দিল্লিতে জি-২০
সম্মেলনে ঘোষিত ভারত-ইউরোপ করিডর আগামী একশ বছরে বিশ্ববাণিজ্যের অন্যতম ভিত্তি হয়ে
উঠবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি রেডিও ভাষণে এই কথা বলেছেন। এমন
প্রেক্ষাপটে গতকাল সোমবার বিবিসি এক প্রতিবেদনে প্রশ্ন তুলেছে, আসলেই বাস্তবতা এমন
কিনা?
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের মধ্যে কয়েক বছর সম্পর্ক শীতল পর্যায়ে ছিল। সম্প্রতি সেই সম্পর্ক খানিকটা দৃঢ় হয়েছে। তারা ভারত-মধ্যপ্রাচ্য ইউরোপ করিডর (আইএমইসি) ঘোষণা করেছেন। এর অংশ হিসেবে ইউরোপ ও এশিয়ার মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে রেল ও সমুদ্রপথকে নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়েছে। ফরেন পলিসি ম্যাগাজিনের প্রধান সম্পাদক রবি আরগওয়াল বিবিসিকে বলেছেন, এই বিষয়গুলো চীনের বিরুদ্ধে মার্কিন স্বার্থকে আরও উসকে দেবে। বিবিসি বলছে, নতুন এই করিডর কি চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) সঙ্গে তুলনা করা চলে? চীনের এই বৈশ্বিক প্রকল্পটির চলতি বছরেই ১০ বছর পূর্ণ হয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, চীনের এই মেগা প্রকল্পটির আকাক্সক্ষা দিনে দিনে হ্রাস পেতে শুরু করেছে। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, চীনের আর্থিক মন্দার কারণে প্রকল্পগুলোতে ঋণ দেওয়ার গতি ধীর হয়ে পড়েছে। ইতালির মতো দেশগুলো চীনা প্রকল্প থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। শ্রীলংকা বা জাম্বিয়ার মতো দেশগুলো চীনা ঋণের বাধ্যবাধকতা পূরণ করতে অক্ষম হয়ে ঋণফাঁদে আটকে গেছে।
আরও পড়ুন>> অগণতান্ত্রিক শক্তি ক্ষমতা দখল করতে পারবে না: প্রধানমন্ত্রী
অবজারভার রিসার্চ
ফাউন্ডেশনের থিঙ্কট্যাঙ্কের ফেলো গিরিশ লুথরা সম্প্রতি একটি গবেষণাপত্রে লিখেছেন, নানা
কারণে চীনের বিআরআই প্রকল্পটি কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছে। এর মধ্যে রয়েছে এই প্রকল্পের
মাধ্যমে চীনকেন্দ্রিক ব্যবস্থা তৈরি করা এবং এর বিপরীতে স্থানীয় চাহিদার প্রতি অবহেলা,
স্বচ্ছতার অভাব, সার্বভৌমত্বের প্রতি হেলা, দুর্নীতি এবং সঠিক আর্থিক তদারকির অভাব।
তবে এত সমলোচনার পরও চীনের অর্জন ‘বিস্ময়কর’ এবং আইএমইসি প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ার কাছাকাছি পর্যায়েও নেই।
প্রসঙ্গত, প্রায়
দশ বছর আগে চীন বিআরআই প্রকল্প শুরু করেছিল। এ বছর জুলাইয়ে মেগা প্রকল্পটিতে বিনিয়োগের
পরিমাণ ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করেছে। ১৫০টির বেশি দেশ এতে অংশীদার হিসেবে
যোগ দিয়েছে। লুথরা বলছেন, এটি আঞ্চলিক পর্যায় থেকে বৈশি^ক উদ্যোগে পরিণত হয়েছে।
অন্যদিকে চীনের ক্রমবর্ধমান পদচিহ্ন অনুসরণ করে পশ্চিমাদের অবকাঠামো উন্নত করার প্রচেষ্টা
হিসেবে আইএমইসি প্রথম নয়।