আজঃ বৃহস্পতিবার ০৪ জুলাই ২০২৪
শিরোনাম

সোমেশ্বরী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধে যৌথ অভিযান

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১১ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১১ জুন ২০২৪ | পত্রিকায় প্রকাশিত
মো. নাজমুল হোসাইন, শেরপুর

Image

শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলার ভিতর দিয়ে বয়ে যাওয়া সোমেশ্বরী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে যৌথ অভিযান পরিচালনা করেছে দুই উপজেলা প্রশাসন।

মঙ্গলবার শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাবের আহমেদ ও ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেলে এর যৌথ উদ্যোগে সোমেশ্বরী নদীতে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় তারা প্রায় ১৬টি বালু উত্তোলন যন্ত্র ধ্বংস করা হয়। এসময় ড্রেজার মালিকরা পালিয়ে যাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্থানীয় প্রভাবশালী বালুদস্যুরা সোমেশ্বরী নদীর তাওয়াকুচা,বালিজুরি, খাড়ামুড়া এলাকায় ১৫/১৬টি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবাধে বালু লুটপাট চালিয়ে আসছে। এতে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা মূল্যের বালু উত্তোলন করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হচ্ছে। এভাবে দিনেরাতে চলছে বালু উত্তোলন। বালুখেকোদের থাবায় একদিকে যেমন পরিবেশের ভারসাম্য হুমকির সম্মুখীন। অন্যদিকে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে বিপুল পরিমাণের রাজস্ব আয় থেকে। 

অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, প্রতিট্রাক বালু বিক্রি করা হচ্ছে ২৫ -৩০ হাজার টাকা। এভাবে প্রতিদিন ২৫/৩০ ট্রাক বালু বিক্রি করা হয়। এসব বালু উত্তোলনের বিষয়ে ইতিপূর্বে  বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করা হলে প্রশাসন নড়েচড়ে বসেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযানও পরিচালনা করা হয়। কিন্তু এর পরেও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ হচ্ছে না। একদিকে চলছে অভিযান অপর দিকে চলছে বালু উত্তোলন। গত ৭ জুন ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্যাট আশরাফুল আলম রাসেল অভিযান পরিচালনা করে অবৈধভাবে উত্তোলনকৃত বালু জব্দ করেন। পরে জব্দকৃত বালু ৬১ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। উক্ত বালু পরিবহনের অযুহাতে বালুদস্যুরা আবারো বালু উত্তোলনে জড়িয়ে পরে। 

এবিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল ও শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাবের আহমেদ বলেন, পরিবেশ রক্ষায় জনস্বার্থে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তারা।


আরও খবর



ড্র করে কোপার কোয়ার্টারে জায়গা করলো ব্রাজিল

প্রকাশিত:বুধবার ০৩ জুলাই ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৩ জুলাই ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক

Image

শেষ বাঁশি বাজার পর বেশ উত্তেজিতই দেখা গেল ব্রাজিল কোচ দোরিভাল জুনিয়রকে। হওয়াটাই স্বাভাবিক। পুরো ম্যাচে সুবিধা করতে না পারা ব্রাজিল তখনই সম্ভাবনা দেখিয়েছিল ম্যাচে ফেরার। আরেকটা আক্রমণ পেতেই পারত তারা। কিন্তু রেফারির বাঁশিতে শেষ হলো ম্যাচ। তিন ম্যাচে দুই ড্র নিয়ে অনেকটা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে কোপা আমেরিকার শেষ আট নিশ্চিত করলো নয়বারের চ্যাম্পিয়নরা। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে অপেক্ষা করছে উরুগুয়ে।

'ডি' গ্রুপের ম্যাচে কলম্বিয়া মাঠে নেমেছিল টানা ২৫ ম্যাচ আর ২ বছর অপরাজিত থাকার রেকর্ড নিয়ে। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বেও এই দলের কাছেই ২-১ গোলের হার সইতে হয়েছিল সেলেসাওদের। তবে এরপর কোচের বদল হয়েছে, ব্রাজিলের খেলার ধারাতেও এসেছে পরিবর্তন। কিন্তু কলম্বিয়াকে হারানো হয়নি আর। প্রথম লিড নিয়েও ১-১ গোলে ড্র করেছে ব্রাজিল। তাতে 'ডি' গ্রুপ থেকে রানারআপ হয়ে শেষ আটে যাচ্ছে দোরিভাল জুনিয়রের শিষ্যরা।

