আজঃ বৃহস্পতিবার ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
শিরোনাম

শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি : ভিকারুননিসার শিক্ষক মুরাদ গ্রেপ্তার

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আজিমপুর শাখার গণিত শিক্ষক মুরাদ হোসেন সরকারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ছাত্রীদের যৌন হয়রানির মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সোমবার দিবাগত রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লালবাগ থানার ওসি খন্দকার মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন। তিনি বলেন, সন্ধ্যায় এক তরুণীর করা নারী নির্যাতন মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার তাকে আদালতে তোলা হবে।

এর আগে সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে কলেজের পরিচালনা কমিটির জরুরি সভায় শিক্ষক মুরাদ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগে গত শনিবার রাজধানীর আজিমপুর ক্যাম্পাসের দিবা শাখার জ্যেষ্ঠ শিক্ষক মুরাদ হোসেন সরকারকে প্রত্যাহার করে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে সংযুক্ত করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। কলেজের একটি সূত্র জানিয়েছে, মুরাদ হোসেন সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগে তদন্ত করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি। এরই মধ্যে এই কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

এর আগে রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টায় মুরাদ হোসেন সরকারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আজিমপুর ক্যাম্পাসের ফটকে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। পরে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা বিকেল ৩টার দিকে আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা দেয়। বিকেলে একই দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন কয়েকজন অভিভাবক।


আরও খবর



চাকরি বহালের দাবিতে অবস্থান, আইজিপিসহ অবরুদ্ধ কর্মকর্তারা

প্রকাশিত:রবিবার ১৮ আগস্ট ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৮ আগস্ট ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

রাজনৈতিক তকমায় বা ঠুনকো অভিযোগে চাকরি হারানো পুলিশ সদস্যরা সব সুযোগ সুবিধাসহ চাকরি ফিরে পেতে পুলিশ সদর দফতরের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন পুলিশ সদস্যরা। ফলে ভবনের ভেতরে অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছেন আইজিপিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

গত ১৫ বছরের বিভিন্ন সময়ে চাকরি হারানো হাজারো পুলিশ সদস্য রোববার (১৮ আগস্ট) দুপুরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। এ সময় তারা স্লোগান দে এক দফা, এক দাবি, নির্বাহী আদেশে চাকরি ফেরত দেওয়া।

বিকেল থেকে পুলিশ সদর দফতরের সামনের সড়কের দুই লেন বন্ধ করে বিক্ষোভ ও অবস্থান করলেও দেখা মেলেনি পুলিশ প্রধান ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাসিন্দা কনস্টেবল ফরহাদ বিশ্বাস বলেন, ২০২১ সালে বগুড়া জেলায় আমাকে ডোপ টেস্টের নামে চাকরিচ্যুত করা হয়। আদালতে মামলা করি। আদালত থেকে আমি নির্দোষ প্রমাণিত হলেও এসপি সুদীপ কুমার চক্রবর্তী আমাকে যোগদান করতে দেননি।

তিনি বলেন, এ রকম হাজারো পুলিশ সদস্য হাহাকার নিয়ে এখানে উপস্থিত হয়েছেন। আমাদের দাবি একটাই নির্বাহী আদেশে চাকরি ফেরত দেওয়া।

আন্দোলনরত পুলিশ সদস্যরা জানান, বিগত সময়ে বিসিএস পুলিশ কর্মকর্তারা যদি চাকরি ফিরে পান তাহলে আমরা কেন পাব না। বিশেষ করে বিভাগীয় মামলা ও আদালতের আশ্রয় নিয়ে তদন্ত ও বিচারিক প্রক্রিয়ায় যারা নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন, তাদের কী দোষ! তাদের তো চাকরি বহালে কোনো বাধা থাকার কথা না। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের তাবেদার আইজিপি শহীদুল হক, বেনজির, আব্দুল্লাহ আল-মামুনরা চাকরি ফিরিয়ে দেননি।

