চরফ্যাশন(ভোলা) প্রতিনিধি:
ঐতিহ্য আর আধুনিকতার মেলবন্ধন বাংলাদেশে প্রথম পরিবেশ বান্ধব মসজিদ খাস মহল জামে মসজিদ। সৌন্দর্যমন্ডিত এই মসজিদটি বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় জেলা ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা শহরে প্রানকেন্দ্র অবস্থিত।
নির্মাণশৈলী সিরামিক ইটের গাঁথুনির ফাঁকে ফাঁকে নির্মল বাতাস ও উপরে মাকড়সা আকৃতির কাঁচের গন্বুজ ভেদ করে সূর্যের আলোকরশ্মি ছড়াচ্ছে মসজিদ জুড়ে। ভিতর বাহিরে নান্দনিক লাইটিং আর প্রকৃতিবান্ধব নির্মাণ শৈলীর ডিজাইন এই মসজিদ ইসলাম প্রিয় ধর্মপ্রাণ মানুষকে মেলবন্ধনে আবদ্ধ করেছে।
জানা গেছে, গ্রাউন্ড ফ্লোরসহ তিনতলায় সাড়ে চার হাজার মুসল্লি একসাথে নামাজ আদায় করতে পারবে। উপজেলা পর্যায়ে বাংলাদেশে এই প্রথম মহিলাদের নামাজের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আন্ডার গ্রাউন্ডে তাপমাত্রা সহনীয় রাখতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
২০১৮ সাল থেকে মসজিদের নির্মাণকাজ শুরু হলেও করোনাকালীন সময়ে কাজ বন্ধ হয়নি, টানা প্রায় ৫ বছর চলছে মসজিদের নির্মাণকাজ।
চরফ্যাশন পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসান বলেন, ১৭ হাজার বর্গফুট জায়গায় উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন স্টোন চিপসের সমন্বয়ে ফেয়ার ফেস সাদা সিমেন্টের প্লাস্টার দ্বারা পরিবেশ বান্ধব এই মসজিদের প্রতিটি দেয়াল আবৃত। এই প্লাস্টার ১০০ বছরের স্থায়ীত্ব হবে। যাহা সম্পুর্ন প্রকৃতি বান্ধব। চরফ্যাশন পৌরসভার নিজস্ব তহবিল থেকে জ্যাকব টাওয়ার ও খাসমহল মসজিদের আশপাশে নান্দনিক সৌন্দর্য বর্ধনে মাঠ, রাস্তা ও ফুলের বাগানে উন্নয়নকাজ চলমান।
চরফ্যাশন পৌরসভা মেয়র মো. মোরশেদ বলেন, ভোলা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এর উদ্যোগ ও পরিকল্পনায় দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদ নির্মাণকাজ শুরু হয়। এই জনপদে তাঁর মহতি এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। পবিত্র মাহে রমজান মাস উপলক্ষে ১৭ মার্চে অনানুষ্ঠানিক ভাবে চালু করা হয়েছে।
পরিবেশ বান্ধব এই মসজিদে বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত মুসল্লিরা নামাজ আদায় করে স্বাচ্ছন্দ বোধ করছেন। নির্মাণের ৯০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আগামি ঈদুল আযহায় আনুষ্ঠানিকভাবে এই মসজিদ আনুষ্ঠানিক ভাবে দেশের বিশিষ্ট আলেমদের নিয়ে মসজিদ চালুর সম্ভবনা রয়েছে।
মসজিদ কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল নোমান বলেন, দিনের বেলায় কোন বাতি জ্বালানো লাগবে না। সূর্যের আলো সরাসরি প্রতিটি ফ্লোরে প্রবেশ করে। নামাজরত মুসল্লিদের দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস বহির্গমনে উপরে এবং নীচে সেন্ট্রাল একজস্ট ফ্যান রয়েছে। তিনদিকে দেয়ালের সিরামিক ইটের গাঁথুনী নির্মাণশৈলীতে এমনভাবে ফাঁকা রাখা হয়েছে তাতে সার্বক্ষনিক তাপমাত্রা সহনীয় থাকবে এবং বৈদ্যুতিক পাখা ছাড়া কোন শীতাতপ নিয়ন্ত্রনের প্রয়োজন হবেনা।এতে বিদ্যুতের ব্যবহার কম হবে। এই কারনে মসজিদটি পরিবেশবান্ধব ও স্বাস্থ্যসম্মত।
মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগতা ও স্বপ্নদ্রষ্ঠা ভোলা-৪ আসনের সংসদ সদস্য, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব বলেন, আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে স্বপ্ন ছিল আমার নির্বাচনী এলাকা চরফ্যাশনে একটি দৃস্টিনন্দন আধুনিক মানের মসজিদ নির্মাণের। মানুষের সার্বিক কল্যাণে হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন করেছি।
১৪ বছরে আমার এলাকায় যত উন্নয়ন করেছি সেসব উন্নয়নের মধ্যে খাসমহল মসজিদ হল সর্বসেরা উন্নয়ন। জনগনের ভালবাসা ও তাদের অনুপ্রেরণায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই মসজিদ নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করেছি। এই মসজিদ বাংলাদেশের প্রথম পরিবেশ বান্ধব মসজিদ।