ম্যাচের সব রঙ দেখা গিয়েছিল মূলত প্রথমার্ধেই। ম্যাচের ১২ মিনিটে রাফিনিয়ার দুর্দান্ত ফ্রি-কিক জালে না জড়ালে হয়ত হার দিয়েই ম্যাচটা শেষ করতে হতো সেলেসাওদের। পুরো প্রথমার্ধে চাপের মুখে থেকেও ব্রাজিল পুরো ম্যাচে নিজেদের টিকিয়ে রেখেছে রাফিনিয়ার ওই গোলের কল্যাণেই। দুর্দান্ত ছন্দে থাকা কলম্বিয়া আরও আগেই ব্রাজিলের ওপর চেপে বসেছিল, কিন্তু রাফিনিয়ার গোল যেন কিছুটা তাঁতিয়ে দিয়েছিল হামেস রদ্রিগেজদের।

কলম্বিয়ার দাপুটে দিনে সমতায় প্রথমার্ধ পার ব্রাজিলের জেফারসন লারমা, লুইস দিয়াজরা এরপর খুব একটা সুযোগই দিলেন না ব্রাজিলকে। মাঝমাঠে আধিপত্য বিস্তার করে বারবার আক্রমণে উঠেছেন। ১৮ মিনিটে পেয়ে যায় গোলটাও। কিন্তু অফসাইডে থাকার কারণে শেষ পর্যন্ত বাতিল হয় সেই গোল। যদিও সেটা কলম্বিয়ার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে বহুগুণে। ম্যাচে এরপর শারীরিক ফুটবল উপহার দিয়েছে দুই দলই। কিন্তু সেটাতেও ব্রাজিলকে খুব একটা ম্যাচে ফিরতে দেখা যায়নি।

উল্টো প্রথমার্ধের ইনজুরি সময়ে গোল হজম করে বসে সেলেসাওরা।  ডানপ্রান্তে ওভারল্যাপ করেছিলেন ক্রিস্টাল প্যালেসের এই রাইটব্যাক। হামেস রদ্রিগেজ নিজেই খানিকটা সরে এসে জায়গা করে দেন তাকে। গোলের জন্য পাসটাও বাড়িয়েছিলেন কলম্বিয়ান নাম্বার টেন। সহজ এক পাস থেকে অ্যালিসন বেকারকে পরাস্ত করতে বেগ পেতে হয়নি মুনোজের। ১-১ গোলের সমতা নিয়ে বিরতিতে যায় দুই দল।

দ্বিতীয়ার্ধে এসে বরং কিছুটা ঢিমেতালে ফুটবল খেলেছে দুই দলই। প্রথমার্ধের সেই ঝাঁঝালো ফুটবল দেখা যায়নি কারোর মাঝেই। ব্রাজিলও আক্রমণ ছেড়ে কিছুটা মনোযোগী হয় রক্ষণে। তবুও সুযোগ পেলেই ভয় ধরাচ্ছিলেন হামেস রদ্রিগেজ আর জন কর্দোবা। দুজনে মিলে ব্যস্ত রেখেছিলেন ব্রাজিলের রক্ষণকে। গোলের নিশ্চিত সুযোগ মিসও করেছিল কলম্বিয়া।

৬৯ মিনিটে কর্দোবার শট ঠেকিয়ে দেন ব্রাজিল গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকার। আর ৮৪ মিনিটে রাফায়েল বোরে মিস করেছেন ওপেন নেট। ব্রাজিল বিপরীতে উপহার দিয়েছে ছন্নছাড়া ফুটবল। ৯৫ মিনিটে আন্দ্রেয়াস পেরেইরার শটের আগে দ্বিতীয়ার্ধে একবারও লক্ষ্যে বল রাখতে পারেনি তারা। ১-১ ড্র-টাই তাই শেষ পর্যন্ত সঙ্গী হলো ব্রাজিলের।

কলম্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটা ব্রাজিল খেলতে নেমেছিল ৪ তারকার নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকি নিয়ে। যে তালিকায় ছিলেন দলের সেরা তারকা ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের নামটাও। ম্যাচের ৭ মিনিটের মাথায় শঙ্কাটাই সত্যি হয়ে এলো ব্রাজিল ভক্তদের জন্য। টানা দুই ম্যাচ হলুদ কার্ড হজম করে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ছিটকে গেলেন ব্রাজিলিয়ান নাম্বার সেভেন। কোপার নকআউট পর্বের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তাই রিয়াল মাদ্রিদের এই তারকাকে ছাড়াই পরিকল্পনা সাজাতে হবে কোচ দোরিভাল জুনিয়রকে।


