আজঃ শনিবার ০৪ মে ২০২৪
শিরোনাম

সর্বত্র উন্নয়নের ছোঁয়া, অভাবনীয় পরিবর্তন

প্রকাশিত:বুধবার ০৯ আগস্ট ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ০৯ আগস্ট ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
ফিরোজ মাহমুদ

Image

উন্নয়নের ছোঁয়ায় বদলে গেছে দখিণের জেলা পিরোজপুর। প্রতিটি এলাকা পেয়েছে উন্নয়নের স্বাদ। শিক্ষা, চিকিৎসা, কর্মসংস্থান, আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্য- সব কিছুতেই এসেছে আমূল পরিবর্তন। কমেছে হয়রানি, জনভোগান্তি ও দুর্নীতি। ৫ বছর আগেও অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে ছিল জেলাটি। এখন সেটি উন্নয়নের রোল মডেল। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম পিরোজপুর-১ (পিরোজপুর-নাজিরপুর-নেছারাবাদ) আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তার ছোঁয়ায় বদলে গেছে এ জেলার চিত্র। এমনটাই দাবি করছে স্থানীয়রা।

উন্নয়নের চিত্র নিয়ে সরেজমিন ঘুরে প্রতিবেদন তৈরি করেছেন আমাদের সিনিয়র রিপোর্টার ফিরোজ মাহমুদ-

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন শ ম রেজাউল করিম। আর প্রথমবার এমপি হয়েই কেবিনেট মন্ত্রী। এটা ছিলো পিরোজপুরবাসীর জন্য বড় চমক।

মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার পর থেকে অবহেলিত জনপদে উন্নয়নের মাধ্যমে তিনি দেখিয়ে যাচ্ছেন একের পর এক চমক। যার মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পিরোজপুর যা পিরোজপুরের মানুষ কখনো স্বপ্নেও ভাবেনি।

তাছাড়া সরকারের গ্রাম হবে শহর প্রকল্প এখনো চালু না হলেও বিলাঞ্চল খ্যাত আমার এলাকার মানুষ ইতোমধ্যে শহরের অনেক সুবিধা ভোগ করছেন। একজন ভিন্ন মতাদর্শের মানুষ হয়েও এ কথা বলতে আমার দ্বিধা নেই।

কথাগুলো বলছিলেন স্থানীয় বিএনপি নেতা পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার ৯ নং কলারদোয়ানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাসনাত ডালিম।

আলাপকালে তিনি গত সাড়ে চার বছরে তার ইউনিয়নের উল্লেখযোগ্য নিম্নোক্ত উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরেন-কার্পেটিং সড়ক-২০ কিলোমিটার, এইচবিবি রাস্তা ইট সলিং-৩ কিলোমিটার, ইট সলিং রাস্তা ৫ কিলোমিটার, কাঁচা রাস্তা মেরামত ৩০ কিলোমিটার। ৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বহুতল ভবন। ত্রাণের ব্রিজ ৪টি। আয়রণ ব্রিজ ১০০টি। ১৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন। ৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক। ইউনিয়ন পরিষদের মডেল ভবন টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন দেউলবাড়ী দোবড়া। ওই ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাষ্টার ওয়ালি উল্লাহ বলেন, পিরোজপুর-১ আসনের তিনটি উপজেলায় নিরবিচ্ছিন্ন বহুমাত্রিক উন্নয়নে বদলে গেছে অবহেলিত এ জনপদ। এক সময় পিছিয়ে থাকা এই জনপদের যোগাযোগ ব্যবস্থায় এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। সরকারের পরিকল্পিত উন্নয়নের ফলে কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিল্প ও অবকাঠামো খাতে অভূতপূর্ব অগ্রগতি হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, নাজিরপুর উপজেলার দেউলবাড়ি দোবড়া ইউনিয়নের ৮০ ভাগ এলাকায় বছরের ১২ মাসই যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম ছিলো নৌকা। শ ম রেজাউল করিম মহোদয় নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রী হওয়ার পর বিগত সাড়ে চার বছরে পাল্টে গেছে সে চিত্র। ওই সব এলাকার অধিকাংশ জায়গায় এখন রিকসা, ভ্যান বা মোটর সাইকেল যোগে চলাচল করছে মানুষ। আর বিদ্যুতের কথা যারা কখনো স্বপ্নেও ভাবেনি, তাদের ঘরও এখন বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত।

