আজঃ শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
শিরোনাম

বেড়ানোর কথা বলে কুয়াকাটায় এনে প্রেমিকাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১২ জানুয়ারী ২০২১ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১ | অনলাইন সংস্করণ
দর্পণ নিউজ ডেস্ক

Image
১০-১৫ দিন আগে দশমিনা উপজেলার রনি প্যাদার সঙ্গে তালতলী উপজেলার ওই তরুণীর ফোনে পরিচয় হয়। সেই সূত্র ধরে গেলো রবিবার সন্ধ্যায় তাকে নানা প্রলোভনে কুয়াকাটায় বেড়াতে নিয়ে আসেন রনি

বেড়ানোর কথা বলে কুয়াকাটায় এনে একটি আবাসিক হোটেলে আটকে রেখে প্রেমিকাকে (২৩) গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ধর্ষণের শিকার ওই তরুণীর বাড়ি তালতলী উপজেলার সারিকখালী গ্রামে। মামলার আসামিরা হলেন রনি প্যাদা (২৪), মাইনুল ইসলাম (২০) ও হোটেল ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম।

এ ঘটনায় ওই তরুণী বাদী হয়ে মহিপুর থানায় গতকাল সোমবার রাতে তিনজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। পরে রাতেই তাদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ১০-১৫ দিন আগে দশমিনা উপজেলার রনি প্যাদার সঙ্গে তালতলী উপজেলার ওই তরুণীর ফোনে পরিচয় হয়। সেই সূত্র ধরে গেলো রবিবার সন্ধ্যায় তাকে নানা প্রলোভনে কুয়াকাটায় বেড়াতে নিয়ে আসেন রনি। তারা সিলভার ক্রাউন নামের একটি আবাসিক হোটেলে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ২০৬ নম্বর কক্ষে ওঠেন। সেখানে তাকে প্রথমে ধর্ষণ করেন রনি। পরে দশমিনা থেকে আসা মাইনুল ইসলামও তাকে ধর্ষণ করেন। এতে সহযোগিতা করেন হোঠেলের ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম।

মহিপুর থানার পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, ভিকটিমকে উদ্ধার করে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তার তিনজনকে আজ মঙ্গলবার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।


আরও খবর



তিন বছরের সর্বনিম্নে নেমেছে খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক দাম

প্রকাশিত:শনিবার ০৯ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ০৯ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Image

বিশ্বজুড়ে খাদ্যপণ্যের দাম ধারাবাহিকভাবে কমছে। সবশেষ ফেব্রুয়ারিতে এসব পণ্যের গড় দাম কমে তিন বছরের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) মাসভিত্তিক মূল্যসূচক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

বাজার পর্যবেক্ষকরা বলছেন, শীর্ষ রফতানিকারক দেশগুলোয় কৃষিপণ্যের উৎপাদন পরিস্থিতি ইতিবাচক দিকে মোড় নিয়েছে। চলতি মৌসুমে খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক উৎপাদন রেকর্ড স্পর্শ করতে পারে বলে জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল গ্রেইনস কাউন্সিল (আইজিসি)।

বিশেষ করে দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোয় প্রত্যাশার চেয়েও ভুট্টা উৎপাদন হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়টি দাম কমার ক্ষেত্রে প্রধান প্রভাবকের ভূমিকা পালন করছে।

ফেব্রুয়ারিতে এফএওর খাদ্যপণ্যের মূল্যসূচক টানা সপ্তম মাসের মতো কমেছে। এর পেছনে প্রধান ভূমিকা পালন করেছে প্রধান খাদ্যশস্যগুলো। এসব পণ্যের দাম লক্ষণীয় মাত্রায় কমেছে। তবে চিনি ও মাংসের দাম ছিল ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায়।

এফএওর মূল্যসূচক মূলত বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি বেচাকেনা হওয়া খাদ্যপণ্যের দামের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়। ফেব্রুয়ারিতে এ সূচকমান ছিল গড়ে ১১৭ দশমিক ৩ পয়েন্টে, আগের মাসে যা ছিল ১১৮ দশমিক ২ পয়েন্ট।

এফএওর তথ্যমতে, খাদ্যশস্যের মূল্যসূচক আগের মাসের তুলনায় ৫ শতাংশ কমেছে। এছাড়া গত বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে ২২ দশমিক ৩ শতাংশ। মূলত দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোয় বড় পরিসরে ভুট্টা উৎপাদনের প্রত্যাশা এবং ইউক্রেনের ভুট্টার প্রতিযোগিতামূলক রফতানি মূল্য এক্ষেত্রে রসদ জুগিয়েছে।

ফেব্রুয়ারিতে উদ্ভিজ্জ তেলের দাম জানুয়ারির তুলনায় ১ দশমিক ৩ শতাংশ কমেছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারির তুলনায় কমেছে ১১ শতাংশ। দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোয় পর্যাপ্ত সরবরাহ দাম কমতে সহায়তা করেছে। এছাড়া সরিষা ও সূর্যমুখী তেলের দামও পর্যাপ্ত রফতানির কারণে কমেছে।

