আজঃ সোমবার ০৬ মে ২০২৪
শিরোনাম

বাহিনীর কোনো সদস্য অপকর্ম করলে তার দায় নেবে না পুলিশ: আইজিপি

প্রকাশিত:বুধবার ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, কোনো পুলিশ সদস্য কোনো ধরনের অপকর্ম করলে বা অপরাধের সাথে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তার দায়ভার পুলিশ বাহিনী বহন করবে না।

মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকা জেলার মিল ব্যারাক পুলিশ লাইনসে ঢাকা রেঞ্জাধীন বিভিন্ন ইউনিটে কর্মরত পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের সঙ্গে বিশেষ কল্যাণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পুলিশের সক্ষমতা রয়েছে। জনগণের জানমাল রক্ষার্থে পুলিশ আইনানুগ দায়িত্ব পালনে প্রস্তুত।

আইজিপি বলেন, পুলিশ জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানের মাধ্যমে জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনে সক্ষম হয়েছে। পুলিশের প্রতি জনগণের প্রত্যাশা বেড়েছে। এ অবস্থা ধরে রাখতে পুলিশ সদস্যদের নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে। আমরা এক সময় দেশে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের উত্থান দেখেছি। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ছিল সন্ত্রাসের জনপদ। ৬৩ জেলায় একসাথে বোমা হামলা হয়েছে। এখন আমরা কি অবস্থা দেখছি? জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতিতে পুলিশ দায়িত্ব পালন করায় দেশে জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, শান্তিপূর্ণ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিরাজ করছে। দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি হয়েছে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দেশের উন্নয়ন হচ্ছে। কোনো পুলিশ সদস্য কোনো ধরনের অপকর্ম করলে বা অপরাধের সাথে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তার দায়ভার পুলিশ বাহিনী বহন করবে না।

সভায় উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা ও সদস্যরা তাদের বিভিন্ন প্রস্তাবনা আইজিপির সামনে তুলে ধরেন। আইজিপি ধৈর্য ধরে তাদের কথা শোনেন এবং সম্ভাব্য সমাধানের আশ্বাস দেন। পরে আইজিপি ঢাকা রেঞ্জের বিভিন্ন ইউনিটে কর্মরত পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভায় মিলিত হন।

ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মো. কামরুল আহসান, স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত আইজিপি মো. মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত আইজিপি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মো.  আতিকুল ইসলাম, ডিআইজি (অপারেশনস) মো. আনোয়ার হোসেন, ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সভায় ঢাকা রেঞ্জাধীন ১৩টি জেলার পুলিশ সুপার ও ৯৮টি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এবং বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।


আরও খবর



ঝালকাঠিতে ট্রাক-প্রাইভেটকার-অটোরিকশার সংঘর্ষে নিহত ১১

প্রকাশিত:বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
ঝালকাঠি প্রতিনিধি

Image

ঝালকাঠিতে ট্রাক-প্রাইভেটকার ও অটোরিকশার সংঘর্ষে ১১ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। বুধবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে ঝালকাঠির গাবখান সেতুর ঢালে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

ঝালকাঠির পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আফরুজুল হক টুটুল গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, সিমেন্টবাহী একটি ট্রাকের চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে সেটি কয়েকটি গাড়িকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তার পাশে চলে যায়। এতে ইজিবাইকের ৭ আরোহী ঘটনাস্থলেই মারা যান। এছাড়া ওই ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে একটি প্রাইভেট কার। যাতে শিশুসহ ৬ জন আরোহী ছিলেন। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাদের উদ্ধারের চেষ্টা করছেন।

এ ঘটনায় হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতদের পরিচয় জানা যায়নি।

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরওএমও) ডা. মেহেদী হাসান সানি জানিয়েছেন, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ৬ জনের মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, টোল প্লাজায় টাকা দেওয়ার অপেক্ষায় ছিল ইজিবাইক, প্রাইভেট কারসহ একাধিক গাড়ি। সিমেন্টবাহী ট্রাকটি সামনে থাকা সব গাড়িকে ধাক্কা দিয়ে প্রতিবন্ধক ভেঙে রাস্তার পাশে চলে যায়।