নাজিরপুর উপজেলার মনোহরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের দূরদর্শী নেতৃত্ব আর স্থানীয় সংসদ সদস্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রতিটি ক্ষেত্রে জেলাটি অর্জন করেছে ঈর্ষনীয় সাফল্য। সরকারের উন্নয়নের সুফল প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। গ্রামীণ জীবন ক্রমশ বদলে যাচ্ছে। গ্রামেই এখন মিলছে শহরের সুবিধা। অজপাড়াগাঁও শব্দটি আর নেই, পরিবর্তনের ছোঁয়ায় বদলে গেছে সবকিছুই। অবহেলিত এ জনপদের উন্নয়নে নজর দেয়ার জন্য বর্তমান শেখ হাসিনার সরকার ও স্থানীয় সংসদ সদস্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমকে সাধুবাদ জানান তিনি।

নেছারাবাদ উপজেলার বিন্ন নেছারিয়া দাখিল মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইদ্রিস বাহাদুর বলেন, নেছারাবাদ উপজেলার সবচেয়ে অবহেলিত ইউনিয়ন বলদিয়া। আমি ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা। এ ইউনিয়নে পাকা রাস্তা তো দূরের কথা, ইট সলিংয়ের রাস্তাও ছিলো না বললেই চলে। শ ম রেজাউল করিম মহোদয় এমপি নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রী হওয়ার পর তার ছোঁয়ায় বদলে গেছে উন্নয়ন বঞ্চিত এ ইউনিয়নের চিত্র। প্রায় ১০ কিলোমিটার কাপেটিং রাস্তা রাস্তার কাজ চলমান। যা প্রায় ৬০ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। ২ কিলোমিটার হেরিং বন্ড রাস্তার কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। ১০ থেকে ১২ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একাডেমিক ভবন, বহুতল ভবন, সাইক্লোন শেল্টারের কাজ চলমান। যার মধ্যে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চারতলা ভবনের কাজ শেষের পথে।

শুধু তিনটি ইউনিয়ন নয়, এ আসনের তিন উপজেলা, দুইটি পৌরসভা ও ২৬টি ইউনিয়নের সব অঞ্চলেই একইভাবে লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া। এখনো চলছে উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ।

সরেজমিন ঘুরে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে এবং সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদে উন্নয়ন বঞ্চিত পিরোজপুরের অভাবনীয় পরিবর্তনে আনন্দে উচ্ছ্বসিত পিরোজপুরবাসী।

বর্তমান সরকার দুঃখ-বেদনার অবসান ঘটিয়ে একের এক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে চলছে। এত উন্নয়ন স্বাধীনতার পরবর্তীতে আর কখনও দেখা যায়নি। উন্নয়নের সুবিধাভোগীদের কাছে এখন শেখ হাসিনার প্রশংসা ছাড়া আর কোন কথা নেই।

একনেকে এ অঞ্চলের কোন প্রকল্প অনুমোদন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন মহল থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মন্ত্রী শ ম রেজাউলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা ও অভিনন্দন জানানো হয়। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলের উন্নয়ন বঞ্চনা ও বিপর্যস্ত অবস্থায় থাকা পিরোজপুরের বর্তমান পরিস্থিতি অবলোকনে বিস্ময়কর পরিবর্তন দৃশ্যমান।

যোগাযোগ ব্যবস্থায় প্রকৃতিক কারণেই বিচ্ছিন্ন জেলার বিভিন্ন উপজেলা। বিশেষ করে পিরোজপুর জেলা সদর থেকে নেছারাবাদ, ভাণ্ডারিয়া, কাউখালী ও মঠবাড়িয়া বিশাল নদী দ্বারা বিভাজিত। জেলা শহরে আসা-যাওয়ায় ভোগান্তির শেষ ছিল না।

২০২২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর পিরোজপুরের বেকুটিয়া কচা নদীর ওপর ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সেতু চালু হওয়ায় সেই ভোগান্তির সমাপ্তি ঘটেছে।

পিরোজপুর সদর উপজেলার সাথে নেছারাবাদ উপজেলার সংযোগের জন্য কলাখালীতে কালীগঙ্গা নদীর উপরে বিশাল সেতুর নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে।

নেছারাবাদ উপজেলার দীর্ঘদিনের বিভাজিত অবস্থা, নেছারাবাদ-ইন্দেরহাট এবং নাজিরপুর উপজেলার সঙ্গে কালীগঙ্গা ও বেলুয়া নদী দ্বারা বিভাজিত। নেছারাবাদ উপজেলার দুই প্রান্ত সংযুক্ত করা এবং নাজিরপুর উপজেলার সঙ্গে যুক্ত করার জন্য নেয়া হয়েছে মেগা প্রকল্প। ইতোমধ্যে প্রাথমিক সমীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। এই সেতু ও সড়ক নির্মাণের ফলে নেছারাবাদ উপজেলার দুইপ্রাপ্ত এক হয়ে নাজিরপুর ও ঢাকা মহাসড়কে সংযুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে অবসান হতে যাচ্ছে প্রায় ১০০ বছরের যোগাযোগ ব্যবস্থার বিপন্নতা।

