আজঃ রবিবার ১৯ মে ২০২৪
শিরোনাম

উত্তরাঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ শুরু, জীবনযাত্রায় ছন্দপতন

প্রকাশিত:বুধবার ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এবার শীতের আগমন হয়েছে বিলম্বে। তবে বিলম্বিত এ শীত দেশের কিছু অঞ্চলে সত্যিই তা হাড় কাঁপিয়ে দিচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের পর গত ৪ দিন থেকে দেশে অনুভূত হচ্ছে শীতের প্রভাব। ক্রমেই তা তীব্র আকার ধারণ করছে। বুধবার থেকে দেশের উত্তরাঞ্চলে মৃদু আকারে শৈত্যপ্রবাহ শুরুর আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত তা বজায় থাকবে। ঢাকায়ও আরও কমবে তাপমাত্রা। এর ফলে ইতোমধ্যেই মানুষের জীবনযাত্রায় ছন্দপতন শুরু হয়েছে। গরম কাপড়ের ব্যবহার বেড়েছে। শীতবস্ত্রের বিক্রিও বেড়েছে। আর তাপমাত্রা কমার কারণে শীতকেন্দ্রিক রোগবালাই এবং ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, বুধবার থেকে সারা দেশের তাপমাত্রা কমবে। বৃহস্পতিবার রাতে আরও ১ থেকে ৩ ডিগ্রি কমতে পারে। তাপমাত্রা কমার এই ধারাবাহিকতা ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। বিশেষ করে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের দিনাজপুর, রংপুর, কুড়িগ্রাম, নওগাঁ, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, গাইবান্ধা এবং যশোরসহ বিভিন্ন এলাকার তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে যেতে পারে। ঢাকা বিভাগের মাদারীপুর, ফরিদপুর এবং গোপালগঞ্জ জেলায় তাপমাত্রা কমতে পারে। এসব এলাকায় মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশা থাকবে। মঙ্গলবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়ায় ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি।

আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুসারে, তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেটাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলে। ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি হলে মাঝারি, ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি হলে তীব্র এবং তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রির নিচে নেমে এলে তাকে অতি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়ে থাকে। ছয় ঋতুর এই বাংলাদেশে অগ্রহায়ণ ও পৌষ মাসকে শীতকাল বলা হয়। এই ২ মাসে বেশি শীত পড়ে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গত কয়েক বছরে তাতে ছন্দপতন হয়েছে। এ বছর ২৩ অগ্রহায়ণ থেকে ঢাকায় কিছুটা শীত অনুভূত হয়। তবে গত কয়েক দিনে তা ক্রমেই বেড়েছে।

আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বুধবার থেকে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কোনো কোনো এলাকার তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে আসতে পারে। ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ অবস্থা বজায় থাকতে পারে। এ সময়ে শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও ঢাকায় তীব্র শীত অনুভূত হবে।

শীতের সময়কাল সাধারণত ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হিসাব করা হলেও এই সময়কালটা ধীরে ধীরে পরিবর্তন হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের পর থেকে গত কয়েকদিনে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। এ সময়ে ঢাকায় রাতের তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি কমেছে। এছাড়াও শীত বেড়েছে অন্যান্য জেলায়। বিশেষ করে তীব্র শীতে দেশের উত্তরাঞ্চলে জনজীবন বিপর্যস্ত।

আবহাওয়াবিদদের মতে, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে একটা নির্দিষ্ট মাত্রায় উষ্ণতা বাড়লে তাকে এল-নিনো পরিস্থিতি বলে। আর এই এল-নিনোর প্রভাবে তাপমাত্রা বাড়ে এবং শীতের প্রভাব কম থাকে। এ সময়ে পূর্ব থেকে পশ্চিমে প্রবাহিত বায়ুর গতিবেগ কম থাকে। সাগরপৃষ্ঠে বাষ্পায়নের হার কমে যায়, যে কারণে বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কমে। জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কমে গেলে তা তাপমাত্রা কমাতে কম প্রভাব রাখে। এটা বৃষ্টিপাত কমানোর ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখে। আর এই এল নিনোর প্রভাবে এবার শীতে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় একটু বেশি থাকতে পারে।

