দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে কুষ্টিয়ার দুইটি আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম ও তার মেয়ে ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর। রোববার তাদের পক্ষে একজন প্রতিনিধি এ মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন বলে জানা গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খুলনা বুথের দায়িত্বে থাকা অ্যাডভোকেট শেখ হাসান মেহেদী। কুষ্টিয়া-৩ সদর আসন থেকে ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম ও কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) আসন থেকে মেয়ে তানিয়া আমীর মনোনয়ন কিনেছেন। এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।
সদর আসনে মাহাবুবউল আলম হানিফ ছাড়াও মনোনয়ন ফরম কিনেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, সহ-সভাপতি ডা. এএফএম আমিনুল হক রতন, সহ-সভাপতি লাইলা আরজুমান বানু ও খন্দকার মাহাতাবুল হক জয়।
সূত্রে জানা যায়, ২০০৬ সালে দলের চরম দুর্দিনে কুষ্টিয়া আওয়ামী লীগের হাল ধরেছিলেন ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম। বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত কুষ্টিয়া সদর আসনের বাড়ি বাড়ি গিয়ে উঠান বৈঠক করে আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করেছিলেন তিনি। তার সেই উঠান বৈঠক আজ সারা দেশের রোল মডেল।
দেশবরেণ্য আইনজীবী আমীর-উল ইসলাম ২ জানুয়ারি ১৯৩৭ কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, ঘোষণাপত্র রচয়িতা এবং বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতাদের একজন ছিলেন। ব্যারিস্টার আমীর ব্যক্তিগতভাবে ঘনিষ্ঠ ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাজউদ্দীন আহমদের। শেখ মুজিবুর রহমানের তৃতীয় মন্ত্রিসভায় তিনি খাদ্য প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। প্রথম জাতীয় সংসদে তিনি কুষ্টিয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।
বর্তমানে রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম হঠাৎ করে কুষ্টিয়া সদর আসনে কেন দলীয় মনোনয়ন কিনলেন এ নিয়ে জেলার রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানা গুঞ্জন। বর্তমানে এ আসনের এমপি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। হেভিওয়েট এই এমপির বিপক্ষে দেশবরেণ্য আইনজীবীর মনোনয়ন উত্তোলনে হানিফপন্থিরা ভালোভাবে নিচ্ছেন না। তবে দলের একটি অংশ বলছেন দলের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকা ভালো। নেত্রী যাকে নৌকার টিকিট দেবেন তার পক্ষেই থাকবেন বলে জানান দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলামের কন্যা দেশের স্বনামধন্য আইনজীবীদের একজন তানিয়া আমীর বর্তমানে আমীর অ্যান্ড আমীর ল অ্যাসোসিয়েশনের পার্টনার ও সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট। তিনি বাংলাদেশ ও ব্রিটেনের দ্বৈত নাগরিক। ইতোমধ্যে দেশের শীর্ষ আদালতে আলোচিত মামলায় লড়ে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন।
বাবার খ্যাতি ও সফল পেশা তার মনেও প্রভাব ফেলেছে। নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে যুক্তরাজ্য থেকে এলএলবি অনার্স শেষে ব্যারিস্টার হন। বহুমাত্রিক এই ব্যক্তিত্ব আইন পেশার পাশাপাশি সক্রিয় মানবাধিকারকর্মী ও পরিবেশকর্মী হিসেবে। কাজ করছেন নারীর ক্ষমতায়ন, শিশু অধিকার রক্ষা ও বিভিন্ন এনজিওতে।