আরও খবর



মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন কনস্টেবল কাওসার: আইজিপি

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১১ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১১ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

রাজধানীর বারিধারার কূটনৈতিক এলাকায় গুলি করে পুলিশ সদস্য হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত আরেক পুলিশ সদস্য কাউসার আলী মানসিকভাবে অসুস্থ বলে মন্তব্য করেছেন আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। মঙ্গলবার (১১ জুন) দুপুরে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে হাইওয়ে পুলিশের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন পুলিশ প্রধান।

তিনি বলেন, সহকর্মীকে গুলি করে হত্যা করা কনস্টেবল কাওসার যে মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন সেটি পুলিশ বিভাগ জানত। চিকিৎসার পর একজন চিকিৎসক কাওসারের রোগমুক্তির সনদ দিলে তাকে দায়িত্বে ফেরানো হয়। এখন এ বিষয়গুলোতে আমাদের আরও সতর্কতার প্রয়োজন কি না, সে বিষয়ে আমরা আলোচনা করছি।

উল্লেখ্য, শনিবার (৮ জুন) রাত পৌনে ১২টার দিকে ঢাকার ফিলিস্তিন দূতাবাসের উত্তর পাশের গার্ডরুমের সামনে দায়িত্ব পালনের সময় কাওসার এসএমজি দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে কনস্টেবল মনিরুল ইসলামকে হত্যা করেন। তার গুলিতে জাপান দূতাবাসের গাড়ি চালক সাজ্জাদ হোসেন শাহরুখও আহত হন।

ওই ঘটনায় নিহত মনিরুলের ভাই কনস্টেবল মাহাবুবুল হক গুলশান থানায় মামলা করেন। সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কাওসারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়, মনিরুলের শরীরে এলোপাতাড়ি গুলি করা হয়। মাথার বাঁ পাশে একাধিক গুলির চিহ্ন ছিল। বাঁ চোখ, বাম হাতের বাহু, ডান হাতের কনুই, গলার নিচ থেকে কোমর পর্যন্ত- বুকে, পেটে, পিঠে বিভিন্ন স্থানে গুলির ক্ষত রয়েছে।

পরিবারের সদস্যরা বলছেন, কাউসার ২০০৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ পুলিশে যোগ দেন। ২০১০ সালের দিকে তার মধ্যে মানসিক অসুস্থতার লক্ষণ দেখা দেয়। তিনি কারো সঙ্গে কথা বলতেন না এবং অল্পেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠতেন। তবে কাওসার মাদকাসক্ত ছিলেন না’ এবং পারিবারিকভাবে তেমন কোনো সমস্যাও ছিল না’ বলে তার স্বজনদের ভাষ্য।

কাওসারের স্ত্রী সাথী বলেন, গত ৪ থেকে ৫ দিন ধরে আমাদের সঙ্গে কম কথা বলছিল। মাঝেমধ্যে যখনই মানসিক রোগে আক্রান্ত হত, এরকম করত। কয়েকবার পাবনায় এক হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসাও করানো হয়েছে। চিকিৎসার কাগজপত্র আমার স্বামীর কাছে আছে।


আরও খবর



দোহারে ৫২ কেজি গাঁজাসহ নারী মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৭ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ০৭ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নাজনীন শিকদার (দোহার-নবাবগঞ্জ)

Image

ঢাকার দোহার উপজেলার দোহার ঘাটা এলাকা হতে ৫২ কেজি গাঁজাসহ সোনিয়া (৩৫) নামে এক নারী মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। গ্রেফতারকৃত সোনিয়া উপজেলার বানাঘাটা এলাকার শেখ শহিদের মেয়ে। এসময় মাদক বহনে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস জব্দ করা হয়।

