কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
আগে সপ্তাহে এক দিন ভাত খেতে পারি নাই। খুবই অভাব ছিল সংসারে। সেসময় বাবার সংসারে অভাব থাকায় পড়াশোনাও করতে পারি নাই। বই বিক্রি করে যোগ দেই মাটি কাটার কাছে। কিছু দিন মাটি কাটার কাজ করি। পরবর্তীতে মাটি কাটার কাজ বাঁধ দিয়ে কাঠুরের কাজ শুরু করি।
তিনি বলেন, সেই কাঠুরের কাজকে পুঁজি করে হারভাঙা পরিশ্রম করছি এখনো। এ কাজ করে পরিবার পরিজনকে নিয়ে দীর্ঘ ৪০ বছর পরে সুস্থ আছি। এই কাজ করে শুধু নিজই স্বাবলম্বী হইনি স্বাবলম্বী করেছি পরিবার পরিজনকে। আল্লাহ পাক যতদিন আমাকে সুস্থ রাখবে এই কাঠুরের কাজ করে যাবো।
এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন, মোঃ নাজির হোসেন (৬৫), নামের এই ব্যাক্তি। তিনি কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের সুভার কুটি গ্রামের বাসিন্দা। এবং তিনি চার ছেলে মেয়ের জনক। মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন আর দুই ছেলের করেছেন কর্মের ব্যবস্থা।
জানা গেছে, নাজির হোসের দীর্ঘ ৪০ ধরে কাঠুরের কাজ করছেন। প্রতিদিন বাড়ি থেকে জেলা শহরে এসে অন্যের কাঠ খড়ি জ্বালানি করে দেয়ায় তার পেশা। এতে করে প্রতিমণ কাঁচা কাঠ ফাটিয়ে দিলেই পান মাত্র ২৫ টাকা। এভাবেই প্রতিদিন ২০-২৫ মণ কাঠ থেকে খড়ি (জ্বালানি) করেন তিনি। এই বয়সে এখনো তিনি ৬-৭শ টাকা আয় করছেন। এই কাঠুরে কর্মজীবনে কাজ করে তিন বিঘা জমি ক্রয় করেছেন। বিভিন্ন প্রকার কাজ করার জন্য দুই ছেলেকে কিনে দিয়েছেন দুটি ট্রাক্টর যার মুল্য প্রায় ১২ লাখ টাকা।
স্থানীয় হাসিনুর রহমান বলেন, আমি সেই ছোট কাল থেকে দেখে আসছি নাজির চাচা কাঠুরের কাজ করছেন। সেসময় দেখছি তাদের সংসারে খুবই অভাব ছিল। এ কাজ করে জমিজমা কিনছে তার ছেলেদের ট্রাক্টর কিনে দিয়েছে। সব মিলিয়ে তারা ভালোই স্বাবলম্বী হয়েছে। এবং তাদের সংসার ভালো চলছে।
হলোখানা ইউনিয়নের ৯ নং ওর্য়াডের ইউপি সদস্য মেম্বার গোলজার হোসেন বলেন, কাঠুরেই নাজির হোসেনের পেশা, সেই কাল থেকে এই কাজ করছে সে। একসময় তার সংসারে খুবই অভাব ছিল, এখন সেই অভাব আর নাই। নিজে এখনো কাঠুরের কাজ করছে। ছেলেদেরও কর্মের ব্যবস্থা করছেন।