পুলিশ কনস্টেবল মঞ্জুরুল হক বলেন, এসপিবিএনে থাকতে আমাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। তখন করোনাকাল। বাবা ও মা করোনা আক্রান্ত ছিলেন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্য আমি বাড়ি যেতে চাইলে ছুটি মঞ্জুর করেনি। বাধ্য হয়ে আমি ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ছুটি ছাড়াই বাড়ি যাই। ফিরে আসার পর আমাকে সাসপেন্ড করা হয়। বিনা ছুটিতে কেন বাড়ি গেলাম, সেজন্য পরে চাকরিচ্যুত করা হয়। চাকরি করি পরিবারের জন্য। বিপদে যদি সেই পরিবারের পাশে থাকতে না দেয় বাহিনী সেটা তো অন্যায্য। আমি চাকরি ফেরত চাই।


আরও খবর



আন্দোলনে আহতদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দিচ্ছে যে ১৩ হাসপাতাল

প্রকাশিত:বুধবার ২১ আগস্ট ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২১ আগস্ট ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
স্বাস্থ্য ডেস্ক

Image

রাজধানীর ১৩ সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ছাত্রজনতার চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। বুধবার (২১ আগস্ট) স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ছাত্রজনতার চিকিৎসার জন্য সারাদেশের সরকারি হাসপাতালে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। ঢাকায় অবস্থিত নিম্নোক্ত হাসপাতালগুলোতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের ভর্তির জন্য অনুরোধ করা হলো।

হাসপাতালগুলো হলো-

১. ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

২. সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ)

৩. কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল

৪. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি হাসপাতাল)

৫. মুগদা জেনারেল হাসপাতাল

৬. স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতাল

৭. শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

৮. জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (পঙ্গু হাসপাতাল)

৯. জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল

১০. জাতীয় নাক কান গলা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল

১১. জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল

১২. জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল

১৩. জাতীয় নিউরো সায়েন্স হাসপাতাল


আরও খবর
সেপ্টেম্বরে ভয়াবহ পর্যায়ে যেতে পারে ডেঙ্গু

বৃহস্পতিবার ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় ৫ জনের মৃত্যু

মঙ্গলবার ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪




সাবেক রেলমন্ত্রীসহ ৩শ’ জনের বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সশস্ত্র হামলা, গুলিতে আহত হওয়ার ঘটনায় সাবেক রেলমন্ত্রী ও চৌদ্দগ্রামের সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুল হক, সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার, তার মেয়ে সাবেক মেয়র তাহসীন বাহার সূচি, মুজিবুল হকের স্ত্রী হনুফা আক্তারসহ অন্তত ১৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ৩ শ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।

কুমিল্লার আলেখারচরের আবদুল করিমের ছেলে কাজী মো. সোহেল বাদি হয়ে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় এ মামলা দায়ের করেন। কুমিল্লা কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শিবেন বিশ্বাস আজ সকালে বাসসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলায় অভিযোগ বলা হয়, উল্লেখিত আসামীরাসহ তিন শতাধিক আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা সকলেই আগ্নেয়াস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্য, দা, ছেনি, ইট, লাঠি সোটা নিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুল হক, সদর আসনের সাবেক এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের নির্দেশে অন্যান্য আসামি ঝাপিয়ে পড়ে। তারা বৃষ্টির মতো ককটেল ও গুলি ছুড়ে। আসামীরা বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের ক্যান্টনমেন্ট পর্যন্ত তাড়া করে নিয়ে যায়। হাবিবুর আল-আমিন সাদী ও নাসির উদ্দিন তাদের লাইসেন্সকৃত পিস্তল ও শর্টগান নিয়ে নিরীহ ক্ষিার্থীদের উপর গুলি করে।

শিবেন বিশ্বাস আজ সকালে বাসসকে বলেন, ১৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ৩ শ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।