শুক্রবার (৭ জুন) র‌্যাব-১০ এর পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে র‌্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারে কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী মাদকের বড় চালানসহ ঢাকার দোহার উপজেলার দোহার ঘাটা এলাকায় অবস্থান করছে। পরবর্তীতে রাত আড়াইটার দিকে র‌্যাব-১০ এর উক্ত আভিযানিক দল  ঘটনাস্থলে পৌঁছে র‌্যাবের নারী সদস্যের সহায়তায় মাদক ব্যবসায়ী সোনিয়াকে আটক করা হয়। এসময় তার ভাড়াকৃত বাসার কক্ষ হতে পলিব্যাগে রক্ষিত ১০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব আরো জানায়, নারী মাদক ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায় তার ভাড়াকৃত বাসার কক্ষের সামনে থাকা মাইক্রোবাসে অবৈধ আরও মাদকদ্রব্য রয়েছে। এরপর মাইক্রোবাসে তল্লাশী চালিয়ে মাইক্রোবাসের সিটের পাটাতনের নিচ হতে আরো ৪২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে। যার বাজার মূল্য আনুমানিক পনেরো লক্ষ ষাট হাজার টাকা।

র‌্যাব জানায়, গ্রেফতারকৃত আসামী পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী। কিছুদিন যাবৎ দেশের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকা হতে অবৈধ পন্থায় গাঁজাসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে ঢাকার দোহারসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় মাদক সরবরাহ করে আসছিল। তার বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা রুজু করে দোহার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।


আরও খবর



ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিলো আর্মেনিয়া

প্রকাশিত:শুক্রবার ২১ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২১ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image
এই স্বীকৃতি দেয়ার মাধ্যমে পূর্ব ইউরোপের দেশ আর্মেনিয়া ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার এবং স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে তাদের বৈধ অবস্থানকে সমর্থন জানিয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফেরাতে ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে পূর্ব ইউরোপের দেশ আর্মেনিয়া। শুক্রবার (২১ জুন) দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘোষণা দিয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে আরব নিউজ। সেই সঙ্গে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে চলা ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে দেশটি। প্রতিবেশী দেশ আজারবাইজানের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধে জর্জরিত আর্মেনিয়া সংঘাতের ভয়াবহতা কী তা জানে।

গাজাসহ রাফাহতে সহিংসতার অবসান ঘটাতে ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন দেশের বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে আর্মেনিয়ার এই পদক্ষেপকে দেখা হচ্ছে। গত আট মাসে গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে ইসরায়েল। ইতোমধ্যে ইসরায়েলি হামলায় ৩৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। এ ছাড়া ৮৮ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। এই যুদ্ধ ও ইসরায়েলি অবরোধের কারণে গাজায় এখন ভয়াবহ মানবিক সংকট বিরাজ করছে।

এর আগে, ৩০ মে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করে স্লোভেনিয়া সরকার। গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ এবং সব ইসরায়েলি বন্দির মুক্তিও দাবি করেছেন স্লোভেনীয় প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এটা শান্তির বার্তা। এর আগে, ২৮ মে ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয় ইউরোপীয় দেশ স্পেন, নরওয়ে ও আয়ারল্যান্ড। দেশগুলোর নেতারা জানান, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির জন্য তাদের দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়।

এই স্বীকৃতি দেয়ার মাধ্যমে পূর্ব ইউরোপের দেশ আর্মেনিয়া ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার এবং স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে তাদের বৈধ অবস্থানকে সমর্থন জানিয়েছে। আর্মেনিয়ার এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে, যা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।

ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস আর্মেনিয়ার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং এটি ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য একটি বড় অর্জন বলে অভিহিত করেছেন। ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল-মালিকি আর্মেনিয়ার সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এবং বলেছেন, এই স্বীকৃতি ফিলিস্তিনিদের সংগ্রামে নতুন উদ্দীপনা যোগাবে।

আর্মেনিয়া ও ফিলিস্তিনের মধ্যে এই নতুন কূটনৈতিক সম্পর্ক দুই দেশের জনগণের মধ্যে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। আর্মেনিয়া ফিলিস্তিনের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতাকে সমর্থন জানিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ নজির স্থাপন করেছে, যা ভবিষ্যতে অন্য দেশগুলোর জন্যও একটি উদাহরণ হতে পারে।

এই স্বীকৃতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজরে এসেছে এবং বিভিন্ন দেশে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আর্মেনিয়ার এই সিদ্ধান্ত ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকারের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থন জোরদার করবে এবং মধ্যপ্রাচ্যের জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে একটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

