আজঃ বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪
শিরোনাম

আওয়ামী লীগের অনিবার্যতা: শ ম রেজাউল করিম

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৪ জুন ২০২১ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৪ জুন ২০২১ | অনলাইন সংস্করণ
Image
বাংলাদেশের বয়স এখন ৫০। এই ৫০ বছরে অনেক উত্থান-পতন ও নিদারুণ দুঃসময় পেছনে ফেলে এ পর্যন্ত সাড়ে ২৩ বছর রাষ্ট্র ক্ষমতায় থেকে সরকার পরিচালনার সুযোগ পেয়েছে আওয়ামী লীগ

১৯৪৯ সালের ২৩ জুন বিকালে ঢাকার কে এম দাস লেনের রোজ গার্ডেনে গঠিত হয় একটি নতুন রাজনৈতিক দল। যার নাম দেওয়া হয় পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ। পরে সে দলটিরই নাম হয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ৭২ বছরের পথচলায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ হয়ে ওঠে বাঙালি জাতির আশা-আকাক্সক্ষার মূর্ত প্রতীক, জাতীয়তা বিকাশের সূতিকাগার, স্বাধিকার আদায়ের স্বপ্নসারথি আর মুক্তির সংগ্রামের ধারক ও বাহক। শুধু মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনই নয়, বাঙালি জাতির প্রায় সব অর্জনে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। আর এ দলটি সংগঠিত করা থেকে শুরু করে গৌরবময় উচ্চতায় পৌঁছে দেওয়া পর্যন্ত ক্রমবিবর্তনের ধারায় যিনি ছিলেন প্রাণভোমরা, তিনি বাঙালি জাতির প্রবাদপুরুষ, ইতিহাসের মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালি জাতির ইতিহাসের প্রতিটি বাঁকে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ শুধু প্রাসঙ্গিকই নয় বরং অপরিহার্য। বঙ্গবন্ধু, আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশের সৃষ্টি ও ধারাবাহিক সমৃদ্ধি একই সূত্রে গ্রথিত। বর্ণাঢ্য ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ ৭২ বছরের এ রাজনৈতিক দলটির হাত ধরে আজ বাংলাদেশ এমন এক পর্যায়ে উপনীত যে বলতেই হয়, শাবাশ বাংলাদেশ! এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়। আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট বিবেচনায় যে ইতিহাস সামনে আসে তা হলো, ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ বিভক্ত হয়ে পাকিস্তান সৃষ্টির পর ঢাকায় মুসলিম লীগের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতেন মাওলানা আকরম খাঁ ও খাজা নাজিমুদ্দিন। সোহরাওয়ার্দী-আবুল হাশিম নেতৃত্বাধীন বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের অনুসারী যে উদারপন্থি নেতারা ছিলেন তাঁরা নিজেদের অবহেলিত মনে করছিলেন। কলকাতা থেকে এসে শেখ মুজিবুর রহমান তাঁদের সঙ্গে যুক্ত হন। তখন টাঙ্গাইলে শূন্য হওয়া একটি আসনের উপনির্বাচনে দুই দফায় মুসলিম লীগ প্রার্থীকে হারিয়ে দিয়েছিলেন মওলানা ভাসানী ও শামসুল হক। কিন্তু তাঁদের দুজনের নির্বাচনী ফলই অবৈধ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন! তখন তাঁরাও এসে এই মুসলিম কর্মীদের সঙ্গে মিলে নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠনের কথা ভাবতে শুরু করেন। রোজ গার্ডেনে অনুষ্ঠিত সভায়ই ২৩ জুন বিকালে আড়াই শ-তিন শ লোকের উপস্থিতিতে নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর প্রস্তাব অনুযায়ী সে দলের নামকরণ হয় পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ। পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন যুগ্মসম্পাদক হন সে সময়ের কারাবন্দী তরুণ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু তাঁর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ সৃষ্টির প্রেক্ষাপট লিখেছেন এভাবে- কর্মী সম্মেলনের জন্য খুব তোড়জোড় চলছিল। আমরা জেলে বসে সেই খবর পাই। ১৫০ নম্বর মোগলটুলীতে অফিস হয়েছে। ...আমরা সম্মেলনের ফলাফল সম্বন্ধে খুবই চিন্তায় দিন কাটাচ্ছিলাম। আমার সাথে যোগাযোগ করা হয়েছিল, আমার মত নেওয়ার জন্য। আমি খবর দিয়েছিলাম, আর মুসলিম লীগের পিছনে ঘুরে লাভ নাই। এই প্রতিষ্ঠান এখন গণবিচ্ছিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। ...এরা কোটারি করে ফেলেছে। একে আর জনগণের প্রতিষ্ঠান বলা চলে না। ...আমাকে আরও জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, আমি ছাত্রপ্রতিষ্ঠান করব, না রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান গঠন করা হলে তাতে যোগদান করব? আমি উত্তর পাঠিয়েছিলাম, ছাত্র রাজনীতি আমি আর করব না, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানই করব। কারণ বিরোধী দল সৃষ্টি করতে না পারলে এ দেশে একনায়কত্ব চলবে।

বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী থেকে এটি স্পষ্ট, রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠার পেছনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা ছিল। একই সঙ্গে তৎকালীন শাসক গোষ্ঠীর শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে বাঙালির ঐক্যবদ্ধ জাগরণের একটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফরম হিসেবে তিনি দূরদৃষ্টি দিয়ে আওয়ামী লীগ সৃষ্টিকে ভেবে রেখেছিলেন। নবসৃষ্ট আওয়ামী লীগের দায়িত্ব পেয়ে একই বছরের সেপ্টেম্বরে তিনি ছাত্রলীগের নতুন ও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে দেন এবং আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রসারে মনোনিবেশ করেন। দেশজুড়ে কর্মী সংগ্রহ ও দলীয় প্রচারণার কাজ করতে হয় বঙ্গবন্ধুকে। নিজের দূরদর্শিতা, চিন্তা-চেতনা আর অসাধারণ নেতৃত্বগুণে মাত্র ৩০ বছর বয়সেই আওয়ামী লীগের অপরিহার্য মুখ হয়ে ওঠেন বঙ্গবন্ধু। তাঁর কথায় মুগ্ধ হয়ে ১৯৫০ সালের ১৮ ও ১৯ মার্চ নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠন করেন অখন্ড বাংলার শেষ মুখ্যমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। পাকিস্তানজুড়ে একটি রাজনৈতিক আবহ সৃষ্টি হয়। বঙ্গবন্ধুর উদ্যোগে প্রাদেশিক দল থেকে পুরো পাকিস্তানের জাতীয় দলে পরিণত হয় আওয়ামী লীগ।

