সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে দৃশ্যমান গোটা পদ্মা সেতু। বসানো হয়েছে ৪১তম বা সবশেষ স্প্যানটিও। তবে এখনই এর কাজ শেষ হয়ে যায়নি। গাড়ি বা অন্যান্য যানবাহন নিয়ে সেতু পাড়ি দিতে হলে অপেক্ষা করতে হবে ২০২২ সাল পর্যন্ত।
পদ্মা সেতু প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সবশেষ স্প্যান বসানোর মাধ্যমে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটারের মূল সেতুর কাজ শেষ হলো। এখন এ কাঠামোকে ট্রেন এবং অন্যান্য সাধারণ যানবাহন চলাচলের উপযোগী করে তোলা হবে। এতে সময় লাগবে আরও অন্তত ১০ মাস। তারপর নির্মাণকাজ তদারকির কাজ শেষ হলে তবেই যানবাহনের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু।
প্রকল্পের হিসেবে আগামী ২০২১ সালেই পদ্মা সেতুর সব কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কোভিড-১৯ করোনার কারণে সেই কাজ ব্যাহত হয়। এর ফলে পদ্মা সেতুর মূল কাজ এবং নদীশাসনে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের চুক্তির মেয়াদ আরও ৩৪ মাস বাড়ানো হয়।
গেল আগস্ট মাসে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির এক বৈঠক শেষে এ তথ্য নিশ্চিত করেছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২২ সালের জুন মাস পর্যন্ত ২২ মাস নির্মাণকাজ তদারকি করতে এবং ডিফেক্ট লায়াবিলিটি পিরিয়ডের (ডিএলপি) জন্য ১২ মাস মোট ৩৪ মাস পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারে প্রথম স্প্যান বসানো হয়েছিল। পদ্মা সেতু নির্মাণে প্রয়োজন হবে ২ হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্ল্যাব। এছাড়া ২ হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে। মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তের বসানো স্প্যানগুলোতে এসব স্ল্যাব বসানো হচ্ছে।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে পদ্মাসেতুর কাঠামো। সেতুর ওপরের অংশে যানবাহন ও নিচ দিয়ে চলবে ট্রেন। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।