আরও খবর



পদত্যাগ করলেন ইউজিসির সেই আলমগীর

প্রকাশিত:রবিবার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

অবশেষে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সেই আলোচিত সদস্য প্রফেসর মুহাম্মদ আলমগীর পদত্যাগ করলেন। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তিনি এ পদত্যাগ করেছেন। রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদের কাছে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন।

পদত্যাগপত্রে তিনি লেখেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের পূর্ণকালীন সদস্য পদে দ্বিতীয় মেয়াদে কর্মরত আছি। ব্যক্তিগত কারণে উক্ত পদে আমার পক্ষে দায়িত্ব পালন সম্ভব হচ্ছে না বিধায় আমি অদ্য ৮ সেপ্টেম্বর উল্লিখিত সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করছি এবং আমি আমার পূর্বের কর্মস্থল খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে অধ্যাপকের (গ্রেড-১) মূল পদে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর পুনঃযোগদান করব।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ইউজিসি চেয়ারম্যান পদ‌‌ থেকে পদত্যাগ করেন প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ। এরপর আলমগীরকে চেয়ারম্যানের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তাকে এ দায়িত্ব দেওয়ার পর বিক্ষোভ করেন ইউজিসির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে আন্দোলন করেন‌ কুয়েট সাবেক শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী প্রকৌশলীরা। তাদের অভিযোগ আলমগীর ভিসি থাকাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা কর্মচারীদের নির্যাতন করেন।‌

প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখন ১৬ জুলাই মধ্যরাতে হঠাৎ দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তদারকি প্রতিষ্ঠান মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে সব শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়।

তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সমন্বয় করে এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেন ইউজিসির তৎকালীন চেয়ারম্যানের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা প্রফেসর মুহাম্মদ আলমগীর।


আরও খবর



‘আমার সোনার বাংলা’ যেভাবে জাতীয় সংগীত হলো

প্রকাশিত:বুধবার ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

আমার সোনার বাংলা গানটি ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে রচিত হয়েছিল। গানটির মূল পাণ্ডুলিপি পাওয়া না যাওয়ায় এর সঠিক রচনাকাল জানা যায় না। সত্যেন রায়ের লেখা থেকে জানা যায়, ১৯০৫ সালের ৭ আগস্ট কলকাতা টাউন হলে একটি প্রতিবাদসভায় এই গান প্রথম গাওয়া হয়। সেই বছর ৭ সেপ্টেম্বর (২২ ভাদ্র, ১৩১২ বঙ্গাব্দ) সঞ্জীবনী পত্রিকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্বাক্ষরে গানটি ছাপা হয়।

জাতীয় তথ্য বাতায়নে বলা হয়েছে, আমার সোনার বাংলা গানটি বিশ শতকের প্রথম দুই দশকে স্বদেশী আন্দোলনের সময় অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গবিরোধী রাজনীতিক, স্বদেশী কর্মী ও বিপ্লবীরা বাঙালি জনগণকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করার মাধ্যম হিসেবে এই গান প্রচার করেন। কিন্তু বিশ শতকের বিশের দশকে আঞ্চলিক জাতীয়তাবাদ স্তিমিত হয়ে পড়লে এই গানের প্রচলন কমে যায়।

১৯৭০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত চিরসবুজ সিনেমা জীবন থেকে নেওয়া-তে এই গান ব্যবহৃত হয়। এটি কোনো সিনেমায় এই গানের প্রথম ব্যবহার। জহির রায়হান নির্মিত এই সিনেমায় তৎকালীন বাঙালি স্বাধীনতা আন্দোলনকে রূপকের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের আগে গানটির পুনরুজ্জীবন ঘটে। ১৯৭১ সালের ৩ জানুয়ারি ঢাকার পল্টন ময়দানে ছাত্রলীগ ও শ্রমিক লীগ আয়োজিত এক জনসভায় গানটি গাওয়া হয়।

ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের আগেও গানটি গাওয়া হয়েছিল। ২৩ মার্চ স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা প্যারেডেও গানটি গাওয়া হয়।