আরও খবর



চট্টগ্রাম-সন্দ্বীপ নৌ-রুটে শিক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি যাতায়াত সুবিধা

প্রকাশিত:সোমবার ০৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০৮ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

Image

দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপের শিক্ষার্থীদের জন্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হিউম্যান২৪’ এর উদ্যোগে বিনামূল্যে ঈদযাত্রা কর্মসূচি শুরু হয়েছে আজ। সোমবার (৮ এপ্রিল) ঈদযাত্রা কর্মসূচির প্রথম দিনে নৌপথে বিনামূল্যে বাড়ি গেছেন দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী। এ নিয়ে টানা দ্বিতীয় বছর এই কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সংগঠনটি।

কুমিরা-গুপ্তছড়া নৌ-রুটের এমভি আইভি রহমানসহ বেশ কিছু নৌযানে এসব শিক্ষার্থীদের বাড়ি পাঠানো হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের প্রথমে হালিশহর থেকে বাসে করে কুমিরা ঘাটে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাদের সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাটে পৌঁছে দেওয়া হয়।

মোহাম্মদ তারেক নামে হিউম্যান২৪ এর একজন সমন্বয়কারী জানান, নানা কারণে সন্দ্বীপ যাত্রা কিছুটা ব্যয়বহুল ও বেশ কষ্টসাধ্য। শিক্ষার্থীরা যাতে সময় ও অর্থ সাশ্রয় করে বাড়ি ফিরতে পারে সেই জন্য এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে আগামী মঙ্গল ও বুধবার এই কর্মসূচি অব্যহত থাকবে । তিনি আরও জানান, ঈদের পরে তিনদিন সন্দ্বীপ থেকে শিক্ষার্থীদের চট্টগ্রামে পাঠানো হবে।

মোহাম্মদ মোক্তাদির নামক একজন শিক্ষার্থী জানান, ঈদে অনেক সময় টিকিট পাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। হিউম্যান ২৪ এর এই উদ্যোগের ফলে আমাদের বাড়ি ফেরাটা অনেক সহজ হয়ে গেল।

উদ্যোক্তরা জানান, এ কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের একটি অনলাইন ফরম পূরণের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হয়। অফলাইনেও চট্টগ্রামের হালিশহরে দুটি ঠিকানায় নিবন্ধন করতে পারবে।

২০২৩ সালের ঈদুল ফিতরের সময় একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে সন্দ্বীপের শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে বাড়ি ফেরা কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছিল। শিক্ষার্থীদের কাছে জনপ্রিয়তা অর্জনের কারণে এ বছরও তা অব্যাহত রাখা হয়েছে।


আরও খবর



ডিজির অনুপস্থিতিতে এডিজি সাত দিনে হাতিয়ে নিলেন সাড়ে ৭ কোটি টাকা

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

অসুস্থতার কারণে গত বছরের ২২ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ছুটিতে ছিলেন ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি)। সেই ৯ দিন অধিদপ্তরের শীর্ষপদের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে ছিলেন অতিরিক্ত মহাপরিচালক সেলিনা বানু। এর মধ্যে অবশ্য দুদিন ছিল সাপ্তাহিক ছুটি। ফলে সেলিনা বানু ভারপ্রাপ্ত ডিজির দায়িত্ব পালন করেন সাত দিন। আর এটুকু সময়েই আঙুল ফুলে কলাগাছ’ বনে গেছেন তিনি। ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বকালে এক দিনেই ছাড় করেন মাল্টিপল পাসপোর্টের ৫০০ ফাইল। নানা কারণে দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা প্রতিটি ফাইল অনুমোদনের জন্য নিয়েছেন দেড় লাখ টাকা করে। সব মিলিয়ে এই কর্মকর্তা হাতিয়ে নিয়েছেন কমপক্ষে সাড়ে ৭ কোটি টাকা। এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের এনফোর্সমেন্ট টিম সেলিনা বানুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের (ডিআইপি) সরাসরি কর্মকর্তা সেলিনা বানু পাসপোর্ট, ভিসা ও ইমিগ্রেশন বিভাগের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বা এডিজির দায়িত্বে রয়েছেন। প্রশাসন বিভাগের এডিজির পদটি শূন্য থাকায় অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ওই বিভাগের এডিজির দায়িত্বও পালন করছেন। পুরো অধিদপ্তরে তার ওপরে শুধু প্রেষণে আসা মহাপরিচালক রয়েছেন। অধিদপ্তরে সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হওয়ায় তার কথাতেই চলে সবকিছু। অনিয়ম-দুর্নীতিতে এই সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছেন তিনি। অভিযোগ রয়েছে, অনেক সময় তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগের নির্দেশনাও অমান্য করে নিজের মতো ডিআইপির কার্যক্রম চালাচ্ছেন।