আবহাওয়া অফিসের রিপোর্টে বলা হয়েছে, সাধারণত জুন থেকে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সূর্য বাংলাদেশের অংশে খুব কাছে চলে আসে। আবার ২১ সেপ্টেম্বর থেকে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সূর্য দূরে যেতে থাকে। দূরত্ব বৃদ্ধির ফলে সৌরশক্তির পরিমাণ কমে আসে। দিনের ছোট হয়ে আসে রাত বড় হয়। এতে দিনে সূর্যকিরণ কম পায় রাতে বিকিরণের সময় বেশি থাকে। সে কারণে রাত ঠান্ডা থেকে ঠান্ডা হতে থাকে। এর ধারাবাহিকতায় এই শৈত্যপ্রবাহ। তবে জানুয়ারির আগে এবার জাঁকিয়ে শীত বা অতি শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা নেই।

বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন, উষ্ণতা বৃদ্ধিসহ নানা কারণেই তাপমাত্রা পরিবর্তনের ধরন পালটে যাচ্ছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে সর্বোচ্চ স্বস্তিদায়ক তাপমাত্রা হিসাবে বিশ্বব্যাপী বিবেচনা করা হয়। এটা ধীরে ধীরে কমে ২০-১৮ ডিগ্রির নিচে নামতে থাকলে শীতের অনুভূতি হতে থাকে।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা বলছেন দেশের অন্যতম খাদ্যশস্য গম। আর গমের জন্য দিনে পর্যাপ্ত আলো এবং রাতে প্রচণ্ড শীত দরকার। অর্থাৎ গম উৎপাদনের জন্য ১৮-২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা সবচেয়ে উপযোগী। কিন্তু এবারের আবহাওয়ার যে চিত্র এবং শীত কম হওয়ার যে পূর্বাভাস করা হচ্ছে তাতে গমের ভালো ফলন পাওয়া যাবে না। এছাড়াও শীতে আমাদের আলু, নানা ধরনের সবজি, সরিষাসহ বিভিন্ন ফসল হয়ে থাকে। এ ফসলগুলোর জন্য পর্যাপ্ত শীত দরকার। শীত বেশি হলে ফসলের উৎপাদন বাড়ে, কম হলে উৎপাদনে প্রভাব পড়ে। এ অবস্থার মোকাবিলায় জলবায়ু উপযোগী নতুন নতুন ফসল উৎপাদনে যেতে হবে। এজন্য গবেষণায় গুরুত্ব আরও বাড়াতে হবে।


আরও খবর
বৃষ্টির পর আসছে হিট ওয়েভ

শনিবার ১৮ মে ২০২৪




ঢাকায় আসছেন ডোনাল্ড লু

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
কূটনৈতিক প্রতিবেদক

Image

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নিয়ে আলোচনার জন্য চলতি মাসের মাঝামাঝি সময় ঢাকায় আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের পর এটি লুর প্রথম ঢাকা সফর হবে।

ঢাকার একটি কূটনৈতিক সূত্র লুর ঢাকা সফরের তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্র বলছে, আগামী ১৪ থেকে ১৬ মে ঢাকা সফর করতে পারেন লু। তিনি বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করতে ঢাকায় আসবেন।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, গত মাসে ডোনাল্ড লু ওয়াশিংটনে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেখানে লু ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানকে তার ঢাকা সফরের আগ্রহের কথা জানান। চলতি মাসের শুরুর দিকেও লুর ঢাকা সফর নিয়ে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা চলছিল। তবে ঠিক কবে নাগাদ লুর সফর হবে, তা চূড়ান্ত ছিল না।

