তৃতীয় মেয়াদে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের দায়িত্ব নিয়েছেন এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। এ উপলক্ষ্যে রবিবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে নগর ভবনের গ্রিন প্লাজায় নির্বাচিত রাসিক এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন ও সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচিত ৪০ জন কাউন্সিলরের অভিষেক অনুষ্ঠান-২০২৩ এর আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে নির্বাচিত রাসিক মেয়র ও কাউন্সিলরগণকে ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করে নেওয়া হয়।
এদিকে বিকেলে নগর ভবনে মেয়র দপ্তরকক্ষে নবনির্বাচিত পরিষদের উপস্থিতিতে দায়িত্ব গ্রহণের পর দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু করেন মেয়র এএইচএম এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
অভিষেক অনুষ্ঠানে রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, নগরীর হাইটেক পার্কের পশ্চিমে পদ্মানদী ধারে নৌবন্দর স্থাপন করতে যাচ্ছি। ভারতের মুর্শিদাবাদের ধূলিয়ান ও মায়া থেকে রাজশাহী পর্যন্ত নৌরুট চালু হলে ভারত থেকে পাথর সহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি করা যাবে। রাজশাহী থেকে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করা হবে। আগামী দিনে এই নৌবন্দর হবে রাজশাহী বিভাগের অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র। আগামী ৩ থেকে ৬ মাসের মধ্যে নৌরুটটি প্রাথমিকভাবে চালু হবে।
রাসিক মেয়র বলেন, স্মার্ট রাজশাহী গড়তে প্রকল্প শুরু হচ্ছে। আগামী ১৯ অক্টোবর হাইটেক পার্কে স্মার্ট কর্মসংস্থান মেলা হবে। সেখানে স্পটেই অনেক তরুণ-তরুণীর চাকরি হবে। এটি আমার প্রতিশ্রুতি সূচনামাত্র। শিল্পায়নের জন্য রাজশাহীতে বিসিক শিল্পনগরী-২ তৈরি করা হয়েছে। সেখানে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে প্রায় ৩০০ প্লট বরাদ্দ প্রদান করা হবে। আজকে সন্ধ্যায় ৩০টি প্লট বরাদ্দ প্রদান করা হবে। রাজশাহীর উন্নয়ন হয়েছে, এটি চলমান থাকবে। আমি আপনাদের সকলের সহযোগিতা চাই।
বিপুল ভোটে মেয়র নির্বাচিত করায় সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, লক্ষ লক্ষ মানুষ যেভাবে আমাদের ভালোবেসেছে, দোয়া করেছে, আস্থা রেখেছে, মাঝে মাঝে মনে হয় এর প্রতিদান দিতে পারবো তো? আমি গত দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছি। রাজশাহীতে যারা বেড়াতে আসেন, শহরের পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্য্য দেখে মুগ্ধ হন, তারা রাজশাহীকে দেশের সেরা নগরী বলেন।
মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আমি কাউন্সিলর, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সকলের উদ্দেশ্যে বলি যখন নগর ভবনে প্রবেশ করবেন, রাজনৈতিক পরিচয়ের পোশাকটি খুলে প্রবেশ করবেন। সবাইকে সমানভাবে নাগরিক সেবা প্রদান করবেন। নগর ভবন থেকে বেরিয়ে আপনি পছন্দের দল করতে পারেন, সেটি আপনার বিষয়।
রাসিক মেয়র বলেন, এবার আমার নির্বাচনী স্লোগান ছিল ‘উন্নয়ন দৃশ্যমান, এবার হবে কর্মসংস্থান।’ এবার আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে এটি উল্লেখ্য থাকবে। আর নির্বাচনে সারাদেশে যে শহরটিকে শোকেসিং করা হবে, সেটি হবে রাজশাহী।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এবিএম শরীফ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অভিষেক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আব্দুল হাদী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও রাবির সাবেক উপাচার্য প্রফেসর আব্দুল খালেক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর গোলাম সাব্বির সাত্তার তাপু, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, রাজশাহী-৫ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মনসুর রহমান, রাজশাহীর সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য আদিবা আঞ্জুম মিতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর রুহুল আমিন প্রামাণিক, আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ও যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা, রাসিকের ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সরিফুল ইসলাম বাবু, ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মমিন, সংরক্ষিত ওয়ার্ড-১ কাউন্সিলর তাহেরা খাতুন মিলি। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন রাবির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক, মুহা. বারকুল্লাহ বিন দুরুল হুদা।
উল্লেখ্য, গত ২১ জুন ২০২৩ তারিখে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন নৌকা প্রতীক নিয়ে ১ লাখ ৬০ হাজার ২৯০ ভোট পেয়ে পুনঃনির্বাচিত হন। গত ৩ জুলাই রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে শপথবাক্য পাঠ করান প্রধানমন্ত্রী। এরআগে ২০০৮ থেকে ২০১৩ প্রথম মেয়াদে এবং ২০১৮ থেকে ২০২৩ সালের মে মাস পর্যন্ত দ্বিতীয় মেয়াদে রাসিকের মেয়র ছিলেন এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।