পাসপোর্ট অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সেলিনা বানু ভারপ্রাপ্ত ডিজির দায়িত্ব পেয়েই দীর্ঘদিন আটকে থাকা মাল্টিপল পাসপোর্টের ফাইলগুলো ছাড় করাতে তোড়জোড় শুরু করেন। অধিদপ্তরে তার সিন্ডিকেটে থাকা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ফাইলগুলো অনুমোদন দিয়ে পাসপোর্ট প্রিন্ট করতে পাঠানো হয়। প্রতি পাসপোর্ট থেকে দেড় লাখ টাকা করে নিয়ে তা সিন্ডিকেটে ভাগবাটোয়ারা হয়। কথিত আছে, ওই সময়ে পাসপোর্ট ভবনের তলায় তলায় কোরবানি ঈদ’ চলেছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অবগত হলেও বিষয়টি রহস্যজনক কারণে নিশ্চুপ রয়েছেন।

এক ব্যক্তির নামে একাধিক পাসপোর্টকে মাল্টিপল পাসপোর্ট হিসেবে অভিহিত করা হয়। অনেকেই বিদ্যমান পাসপোর্টের তথ্য গোপন রেখে নতুন করে পাসপোর্টের আবেদন করেন। তবে আঙুলের ছাপ নেওয়ার পর স্বয়ংক্রিয় মেশিনে মেলানোর সময় তা আটকে যায়। আবার অনেকে প্রকাশ্যেই তথ্য পরিবর্তন করার জন্য আবেদন করেন। তখন কাগজপত্র যাচাই ও তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, এ ধরনের অন্তত ১২ হাজার আবেদন তদন্তের জন্য জমা পড়ে আছে। এসব আবেদন যাচাই করে পুলিশের বিশেষ শাখার তদন্ত প্রতিবেদন ইতিবাচক হলে আবেদনকারীর বিপরীতে পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগ থেকে সে ধরনের নির্দেশনাও রয়েছে; কিন্তু সেই নির্দেশনা অমান্য করে প্রশাসন বিভাগের দায়িত্বে থাকা এডিজি সেলিনা বানু অধিদপ্তর থেকে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক পরিপত্র জারি করে আটকে থাকা মাল্টিপল পাসপোর্টের আবেদনের বিষয়ে জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন। এরপর নিজের ক্ষমতাবলে টাকার বিনিময়ে পছন্দমতো ফাইল ছাড় করেন।

ওই কর্মকর্তা বলেন, বছরের পর বছর ধরে আটকে থাকা মাল্টিপল পাসপোর্টের হাজার হাজার ফাইলের মধ্যে ৫০০ ফাইল অনুমোদন দেওয়া নিয়ে খোদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যেই সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। তবে সেলিনা বানু প্রভাবশালী কর্মকর্তা হওয়ায় তার বিষয়ে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খোলেন না। অধিদপ্তরের সমন্বয় সভায় এসব বিষয়ে প্রশ্ন তুললেই তার রোষানলে পড়তে হয়। পরে টার্গেট করে কর্মকর্তাদের বদলি বা ন্যূনতম কারণেও বিভাগীয় মামলা ও বদলির মতো হয়রানিতে পড়তে হয়।

অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, সেলিনা বানু পাসপোর্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ পদে রয়েছেন। বদলিজনিত চাকরি হলেও তিনি ঢাকার বাইরে খুব বেশি দায়িত্ব পালন করেননি। এ সুযোগে তিনি একটি শক্তিশালী দালাল সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। তাছাড়া দেশের প্রায় প্রতিটি পাসপোর্ট অফিসে তার নিজস্ব বলয়ের কর্মকর্তা বা কর্মচারী রয়েছেন। বিদেশি মিশনগুলোর কয়েকটিতে পাসপোর্ট অধিদপ্তরেও কর্মী রয়েছে। সেলিনা বানু অধিদপ্তরের প্রশাসনিক প্রধান হওয়ায় সবাই তাকে অতি সমীহ’ করে চলেন। বিভিন্ন পাসপোর্ট অফিস থেকে তার অনুগতরা মাল্টিপল আবেদনগুলো বাছাই করে দিয়েছেন। সেগুলোই মূলত তিনি প্রশাসনিক ক্ষমতাবলে ছাড় করিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

ওই সূত্রটি জানায়, প্রতিটি মাল্টিপল পাসপোর্টের ক্ষেত্রে সেলিনা বানু ও অধিদপ্তরে সিন্ডিকেট নিয়েছে দেড় লাখ টাকা করে। তবে দালাল চক্র ও অন্যান্য জেলা অফিসে তার অনুগত কর্মীরা আবেদনকারীদের কাছ থেকে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা করে নেন। বছরজুড়েই সেলিনা বানু টাকার বিনিময়ে এ ধরনের পাসপোর্ট ইস্যু করে থাকেন। তবে ডিজির অনুপস্থিতিতে একসঙ্গে ৫০০ আবেদন অনুমোদন করায় বিষয়টি জানাজানি হয়।

পাসপোর্ট অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মাল্টিপল আবেদনের সবকিছু ঠিক থাকলেও একজন আবেদনকারী টাকা না দেওয়ায় পাসপোর্ট পাননি। এরপর ওই আবেদনকারী দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) সেলিনা বানুর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। পরে গত ২৫ জানুয়ারি দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম সেলিনা বানুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।

সূত্র জানায়, শুধু মাল্টিপল পাসপোর্টই নয়, সেলিনা বানু সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিদেশি পাসপোর্টধারীদের নো ভিসা রিকোয়ার্ড (এনভিআর) সিল দেওয়ার জন্যও টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এ কাজের জন্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক নাদিরা আক্তারকে ভিসা শাখার দায়িত্বে রেখেছেন। এই কর্মকর্তা সেলিনা বানুর অনুগত হওয়ায় তাকে পার্সোনালাইজেশন সেন্টার থেকে ভিসা শাখার মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সংযুক্ত করে রেখেছেন। প্রতিটি পাসপোর্টের এনভিআর দেওয়ার জন্য ৫০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা করে নিচ্ছে এই সিন্ডিকেট। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কোনো বিদেশি পাসপোর্টধারী দেশে এসে নো ভিসা রিকোয়ার্ডের আবেদন করলে তার আর বাংলাদেশে আসতে কোনো ভিসার প্রয়োজন হয় না।

ওই সূত্রটি জানায়, এই সিন্ডিকেট অবৈধভাবে দেশে বসবাসকারী বিদেশিদেরও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে টাকার বিনিময়ে ভিসা এক্সটেনশন বা মেয়াদ বাড়িয়ে দিচ্ছে। বিশেষ করে আফ্রিকার নাগরিকরা টাকার বিনিময়ে ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে দেশে মাদক কারবারসহ না অনিয়ম করছে।