এর মধ্যে সোমবার (৬ মে) ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র-সচিব খুরশেদ আলমের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে লুর ঢাকা সফরের বিষয়ে জানানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পাঁচটি প্রধান ক্ষেত্রে উন্নয়ন এবং সহযোগিতা সম্প্রসারণে দুই দেশের চলমান অংশীদারিত্বের ব্যাপ্তি আরও বাড়ানোর বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ডোনান্ড লুর সফরে সম্পর্ক বিস্তৃত করার বার্তা নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা হতে পারে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার পেছনে বিশ্ব গণমাধ্যমে লুর কথা উঠে এসেছে। সেই থেকে লু দক্ষিণ এশিয়ায় একটি পরিচিত নাম। বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি ইস্যুতে আলোচনায় ছিল তার নাম।

দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর চারবার বাংলাদেশ সফর করেছেন লু। গত বছরের জুলাইতে তিনি সর্বশেষ বাংলাদেশ সফর করেন। তখন তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়ার সঙ্গী হয়ে ঢাকায় আসেন।

বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বেশ সরব অবস্থানে ছিল যুক্তরাষ্ট্র। ভোট শেষে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে ওয়াশিংটন জানায়, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। পরবর্তী সময়ে ভোট নিয়ে নিজেদের অনড় অবস্থানের জানান দিলেও বাংলাদেশের নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী বলে জানান ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির আলোচিত রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্রও বিভিন্ন সময়ে সংবাদ সম্মেলনে একই বার্তা দেন।

তবে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চিঠিতে। চিঠিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী তার সরকার।

ফেব্রুয়ারির শুরুতে বাইডেনের চিঠির পর ওই মাসের শেষের দিকে ঢাকা সফর করেন তার (মার্কিন প্রেসিডেন্টের) বিশেষ সহকারী ও দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরিচালক এইলিন লাউবাখেরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। ওই প্রতিনিধিদলে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা-ইউএসএআইডির সহকারী প্রশাসক মাইকেল শিফার এবং যুক্তরাষ্ট্রের উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আখতার ছিলেন। আওয়ামী লীগের টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠনের পর এটি যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের প্রথম সফর ছিল।

সবশেষ, চলতি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি কার্যালয়ের (ইউএসটিআর) দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী ব্রেন্ডান লিঞ্চের নেতৃত্ব এক‌টি প্রতি‌নি‌ধিদল নিয়ে ঢাকা সফর করে গেছেন।


আরও খবর



দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশ ধরা শুরু

প্রকাশিত:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
চাঁদপুর প্রতিনিধি

Image

দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) মধ্যরাত থেকে ফের ইলিশ ধরতে নদীতে নেমেছেন জেলেরা। এদিন মধ্যরাতে চাঁদপুরের চরভৈরবী থেকে ষাটনল পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার নদী এলাকায় বিচরণ করছেন প্রায় অর্ধলক্ষাধিক জেলে। যৌথ অভিযানে জাটকা সংরক্ষণ অভিযান সফল হওয়ায় এবার ইলিশ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছয় লাখ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে বলে জানিয়েছে জেলা মৎস্য অফিস।

এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই জেলেরা জাল, নৌকা ও ট্রলার নিয়ে ইলিশসহ অন্য মাছ শিকারে প্রস্তুতি নেন।

জেলা মৎস্য অফিস জানিয়েছে, এবার ৫৭৫টি অভিযান, ১২৮টি মোবাইল কোর্ট, ৩৩৪ জন জেলেকে আটক করে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, প্রায় ৫৩ দশমিক ৯১০ লাখ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়েছে। এদিকে, ৩ দশমিক ৪১৬ মেট্রিক টন জাটকা আটক করে দুস্থ ও এতিমদের মাঝে বিতরণ করে দেওয়া হয়েছে। আর জরিমানা আদায় করা হয়েছে ছয় লাখ ৫০৫ টাকা।