নাজিরপুর উপজেলার চারটি ইউনিয়ন ও নেছারাবাদ উপজেলার চারটি ইউনিয়ন এতই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল যে, হাঁটা বা যন্ত্র চালিত নৌকা চলাচলের উপযোগী ছিল না। ঝুঁকিপূর্ণ ছোট নৌকা বা কর্দমাক্ত রাস্তা দিয়ে আসা-যাওয়া করতে হতো এলাকাবাসীদের। সে সকল এলাকায় এখন কার্পেটিং রাস্তাসহ কালভার্ট, ব্রিজ, লোহার পুল নির্মাণের মধ্য দিয়ে অভাবনীয় উন্নতি হচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থার।

জেলার বিভিন্ন গ্রাম অঞ্চলে বাঁশ ও কাঠের পুল, পুরাতন জরাজীর্ণ লোহার পুল, ছোট্ট পরিসরের পাকা কালভার্ট পরিবর্তন করে সময় উপযোগী ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণের মধ্য দিয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উপজেলা সদর ও জেলার সঙ্গে যোগাযোগের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এছাড়া শ্রীরামকাঠি-ভরতকাঠি এবং নেছারাবাদ ও ইন্দেরহাটে স্থাপন করা হয়েছে আধুনিক ফেরি পারাপার। অতীতে যা কল্পনাও করতে পারেনি এলাকার জনসাধারণ।

বিদ্যুত ব্যবস্থার ভঙ্গুর অবস্থা থেকে উন্নয়ন আর এক বিস্ময়কর পরিবর্তন এনেছে। বিদ্যুত বণ্টনের উপকেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলমান। এখন শতভাগ বিদ্যুতায়িত হওয়ায় হাসি ফুটেছে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের মুখে। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে ধনী-দরিদ্র সকলেই এখন বিদ্যুতের সুবিধা ভোগ করছে নানাভাবে। আর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় পিরোজপুর নামে পিরোজপুরে হয়েছে একটি সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়। স্বপ্ন দেখা তো দূরের কথা, যা কখনো কল্পনাও করেনি।

এর বাইরে পিরোজপুরে পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট, টেক্সটাইল টেকনোলজি ইন্সটিটিউট, সরকারী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বরাদ্দ হয়েছে। জরাজীর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়নে একের পর এক ভবন, দেয়াল ও অপরাপর অবকাঠামোগত উন্নয়ন হচ্ছে।

পিরোজপুর সরকারী সোহরাওয়ার্দী কলেজ, সরকারী গার্লস কলেজ, টাউন স্কুলসহ ২০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে। এছাড়া নেছারাবাদ উপজেলায় ৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, নাজিরপুর উপজেলার ৩০ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে। প্রক্রিয়াধীন কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট, একইভাবে অন্যান্য উপজেলায়ও অভাবনীয়ভাবে চলছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ।

চিকিৎসা ব্যবস্থাকে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সংস্কার করে কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। পিরোজপুর সদর হাসপাতাল আধুনিক হাসপাতালে রূপান্তরিত করার জন্য বিপুল অর্থে বহুতল ভবন নির্মাণ শেষের পথে। কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। নাজিরপুর-নেছারাবাদে হাসপাতালের আধুনিক ভবন নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন। প্রায় অধিকাংশ হাসপাতালের আধুনিক এ্যাম্বুলেন্সসহ চিকিৎসার উন্নত সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হয়েছে।

বিচার বিভাগীয় আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে ৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বহুতল বিশিষ্ট চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভবনের নির্মাণ কাজ এগিয়ে নেয়ার মাধ্যমে। আবাসিক ব্যবস্থার দুরবস্থা দূর করতে ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সরকারী আবাসন প্রকল্প। শিল্প ব্যবস্থায় পিছিয়ে পড়া পিরোজপুরে বরাদ্দ করা হয়েছে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল। যেখানে দেশী ও বিদেশী শতাধিক বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হবে। বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধীসহ বিভিন্ন প্রকার ভাতা প্রদানকে শতভাগে উন্নীত করা হয়েছে। হয়রানি এড়িয়ে সেবা সহজীকরণের লক্ষ্যে পিরোজপুরে ইতোমধ্যে পাসপোর্ট অফিসের নিজস্ব ভবন স্থাপন করা হয়েছে। প্রকৃতিক কারণেই বিশুদ্ধ পানীয় জলের সঙ্কট ছিল দীর্ঘদিনের।