মাল্টিপল পাসপোর্ট ইস্যু করে সাড়ে ৭ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়ে জানতে এডিজি সেলিনা বানুর দপ্তরে দেখা করার অনুমতি চাওয়া হয়; কিন্তু তিনি সময় দেননি। পরে তাকে খুদে বার্তা পাঠিয়ে অভিযোগের বিষয়ে টেলিফোনে তার বক্তব্য চাওয়া হয়। তবে তিনি গণমাধ্যমে কোনো কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এরপর তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পর্কে জানানো হলে তিনি বলেন, আমার বিষয়ে অভিযোগ থাকলেও আমি তো বক্তব্য দিতে পারব না, আমি তো পত্রিকায় বক্তব্য দিতে পারি না।’

বেনামি চিঠিতে গুরুতর তথ্য সেলিনা বানুর বিরুদ্ধে:

এদিকে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী অভিযোগ তুলেছেন, সেলিনা বানুর অপকর্ম নিয়ে কথা বললেই তাদের ওপর খড়্গ নেমে আসে। এ জন্য মুখ না খুলে আতঙ্কিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সম্প্রতি মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও দেশের প্রায় সব পাসপোর্ট অফিসে বেনামি চিঠি দিয়ে এই কর্মকর্তার দৌরাত্ম্য থেকে নিস্তার চেয়েছেন। এসব চিঠিতে সেলিনা বানুর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, সেলিনা বানু পাসপোর্ট অধিদপ্তরে ৩০ বছর ধরে চাকরি করলেও তিনি ৬৪ জেলার কোথাও বদলি হননি। একবার অনিয়মের কারণে তাকে ঢাকার বাইরে বদলি করা হলেও বেশি দিন থাকতে হয়নি। তার স্বামী ঢাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক এ কে এম মাসুদুল হক রিজভী জামায়াতের পদধারী। যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হওয়া কামারুজ্জামান তাদের স্বজন। শুধু তাই নয়, জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর পর হাসপাতালেও ছুটে গিয়েছিলেন এই দম্পতি।

চিঠিতে বলা হয়, এডিজি সেলিনা বানুর বাড়ি জামালপুরে। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুরে রেলে নাশকতার ঘটনায় তার স্বজনরাও জড়িত।

ওই চিঠির সূত্র ধরে সেলিনা বানুর গ্রামের বাড়িতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তার পরিবারের কেউ সরকার সমর্থক নয়। তার স্বামী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সময়ে শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তার পরিচিত কয়েক শিক্ষক এবং সরকার সমর্থিত শিক্ষকদের একাধিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে, হিসাববিজ্ঞানের শিক্ষক মাসুদুর রহমান কখনো স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বলয়ে ছিলেন না। তবে প্রকাশ্যে তাকে রাজনীতিতে সক্রিয় দেখা যায় না।

সেলিনা বানু আতঙ্কে পুরো পাসপোর্ট অধিদপ্তর:

অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গত দুই বছরে এডিজি সেলিনা বানু আইফোন ও ল্যাপটপ নিয়ে কর্মকর্তাদের কয়েকটি প্রাইজ পোস্টিং দেন। তার আর্থিক চাহিদা পূরণ করতে না পারলে দেশের প্রত্যন্ত জেলাগুলোতে বদলি হতে হয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। দেওয়া হয় কম গুরুত্বপূর্ণ পদ। কয়েক বছর আগে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে তার ভাইয়ের চিকিৎসার খরচ চালাতে হয়েছে ময়মনসিংহসহ ওই এলাকার বিভিন্ন পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তাদের। বিভিন্ন সময়েই কর্মকর্তাদের উপঢৌকন দিতে হয়। তিনি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তার অনুগত করতে সামান্য ভুলেও বিভাগীয় মামলা, নানা সংস্থা দিয়ে তদন্ত করার ভয় দেখানোসহ নানাভাবে হুমকি দেন। উড়ো চিঠিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব অনিয়ম থেকে রক্ষা পেতে আবেদন জানিয়েছেন।

পাসপোর্ট অধিদপ্তরে সেলিনা বানুর নানা অনিয়ম কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মুখে মুখে। তবে কেউ গণমাধ্যমে প্রকাশ্যে মুখ খোলেন না। সবাই নাম প্রকাশ না করে তার অপকর্ম তুলে ধরেন।