নিউজ ট্যাগ: আর্মেনিয়া

আরও খবর



মেডিকেল শিক্ষার্থীর নেতৃত্বে যৌন ব্যবসা, ৭ বছরে আয় শতকোটি

প্রকাশিত:বুধবার ২৬ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৬ জুন ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠতি বয়সী তরুণীদের টার্গেট করে আকর্ষণীয় বেতনে চাকরি, ট্যালেন্ট হান্ট ও মডেলিংয়ের নামে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। আগ্রহীরা যোগাযোগ করলে কৌশলে তোলা হয় নগ্ন ছবি। এরপর শুরু হয় ব্ল্যাকমেইল। শুধু তাই নয়, ফাঁদে পড়া মেয়েদের ভিডিও কলে নগ্ন হওয়া এবং যৌন সম্পর্কে বাধ্য করা হয়। সেগুলোর ভিডিও ধারণ করে অনলাইনে চালানো হয় যৌন ব্যবসা।

এসব অসামাজিক কাজের নেতৃত্বে রয়েছেন দুই বেসরকারি মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান (২৫) ও তার খালাতো ভাই শেখ জাহিদ বিন সুজন (২৬)।

দীর্ঘদিন ধরে অতি কৌশলে শতশত তরুণীকে ফাঁদে ফেলে আধুনিক যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার করছেন তারা। ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে যেমন টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়, তেমনি তাদের ভিডিও টেলিগ্রাম গ্রুপে শেয়ার করা হয়। সেখানে থাকা থাকা লাখ লাখ দেশি-বিদেশি সাবস্ক্রাইবারদের কাছ থেকেও নেওয়া হয় টাকা। এভাবে চক্রটি গত সাত বছরে হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় শতকোটি টাকা।

সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর চক্রটিকে শনাক্ত করে এর প্রধানসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার।

গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা হলেন- চক্রের প্রধান ও মেডিকেল শিক্ষার্থী মো. মেহেদী হাসান (২৫), তার প্রধান সহযোগী খালাতো ভাই শেখ জাহিদ বিন সুজন (২৬), অন্য সহযোগী মো. জাহিদ হাসান কাঁকন (২৮), তানভীর আহমেদ ওরফে দীপ্ত (২৬), সৈয়দ হাসিবুর রহমান (২৭), শাদাত আল মুইজ (২৯), সুস্মিতা আক্তার ওরফে পপি (২৭) ও নায়না ইসলাম (২৪)।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) বিভিন্ন সময়ে রাজধানী ঢাকা, সাতক্ষীরা, চাঁদপুর ও যশোরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে পর্নোগ্রাফি তৈরি ও তরুণীদের ব্ল্যাকমেইল করায় ব্যবহৃত ১২টি মোবাইল ফোন, ২০টি সিম কার্ড, ১টি ল্যাপটপ এবং আয়ের টাকা লেনদেনে ব্যবহৃত বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম কার্ড ও চেক বই জব্দ করা হয়েছে।

বুধবার (২৬ জুন) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে অবস্থিত সিআইডির সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান, অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া।

তিনি বলেন, একটি চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া নামে ফেসবুক আইডি ও পেইজ খুলে ফ্রিল্যান্সিং কাজ, লোভনীয় চাকরি, মডেল বানানো, মেধা অন্বেষণের নামে অল্প বয়সী তরুণীদের কাছ থেকে কৌশলে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও হাতিয়ে নেয়। এরপর ব্ল‍্যাকমেইলের মাধ্যমে জোরপূর্বক তাদের দেহব্যবসায় নামানোর ভয়ংকর কার্যক্রম চালায়।

চক্রটি মূলত উঠতি বয়সী তরুণীসহ যেসব তরুণীরা পারিবারিক ভাঙনের শিকার এবং আর্থিকভাবে সমস্যা রয়েছে তাদের টার্গেট করে। কাজের সুযোগ দেওয়ার নামে প্রথমে ইন্টারভিউতে ডাকা হয়। এরপর বিজ্ঞাপনে সুযোগ দেওয়ার কথা বলে আপত্তিকর ছবি নেয়। প্রাথমিকভাবে কাজে আগ্রহী তরুণীদের চাহিদা মতো টাকা ও প্রয়োজন মেটায় তারা। এরপর ধীরে ধীরে অসামাজিক কাজ করতে বাধ্য করে। 