বর্তমান সরকার আমলে পিরোজপুর-নেছারাবাদ-নাজিরপুরে গভীর নলকূপ, রেইন হার্ডভেস্টার ও অন্যান্য আধুনিক পদ্ধতির পানি সরবরাহ প্রকল্প গ্রহণ করায় এখন পানীয় জলের অভাব কমে আসছে। সকল উপজেলা সদরে এবং জেলা সদরে ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র (মডেল মসজিদ) নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে। একই সঙ্গে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানেও ব্যাপক কাজ এগিয়ে চলছে। সরকারী বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে গুণগতমানের উন্নয়ন হচ্ছে। আধুনিক পিরোজপুর বিনির্মাণের ব্যাপক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নেয়া হয়েছে একের পর এক প্রকল্প। বর্তমান পিরোজপুরের প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় গেলেই উন্নয়নের চিত্র দেখে হতবাক হতে হয়।

পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই একের পর এক উন্নয়ন প্রকল্প পিরোজপুরে আনার জন্য কাজ করছেন। ফলশ্রুতিতে পিরোজপুরের সামগ্রিক উন্নয়ন এমন মাত্রায় পৌঁছেছে যে, স্বাধীনতা পরবর্তীতে এত উন্নয়ন পিরোজপুরবাসী কখনও দেখেনি।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছেন বলেই দেশে আজ ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তিনি তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে উন্নীত করেছেন।

আমার নির্বাচনী এলাকার তিনটি উপজেলায় তৃণমূল পর্যায়ে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে আবারও নৌকায় ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনতে হবে।

আর উন্নয়নের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা উচিত, তাহলেই আমরা এগিয়ে যাবো। আমরা এগিয়ে গেলে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে।


আরও খবর



হিটস্ট্রোকে মারা যাচ্ছে খামারের শত শত মুরগি

প্রকাশিত:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | হালনাগাদ:শনিবার ২০ এপ্রিল ২০24 | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

বছর ১৭ আগে মুরগির খামার শুরুর পর ভালোই চলছিল বরিশালের আমানতগঞ্জের সেলিনা হোসেনের। কিন্তু ব্যবসায় বিপত্তি শুরু হয় করোনা মহামারীকালে। এরপর কিছুটা ঘুরে দাঁড়ান। সম্প্রতি বয়ে চলা তাপপ্রবাহ ও তীব্র লোডশেডিংয়ের কারণে হিটস্ট্রোকে মারা গেছে তার প্রায় ৭০০ মুরগি। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন স্বামীহারা এ খামারি।

সেলিনা হোসেন বলেন, পরিবারের একমাত্র উপার্জনের উৎস আমার এ মুরগির খামার। করোনার সময় একবার বড় লোকসান হয়। অনেক মুরগি মারা গিয়েছিল তখন। অনেক কষ্টে আবার ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছি। ৮০০ ব্রয়লার মুরগি তুলেছিলাম। কিন্তু এবার সব শেষ। বিদ্যুৎ যায় আসে। যে গরম পড়ছে তাতে ফ্যান চালিয়ে রাখতে হয়। টিনে পানি দিতে হয়। কিন্তু লোডশেডিংয়ের কারণে আরো বেশি স্ট্রোক বেড়েছে। ওষুধ খাইয়েছি, তবু মুরগিগুলোকে রক্ষা করা যায়নি। আবার মুরগি ওঠানোর ক্ষমতা আমার নেই।

সেলিনার মতো অন্য খামারিদের একই হাল। অতিরিক্ত গরম ও লোডশেডিংয়ের কারণে গ্রামাঞ্চলের প্রায় প্রতিটি খামারেই দেখা দিয়েছে মড়ক। প্রায় প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে শত শত মুরগি। অনেক খামারি লোকসান গুনে ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন। এদিকে হিটস্ট্রোকে মুরগি মারা গেলেও প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে তাদের কাছে কেউ যাচ্ছে না বলে অভিযোগ খামারিদের।

খামারসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, করোনার পর থেকে পোলট্রি খাতে দুর্ভোগ যেন কাটছেই না। এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে পোলট্রিখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় খামার গুটিয়ে নেন বেসরকারি ও ব্যক্তিগত পর্যায়ের প্রায় ৪০ শতাংশ খামারি। এছাড়া খাদ্য ও মুরগির বাচ্চার অতিরিক্ত দামের পাশাপাশি এখন পোল্ট্রি খাতের অন্যতম নীরব ঘাতক হয়ে উঠছে জলবায়ু পরিবর্তন। গত কয়েক দিন দেশের বিভিন্ন স্থানে তীব্র তাপপ্রবাহে খামারগুলোয় ব্যাপক হারে ব্রয়লার মুরগি হিটস্ট্রোকে মারা যাচ্ছে। কমে যাচ্ছে ডিম উৎপাদনও। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য খামারিরা বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল থাকলেও তীব্র লোডশেডিংয়ের কারণে সেটিও ব্যাহত হচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, পাঁচদিন ধরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের গণ্ডি ছাড়াচ্ছে, আবহাওয়ার পরিভাষায় যাকে বলা হয় তীব্র তাপপ্রবাহ। গতকালও চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া বাগেরহাট ও কুষ্টিয়ায়ও তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে। এ তাপপ্রবাহ আরো বেড়ে সামনে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে রূপ নিতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। এতে ভবিষ্যৎ নিয়ে আরো বেশি শঙ্কায় রয়েছেন পোলট্রি খামারিরা।

