শ্রীপুর ( গাজীপুর ) প্রতিনিধি :
পঁচা সবজি ও গৃহস্থালির ময়লা-আবর্জনা স্তূপ হয়ে আছে নদীর পাড়ে। স্তূপে প্লাস্টিকের খালি বোতল থেকে শুরু করে পলিথিন, কলার কাঁদিসহ পরিত্যক্ত নানা সামগ্রী পড়ে আছে। ময়লার স্তূপের পাশেই ঘাট। সেখানে আবর্জনার দুর্গন্ধের মধ্যেই নদী পাড়াপাড় করছেন স্থানীয় লোকজন।
শ্রীপুরে প্রবহমান শীতলক্ষ্যা নদীর বরমী বাজার খেয়া ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে এমন দৃশ্য। শুধু বরমী নয়, শীতলক্ষ্যা কয়েকটি ঘাট ঘুরে একই রকম চিত্র পাওয়া গেছে।
বরমী বাজার খেয়া ঘাটে ময়লা-আবর্জনা সয়লাব হয়ে রয়েছে। শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ঐতিহ্যবাহী বরমী বাজারের খেয়া ঘাটে নির্বিচারে ফেলা হচ্ছে বর্জ্য। এসব বর্জ্য গড়িয়ে নদীর পানিতে মিশে দূষিত হচ্ছে নদীর পানি ও পরিবেশ। খেয়াঘাটটিকে দেখলে মনে হয় যেন ময়লার ভাগাড়।
বরমী হতে আশপাশের কয়েকটি উপজেলায় যাতায়াতের জন্য নদীপথে লঞ্চ এবং নৌকা এলাকাবাসীর একমাত্র বাহন। আর ব্যবসায়ীদের যাবতীয় মালামাল আনা-নেওয়া করা হয় নৌকায় বা লঞ্চে। খেয়াঘাটে ফেলা ময়লার দূর্গন্ধ এবং নদী দূষণের কারণে নদীপথের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এলাকাবাসী।
স্থানীয় লোকজন জানান, বরমী বাজারে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে গড়ে উঠা বেসরকারি ক্লিনিকের ও বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা কাঁচা বাজারের ময়লা-আবর্জনা নদীতে ফেলে দেন। এ কারণে নদীর পানি দূষিত হয়ে পড়ছে। নদীতে বর্জ্য ও ময়লার স্তূপ থাকায় দুর্গন্ধে পানির কাছে যাওয়া যায় না। তাঁদের দাবি, ময়লা-আবর্জনা ফেলা বন্ধ করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
খেয়াঘাটের মাঝি চাঁন মিয়া জানান, শীতলক্ষ্যা আর আগের মতো নেই। ময়লা পচার দুর্গন্ধে নাজেহাল অবস্থায় আছি। এখন যে অবস্থা মাঝিগিরিও ছাইড়া দিতে হবে।
উপজেলার বরমী বাজারে কয়েকটি ক্লিনিকের মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা শীতলক্ষ্যা নদীর খেয়া ঘাটে বর্জ্য ফেলার কথা অস্বীকার করেন।
নদী পরিব্রাজক দলের শ্রীপুর উপজেলা শাখার সভাপতি সাইদ চৌধুরী বলেন, নদী রক্ষায় আইন থাকলেও আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাবে শীতলক্ষ্যা এখন দূষণের কবলে। প্রশাসনকে বিষয়টি তাড়াতাড়ি আমলে নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পরিবেশবিদরা যদি যথাযথ ব্যবস্থা নেন তাহলে শুধু শীতলক্ষ্যা নদী নয়, বেঁচে যাবে ছোট বড় সকল নদী। তাছাড়া নদী রক্ষায় বিভিন্ন অধিদপ্তরকে এগিয়ে আসতে হবে।
গাজীপুর জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুস সালাম সরকার বলেন, বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না আমরা পরিদর্শনে যাব সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমি স্থানীয় প্রশাসনের সাথে কথা বলবো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, ক্লিনিকের বর্জ্য নদীতে না ফেলার জন্য ক্লিনিক মালিকদের সাথে কথা বলা হবে। তারপরও কেউ ময়লা ফেললে খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।