বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান
অধ্যাপক মেসবাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, “বিজ্ঞানের হাত
ধরে পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কল্যাণেই বাংলাদেশের উন্নয়ন তড়িৎ গতিতে
সম্পন্ন হচ্ছে। ৪র্থ শিল্পবিপ্লবের অগ্রযাত্রা পদার্থবিজ্ঞানের ভূমিকা ছাড়া সম্ভব নয়।”
আজ বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯
টা ৩০ মিনিটে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শেখ কামাল আইটি
বিজনেস ইনকিউবেটরে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের আয়োজনে দুইদিনব্যাপী ৫মবারের মতো “টেকসই উন্নয়ন
ও প্রযুক্তির জন্য পদার্থবিজ্ঞান” শীর্ষক আন্তর্জাতিক কনফারেন্সের উদ্বোধনী
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, এ ধরনের আন্তর্জাতিক কনফারেন্স
বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানী ও গবেষকদের একসাথে কাজ করার ক্ষেত্র তৈরি করে দেয়। বিগত কয়েক
বছরে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন দ্রুত গতিতে বেড়েই চলেছে। পরিবেশ দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন একইসূত্রে
গাঁথা। ফলশ্রুতিতে, সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের দেশেও আবহাওয়া-পরিবেশের উপর বিরূপ পরিবর্তন
ঘটে চলেছে। যা আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলছে। একইসাথে টেকসই উন্নয়ন বর্তমান
বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত ইস্যু। আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এটা আরও বেশি জরুরি। কারণ
আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। একটা সুন্দর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য
এসব ক্ষেত্রে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষকদের কাজ করতে হবে। ব্লু-ইকোনমিতে বাংলাদেশের
দারুণ সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। গবেষণার মাধ্যমে এই খাতে আমাদের দেশের অগ্রগতিতে প্রত্যক্ষ
অবদান রাখতে সক্ষম হবে।
চুয়েট ভিসি বলেন, পৃথিবীর আচরণ বুঝতে পদার্থবিজ্ঞানের
প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। টেকসই উন্নয়নে পদার্থবিজ্ঞানের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। পদার্থবিজ্ঞান
ছাড়া ইঞ্জিনিয়াররাও পূর্ণতা পায় না। এই ধরনের আন্তর্জাতিক কনফারেন্স থেকে বিভিন্ন দেশের
বিজ্ঞান ও গবেষণার সর্বশেষ অগ্রগতি এবং তাদের সৃজনশীল চিন্তাভাবনা সম্পর্কে আমাদের
শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা যেমন একটা ধারণা পায়, তেমনি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গ্রহণ ও তথ্যের
আদান-প্রদান ঘটে। আমরা এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের দিকে
এগিয়ে যাচ্ছি। আশা করি এই কনফারেন্স থেকে প্রাপ্ত আইডিয়া ও গবেষণালব্ধ জ্ঞানের মাধ্যমে
স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে ভূমিকা রাখবে।
দুই দিনব্যাপী কনফারেন্সে প্রথম দিনে পৃথক
দুটি কী-নোট সেশনে প্রধান বক্তা ছিলেন ভারতের প্রফেসর ড. তনুশ্রী সাহা দাশগুপ্ত ও প্রফেসর
ড. সুশান্ত লাহিড়ী। এছাড়া ৮টি টেকনিক্যাল সেশনে কম্পিউটেশনাল ফিজিক্স, নিউক্লিয়ার ফিজিক্স,
ম্যাটেরিয়ালস সায়েন্স, অ্যাটমোস্ফিয়ারিক ফিজিক্স ও ন্যানো ফিজিক্স প্রভৃতি বিষয়ে আলোচনা
করা হবে। উক্ত কনফারেন্সে ৪টি কী-নোট স্পিস, ১৪টি ইনভাইটেড স্পিস ও ১৪টি টেকনিক্যাল
সেশনে ১১২টি প্রবন্ধ গবেষক এবং ১টি পোস্টার সেশনে ৫৭টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হচ্ছে।
এবারের কনফারেন্সে বাংলাদেশ ছাড়াও যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, ফ্রান্স,
তুরস্ক, ভারত, জাপানসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ হতে পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ের কয়েকশত শিক্ষক,
গবেষক, বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, প্রফেশনাল এবং উদ্যোক্তাদের মিলনমেলা বসেছে।
কনফারেন্স আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতায় থাকছেন- একিউসি
গ্রুপ, ইন্টারসায়েন্স, তানিয়া, ইস্টার্ন রিফাইনারি, টেকনো-ওর্থ, পলি ক্যাবলস, এনভায়োটেক
কর্পোরেশন, জে-ইস ও হাইটেক।