টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে
প্রেমের ফাঁদে ফেলে ৩৪ দিন আটকে রেখে এক কিশোরীকে গণর্ধষণের অভিযোগ উঠেছে। পরে ওই কিশোরীকে
ভারত পাচারের উদ্যোগ নেয় পাচারকারী দলের সদস্যরা। সেখান থেকে কৌশলে পালিয়ে আসে সে।
পরবর্তীতে পরিবারের
সদস্যদের কাছে সমস্ত ঘটনা খুলে বলে ওই কিশোরী। আর এ ঘটনায় ওই কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে
আল আমিনকে প্রধান আসামি করে ট্রাকচালক মাসুম, আসকর মল্লিক, নজরুল মল্লিকের নাম উল্লেখ
করে অজ্ঞাতনামা আরও ৫-৬ জনের বিরুদ্ধে রোববার টাঙ্গাইল আদালতে মামলা দায়ের করেন।
আদালত মামলাটি
আমলে নিয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) তদন্তের ভার দেয়। এছাড়া ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২
তারিখের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
কিশোরী ও মামলা
সূত্রে জানা যায়, ভূঞাপুরের একটি স্কুলের ৮ম শ্রেণিতে পড়াশুনা করে ওই কিশোরী। মোবাইলের
মাধ্যমে তার পার্শ্ববর্তী ঘাটাইল উপজেলার গৌরিশ্বর গ্রামের আসকরের ছেলে আল আমিনের
(২৫) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ২১ জুলাই কোরবানির ঈদের দিন বিকালে ওই কিশোরী
তার মায়ের সঙ্গে নানার বাড়ি ভূঞাপুরে যায়। সেখান থেকে আল আমিনের টেলিফোন পেয়ে নানার
বাড়ি থেকে পালিয়ে আল আমিনের সঙ্গে ঘাটাইল উপজেলার চেংটা গ্রামে যায়।
সে জানায়, আল
আমিন তাকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ওই বাড়িতে রেখে একটানা ২৫ দিন ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে ১৫
আগস্ট সে তার আত্মীয়ের বাসায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বের হয়ে কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা
বাসস্ট্যান্ডে আসে। বাসস্ট্যান্ডে আল আমিনের বন্ধু পাচার চক্রের সদস্য ট্রাক ড্রাইভার
মাসুদের ট্রাকে তুলে দেয়।
১৬ আগস্ট ভোর
৫টার দিকে একটি ফাঁকা বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ৩-৪ জন মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
পরে ৩-৪ জন লোকের আলাপচারিতায় মেয়েটি বুঝতে পারে যে তাকে ভারতে পাচার করার পরিকল্পনা
করছে। পরের দিন সে বাথরুমে যাওয়ার কথা বলে ২৫ আগস্ট রাত ৮টার দিকে ওখান থেকে পালিয়ে
রিকশাযোগে বেনাপোল বাসস্ট্যান্ড আসে। পরে সেখান থেকে ২৬ আগস্ট বাড়িতে চলে আসে।
মেয়ের মা বলেন,
আমার মেয়েটি বাড়িতে আসার পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে পল্লী চিকিৎসক দ্বারা চিকিৎসা
করে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের ঘটনা অবহিত করি। পরে আসামিদের নাম ও ঠিকানা সংগ্রহ
করে গত ১০ সেপ্টেম্বর আমার মেয়েকে নিয়ে ভূঞাপুর থানায় একটি অভিযোগ করতে যাই। ভূঞাপুর
থানা পুলিশ অভিযোগ শুনে মামলা গ্রহণ না করায় আমি আল আমিনকে প্রধান আসামি করে ট্রাকচালক
মাসুম, আসকর মল্লিক, নজরুল মল্লিকের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৫-৬ জনের বিরুদ্ধে
টাঙ্গাইল আদালতে মামলা দায়ের করি।
তবে ভূঞাপুর থানার
ওসি মুহাম্মদ আব্দুল ওহাব জানান, এ বিষয়ে ভূঞাপুর থানায় কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেননি।
এদিকে বাদীপক্ষের
আইনজীবী আকবর হোসেন রানা জানান, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ডিবি টাঙ্গাইলকে তদন্তের নির্দেশ
দেন। ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
মামলার বিষয়ে
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি উত্তর) ওসি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, এ ধরনের কোনো মামলা
এখনো হাতে আসেনি।