বরিশালে গত কয়েক দিনে ৬১৭টি খামারে প্রায় পাঁচ হাজার ব্রয়লার মুরগি মারা গেছে বলে জানিয়েছেন জেলার পোলট্রি মুরগির খামার মালিকদের সংগঠনের নেতা কালাম শিকদার। তিনি জানান, জেলায় ১ হাজার ৬০৮টি মুরগির খামার রয়েছে। এর মধ্যে ব্রয়লার মুরগির ৬১৭টি, লেয়ার ৫৩৫টি ও সোনালি মুরগির ৪৫৬টি। মাত্রাতিরিক্ত গরমের কারণে পোলট্রি খামারে দেখা দিয়েছে হিটস্ট্রোক। তাপপ্রবাহ থেকে মুরগি বাঁচাতে অনেক খামারে বৈদ্যুতিক পাখা সংযুক্ত করলেও ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে সেটিও কাজে আসছে না। ফলে পোলট্রি খামারে বড় ধরনের লোকসানের আশঙ্কা করছেন খামারিরা।

তীব্র গরমে খামারে মড়ক লাগলেও কোনো তথ্য দিতে পারেনি জেলার প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশাল বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. আবু সুফিয়ান বলেন, গরমের সময় খামারে বারবার পানি স্প্রে ও টিনের চালে ছালার চট ভিজিয়ে রাখার পরামর্শসহ একাধিক গাইডলাইন দেয়া হয়েছে বিভাগের প্রত্যেক মাঠ কর্মকর্তাকে। তারা খামারিদের এ বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন। তবে গরমে মুরগির মৃত্যুর বিষয়টি আমাদের অবহিত করা হয়নি এখনো।

চট্টগ্রামের খামারিরা জানিয়েছেন, ওষুধ ও পানি স্প্রের মাধ্যমে হিটস্ট্রোক নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হলেও প্রতিনিয়ত ব্রয়লার মুরগি মারা যাচ্ছে। আবার লেয়ার মুরগির ডিম উৎপাদন কমেছে প্রায় ১৫ শতাংশ।

বৃহত্তর চট্টগ্রাম পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লিটনের খামারে দেড় কেজির বেশি মুরগি ছিল প্রায় চার হাজার। কিন্তু গত দুদিনের গরমে প্রায় এক হাজার মুরগি মারা গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ছোট মুরগি মারা যায় কম। কিন্তু এক কেজি ওজনের বেশি মুরগি প্রচুর মারা যাচ্ছে। আমার বড় মুরগির খামারে গত দুদিনে ২৫ শতাংশই মারা গেছে। আশপাশের সবার ক্ষেত্রেই এমন হচ্ছে। যত ভালো খামার ব্যবস্থাপনাই থাকুক এ গরমে মুরগি মারা যাবেই। তবে এ বছর মৃত্যুটা বেশি।

একই কথা জানান রাউজান উপজেলার অর্ণব পোলট্রি ফার্মের স্বাত্বাধিকারী দেবাশীষ ভট্টাচার্য্য। তিনি বলেন, গত কয়েক দিনের তীব্র তাপপ্রবাহে আমার খামারের বেশকিছু মুরগি মারা গেছে। আরো কিছু মুরগির অবস্থা সংকটাপন্ন। লেয়ার মুরগির ডিম উৎপাদন কমে গেছে। স্যালইন, ভিটামিন সি খাওয়ানোর পাশাপাশি ঠাণ্ডা পানি দিয়ে স্প্রে করে খামারের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। অন্যদিকে গরমের কারণে ভূগর্ভস্থ পানিও তোলা যাচ্ছে না। এ কারণে পানিরও সংকট আছে। এভাবে গরম পড়তে থাকলে খামার রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হবে না। কম দামে তখন বিক্রি করে দিতে হতে পারে।