১৯৫৩ সালে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং একজন বাঙালি নেতা হিসেবে তাঁর আবির্ভাব হয়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বঙ্গবন্ধুর সাংগঠনিক তৎপরতায় ছিল তাঁর দূরদর্শী রাজনৈতিক সচেতনতা। ফলে তিনি আওয়ামী লীগকে মাটি ও মানুষের কাছাকাছি নিয়ে যেতে সক্ষম হন। বাংলার মানুষের ন্যায়সংগত দাবি-দাওয়া ও অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে তিনি পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আপসহীন আন্দোলন গড়ে তোলেন। ১৯৫৫ সালে সাধারণ সম্পাদক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সব ধর্মের মানুষের অন্তর্ভুক্তি এবং অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে দলের নাম থেকে মুসলিম শব্দটি প্রত্যাহার করে নাম রাখা হয় আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এটি ছিল অত্যন্ত সাহসী একটি সিদ্ধান্ত, যার মাধ্যমে রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের অসাম্প্রদায়িক চেতনায় নবযাত্রা সূচিত হয়। ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু  লাহোরে বিরোধী দলগুলোর জাতীয় সম্মেলনে ঐতিহাসিক ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন। প্রস্তাবিত ছয় দফা ছিল বাঙালি জাতির মুক্তিসনদ। এ ছয় দফা মুক্তিকামী বাঙালি জাতির জন্য অর্থনৈতিক ও সামাজিক মুক্তির বীজ বুনে দেয়, পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসনের গোড়ায় আঘাত করে। ১৮-২০ মার্চ আওয়ামী লীগের কাউন্সিল মিটিংয়ে বঙ্গবন্ধুকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ছয় দফার পক্ষে জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে তখন তিনি সারা বাংলায় গণসংযোগ সফর শুরু করেন। এ সময় তাঁকে আটবার গ্রেফতার করা হয় এবং সর্বশেষ ৮ মে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়। এ সময় প্রায় তিন বছর বঙ্গবন্ধু কারান্তরিন ছিলেন। ১৯৬৮ সালের ৩ জানুয়ারি আইয়ুব সরকার মোট ৩৫ জন বাঙালির (রাজনীতিবিদ, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, সরকারি অফিসার) বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এনে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করে। জেলে বন্দী থাকা অবস্থাতেই ১৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর ওপর পুনরায় গ্রেফতার আদেশ জারি করা হয়। ভারতের সহায়তায় পাকিস্তান বিচ্ছিন্ন করার অভিযোগে বঙ্গবন্ধুকে ১ নম্বর আসামি করে মোট ৩৫ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিব ও অন্যান্য মামলা দায়ের করা হয়। ১৯৬৯ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার এবং বঙ্গবন্ধুর মুক্তি দাবিতে দেশব্যাপী টানা গণআন্দোলনের মুখে আইয়ুব সরকার ২২ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধুসহ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার সব বন্দীকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। ২৩ ফেব্রুয়ারি রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) এক বিশাল ছাত্র সমাবেশে লাখো শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ শেখ মুজিবুর রহমানকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করে। একই বছর ৫ ডিসেম্বর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আওয়ামী লীগের এক জনসভায় বঙ্গবন্ধু পূর্ব পাকিস্তানের নাম রাখেন বাংলাদেশ। এরপর ১৯৭০-এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ পাকিস্তানের জাতীয় সংসদে ৩১৩ আসনের বিপরীতে ১৬৭ আসন পেয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। ১৯৭০-এর নির্বাচন শুধু বাঙালি জাতির জন্য একটি টার্নিং পয়েন্টই ছিল না, আওয়ামী লীগের জন্যও ছিল গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের শাসক গোষ্ঠীর ক্ষমতা হস্তান্তর না করা এবং তার পরিণতিতে অসহযোগ আন্দোলন, ৭ মার্চ ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক, ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা, নয় মাসের রক্তক্ষয়ী জনযুদ্ধ শেষে দীর্ঘ শোষণ ও বঞ্চনার অবসানে ১৬ ডিসেম্বর বাঙালির চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। বঙ্গবন্ধুর সুদীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রাম, দূরদর্শী চেন্তা-চেতনা, আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে গ্রহণযোগ্যতা ও আপসহীন নেতৃত্বে বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়ায় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু ২৩ বছরের পাকিস্তানি জিঞ্জির থেকে বাঙালি জাতিকে মুক্ত করে কেবল একটি নতুন রাষ্ট্রের জন্মই দিতে চাননি, আধুনিক, শোষণমুক্ত ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠারও স্বপ্ন দেখেছিলেন। যেটি ছিল বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা

স্বাধীনতা অর্জনের পর ৭২ সালের ৮ জানুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করে ১০ জানুয়ারি প্রিয় স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন বাঙালির মুক্তিদূত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দেশে ফিরে সাড়ে তিন বছরের শাসনকালে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে মনোযোগী হন জাতির পিতা। দেশ পুনর্গঠনে শুরুতেই জাতির পিতা যে য়টি বিষয়ে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছিলেন তার অন্যতম ছিল দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা। কারণ জাতির পিতা এ দেশের জনগণের মুক্তির জন্য, অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করেছিলেন। দেশকে স্বাধীন করেছিলেন। এরই অংশ হিসেবে ৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে স্বাধীনতার ১০ মাসের মধ্যেই প্রণয়ন করা হয় সংবিধান। এর মাধ্যমে তিনি চেয়েছিলেন দীর্ঘদিন ধরে শোষিত ও নিপীড়িত বাঙালি জাতিকে বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে মুক্তি দিতে, চেয়েছিলেন মানুষের মৌলিক মানবাধিকারের নিশ্চয়তা দিতে। মাত্র সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে অনেক অভ্যন্তরীণ দুর্বৃত্তায়ন এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে দেশকে প্রায় গুছিয়ে আনেন তিনি। কিন্তু এর মধ্যেই বাংলার আকাশে নামে দুর্ভোগের ঘনঘটা। ৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে সপরিবারে হত্যা করা হয় সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।

