আলুর বাজারে আবারও আগুন। ছয় মাস ধরে কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না আলুর দাম। ৫০ টাকায় দাম উঠে গেলে গত ১৪ সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজির দাম ৩৬ টাকা নির্ধারণ করে ভোক্তা অধিদপ্তরকে দিয়ে হিমাগার ও পাইকারি বাজারে অভিযান চালিয়ে দাম কিছুটা কমাতে পারলেও আবারও বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে ১৫ টাকা বেড়েছে। শুধু বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত পণ্যটির দাম বেড়েছে ৮ টাকা।
কারওয়ান বাজারের আলু ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বুধবার রাত ৯টায় প্রতি কেজি আলু কিনেছি ৫২ টাকা দরে। বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে সেটি ৬০ টাকা করে কিনতে হয়েছে। লাল আলু ৩০০ ও সাদা আলু ২৭০ টাকা পাল্লা (পাঁচ কেজি) বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে পুরোনো আলু ৬০ টাকা, নতুন আলু ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
হঠাৎ আলুর দাম কেন বাড়ল- জানতে চাইলে ব্যবসায়ীরা বলেন, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বৃষ্টি হওয়ায় পানি জমে আলু পচে গেছে। এখন আবার কৃষকদের নতুন করে আলু রোপণ করতে হচ্ছে। এতে করে একদিকে যেমন নতুন আলু বাজারে কম উঠছে, অপরদিকে প্রতি বিঘা জমিতে নতুন করে বীজ লাগাতে হচ্ছে। এতে খরচ বেশি হচ্ছে । উৎপাদন ব্যয় পড়ে যাচ্ছে ২৫ টাকা কেজি। এবার আলু বাজারে এলেই দাম বাড়বে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বাড়লেও দাম কমছে না। বরং সপ্তাহের ব্যবধানে তা আরও বাড়ছে। কারওয়ান বাজারে পেঁপে বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকা কেজি। ভালো মানের পেঁপে ৪০ টাকাও বিক্রি হতে দেখা গেছে। গাজরের কেজি ৫০ টাকা, বড় বেগুন কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ৮০ টাকা, শিমে ২০ টাকা বেড় ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শালগম ৩০ টাকা কেজি, মিষ্টিকুমড়া ৫০ টাকা কেজি, বাঁধাকপি প্রতি পিস ৪০ টাকা ও ফুলকপি ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের মুরগির ডিমের দাম ডজনে ১০ টাকা বেড়ে ১৩৫/১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি হালি ডিম ৪৫ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি ১৮০/১৯০ টাকা ও সোনালি মুরগি ৩২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। কলমিলতা কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা খুরশেদ আলম জানান, মুলা ৩০ টাকা কেজি, পেঁয়াজপাতা ৬০, লম্বা বেগুন ৫০, টমেটো ৮০, নতুন ছোট আলু ১০০, শিম ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। রেকর্ড দাম বেড়েছে দেশি রসুনের। দেশি রসুন কেজি ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা এবং আমদানিকৃত রসুন ২৩০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কৃষক, হিমাগার কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক দিন আগে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে টানা প্রায় তিন দিনের বৃষ্টিতে আলুর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তার প্রভাব পড়েছে বাজারে। এর আগে নভেম্বরের দিকে আগাম আলুর ক্ষেত্রেও কয়েক দিনের বৃষ্টিতে আলুর জমি নষ্ট হলে আগাম আলু সময়মতো উঠতে পারেনি। এসব পরিস্থিতিতে বাজারে এখন চাহিদামতো নতুন আলু সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না।