চট্টগ্রাম প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় প্রায় চার হাজার ব্রয়লার ও পাঁচ শতাধিক লেয়ার মুরগির খামার আছে। চট্টগ্রাম আঞ্চলিক মুরগি খামারের উপপরিচালক মো. আলমগীর বলেন, অনেক বেসরকারি পর্যায়ের খামারে গরমের কারণে মুরগি মারা যাওয়ার খবর শুনেছি। তবে সরকারি খামারগুলোয় এখন কোনো মুরগি মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। খামারগুলোয় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে আমরা বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিচ্ছি।

যশোরে গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা দেশের সর্বোচ্চ। আগের দিন ছিল ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত কয়েক দিনের তীব্র গরমে ১০ হাজারের মতো মুরগি মারা গেছে। শহরের নাজির শংকরপুর এলাকার খামারি সানজিদা বেগম বলেন, প্রচণ্ড গরমে মুরগি মারা যাচ্ছে। আমার খামারে ৭০০ মুরগি ছিল। এখন আছে ২৫০টি।

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, যশোরে মুরগি খামার রয়েছে ১ হাজার ৫৩৪টি। সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তপু কুমার জানান, তার অধীনে ২৪৯টি ব্রয়লার ও ২৫টি লেয়ার মুরগির খামার রয়েছে। কয়েক দিন ধরে যশোরে প্রচণ্ড গরম পড়েছে। এতে মুরগির হিটস্ট্রোক বেড়ে গেছে। খাওয়া কমে গেছে। তবে কী পরিমাণ মুরগি মারা গেছে তার হিসাব নেই।

তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকায় রংপুরের খামারিরাও দুশ্চিন্তায় আছেন। লোডশেডিং তাদের আতঙ্ক আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। জেলায় লেয়ার মুরগির খামার আছে দেড় শতাধিক এবং ব্রয়লার চার শতাধিক।

রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. মোস্তাফিজার রহমান বলেন, গরমে সাধারণত ৩৪ ডিগ্রি তাপমাত্রাকে সহনীয় ধরা হয়। এর ওপরে গেলে অস্বাভাবিক তাপমাত্রা বলা হয়, যা সব প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর। হিটস্ট্রোকসহ নানা অসুখে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

এ মুহূর্তে চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকার আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আর তাতেই কপালে চিন্তার ভাঁজ আরো বেড়েছে খামারিদের। এ গরম চলতে থাকলে মুরগির মৃত্যু আরো যে কত বাড়বে তা নিয়েই আতঙ্কিত তারা।

আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা বেশি ছিল। কিছু স্থানে হালকা বৃষ্টি হলেও তাপমাত্রা কমেনি। আগামী দুদিন তাপমাত্রা আরো বাড়তে পারে। খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলোয় বেশি গরম পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বব্যাপী আবহাওয়া বিরূপ আচরণ করছে। এর সঙ্গে নগরায়ন ও গাছপালা কেটে ফেলার কারণে খারাপ হচ্ছে বাংলাদেশের আবহাওয়া।

পোলট্রি বিজ্ঞানীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মুরগির বাচ্চার তাপমাত্রা সহ্যক্ষমতা বেশি থাকে। তবে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে তা কমে আসে। এ কারণে বড় আকারের মুরগি হিটস্ট্রোকে বেশি মারা যায়।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পোলট্রি সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শওকত আলী বলেন, অতিরিক্ত গরমে তুলনামূলক ব্রয়লার মুরগি বেশি মারা যায়। কারণ তাদের সহ্যক্ষমতা কম। গরমে ব্রয়লার মুরগি খাবার কমিয়ে দেয়। সে কারণে তার খাবারে এনার্জির পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে। টিনের চালে পানি বা ভেজা বস্তা দিতে হবে যেন শেড ঠাণ্ডা থাকে।


আরও খবর



সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বিষয়ে অনুসন্ধান করবে দুদক

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ওঠায় দুর্নীতি অনুসন্ধান করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ ঘটনায় কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এর আগে বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) চিঠি দেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ ৩৪ বছর ৭ মাস চাকরি করে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ সালে অবসরে যান। অবসর গ্রহণের পর দেখা যায়, বেনজীর আহমেদের স্ত্রী ও কন্যাদের নামে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি রয়েছে, যা তার আয়ের তুলনায় অসম।

গত ৩১ মার্চ দৈনিক কালের কণ্ঠে ঢাকায় বেনজীরের জন্ম আলাদীনের চেরাগ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শকের স্ত্রী জিশান মির্জা এবং দুই মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর ও তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন।

