রাজধানীর ধোলাইপাড়ে এক ব্যবসায়ীর ৫৪ লাখ
টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় পুলিশের দুই সদস্য জড়িত থাকার কথা জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা
পুলিশ (ডিবি)৷ মঙ্গলবার রাতে ডাকাতিতে জড়িত দুই পুলিশসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তাদের কাছ থেকে সাড়ে ৪১ লাখ টাকা উদ্ধারও করেছে ডিবি।
পুলিশের গ্রেফতার দুই সদস্য হলেন এএসআই
মো. দেলোয়ার হোসেন ও পুলিশ কনস্টেবল মো. আবু সায়েম। দেলোয়ার গুলশান থানার সহকারী
উপপরিদর্শক (এএসআই) ও আবু সায়েম কনস্টেবল হিসেবে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত আছেন।
গত রোববার শ্যামপুর থানার ধোলাইপাড়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালের সামনে ছিনতাইয়ের শিকার হন আবুল কালাম নামে এক ব্যবসায়ী। বুধবার (১১ অক্টোবর) নিজ কার্যালয়ে ডাকাতির ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হারুন বলেন,
কার কী পরিচয় সেটা বিবেচ্য বিষয় নয়। কেউ অপরাধ করলে আমরা তাকে অপরাধী হিসেবে দেখি।
তাকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। আগেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য কিংবা এ পরিচয় দিয়ে ডাকাতিসহ
বিভিন্ন অপরাধে জড়িতদের গ্রেফতার করেছি। এখন যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের রিমান্ডে
আনা হয়েছে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরবর্তীসময়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্য প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশীদ বলেন,
তদন্তে নেমে জানতে পারি ঘটনার সঙ্গে পাঁচজন জড়িত। আমরা অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেফতার
করেছি। মামলায় ভুক্তভোগী উল্লেখ করেছেন, ৫৪ লাখ টাকা ছিনতাই হয়েছে। মামলা দস্যুতার
তবে তদন্তে নেমে দেখলাম এটি একটি ডাকাতির ঘটনা। গ্রেফতার চারজনের কাছ থেকে ৪১ লাখ ৫৭
হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। ডাকাতিতে ব্যবহৃত গাড়ি ও হ্যান্ডকাফ উদ্ধার করা হয়। পলাতক
একজনকে গ্রেফতার করতে পারলে বাকি টাকা উদ্ধার হবে বলে আশা করছি।
মঙ্গলবার পুলিশের পক্ষ থেকে দেলোয়ার ও
সায়েমের বিরুদ্ধে সাতদিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়। আদালত দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর
করেন। এর আগে সোমবার একই ঘটনায় মো. মোশারফ হোসেন ও মো. আবদুল বাতেন নামের গ্রেফতার
দুজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
ডিবি জানায়, রোববার সকাল ৯টার দিকে শ্যামপুর
থানার ধোলাইপাড়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালের সামনে ছিনতাইয়ের শিকার হন আবুল কালাম নামের
একজন ব্যবসায়ী। কয়েক ব্যক্তি মাইক্রোবাসে তাকে তুলে নিয়ে তার কাছে থাকা ৫৪ লাখ টাকা
ছিনিয়ে নেন। তারপর ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের রসুলপুর এলাকার একটি ফাঁকা জায়গায় ফেলে
চলে যান তাকে। আবুল কালাম ওই টাকা মতিঝিলের জনতা ব্যাংকে জমা দেওয়ার জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন।
এ ঘটনায় শ্যামপুর থানায় অজ্ঞাতনামা চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি।
পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) সূত্র
জানায়, মামলার পর ডিবি পুলিশ ছায়াতদন্ত শুরু করে। তারা সংশ্লিষ্ট এলাকার সিসি ক্যামেরার
ফুটেজ বিশ্লেষণ করে একটি গাড়ির নম্বর শনাক্ত করে। এরপর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় চারজনকে
শনাক্ত করা হয়। সোমবার ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা
পুলিশ। সেদিনই তাদের আদালতে পাঠানো হলে দুজন (মোশারফ ও বাতেন) স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি
দেন।