স্বৈরশাসকরা যখন আওয়ামী লীগ ভেঙে দেওয়ার জন্য নানাবিধ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, ঠিক তখনই নেতা-কর্মীদের আহ্‌বানে দলের হাল ধরেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। ১৯৮১ সালের ১৭ মে জীবনের মায়া উপেক্ষা করে দল ও দেশকে বাঁচাতে দেশে ফেরেন তিনি। স্বাধীনতাবিরোধীদের আগ্রাসনে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ বা বঙ্গবন্ধুর নাম নেওয়া একরকম নিষিদ্ধই ছিল এ দেশে। নানা প্রতিবন্ধকতা প্রতিহত করে আবার রাজনীতিতে ফেরা সহজ ছিল না আওয়ামী লীগের জন্য। কিন্তু আওয়ামী লীগ জনগণের দল। জনগণের চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতেই আবার পুনর্জীবন হয় আওয়ামী লীগের। ১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারিতে দলের কাউন্সিলে সর্বসম্মতিক্রমে সভাপতির দায়িত্ব পান বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। দলীয় প্রধান হয়ে ১৯ মে দেশে ফেরেন তিনি। স্বৈরাচারী বাহিনী ও স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি সে সময় তাঁর বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত টানা নয় বছর রাজপথে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। পঞ্চম জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতা নির্বাচিত হন জননেত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকারব্যবস্থা পরিবর্তন করে সংসদীয় সরকারব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তনের জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চাপ সৃষ্টি করে আওয়ামী লীগ। ফলে ফিরে আসে সংসদীয় গণতন্ত্র। পরে ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিএনপির একটি সাজানো নির্বাচনের বিরুদ্ধে তিনি গণআন্দোলন গড়ে তোলেন। এ আন্দোলনের মুখে ৩০ মার্চ তৎকালীন খালেদা জিয়ার সরকার পদত্যাগে বাধ্য হয় এবং জুনে অনুষ্ঠিত সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গণতন্ত্রের মানসকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিপুল ভোটে জয়লাভ করে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। ২১ বছর পর আবার আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে পথ হারানো বাংলাদেশ সঠিক পথে চলতে শুরু করে। প্রধানমন্ত্রী হয়েই দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি বণ্টনে ৩০ বছর মেয়াদি চুক্তি করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। ১৯৯৭ সালে পার্বত্য শান্তিচুক্তি করে কয়েক দশক ধরে চলা পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নেন। ১৯৯৮ সালের বন্যায় আওয়ামী লীগ সরকার ২ কোটি বন্যার্ত মানুষের কাছে বিনামূল্যে খাদ্য সহযোগিতা পৌঁছে দিয়ে বিশ্বমানচিত্রে অনন্য নজির স্থাপন করেন। তলাবিহীন ঝুড়ি হিসেবে একসময় অভিহিত বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তোলেন তিনি। বঙ্গবন্ধু বাঙালির মুক্তির জন্য জীবনের প্রায় ১৪টি বছর কারান্তরালে ছিলেন। আর তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা স্বাধীন দেশে বাঙালির অধিকার আদায় ও গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য অন্তত ১৯ বার মৃত্যুর মুখোমুখি হন। ২০০৭ সালে সুশীলসমাজের ছদ্মবেশে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা কুক্ষিগত করে দেশের বৃহত্তম দল আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে দূরে সরানোর অপচেষ্টা শুরু হয়। মিথ্যা মামলায় ২০০৭ সালে দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে জেলে ঢোকানোর