নাগরিক মহলে বিতর্কের পর আমির হামজাকে
বাদ দিয়ে স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তদের সংশোধিত তালিকা প্রকাশ করেছে সরকার। শুক্রবার
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত আরেকটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এ তথ্য জানানো হয়।
নতুন বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় পর্যায়ে
গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ নয় ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠানকে এবার
স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২২ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে ক্ষেত্রসহ পুরস্কারপ্রাপ্তদের
নামের তালিকাও প্রকাশ করা হয়।
এর আগে গত মঙ্গলবার ১০ বিশিষ্ট ব্যক্তি
ও এক প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেয় সরকার। সেখানে সাহিত্যে অবদানের
স্বীকৃতি হিসেবে তালিকার নয় নম্বরে ছিল আমির হামজার নাম। সেই নাম এখন নেই, এমনকি সাহিত্যে
নতুন করে কারও নাম যোগও করা হয়নি।
পুরস্কার ঘোষণার পরই আমির হামজার নাম নিয়ে
নানা বিতর্ক শুরু হয়। নাগরিক মহলে অচেনা আমির হামজার নাম দেখে অনেকে বিস্ময় প্রকাশ
করেন। পরে খবর নিয়ে ‘বাঘের থাবা’, ‘পৃথিবীর মানচিত্রে
একটি মুজিব তুমি’ ও ‘একুশের পাঁচালি’ নামে তার তিনটি
বইয়ের সন্ধান পাওয়া যায়।
এরপর বৃহস্পতিবার ‘জাতীয় পুরস্কার
সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র আহ্বায়ক মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী আ
ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, আমিরা হামজার বিষয়ে আসা অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হবে। পর্যালোচনার
পর সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার সুযোগও রয়েছে বলে জানান তিনি।
আমির হামজার জন্মস্থান মাগুরায়। সেখানে
তাকে ‘চারণ কবি’ হিসেবে চিনতেন
অনেকে। তিনি গানের আসরে বসে গান লিখতেন সঙ্গে সুরও করতেন।
এছাড়া বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে
উঠে আসে, ১৯৭৮ সালে একটি খুনের মামলার প্রধান আসামি ছিলেন আমির হামজা। বিচারিক আদালতের
রায়ে ওই মামলায় তার যাবজ্জীবন সাজা হলেও পরবর্তীতে ‘রাজনৈতিক বিবেচনায়’ সাধারণ ক্ষমাও
পান তিনি।
আমির হামজার ছেলে আসাদুজ্জামান সরকারি কর্মকর্তা। খুলনা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে আছেন তিনি। ২০১৯ সালে মারা যাওয়া আমির হামজাকে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তা ছেলের তৎপরতার কথাও আসে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে।
নতুন তালিকা অনুসারে, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের
ক্ষেত্রে এ পদক পাচ্ছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী, শহীদ কর্নেল খন্দকার
নাজমুল হুদা (বীর বিক্রম), আবদুল জলিল, সিরাজ উদ্দীন আহমেদ, মরহুম মোহাম্মদ ছহিউদ্দিন
বিশ্বাস ও মরহুম সিরাজুল হক। চিকিৎসাবিদ্যায় অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়া ও অধ্যাপক মো.
কামরুল ইসলাম এবার স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। স্থাপত্যে পাচ্ছেন মরহুম স্থপতি
সৈয়দ মাইনুল হোসেন। এবার প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট
(বিডব্লিউএমআরআই) এ পুরস্কার পাচ্ছে।