বেনজীর আহমেদ তার পদের অপব্যবহার করে তার আয়ের তুলনায় প্রতিবেদনে উল্লিখিত সম্পত্তিগুলো অধিগ্রহণ করেছেন বলে বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে বলে চিঠিতে জানান ব্যারিস্টার সুমন। এমন পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী, বড় মেয়ে এবং ছোট মেয়ের বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ সংগ্রহের জন্য তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুদককে অনুরোধ করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি দৈনিক কালের কণ্ঠে ঢাকায় বেনজীরের জন্ম আলাদীনের চেরাগ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদের বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের খোঁজ মিলেছে। এরপর থেকেই বেশ আলোচনায় পুলিশের সাবেক এই আইজিপি।

জাতীয় ওই দৈনিক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যেখানে বেনজীর আহমেদের নানা অর্থ-সম্পদের বিবরণ তুলে ধরা হয়। বেনজীরের বিপুল সম্পদের মধ্যে রয়েছে, গোপালগঞ্জের সাহাপুর ইউনিয়নে সাভানা ইকো রিসোর্ট নামের এক অভিজাত ও দৃষ্টিনন্দন পর্যটনকেন্দ্র। এছাড়াও তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ছয়টি কোম্পানির খোঁজ পাওয়া গেছে। পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকার বেশি হতে পারে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঢাকার অভিজাত এলাকাগুলোতে বেনজীর আহমেদের দামি ফ্ল্যাট, বাড়ি আর ঢাকার পাশে বিঘার পর বিঘা জমি রয়েছে। দুই মেয়ের নামে বেস্ট হোল্ডিংস ও পাঁচতারা হোটেল লা মেরিডিয়ানের রয়েছে দুই লাখ শেয়ার। পূর্বাচলে রয়েছে ৪০ কাঠার সুবিশাল জায়গাজুড়ে ডুপ্লেক্স বাড়ি, যার আনুমানিক মূল্য কমপক্ষে ৪৫ কোটি টাকা। একই এলাকায় আছে ২২ কোটি টাকা মূল্যের আরও ১০ বিঘা জমি। অথচ, গত ৩৪ বছর সাত মাসের দীর্ঘ চাকরিজীবনে বেনজীর আহমেদের বেতন-ভাতা বাবদ মোট আয় এক কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার ২০০ টাকার মতো হওয়ার কথা।


আরও খবর



ব্রাজিলকে সরাসরি তৈরি পোশাক নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশিত:সোমবার ০৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

Image

বাংলাদেশ থেকে সরাসরি তৈরি পোশাক নিতে (আমদানি) ব্রাজিলকে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (এপ্রিল ৮) সকালে গণভবনে সফররত ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েরার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতকালে তিনি এ আহ্বান জানান। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে বাংলাদেশ সীমিত আকারে তৈরি পোশাক রফতানি করছে। ব্রাজিল যদি বাংলাদেশ থেকে সরাসরি তৈরি পোশাক আমদানি করে সেটা তাদের জন্য আরও সাশ্রয়ী হবে। দুই দেশের মধ্যকার বিদ্যমান সম্পর্কে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধির অনেক সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি পণ্য বিশেষ করে পাটজাত ও চামড়াজাত পণ্য আমদানি করতে ব্রাজিলের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

আসন্ন জি টুয়েন্টি সম্মেলনে অংশ নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা।

ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাউরো ভিয়েরা দেশটির প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণপত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে হস্তান্তর করেন। প্রধানমন্ত্রী আমন্ত্রণ গ্রহণ করে ব্রাজিল সফরে সম্মত হন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ব্রাজিল তার আর্থ-সমাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে তারা বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এবং ব্রাজিল উভয় দেশই ক্ষুধা-দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছে এবং আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফরমে বিভিন্ন ইস্যুতে একই পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

বৈঠকে প্যালেস্টাইন ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকার প্রশংসা করেন ব্রাজিলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী যে নৃশংসতা চালাচ্ছে সেটা গণহত্যা।

বাংলাদেশের ফুটবলের উন্নয়নে ব্রাজিলের সহায়তা চান প্রধানমন্ত্রী। সাক্ষাতকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম সংবলিত ব্রাজিলের একটি জার্সি প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

সাক্ষাতকালে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।

আরও খবর



কলেরার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে বৈশ্বিক কর্মসূচি ঘোষণা ডব্লিউএইচও’র

প্রকাশিত:শনিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কলেরার প্রাদুর্ভাব বাড়তে থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সেই সঙ্গে পানিবাহিত এই প্রাণঘাতী রোগটি ঠেকাতে বৈশ্বিক কর্মসূচিও ঘোষণা করেছে সংস্থাটি। গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে বড় আকারের টেস্ট কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।

