিগুলো হলো জেন শিপিং, পোর্ট ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড এবং সি আর্ট শিপ ম্যানেজমেন্ট (ওপিসি) প্রাইভেট লিমিটেড। সাহারা থান্ডার ইরানি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং আর্মড ফোর্সেস লজিস্টিকসের পক্ষ থেকে চীন, রাশিয়াসহ একাধিক দেশে ইরানি পণ্য বিক্রয় এবং চালান করে থাকে।

চলতি মাসের শুরুতে সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে ইরানের কয়েকজন শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। ওই হামলার জবাবে গত ১৩ এপ্রিল রাতে ইসরাইলকে লক্ষ্য করে তিনশত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। এরপর ইরানের ওপর প্রথম দফায় নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ড্রোন প্রযুক্তি ও উৎপাদন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও কোম্পানিকে লক্ষ্য করে ১৯ এপ্রিল এই নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করা হয়।

মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, গত ১৩ এপ্রিল ইসরাইলে হামলায় ব্যবহার করা হয়েছে, ইরানের এমন ইউএভি বা ড্রোন উৎপাদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ১৬ ব্যক্তি ও দুটি সংস্থাকে লক্ষ্য করে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।


আরও খবর



বাংলাদেশ সীমান্তে ঢুকে নারীদের তাড়া করে গুলি ছুড়লো বিএসএফ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মোঃ মাসুদ রানা, কুড়িগ্রাম

Image

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে প্রবেশ করে নারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। তবে এতে কোনও হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও গুলিতে বাংলাদেশি এক নাগরিকের বসতভিটার ঘরের চাল ফুটো হয়েছে।

রবিবার (১২ মে) বিকালে উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের ধুলারকুটি সীমান্তের আন্তর্জাতিক মেইন পিলার ৯৩১-এর পাশে এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে বিজিবির কড়া প্রতিবাদের পর সোমবার (১৩ মে) সন্ধ্যায় উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা শাহ আলম মিয়া ও আব্দুল কুদ্দুসসহ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, রবিবার বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা কয়েকজন নারী কেটে নেওয়া ধান গাছের আড়া  (গোড়ায় অবশিষ্ট খড়) সংগ্রহের জন্য নো-ম্যানসল্যান্ডে প্রবেশ করেন। এ সময় ভারতীয় নারায়ণগঞ্জ ক্যাম্পের টহলরত এক বিএসএফ সদস্য তাদের ধাওয়া করেন। ধাওয়া খেয়ে ওই নারীরা দৌড়ে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে প্রবেশ করলে বিএসএফ সদস্যও তাদের পিছু নেয়। বাংলাদেশ ভূখণ্ডের প্রায় ২০ থেকে ৩০ গজ অভ্যন্তরে প্রবেশ করেন ভারতীয় ওই সীমান্তরক্ষী। একপর্যায়ে রাইফেল উঁচিয়ে বাংলাদেশি নারীদের লক্ষ্য করে এক রাউন্ড গুলি করে দ্রুত ভারতের অভ্যন্তরে চলে যান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, গুলিতে কারও হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও তা লক্ষ্যচ্যুত হয়ে ধুলারকুটি গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা নুর আলম বাচ্চুর বাড়ির রান্নাঘরের চালে আঘাত করে। এতে ঘরের চালের টিন ফুটো হয়ে গুলিটি মেঝেতে পড়ে। সে সময় রান্না ঘরে বাচ্চুর পুত্রবধূ থাকলেও ভাগ্যক্রমে তিনি বেঁচে যান। গুলির ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

নুর আলম বাচ্চু বলেন, ওই সময় আমার পুত্রবধূ রান্নাঘরেই ছিল। ভাগ্যিস গুলিটা তার গায়ে লাগেনি। মাঝেমধ্যেই বিএসএফ এভাবে বাংলাদেশে ঢুকে নিরীহ গ্রামবাসীর ওপর অত্যাচার চালায়। আমরা আতঙ্কে থাকি।’

খবর পেয়ে বিজিবি গোরকমন্ডল ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার নজরুল ইসলামসহ বিজিবির একটি দল রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ওই নুর আলম বাচ্চুর বাড়ি পরিদর্শন করে গুলিটি উদ্ধার করে নিয়ে যান। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় সোমবার সকালে বিএসএফকে কড়া প্রতিবাদ জানায় বিজিবি। পরে সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কোম্পানি পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, পতাকা বৈঠকে বিজিবির পক্ষে নেতৃত্ব দেন লালমনিরহাট-১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের শিমুলবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার নরেশ চন্দ্র রায় এবং বিএসএফের পক্ষে নেতৃত্ব দেন ৯০ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের নারায়ণগঞ্জ কোম্পানি কমান্ডার ইন্সপেক্টর রমন সিং। বৈঠকে বিনা উসকানিতে সীমান্তে গুলিবর্ষণের কারণ জানতে চেয়ে কড়া প্রতিবাদ জানায় বিজিবি। তবে এ ব্যাপারে পরিষ্কার কোনও ব্যাখ্যা দেয়নি বিএসএফ।

এ ব্যাপারে জানতে মঙ্গলবার (১৪ মে) সকালে লালমনিরহাট-১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়ন অধিনায়কের দাফতরিক মোবাইল নম্বরে ফোন ও খুদেবার্তা দিয়ে কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি। পরে ব্যাটালিয়নের দায়িত্বশীল অফিসার মেজর আসিফকে ফোন ও খুদেবার্তা দিলে তিনিও কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি।


আরও খবর



বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে অগ্রণী ব্যাংকের নতুন ডিএমডিদের শ্রদ্ধা