পর একের পর এক ১৩টি মামলা সাজানো হয় তাঁর নামে। পরে শেখ হাসিনার মুক্তির জন্য গণজোয়ার সৃষ্টি হওয়ায় জননেত্রীর জনপ্রিয়তা ও ব্যক্তিত্বের সামনে কুচক্রীদের সব ষড়যন্ত্র ও অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়। ২০০৮ সালের ১১ জুন জনগণের নেত্রী শেখ হাসিনাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় তারা। জেল থেকে বের হয়ে গণমানুষের ভাগ্য বদলের জন্য দিন বদলের সনদ’ ঘোষণা করেন শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে আয়োজিত জাতীয় নির্বাচনে একচেটিয়া জয়লাভ করে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোট। জোটের মোট অর্জিত ২৬৭ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগই পায় ২৩০টি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রেখে, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ও রূপকল্প ২০২১ ঘোষণা করে ২০১৪ সালের নির্বাচনেও জয়লাভ করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এ ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে টানা তৃতীয়বার সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ সরকারের টানা তিন মেয়াদে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। অর্থনৈতিক, মানব উন্নয়ন, সামাজিক সব সূচকে আমরা পাকিস্তানকে অতিক্রম করেছি, অনেক সূচকে আমরা প্রতিবেশী ভারতকেও ছাড়িয়ে গেছি। দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাওয়া নিয়ে এখন বিশ্বব্যাপী চলছে প্রশংসা। আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনাকে সরকার গঠন করার সুযোগ দিয়েছিল বলেই সমগ্র বাংলাদেশ আজ উন্নয়ন, অগ্রগতি এবং সমৃদ্ধি অর্জনের পথে অদম্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশের বয়স এখন ৫০। এই ৫০ বছরে অনেক উত্থান-পতন ও নিদারুণ দুঃসময় পেছনে ফেলে এ পর্যন্ত সাড়ে ২৩ বছর রাষ্ট্র ক্ষমতায় থেকে সরকার পরিচালনার সুযোগ পেয়েছে আওয়ামী লীগ। এ সাড়ে ২৩ বছরের মধ্যে ২০ বছরের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর অদম্য নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকারের হাত ধরেই দেশ থেকে দূর হয়েছে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য। গত এক যুগে দেশের মানুষের আর্থিক অবস্থায় অভাবনীয় পরিবর্তন এসেছে। বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময় মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৫৪৩ ডলার, আওয়ামী লীগ সরকারের টানা এক যুগে তা চার গুণ বৃদ্ধি হয়েছে। দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় এখন ২ হাজার ২২৭ মার্কিন ডলার। মাথাপিছু আয়ের পাশাপাশি মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) পরিমাণও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ লাখ ৮৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকায়। এমনকি করোনা মহামারী মোকাবিলা করেও স্থিতিশীল রাখা সম্ভব হয়েছে দেশের অর্থনীতি। ২০২১-২২ অর্থবছরে বাজেটের আকার ৬ লাখ ৩ হাজার ৩৮১ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি হয় ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ। ২০২১ সালে দেশে রেকর্ড পরিমাণ ২২ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রেকর্ড ৪৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক সক্ষমতা, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও ক্ষমতা বৃদ্ধি, দেশের টেকসই অর্থনীতির ভিত্তি গড়ে ওঠায় স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘ।