মুজিবনগরে বাংলাদেশের প্রবাসী সরকার এই গানকে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে গানটি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে নিয়মিত পরিবেশিত হতো। মুক্তিযুদ্ধের সময় গানটির বর্তমানে প্রচলিত যন্ত্রসুর করেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সুরকার অজিত রায়।

স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে সংবিধান প্রণয়ন হলে এর ৪.১ অনুচ্ছেদে আমার সোনার বাংলার প্রথম ১০ চরণ (মোট চরণ ২৫ চরণ) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়।

গানের প্রথম ১০ ছত্র কণ্ঠসংগীত এবং প্রথম ৪ ছত্র যন্ত্রসংগীত ও সামরিক বাহিনীতে ব্যবহার করা হয়।

মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতকে স্বাধীনতার অস্তিত্বের পরিপন্থি আখ্যা দিয়ে তা পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযমের ছেলে আব্দুল্লাহিল আমান আযমী। এসময় তিনি আট বছর গুম থাকার সময়ের বর্ণনা দেয়ার পাশাপাশি নতুন করে সংবিধান রচনার দাবি জানান।

আমান আযমী বলেন, ১৯০৫-এ বঙ্গভঙ্গ-রদ করার জন্য রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি। এই জাতীয় সংগীত দুই বাংলা এক করার জন্য জাতীয় সংগীত। আমরা কি দুই বাংলা এক হতে চাচ্ছি? আমরা কি স্বাধীন বাংলাদেশ রাখতে চাই, নাকি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অঙ্গীভূত রাজ্য হতে চাই?’’

আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ চেয়েছি, স্বাধীন বাংলাদেশ থাকতে চাই। এই জাতীয় সংগীত আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশের অস্তিত্বের পরিপন্থি। আমি জোর দাবি জানাচ্ছি, আমাদের নতুন জাতীয় সংগীত তৈরি করা হোক।

বাহাত্তরের সংবিধানকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে আমান আজমি বলেন, ১৯৭০ সালে আওয়ামী লীগ জনগণের কাছ থেকে ম্যান্ডেট নিয়েছিল পাকিস্তানের সংবিধানের অধীনেই পাকিস্তান রাষ্ট্র গড়ে তোলার জন্য, স্বাধীন সংবিধান রচনা করে নয়। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান আমাদের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছে, আমরা যুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছি-আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু তারা জনগণের কাছ থেকে নতুন সংবিধান প্রণয়নের কোনো ম্যান্ডেট নেয়নি। সুতরাং এই সংবিধান আমার দৃষ্টিতে বৈধ নয়। নতুন করে একটা কমিটি করে নতুন সংবিধান তৈরি করা হোক, এটা বাতিল করা হোক।

সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার থাকা অবস্থায় ২০০৯ সালে বরখাস্ত হন আমান আযমী। ২০১৫ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের তথ্যকে কাল্পনিক বলেছিলেন। মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে আবারও একই প্রশ্ন তোলেন। বলেন, শেখ মুজিব সাহেব ৩ লাখ বলতে গিয়ে ৩ মিলিয়ন বলেছেন এবং এটাই ৩০ লাখ হয়ে গেছে। কোনো জরিপ ছাড়া ৩০ লাখ শহীদ বলে বলে তারা মানুষের আবেগকে কাজে লাগিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।’’

সরকারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, আপনারা জরিপ করে বের করেন, অ্যাকচুয়ালি ৩০ লাখ হোক আর ৩ কোটি হোক। আমার জানামতে, এটা ২ লাখ ৮৬ হাজার। তারা ৩ লাখকে ৩০ লাখ বানিয়ে ফেলেছে। এখনো সময় আছে, জাতিকে সত্য ইতিহাস জানতে দিন।

সংবিধান ও জাতীয় সংগীত পরিবর্তন এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে আমান আযমীর এসব বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগামাধ্যমে নতুন করে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।


আরও খবর
আজ আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস

শুক্রবার ০৯ আগস্ট ২০২৪