নৌ পুলিশ জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞার সময় ১ মার্চ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত ইলিশ অভয়াশ্রমে অভিযান চালিয়ে ১৯ কোটি ১৩ লাখ মিটার অবৈধ জাল, ১৭ হাজার ৮১৯ কেজি মাছ, ২৪৪টি নৌকাসহ এক হাজার ১১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে চাঁদপুর জেলার নৌ থানা পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে ১৭০টি নিয়মিত মামলা করা হয়েছে। এছাড়া ২২৬ আসামিকে ৪৮টি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে। ২১৩ জনকে ছয় লাখ ২৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ১৫২ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় অভিভাবকের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, জেলেদের খাদ্য সহায়তা হিসেবে জনপ্রতি ৪০ কেজি করে চার কিস্তিতে মোট ১৬০ কেজি চাল সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ফলে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, কোস্টগার্ড ও জেলা টাস্কফোর্সের যৌথ অভিযানে জাটকা সংরক্ষণ অভিযান সফল হওয়ায় ইলিশ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছয় লাখ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে। তাছাড়া অসাধু জেলেদের আটক করে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও জরিমানা আদায় করা হয়েছে।

দেশের ইলিশ সম্পদ রক্ষায় সরকার প্রতি বছর ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল দুই মাসের কর্মসূচি ঘোষণা করে। এই নির্দিষ্ট সময়ে মাছ ধরা, পরিবহন, বিক্রি ও মজুত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ২০০৬ সাল থেকে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস চাঁদপুরের বিস্তীর্ণ নদী সীমাকে ইলিশের অভয়াশ্রম ঘোষণা করে জাটকা রক্ষা কর্মসূচি পালিত হয়ে আসছে।


আরও খবর



মিল্টন সমাদ্দারের আশ্রমের দায়িত্ব নিলো শামসুল হক ফাউন্ডেশন

প্রকাশিত:সোমবার ০৬ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০৬ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

আলোচিত মিল্টন সমাদ্দারের চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ আশ্রমের সব দায়িত্ব আলহাজ শামসুল হক ফাউন্ডেশন নিয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ।

সোমবার (৬ মে) মিন্টো রোডের গোয়েন্দা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ডিবি প্রধান জানান, আলহাজ সামসুল হক ফাউন্ডেশনের কর্ণধারকে আপাতত মিল্টনের আশ্রমের সব দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আশ্রয় নেয়াদের আশ্রমে রেখেই তিনি চিকিৎসা করাবেন এবং একজন ডাক্তার নিয়োগ দেবেন। এই বিষয়ে ডিবি তাকে নির্দেশনা দিয়েছে।

এর আগে গতকাল রোববার সাংবাদিকদের হারুন অর রশিদ আরও বলেন, মিল্টন সমাদ্দারকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করছি। এতে ভয়াবহ ও লোমহর্ষক তথ্য বেরিয়ে এসেছে। মাদকাসক্ত মিল্টন মানুষের হাত-পা কেটে পৈশাচিক আনন্দ উপভোগ করতেন।

তিনি বলেন, মিল্টন বিভিন্ন জায়গা থেকে বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী ও রোগাক্রান্তদের ধরে আনতেন। তাদের দেখিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে অনুদান নিতেন, যা এসব মানুষের পেছনে খরচ করতেন না। বরং তারা অসুস্থ হলে নিজেই তাদের চিকিৎসার নামে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কেটে ফেলতেন। তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা রয়েছে।’

ডিএমপির ডিবি প্রধান বলেন, মিল্টন সমাদ্দারের মতো সাইকোপ্যাথিক মানুষ কীভাবে মানবতার ফেরিওয়ালা হয়, তা আমাদের বোধগম্য নয়। তিনি যে নির্যাতন করে, ব্লেড ছুরিতে নিজেই অপারেশন করতেন, টর্চার সেলে মানুষকে পেটাতেন তাদের যে বানর বলে অভিহিত করতেন, পিটিয়ে নিস্তেজ করতেন। তিনি স্বীকার করেছেন, এসব করে তিনি পৈশাচিক আনন্দ পেতেন। আমরা তার টর্চার সেল থেকে আলামত জব্দ করেছি। কথিত অপারেশন থিয়েটার থেকে ব্লেড ছুরি জব্দ করেছি।

‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দার বিভিন্ন জায়গা থেকে বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী ও রোগাক্রান্তদের ধরে এনে তাদের দেখিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে অনুদান সংগ্রহ করতেন। কিন্তু তাদের পেছনে খরচ না করে তা জমিয়েছেন তার ব্যাংক হিসাবে।

‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ নামের বৃদ্ধাশ্রমের আড়ালে মিল্টন সমাদ্দারের নানা অপকর্ম নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর দেশব্যাপী তুমুল সমালোচনার ঝড় ওঠে।

যদিও কয়েকটি গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন মিল্টন সমাদ্দার। নিজের পক্ষে কিছু তথ্যপ্রমাণ ও যুক্তিও তুলে ধরেন। কিন্তু তার দাবি এবং উপস্থাপিত তথ্যপ্রমাণ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, মিল্টনের দেয়া বেশিরভাগ তথ্যই মিথ্যা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিল্টন সমাদ্দারের সেবামূলক কর্মকাণ্ডের রয়েছে ব্যাপক প্রচারণা।

এতে দেখা যায়, অসহায়-দুস্থ মানুষের সেবায় তিনি গড়ে তোলেন চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ নামে একটি বৃদ্ধাশ্রম। রাস্তা থেকে অসুস্থ ও ভবঘুরেদের কুড়িয়ে এনে আশ্রয় দেন বৃদ্ধাশ্রমে।

জনসেবামূলক এসব কর্মকাণ্ডের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন সরকারি-বেসরকারি নানা পুরস্কারও। তবে যেটুকু ভালো কাজ করেছেন, প্রচার করেছেন ঢের বেশি।

এ সব অভিযোগের ভিত্তিতে গত ১ মে রাতে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মিল্টন সমাদ্দারকে আটক করে ডিবি। এরপর আশ্রমের মৃত ব্যক্তিদের জাল মৃত্যু সনদ দেয়ার অভিযোগের মামলায় তিন দিনের রিমান্ড নেয়া হয়। রোববার (৫ মে) রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মানবপাচার আইনে মিরপুর মডেল থানার অপর এক মামলায় মিল্টন সমাদ্দারের ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।


আরও খবর



শাহজালালে তিন দিন ৩ ঘণ্টা করে বন্ধ থাকবে ফ্লাইট ওঠানামা

প্রকাশিত:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সোমবার (৬ মে) থেকে পরবর্তী তিন দিন তিন ঘণ্টা করে উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ থাকবে। রানওয়ে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সোমবার থেকে বুধবার রাত ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা করে উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ থাকবে।

সংশ্লিষ্ট সব এয়ারলাইন্স ও সংস্থাকে নোটাম (নোটিস টু এয়ারম্যান) করেছে বিমাববন্দর কর্তৃপক্ষ। রবিবার (৫ মে) বিমানবন্দর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, বিমানবন্দরের ফ্লাইট অপারেশনের নিয়মমাফিক কাজের মধ্যে একটি কাজ হচ্ছে রানওয়ে ব্যবস্থাপনা। এ কাজের অংশ হিসেবে রানওয়ের সেন্টার লাইট ও মার্কিং সম্পর্কিত রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এজন্য সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত তিন দিন রাত ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ফ্লাইট অপারেশন সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে।

এই ৩ ঘণ্টায় বিমানবন্দরে সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স, মালয়েশিয়ান এয়ারওয়েজ, থাই এয়ারওয়েজ, কুয়েত এয়ারওয়েজ, কাতার এয়ারওয়েজ ও ক্যাথে প্যাসিফিকের ফ্লাইট শিডিউল পরিবর্তন করতে বলা হয়েছে। এ তিন দিন তাদেরকে ফ্লাইটের সময় এগিয়ে বা পিছিয়ে নিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি যাত্রীদেরও পরবর্তী ফ্লাইটের সময় জানিয়ে দেবে এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ।

জানতে চাইলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম বলেন, এই তিন দিন যাত্রীদেরকে তাদের নিজ নিজ ফ্লাইট সম্পর্কে আগাম জানাতে এবং ফ্লাইট অপারেশন সমন্বয় করার জন্য এয়ারলাইন্সগুলোকে এরইমধ্যে অনুরোধ করা হয়েছে। এছাড়া বিমানবন্দরে অন্যান্য সেবাপ্রদানকারী সরকারি সংস্থার সঙ্গেও সমন্বয় করা হয়েছে। যাত্রীদের যাত্রা নির্বিঘ্ন ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বদ্ধপরিকর বলে জানান তিনি।