লেখক: সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, বর্তমানে মন্ত্রী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।


আরও খবর



কাল খুলছে অফিস-আদালত, বাস-ট্রেনে শহরমুখী মানুষের ভিড়

প্রকাশিত:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ঈদ ও পহেলা বৈশাখের ছুটি শেষ হচ্ছে। দুই উৎসবকে কেন্দ্র করে ১০-১৪ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ছুটি চলছে। টানা পাঁচ দিন ছুটি শেষে সোমবার (১৫ এপ্রিল) খুলছে অফিস-আদালত, ব্যাংক-বিমা ও শেয়ারবাজার। এরইমধ্যে ঈদ উদযাপন শেষে রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছেন কর্মজীবীরা।

রবিবার (১৪ এপ্রিল) সকাল থেকে ঢাকায় প্রবেশ করা প্রতিটি ট্রেনে ছিল যাত্রীদের ভিড়। প্রিয়জনের সঙ্গে সুখস্মৃতি নিয়ে ফেরা সাধারণ মানুষ বলছেন নির্বিঘ্নে রাজধানীতে ফিরতে পারছেন তারা।

মাথায় কাজের তাড়না, মননে প্রিয়জনের সঙ্গে কাটানো সুখস্মৃতি। ফেলে আসা আপনজন আর ঈদের আনন্দ। সব পেছনে ফেলে আবারো কর্মব্যস্ত হয়ে উঠবে রাজধানী। তবে স্কুল-কলেজ যেহেতু খুলছে আগামী সপ্তাহে, তখন রাজধানী স্বাভাবিকরূপে ফিরবে বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে যারা, নানা ব্যস্ততায় ঈদের ছুটিতে গ্রামে যেতে পারেননি তারাও ছুটছেন প্রিয়জনের সান্নিধ্য পেতে।


আরও খবর



ঢাকার বাতাসের মান আজও ‘অস্বাস্থ্যকর’

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

আজও ঢাকার বাতাসের মান অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকাল ৮টা ৫৯ মিনিটে ১৫৬ এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শহরটির অবস্থান নবম।

পাকিস্তানের লাহোর, ভারতের দিল্লি ও নেপালের কাঠমান্ডু যথাক্রমে ২০৬, ১৯১ ও ১৭৮ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার প্রথম তিনটি স্থান দখল করেছে।

১০১ থেকে ১৫০ এর মধ্যে হলে বাতাসের মান সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’, ১৫১ থেকে ২০০ এর মধ্যে একিউআই স্কোরকে অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়।

২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়, ৩০১+ একিউআই স্কোরকে ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের ৫টি বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে। সেগুলো হলো- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)।

দীর্ঘদিন ধরে বায়ু দূষণে ভুগছে ঢাকা। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।


আরও খবর



শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে স্থায়ী জামিন চাইবেন ড. ইউনূস

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আদালত প্রতিবেদক

Image

শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের করা মামলায় ছয় মাসের সাজাপ্রাপ্ত নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়ে স্থায়ী জামিন চাইবেন বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকালে ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে স্থায়ী জামিন চাইবেন বলে নিশ্চিত করে ড. ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের করা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের জামিনের মেয়াদ শেষ পর্যায়ে। তাই এ মামলায় ড. ইউনূস মঙ্গলবার শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে স্থায়ী জামিন চাইবেন।

ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, মঙ্গলবার শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে সাজার বিরুদ্ধে ড. ইউনূসের আপিল শুনানি হবে বলেও জানান তিনি। সকাল ১০টার পর তিনি আদালতে উপস্থিত হতে পারেন বলেও জানান এ আইনজীবী।

গত ৩ মার্চ ড. ইউনূসসহ চারজনের জামিনের মেয়াদ বাড়িয়েছিলেন শ্রম আপিলের ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য ১৬ এপ্রিল দিন ধার্য করেন আদালত। শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এম এ আউয়াল এ আদেশ দেন।

ওইদিন পর্যন্ত চারজনের জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে বলে জানান আইনজীবীরা। অপর তিনজন হলেন-গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।

আদালতে ওইদিন ড. ইউনূসসহ চারজনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার খাজা তানভীর আহমেদ ও এস এম মিজানুর রহমান। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দায়িত্বরত চিফ প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী। এ সময় ড. ইউনূসসহ অন্য তিন বিবাদী গ্রামীণ টেলিকমের এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এই মামলায় ১ জানুয়ারি ড. ইউনূসসহ চারজনকে ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সাজাপ্রাপ্ত অপর তিনজন হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।

রায় ঘোষণার পর উচ্চ আদালতে আপিল করার শর্তে ড. ইউনূসসহ চারজনকে এক মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছিলেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত। ২০২১ সালের ১ সেপ্টেম্বর ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে শ্রম ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করা হয়। গত বছরের ৬ জুন মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়। গত বছরের ২২ আগস্ট সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়, যা শেষ হয় ৯ নভেম্বর। গত ২৪ ডিসেম্বর যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হয়।