ডব্লিউএইচওর হিসেব অনুযায়ী, ২০২২ সালে বিশ্বজুড়ে কলেরায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ৪ লাখ ৭৩ হাজার জন। ২০২৩ সালে সেই সংখ্যা বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ তথা ৭ লাখ। চলতি ২০২৪ সালে এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধির আলামত পাওয়া যাচ্ছে।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গত দুতিন বছর ধরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আমরা কলেরার অনাকাঙিক্ষত ও উদ্বেগজনক প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করছি। এই প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে কলেরার বৈশ্বিক টেস্ট কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য হলো কলেরা নির্ভুলভাবে শনাক্ত করা এবং নিয়মিত নজরদারি এবং কলেরা টেস্ট বিষয়ক সক্ষমতা বাড়ানো।

কর্মসূচি অনুযায়ী, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বিভিন্ন দেশে কলেরা টেস্টের সরঞ্জাম পৌঁছে যাবে। প্রাথমিকভাবে মালাউই, ইথিওপিয়া, সোমালিয়া, সিরিয়া, জাম্বিয়াসহ মোট ১৪টি দেশে পাঠানো হবে সরঞ্জাম।

এ কর্মসূচিতে অংশীদার হিসেবে আন্তর্জাতিক টিকা সহায়তা সংস্থা গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন (গ্যাভি), জাতিসংঘের শিশু নিরাপত্তা ও অধিকার বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ এবং কলেরা প্রতিরোধ সংক্রান্ত বৈশ্বিক সংস্থা গ্লোবাল টাস্কফোর্স অন কলেরা কন্ট্রোল রয়েছে বলেও জানায় ডব্লিউএইচও।

গ্যাভির কর্মসূচি বিভাগের প্রধান নির্বাহী অরেলিয়া এনগুয়েন এক বিবৃতিতে বলেন, কলেরা প্রাদুর্ভাবের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে যে তৎপরতা চলছে, এ কর্মসূচি তাকে আরও একধাপ এগিয়ে নেবে বলে আমাদের বিশ্বাস।


আরও খবর



হামলার সময় ইসরায়েলকে রক্ষায় সহযোগিতা করেছে সৌদি!

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

ইরানের ছোড়া ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ইসরায়েলকে সহযোগিতা করেছে সৌদি আরব। সৌদিতে ক্ষমতাসীন রাজপরিবারের ওয়েবসাইটের বরাত দিয়ে সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম কেএএন নিউজ।

সৌদি রাজপরিবারের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ইরানের ছোড়া ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করতে সৌদি আরব নিজেদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহারের পাশাপাশি ইসরায়েল,যুক্তরাষ্ট্র, জর্ডান, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের সমন্বয়ে গঠিত সামরিক জোটকে সহযোগিতা করেছে।

এই সহযোগিতার কারণ হিসেবে ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, সৌদি আরব মনে করে, গাজায় সংঘাত শুরুর পর থেকে ইরান এই সংঘাত থেকে ফায়দা তোলার পরিকল্পনা করছে এবং সম্প্রতি যে হামলা তেহরান পরিচালিত করেছে, তা সেই পরিকল্পনার অংশ। সৌদি আরব কখনও সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে না। সেই সঙ্গে যেসব দেশ যদি সন্ত্রাসবাদকে মদত দেয়, তাদেরকেও সমর্থন করে না।

গত ১ এপ্রিল সিরিয়ায় ইরানি দূতাবাসে বোমা হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। এতে নিহত হন ১৩ জন। নিহতদের মধ্যে ইরানের সামরিক বাহিনীর এলিট শাখা ইসলামিক রেভোল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) দুই জ্যেষ্ঠ কমান্ডার মোহাম্মদ রেজা জাহেদী এবং মোহাম্মদ হাদি হাজি রহিমিও ছিলেন।

হামলার দায় এখন পর্যন্ত ইসরায়েল স্বীকার করেনি। তবে সাক্ষ্য-প্রমাণ যা পাওয়া গেছে,তাতে হামলাটি যে আইডিএফ করেছিল তা পরিষ্কার। গত সপ্তাহে ইরানের সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছিলেন এই হামলার জন্য ইসরায়েলকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।

তারপর শনিবার রাত ও রোববার ইসরাইলকে লক্ষ্য করে ৩ শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরানের সামরিক বাহিনী। হামলায় হতাহতের কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। বেশিরভাগ ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার আগেই ধ্বংস করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। তবে ইসরায়েলের ৯টি স্থাপনায় ইরানি ড্রোন আঘাত হানতে সফল হয়েছে বলে জানা গেছে।

ফিলিস্তিন ইস্যুতে ইসরায়েলের সঙ্গে চরম দ্বন্দ্ব রয়েছে ইরানের। সেই দ্বন্দ্ব আরও ব্যাপকভাবে বেড়েছে গত ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান শুরুর পর থেকে।


আরও খবর