এই চক্রের প্রধান মেহেদী হাসান। তিনি টঙ্গীর ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী। তার তার খালাতো ভাই শেখ জাহিদ বিন সুজন মিলে এই চক্রটি গড়ে তোলে। শেখ জাহিদ কল্যাণপুর ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী। তারা চিকিৎসাবিদ্যার আড়ালে অল্প বয়সী তরুণীদের ফাঁদে ফেলে যৌন নির্যাতনের পাশাপাশি অ্যাডাল্ট কন্টেন্ট তৈরি ও টেলিগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ এবং ম্যাসেঞ্জারে অসামাজিক কাজ করতে বাধ্য করে।

এসব অনৈতিক কাজের মাধ্যমে গত ৭ বছরে চক্রটি প্রায় ১০০ কোটি টাকা আয় করেছে দাবি করে অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, এই টাকা দিয়ে তারা যশোর, সাতক্ষীরা, খুলনা এবং ঢাকায় বিপুল পরিমাণ জমি ক্রয় করেছে। নির্মাণ করেছে আলিশান বাড়ি। তাদের আত্মীয়-স্বজনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টেও বিপুল অর্থ জমিয়ে রাখার তথ্য মিলেছে।

প্রতারণার ফাঁদ ও নগ্ন ভিডিও তৈরি সম্পর্কে তিনি বলেন, শুরুতে ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চাকরির বিজ্ঞাপন, মডেল তৈরি ও ট্যালেন্ট হান্ট শীর্ষক প্রতিযোগিতার আয়োজন করত চক্রটি। যারা সাড়া দিত তাদের নিয়ে টেলিগ্রামে গ্রুপ খুলত। তারপর তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে বিদেশি বায়ারদের কাছে পাঠানোর কথা বলে আপত্তিকর ছবি তুলত। সেই সব ছবি ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে নগ্ন হয়ে ভিডিও কল বা সরাসরি অসামাজিক কাজে বাধ্য করত।

মোহাম্মদ আলী জানান, চক্রটির নিয়ন্ত্রণে ১০টি টেলিগ্রাম গ্রুপের সন্ধান মিলেছে। এসব টেলিগ্রাম গ্রুপে দেশি-বিদেশি গ্রাহকের সংখ্যা তিন লাখের বেশি। একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিয়ে গ্রাহকেরা ওই গ্রুপগুলোতে যুক্ত থাকত। চক্রটি ভিডিও কলের সবকিছু গোপনে ধারণ করে রাখত। এরপর মেয়েদের বাধ্য করা হতো যৌন সম্পর্ক স্থাপনে। এভাবেই চক্রটির হাতে আধুনিক যৌন দাসিতে পরিণত হয় শত শত তরুণী।

সিআইডির প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, গোপনে ধারণ করা ভিডিও বিক্রি করে চক্রটি প্রায় ১০০ কোটি টাকা আয় করেছে। অর্থ লেনদেনের জন্য তারা ব্যবহার করে এমএফএস বা মোবাইল ফাইনান্সিয়াল সার্ভিস। এছাড়া ক্রিপ্টো কারেন্সিতেও তাদের হাজার হাজার ডলার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে নিজেদের আড়াল করতে তারা বেনামি কয়েকশ মোবাইল সিম ব্যবহার করছিল। যেগুলোর কোনোটিই প্রকৃত ন্যাশনাল আইডি দিয়ে নিবন্ধন করা নয়। নিম্নআয়ের মানুষের অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে সামান্য অর্থ দিয়ে তাদের নামে তোলা হতো সিম কার্ড। কন্টেন্ট আদান-প্রদান ও সাবস্ক্রিপশনের জন্য ছিল টেলিগ্রাম প্রিমিয়াম অ্যাকাউন্ট এবং বিভিন্ন পেইড ক্লাউড সার্ভিস। অল্প বয়সী ভয়ানক চতুর এই দুই মেডিকেল শিক্ষার্থীর কাছে এখনও জিম্মি কয়েক হাজার নারী। এর মধ্যে আছে টিকটক, ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম সেলিব্রিটিও।

অভিযুক্তদের মোবাইল ফোন এবং ল্যাপটপে গোপনে ধারণ করা প্রায় ১০ লাখ নগ্ন ছবি ও ২০ হাজার অ্যাডাল্ট ভিডিওর সন্ধান পাওয়া গেছে। গ্রেপ্তার হওয়া চক্রের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় পর্নোগ্রাফি আইনে ও সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সিঅইডি।


আরও খবর