সরকার সমর্থক না হয়েও সেলিনা বানু এত প্রভাবশালী কীভাবে? সে বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা সব সময়েই কৌশলে চলেন। যখন যে মহাপরিচালক দায়িত্বে আসেন, তিনি কৌশলে তার লোক হয়ে যান। নিজেকে সৎ কর্মকর্তা হিসেবে প্রচার চালায় তার অধিনস্তরা। তা ছাড়া মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগেও কিছু কর্মকর্তাকে নানাভাবে ম্যানেজ করে তিনি পুরো অধিদপ্তরই নিজের নিয়ন্ত্রণে রেখে নানা অনিয়ম করে চলেছেন।


আরও খবর



ডিএমপির এক এডিসি ও তিন এসির বদলি

প্রকাশিত:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) পদ মর্যাদা এক কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। একই আদেশে ডিএমপির তিন সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) পদ মর্যাদার কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ডিএমপি জানায়, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের স্বাক্ষরিত অফিস এক আদেশে ডিএমপির এডিসি পদ মর্যাদা এক কর্মকর্তাকে ও এসি পদ মর্যাদর তিন কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। অবিলম্বে এ আদেশ কার্যকর করা হবে।

নিউজ ট্যাগ: ডিএমপি

আরও খবর



যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় আসতে মরিয়া বিএনপি: কাদের

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় আসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাদের নেতারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। বিবৃতিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিবৃতির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির বোধগম্য হয় না যে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণের কাতারে দাঁড়িয়ে রাজনীতি করে; জনকল্যাণে পরিকল্পনা গ্রহণ ও কর্মসূচি নির্ধারণ করে। আমরা সর্বদা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি গণবিরোধী রাজনীতি করে আসছে। রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালে তারা জনগণকে শত্রুজ্ঞান করে শাসন-শোষণ ও অত্যাচারের স্টিম রোলার চালিয়েছিল। সন্ত্রাস ও উগ্র-জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে সারা দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। আর এখন সাংবিধানিকভাবে বৈধ ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগারের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করে জনগণকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যাওয়ার অপচেষ্টা করছে।

বিএনপি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে সরকারবিরোধী তথাকথিত আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস-সহিংসতার পথ বেছে নেয় বলে দাবি করে কাদের বলেন, বিএনপি ও তার দোসরদের সন্ত্রাসী ও ক্যাডারবাহিনী সরকারের সুসমৃণ পথচলা এবং দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করার লক্ষ্যে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের মাধ্যমে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। তাদের প্রধান লক্ষ্যবস্তু দেশের জনগণ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ।

কাদের বলেন, আমরা প্রত্যক্ষ করেছি, পূর্বের ধারাবাহিকতায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের নামেও তারা অগ্নি সন্ত্রাসের মাধ্যমে নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে। আর দেশের আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী ও মহামান্য আদালত জনগণের নিরাপত্তা ও শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বিএনপি নেতারা সেটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালায়।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি প্রকৃতপক্ষে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন, সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া তাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত। বিএনপি ক্ষমতায় থেকে নিজেদের সন্ত্রাসী ও ক্যাডারবাহিনীর পাশাপাশি বাংলা ভাইয়ের মতো দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীর সৃষ্টি করেছিল এবং তাকে রক্ষা করার জন্য বাংলা ভাই মিডিয়ার সৃষ্টি বলে উড়িয়ে দিয়েছিল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত সরকার জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে বদ্ধপরিকর।

বিবৃতিতে কাদের বলেন, শেখ হাসিনা জগদ্দল পাথরের মতো জেঁকে বসা বিচারহীনতার সংস্কৃতির অর্গল ভেঙে বিচারের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। সন্ত্রাসী বা অপরাধী যে-ই হোক তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। রাজনৈতিক বক্তব্যের আড়ালে সন্ত্রাসীদের রক্ষার অপকৌশল সফল হবে না।

নিউজ ট্যাগ: ওবায়দুল কাদের

আরও খবর