নদী পাড়ের বাসিন্দাদের কাছে এক আতঙ্কের
নাম ভাঙন। দেশে প্রতিবছরই বিস্তীর্ণ এলাকা নদীভাঙনের শিকার হয়। চট্টগ্রামের আনোয়ারার
জুঁইদন্ডী ও রায়পুর ইউনিয়নে বঙ্গোপসাগরে চলমান নিম্নচাপের প্রভাবে ভারী বর্ষণ ও জোয়ারের
কারণে শঙ্খ নদের তীরে তীব্র ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায় দুই কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ
বাঁধের ব্লকসহ নদে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে সাগর ও সাগর সংলগ্ন নদ-নদীর লবণাক্ত পানিতে
ক্ষতির আশংকা করছেন কৃষকরা।
কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের
প্রভাবে জোয়ারের ৩ থেকে ৫ ফুট পানিতে প্লাবিত হয় জুঁইদন্ডী ইউনিয়ন ও রায়পুর ইউনিয়নের
সরেঙ্গাসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম। বিভিন্ন এলাকায় জোয়ারের পানি প্রবেশ করে বেঁড়িবাধ, বসতঘরসহ
কৃষকদের ফসলি জমি বিলীন হয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) সরেজমিনে গিয়ে
দেখা যায়, আনোয়ারা উপজেলার জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের মাঝির ঘাট থেকে পূর্ব জুঁইদন্ডী ঘাটঘর,
পেঠান মাঝির বাড়ি এলাকার দুই কিলোমিটার বেড়িবাঁধসহ মানুষের ঘরবাড়ি ও ফলসি জমির তীব্র
ভাঙন দেখা দিয়েছে। হাজিবাজার থেকে জহির সিকদার বাড়ি, বানুর হাট থেকে গোদারপাড় এবং রায়পুর
ইউনিয়নের শঙ্খ নদের দক্ষিণ সরেঙ্গার ১০০ মিটার বেড়িবাঁধের নিচের অংশে ব্লক নদে বিলীন
হয়ে সৃষ্টি হয়েছে ভাঙনের।
জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের বাসিন্দা আবদুর রহমান
বলেন, বন্যার পানির ঢলে নদীর স্রোতে আমার ১০ শতক কৃষি জমিসহ আমার ভাইয়ের বসতঘর নদীগর্ভে
বিলীন হয়ে গেছে। এখন ভাড়া বাসায় জীবনযাপন করছে আমার স্বজনরা। ভাঙনের আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে
আমাদের।
রায়পুর ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল্লাহ আল
নোমান জানান, 'পানির আঘাতে দক্ষিণ সরেঙ্গা গ্রামের ১০০ মিটার বাঁধের ব্লক ভেঙে গেছে।'
জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি
সদস্য কফিল উদ্দিন বাবু বলেন, জুঁইদন্ডী গ্রামের প্রায় তিন কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে
যাচ্ছে। সামনে পূর্ণিমার জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেলে সরেঙ্গা গ্রাম পানিতে তলিয়ে যাবে।
দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।'
জুঁইদন্ডী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ
ইদ্রিছ বলেন, 'শঙ্খনদে ভাঙনে জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি
নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে বাঁধে। বিষয়টি ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী
জাবেদ এমপি মহোদয়কে জানানোর পর তিনি তিনি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে দ্রুত জিও ব্যাগ ও সংস্কারের
নির্দেশ দেন। আশা করছি পানি উন্নয়ন বোর্ড দ্রুত কাজ শুরু করবে।'
চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী
প্রকৌশলী শওকত ইবনে শহীদ বলেন, 'শঙ্খনদের ভাঙনে বেড়িবাঁধের অংশে জিও ব্যাগ এবং সংস্কার
কাজ শুরু করা হবে শীঘ্রই।'