মামলায় অভিযোগ আনা হয়, শ্রম আইন ২০০৬ ও শ্রম বিধিমালা ২০১৫ অনুযায়ী, গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক বা কর্মচারীদের শিক্ষানবিশকাল পার হলেও তাদের নিয়োগ স্থায়ী করা হয়নি। প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিক বা কর্মচারীদের মজুরিসহ বার্ষিক ছুটি, ছুটি নগদায়ন ও ছুটির বিপরীতে নগদ অর্থ দেওয়া হয়নি। গ্রামীণ টেলিকমে শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল ও কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়নি। লভ্যাংশের ৫ শতাংশের সমপরিমাণ অর্থ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন আইন অনুযায়ী গঠিত তহবিলে জমা দেওয়া হয়নি।


আরও খবর



অপহরণে জড়িত থাকলে আমার স্বজনরাও ছাড় পাবে না: পলক

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
রাজশাহী প্রতিনিধি

Image

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (রামেক) ৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন নাটোর সিংড়া উপজেলার অপহৃত ও নির্যাতনের শিকার চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন।

অপহৃত ও নির্যাতনে জড়িতদের প্রসঙ্গে পলক বলেন, চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণ ও নির্যাতনের ঘটনার সাথে যারাই জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবে। এখানে মন্ত্রীর আত্মীয় স্বজন বলে কেউ ছাড় পাবে না।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকালে রামেক হাসপাতালে দেখতে যান আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এ সময় তার চিকিৎসার খোঁজখবর নেন ও পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে হামলায় জড়িতদের বিচারের আশ্বাস দেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী।

গত সোমবার বিকেলে নাটোর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে সিংড়া উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে মারধর করে একটি মাইক্রোবাসে অপহরণ করে নিয়ে যায় প্রতিমন্ত্রী পলকের শ্যালক সিংড়া উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী লুৎফুল হাবিব রুবেলের অনুসারীরা। পরে সিংড়ার সাঐল গ্রামের নিজ বাড়ির সামনে থেকে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে রাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থার উন্নতির দিকে।

এ ঘটনায় তার বড় ভাই মজিবর রহমান বাদী হয়ে মামলা করলে পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করার পর তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

দেলোয়ার হোসেনের ভাই এমদাদুল হক বলেন, আমার ভাইয়ের অবস্থা এখন কিছুটা ভালো, কথা বলতে পারছে। তবে তার চোখের অবস্থা খুবই খারাপ। চোখ মেলতে পারছে না। চোখে ঝাপসা দেখছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। মন্ত্রী আমার ভাইকে দেখতে এসেছিলেন। তিনি বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন। এখন দেখা যাক মন্ত্রী কি করেন?


আরও খবর



ইসরায়েলের সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা

প্রকাশিত:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম সামরিক শক্তিসম্পন্ন দেশ ইরানের হামলার হুঁশিয়ারির পর থেকে হার্ট অ্যালার্ট জারি করেছে ইসরায়েল। ইতোমধ্যেই হামলার আশঙ্কায় ইসরায়েলের সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সব পাঠ্যক্রম বহির্ভূত শিক্ষা কার্যক্রম বাতিল করেছে তারা। খবর: জেরুজালেম পোস্ট

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান থেকে আক্রমণের জন্য উচ্চ সতর্কতার অংশ হিসেবে এমন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে হামলা প্রতিহত করতে কয়েক ডজন বিমান প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলেও জানিয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।

আইডিএফের মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে আমরা ইরান সমর্থিতদের দ্বারা পাঠানো বিভিন্ন হুমকির সম্মুখীন হয়েছি। সেই অনুযায়ী আমাদের প্রতিরক্ষা ও আক্রমণ ব্যবস্থাকে প্রস্তুত রেখেছি।

গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে তেহরানের কনস্যুলেটে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৭ ইরানি জেনারেল নিহত হয়। ওই ঘটনার জেরে ইসরায়েলে পাল্টা হামলার হুঁশিয়ারি দেয় পারস্য অঞ্চলের দেশটি। যেকোনো সময় ইসরায়েলের যেকোনো স্থাপনায় হামলা চালানো হবে বলে সে সময় হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।


আরও খবর