উজান থেকে নেমে আসা ঢল আর বৃষ্টিতে তিস্তা
নদীর পানি বেড়ে লালমনিরহাটের চার উপজেলার বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি
হয়ে পড়েছে অন্তত দুই হাজার পরিবার। গত রবিবার দিবাগত গভীর রাত থেকে এসব এলাকায় পানি
ঢুকতে শুরু করে। একই কারণে পাশের জেলা কুড়িগ্রাম ও নীলফামারীতে বন্যার আশঙ্কা দেখা
দিয়েছে। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় নিম্নাঞ্চলের ফসলের ক্ষেতে পানি ঢুকছে।
এদিকে সপ্তাহখানেকের মধ্যে জামালপুর, কুড়িগ্রাম,
গাইবান্ধা, বগুড়া, লালমনিরহাট ও রংপুরের মতো অঞ্চলগুলো প্লাবিত হতে পারে। বাংলাদেশ
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী
মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া গতকাল সোমবার কালের কণ্ঠকে এ তথ্য জানান। আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া
বলেন, ভারতের আসাম, সিকিম ও জলপাইগুড়ি অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে।
এই বৃষ্টি এসব অঞ্চলে আরো কিছুদিন থাকতে
পারে। ফলে যমুনা-ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা অববাহিকার নদীসংলগ্ন এলাকাগুলোতে সপ্তাহখানেকের
মধ্যে বন্যার আশঙ্কা আছে। বিশেষ করে ২৪ থেকে ২৫ জুনের দিকে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর,
বগুড়া, লালমনিরহাট ও রংপুরের মতো অঞ্চলগুলো প্লাবিত হতে পারে। তবে চলতি মাসে দেশের
কোথাও ব্যাপক বন্যা হওয়ার আশঙ্কা নেই।
আরও পড়ুন<< সুনামগঞ্জে নদীর স্রোতে ভেসে গেছেন দুই সন্তানসহ মা
পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র
জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার অববাহিকা এবং
তত্সংলগ্ন উজানে ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে।
এদিকে পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ
কেন্দ্র জানিয়েছে, উজানে ও দেশের অভ্যন্তরে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের
প্রধান নদ-নদীগুলোর পানির উচ্চতা বাড়ছে। আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত দেশের উজানে ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে
ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। ফলে এ সময়ে এ অঞ্চলের নদ-নদীগুলোর (সুরমা,
কুশিয়ারা, সারিগোয়াইন, ঝালুখালী, ভোগাই-কংস, সোমেশ্বরী, যদুকাটা) পানি সমতল (পানির
উচ্চতা) দ্রুত বাড়তে পারে। এতে সিলেট ও সুনামগঞ্জের কিছু পয়েন্টে বিপত্সীমা অতিক্রম
করে সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
আরও পড়ুন<< সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ৭৫ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে
মঙ্গলবারের পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর
জানিয়েছে, গতকালের তুলনায় আজ দেশে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়তে পারে। আজ রংপুর, ময়মনসিংহ,
চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বেশির ভাগ জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে এই চার বিভাগের
কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে। এ ছাড়া রাজশাহী, ঢাকা,
খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের
বৃষ্টি বা বজ সহ বৃষ্টি হতে পারে। এ সময় সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত
থাকতে পারে।