আনোয়ারা(চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় বরুমচড়া ইউনিয়নে বিষমুক্ত সবজি চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। লাভজনক ফসল হওয়ায় অন্যান্য ফসলের চেয়ে সবজি চাষে বেশ আগ্রহী হয়ে উঠছে এই এলাকার কৃষক। জৈব সার, বালাইনাশক ও সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করার কারনে এখানকার বেগুন সম্পূর্ণ বিষমুক্ত তাই এর চাহিদাও বেশি। বেগুন উৎপাদনে খরচ কম হওয়ায় কৃষকরা দ্বিগুন লাভের আশা করছেন।
চলতি বছর উপজেলায় ১৬২ হেক্টর জমিতে ১ হাজারের অধিক কৃষক বেগুন চাষ করেছে। লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ হাজার মেঃ টন। অন্যান্য সবজির চেয়ে বেগুনে লাভ বেশি হওয়ায় কৃষকদের মাঝে বেগুন চাষে আগ্রহ বাড়ছে।
উপজেলার বরুমচড়া ও বারখাইন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা মাঠ থেকে বেগুন তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ভোর থেকে দল বেঁধে মাঠে বেগুন তোলতে নেমেপড়ে। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ নিজের জমিতে আর কেউ কেউ লাগিয়ত নিয়ে চাষ করছেন। উৎপাদিত বেগুন পাইকারেরা ক্ষেত থেকেই কিনে নিয়ে যান।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, আনোয়ারার বারখাইন, বরুমচড়া, জুঁইদন্ডী, হাইলধর, পরৈকোড়া, চাতরী ও বটতলী ইউনিয়নে বেগুন চাষ বেশি হয়। এছাড়া রায়পুর, বারশত, বৈরাগ ও আনোয়ারা সদর ইউনিয়নেও বেগুনের চাষ করে কৃষকরা। চলতি বছর উপজেলায় ১৬২ হেক্টর জমিতে এক হাজারেরও বেশি চাষী বেগুন চাষ করেছে। এসব বেগুনের মধ্যে ইসলামপুরী, দোহাজারী, পুঁতা বেগুন ও তাল বেগুনের জাত রয়েছে। তবে আবহাওয়া ও মাটির উর্বরতার কারনে আনোয়ারায় পুঁতা বেগুন জাতের চাষ বেশি হয়। প্রতি কানি জমিতে খরচ পড়ে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা, আর বেগুন পাওয়া যায় দেড় লক্ষাধিক টাকার। এসব বেগুন পাইকারী বিক্রেতারা মাঠ থেকে কেনে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নিয়ে যায়। এখানে চাষিরা রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের পরিবর্তে জৈব সার, বালাইনাশক ও সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করে বেগুন উৎপাদন করায় জেলা জুড়ে আনোয়ারার বেগুনের চাহিদা বেশি।
বরুমচড়া নলদিয়া এলাকার চাষী মোহাম্মদ ইয়াছিন (৩৭) বলেন, ‘আমি দুই কানি জমিতে বেগুন চাষ করেছি। এতে আমার প্রায় ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এ পর্যন্ত লক্ষাধিক টাকার বিক্রি করেছি, আরো দেড় লক্ষা টাকার মতো বেগুন পাওয়া যাবে। সবকিছু ঠিক থাকলে অন্যান্য সবজি থেকে আমার দ্বিগুণ লাভ হতে পারে।
উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা ছরোয়ার আলম বলেন, বেগুন একবার রোপন করলে দুই মাস পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। প্রতি কানি জমিতে ৪.৮ মেট্রিক টন বেগুন পাওয়া যায়। যার বাজার মূল্য ৯৬ হাজার টাকা। অন্যান্য সবজির চেয়ে বেগুনে বেশি লাভ তাই চাষিদের বেগুন চাষে আগ্রহ বাড়ছে।
আনোয়ারা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমজান আলী বলেন, চলতি বছর বেগুনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ হাজার মেট্রিক টন। চাষিদের আগ্রহ বাড়াতে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। কৃষি অফিসের মাঠ কর্মীরা কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিচ্ছে।