প্রকাশিত:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | হালনাগাদ:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | অনলাইন সংস্করণ
উপজেলা প্রতিনিধি

Image

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অগ্রণী ব্যাংক পিএলসির সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মো. আবুল বাশার ও শামিম উদ্দিন আহমেদ।

আজ শনিবার বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে তাঁরা এ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এ সময় তাঁদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন অগ্রণী ব্যাংকের উধ্বর্তন নির্বাহীগন ও গোপালগঞ্জ অঞ্চলের উপ মহাব্যবস্থাপক ও অঞ্চল প্রধান এস এম ইস্রাফিল হোসাইন এবং শাখা ব্যবস্থাপকবৃন্দ।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে জাতির পিতা ও বঙ্গমাতা সহ ১৫ আগস্টে নিহত মহান শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয় এবং শোক বইতে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শোকবার্তা লেখা হয়।

নিউজ ট্যাগ: গোপালগঞ্জ

আরও খবর



পাটের আবাদ কমেছে মেহেরপুরে

প্রকাশিত:সোমবার ১৩ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৩ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আব্দুল আলিম, মেহেরপুর

Image

পাটের ন্যায্যমূল্য না পাওয়া, অনাবৃষ্টি আর পাট পচানোর পানি সংকটের কারণে পাটের আবাদ কমেছে মেহেরপুরে। চলতি বছরে পাটের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। চাষিদের দাবী, প্রতি বছরে পাট চাষে একরকম লোকসান গুণতে হয়। বাধ্য হয়ে অন্য ফসল আবাদ করছেন তারা। তবে কৃষি অফিস বলছে, পাট চাষে চাষিদেরকে উদ্বুদ্ধ করতে দেয়া হচ্ছে প্রণোদনা ও বিকল্প পদ্ধতিতে পাট পচানোর পরামর্শও দেয়া হচ্ছে।

মেহেরপুর জেলা কৃষি অফিসের তথ্যনুযায়ি, কৃষি নির্ভরশীল এ জেলায় চাষিদের অর্থনৈতিক ফসল হিসেবে বিবেচিত সোনালী আঁশ পাট। চলতি বছরে এ জেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২২ হাজার হেক্টর। আর পাট চাষ করা হয়েছে ১৬ হাজার ৬৩০ হেক্টর যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫ হাজার ৩৭০ হেক্টর কম। চাষিরা জেআরও ৫২৪, বি জে আর আই তোষাপাট-৮, ভারতীয় কৃষি কল্যাণ, মহারাষ্ট্র ও চাকা জাতের পাট আবাদ করে থাকেন।

চাষিরা জানান, গেল বছর অনাবৃষ্টি থাকলেও তেমন তাপদাহ ছিল না তাই সেচ দিয়ে পাট চাষ করেছেন চাষিরা। কিন্তু পাট জাগ দেয়ার মতো পানির ব্যবস্থা ছিল না। অনেকেই কাদা মাটি দিয়ে পাট জাগ দেয়ার পাটের মান নষ্ট হওয়ায় ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়। চলতি মৌসুমে অনাবৃষ্টির সাথে যোগ হয় তীব্র তাপদাহ। ফলে অনেকেই পাট চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। উপরন্ত পাট পচানোর জন্য কোন উম্মুক্ত জলাশয় না থাকায় চাষিরা পাট চাষ করতে অনীহা প্রকাশ করছেন। অনেকেই খাল বিল সংস্কার ও দখল হয়ে যাওয়া জলাশয় উম্মুক্ত ঘোষণা করার আহবান জানান।

গাংনীর পলাশীপাড়ার পাট চাষি জুলফিকার আলী জানান, প্রতিবছর চাষিরা এ পাট আবাদ করে মোটা অংকের টাকা আয় করেন। কিন্তু পানি সংকটের কারণে চাষিদের পাট পচাতে সইতে হয় নানা বিড়ম্বনা। অনেকেই খালে বিলে পানি না পেয়ে বাড়ির পাশে গর্তে সামান্য পানি দিয়ে পাট পচাতে দেন। এতে এক দিকে যেমন চাষিদের খরচ বেড়ে যায় তেমনি পাটের রং নষ্ট হয়। ফলে পাটের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হন।

পাট চাষি তেতুঁলবাড়িয়ার মিজান জানান, গেল বছর তিনি ৪ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলেন। চলতি মৌসুমে তিনি দুই বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। অনাবৃষ্টি ও তাপদাহের কারণে পানির স্তর নেমে যাওয়ায় পাট বীজ বপন করতে পারেনি। উপরন্তু পাটক্ষেতে সেচ দিতে না পারায় পানির অভাবে পাট গাছ বাড়ছে না। অন্যদিকে পাট পচানোর ব্যবস্থা না করতে পারলে সামনে বছর আর পাট চাষ করবেন না বলেও জানান এই চাষি।

চাষিদের দাবি, হাজা মজা খাল বিল সংস্কার করে পানি প্রবাহ ঠিক রাখলে পাট পচানো সম্ভব। চাষিরা উম্মুক্ত জলাশয়ে পাট জাগ দিতে পারলে পাট চাষ বৃদ্ধি পাবে।

গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে পাটের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। অনাবৃষ্টির কারণে অনেকেই পাট বীজ বপন করতে পারেনি। আর যারা আবাদ করেছেন পানির অভাবে পাটগাছ বাড়েনি। অন্যদিকে পাট পচানো নিয়েও চাষিরা নানা বিড়ম্বনায় পড়েন। তবুও চাষিদেরকে প্রণোদনাসহ অন্যান্য সুবিধা দেয়া হচ্ছে পাট চাষে আগ্রহী করে তোলার জন্য। বিকল্প পদ্ধতিতে পাট পচানোর পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলেও জানালেন এই কর্মকর্তা।


আরও খবর