চট্টগ্রামে মানুষবিহীন একটি জাহাজ নিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে। উপকূলীয় দ্বীপ সেন্টমার্টিনে ভেসে আসা জাহাজটিকে স্থানীয়রা বলছেন ‘ভুতুড়ে জাহাজ’। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জাহাজটির ছবি ছড়িয়ে পড়ার পর নানা মন্তব্য আসছে। তবে নৌযানটি যে নাবিকরাই বাংলাদেশে এনেছিল তা নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে কীভাবে এটি এমন ভুতুড়ে জাহাজে পরিণত হলো, তা স্পষ্ট হয়নি।
কোস্টগার্ড
জানায়, সোমবার (২৪ অক্টোবর) সেন্টমার্টিনের ছেড়া দ্বীপে ভিড়তে দেখা যায়। তবে খোঁজ করা
হচ্ছে এটি কেন পরিত্যক্ত করা হয়েছে। জাহাজটি স্থানীয়রা তীরে নিয়ে এসে ভেতরে কাউকে
পাননি। কয়েকটি কক্ষ তালা দেওয়া ছিল।
জাহাজটি সিঙ্গাপুরের
এম আর ৩৩২২
জাহাজটি সিঙ্গাপুরের পতাকাবাহী। এটি মেরিনা টোয়েজ প্রাইভেট লিমিটেডের মালিকানায় নিবন্ধন
করা। জাহাজটির দৈর্ঘ ১১০.৬ মিটার এবং প্রস্থ ৩০ মিটার। এটি একটি মালবাহী জাহাজ। এ ধরনের
জাহাজে সাধারণত নিজস্ব ইঞ্জিন থাকে না।
চট্টগ্রাম বন্দর
কর্তৃপক্ষের যে তালিকা আছে তাতে দেখা যায় নৌযানটি এ বছরই একাধিকবার বাংলাদেশে এসেছে।
গত ৮ সেপ্টেম্বরের তালিকাতেও জাহাজটির নাম রয়েছে। ওই দিন জাহাজটি নয় হাজার টনের বেশি
পাথর বহন করে মালয়েশিয়ার একটি বন্দর থেকে বাংলাদেশে এসেছে। ২০০৮ সালে তৈরি করা এই
জাহাজটি ১০ হাজার টন মালামাল বহন করতে পারে। জাহাজটির নিবন্ধনের তথ্য থেকে এ তথ্য জানা
গেছে।
জাহাজটি কুতুবদিয়ায়
এসেছিল
জাহাজটি ভাড়া
করে এনেছিল জার ওয়ার্ল্ড লজিস্টিকস নামের একটি স্থানীয় এজেন্ট। জাহাজটির ভাড়া করার
কথা প্রতিষ্ঠানটির একজন কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন। কিন্তু কীভাবে সেন্টমার্টিন দ্বীপে
ভিড়ল তিনি কিছু বলতে পারছেন না।
চট্টগ্রামে
জার লজিস্টিকসের কর্মকর্তা জিন্নাত আলী বলেন, দুইদিন আগে চট্টগ্রাম বন্দর ছেড়ে চলে
গিয়েছিল জাহাজটি। এরপর কী হয়েছিল আমরা বলতে পারছি না।
তিনি বলেন,
মালয়েশিয়া থেকে নির্মাণকাজের জন্য পাথর বহন করে জাহাজটি চট্টগ্রামের কুতুবদিয়ায়
গিয়েছিল। মালামাল খালাস করে ক্যাপ্টেন এবং ক্রুসহ দুইদিন আগে জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দর
ছেড়ে যায়। গত জুন মাসেও জাহাজটিকে কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় নোঙর করতে দেখা গেছে।
জাহাজটি সম্পর্কে বিস্তারিত আর কিছু জানা যায়নি।
সেন্টমার্টিন
দ্বীপের কোস্টগার্ড স্টেশন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট রাগিব তানজুম বলেন, প্রতিকূল আবহাওয়ার
কারণে তারা আমরা জাহাজটি পর্যবেক্ষণ করতে পারিনি। এটুকু নিশ্চিত হতে পেরেছি যে, এতে
মানুষ ছিল না। স্থানীয়রা কোস্টগার্ডকে জানিয়েছেন যে, জাহাজটির কার্গো রাখার জায়গায়
কিছু বস্তা রয়েছে।
তিনি বলেন, এমন জাহাজ অনেকক্ষেত্রে ভিন্ন কোনো নৌযান দিয়ে টানা হয়। এটি তুলনামূলক বেশ বড়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে কোস্টগার্ড ধারণা করছে কোনো নাবিক ছাড়া জাহাজটি যেভাবে ভেসে এসেছে তাতে বুঝা যায়, জাহাজটিকে সচেতনভাবেই পরিত্যক্ত করা হয়েছে।