আরও খবর



১২ ঘণ্টা পর মুক্তি মিললো উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহীনের

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মামুন হোসেন, পাবনা

Image

নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগে বিপুল পরিমাণ টাকাসহ পাবনার সুজানগর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহীনুজ্জামান শাহীনসহ ১১ জনকে আটক করে র‍্যাব। পাশাপাশি নির্বাচনী কাজে ব্যবহৃত একটি গাড়ি ও ২২ লাখ ৮২ হাজার ৭শ' টাকা জব্দ করা হয়। এর ১২ ঘণ্টা পর তাকেসহ আটক ১১ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৭ মে) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে র‍্যাব-১২ পাবনা ক্যাম্প থেকে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

শাহীন সুজানগর উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এবারের উপজেলা নির্বাচনে তিনি চেয়ারম্যান প্রার্থী।

সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে সুজানগরের চর ভবানীপুরের নির্বাচনী এলাকা থেকে তাকে আটক করে র‌্যাব-১২ পাবনা ক্যাম্পের সদস্যরা। আটকের পর মঙ্গলবার (৭ মে) ভোর রাত সাড়ে ৩টার দিকে র‍্যাব-১২ পাবনা ক্যাম্পে এক সংবাদ সম্মেলনে মেজর মোঃ এহতেশামুল হক খান জানান, সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজনের অংশ হিসেবে টহলরত অবস্থা শাহিনুজ্জামান শাহীনসহ ১১ জনকে আটক করা হয়। এসময় শাহিনের কাছ থেকে ব্যাগভর্তি ২২ লাখ ৮২ হাজার ৭শ টাকা জব্দ করা হয়েছে। টাকাগুলো নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছিল বলে শাহিনুজ্জামান শাহীন জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন।

আটকদের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে, তারা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানান র‌্যাব কর্মকর্তা।

পরে মঙ্গলবার (৭ মে) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে তাকে ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে র‍্যাব-১২ পাবনা ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মোঃ এহতেশামুল হক খান। তিনি জানান, আটকের পর আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। যেই টাকা জব্দ করা হয়েছিল সেটি নির্বাচনী ব্যয়ের সীমার মধ্যেই ছিল। জব্দকৃত টাকা ট্রেজারিতে জমা দেওয়া হবে এবং শাহিনসহ সবাইকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তবে বিষয়টি আরও তদন্ত করে পরবর্তীতে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে শাহিনুজ্জামান শাহীনসহ আটক ১১ জনের মুক্তির দাবিতে সুজানগর থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করতে থাকেন শাহীনের কর্মী সমর্থকরা। মঙ্গলবার (৭ মে) ভোর রাত থেকে মুক্তি দেয়ার আগ মুহূর্তে পর্যন্ত নেতাকর্মীরা সুজানগর থানার সামনে সুজানগরের প্রধান সড়ক ও বাজার অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন।

এ সময় সুজানগর বাজারের সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ দোকান-পাট বন্ধ ছিল। পরে মুক্তির খবর সেখানে পৌঁছালে আনন্দে মেতে উঠেন নেতাকর্মীরা।

মুক্তি পাওয়ার পর শাহিনুজ্জামান শাহীন বলেন, নির্বাচনী সকল ব্যয় পরিশোধের জন্য টাকাগুলো আনা হচ্ছিল। এটা কোনো অসৎ উপায়ের জন্য ব্যবহার হচ্ছিল না। সম্পূর্ণ বৈধ টাকা। আমি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার। আমার বিজয় ঠেকাতে প্রতিপক্ষরা শুরু থেকেই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে আসছে। আজকের ঘটনা তারই বহিঃপ্রকাশ।

উল্লেখ্য, আগামীকাল ৮ মে পাবনার সুজানগর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে আনারস প্রতীকের শাহীনুজ্জামান শাহীনের সঙ্গে একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব (মোটরসাইকেল)।


আরও খবর