তবে বিপরীত প্রবণতায় ছিল চিনি ও মাংসের বাজার। এর মধ্যে ফেব্রুয়ারিতে এফএওর চিনির মূল্যসূচক আগের মাসের তুলনায় ৩ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। শীর্ষ উৎপাদক ব্রাজিলে নতুন মৌসুমের উৎপাদন নিয়ে উদ্বেগ তীব্র আকার ধারণ করায় মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে। এছাড়া থাইল্যান্ড ও ভারতে উৎপাদন কমে যাওয়ার পূর্বাভাসও মিলেছে।

গত বছরের আগস্ট থেকেই খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক দাম অব্যাহত কমছে। ওই মাসে এফএও খাদ্যপণ্য মূল্যসূচক ২ দশমিক ১ শতাংশ কমে গিয়েছিল। তবে চালের দাম বেড়ে ১৫ বছরের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে।

রাবোব্যাংক ২০২৪ সালে দুর্বল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির আশঙ্কা করছে, যা কৃষিপণ্যের চাহিদা বৃদ্ধিকে মন্থর করে দেবে। রাবোব্যাংকের কৃষিপণ্যবিষয়ক প্রধান কার্লোস মেরা জানান, তিন বছর ধরে বিশ্বব্যাপী কৃষিপণ্যের দাম অত্যন্ত অস্থিতিশীল ছিল। উৎপাদনকারীরা এখনো যুদ্ধ, খারাপ আবহাওয়া, অন্যান্য খরচ বৃদ্ধি ও দুর্বল চাহিদার প্রভাবগুলোর সঙ্গে লড়াই করছে। তবে ২০২৪ সালে অবস্থা কিছুটা স্বাভাবিকতার দিকে ফিরতে পারে।

কয়েক বছর ধরে রাবোব্যাংক প্রধান ১০টি কৃষিপণ্যের দিকে নজর রাখছে। এটি পূর্বাভাস দিয়েছে ভুট্টা, সয়াবিন, চিনি ও কফির দাম তুলনামূলকভাবে কমবে। তবে আবহাওয়া ও রফতানির অনিশ্চয়তার কারণে গমের দাম এখনো অনিশ্চয়তার মধ্যে।

নিউজ ট্যাগ: খাদ্যপণ্য

আরও খবর



এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষা

পিরোজপুরে কেন্দ্র পরিবর্তন হওয়ায় অংশ নেয়নি দুইতৃতীয়াংশ পরীক্ষার্থী

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৪ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৪ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
মশিউর রহমান রাহাত, পিরোজপুর

Image

বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড এর আদেশে পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার সদ্য সমাপ্ত এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষার লড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভেন্যু পরিবর্তন হওয়ায় পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি দুইতৃতীয়াংশ পরীক্ষার্থী। নতুন কেন্দ্র নাজিরপুর টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ ৩০ কিলোমিটার দুরত্ব ও যাতায়াত ব্যাবস্থা ভালো না থাকায় এমনটি হয়েছে।

শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সূত্রে জানা গেছে, এবারের এসএসসি ভোকেশনাল  পরীক্ষায় জেলার নাজিরপুরের মালিখালী ইউনিয়নের এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষার লড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র (কোড-৩৭০৩৬) ভেন্যু বাতিল করা হয়। এতে ওই এলাকার আশেপাশের তিনটি স্কুল লড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দীর্ঘা এম এল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মানিক নগর কারিগরি ইনষ্টিটিউট এর কারিগরি পরীক্ষার্থীরা বিপাকে পরে । এই তিন স্কুল থেকে প্রতি বছর ৫০ থেকে ৬০ জন কারিগড়ি পরীক্ষা দিতো লড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে । পরীক্ষা কেন্দ্র ভেন্যু পরিবর্তন হওয়ার আদেশ আসায় ওই স্কুল গুলোর দশম শ্রেণির (কারিগরি) ২৫ থেকে ৩৫ জন শিক্ষার্থী রেজিষ্ট্রেশন করেনি। এ কারনে এবার এস এস সি ভোকেশনাল পরীক্ষার জন্য ফর্মফিলাপ করে মাত্র ৩১ জন শিক্ষার্থী।

নির্ধারিত নতুন পরীক্ষা কেন্দ্র নাজিরপুর টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ, বাতিল হওয়া কেন্দ্র থেকে ৩০ থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় ভোগান্তিতে পরে ৩১ পরীক্ষার্থী। স্কুল গুলোর শিক্ষকদের কাছ থেকে জানা গেছে, এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষার প্রথমদিনে পরীক্ষার্থীরা মধুমতি নদী পারি দিয়ে চড়াই উৎরাই পার হয়ে পরীক্ষা দিতে আসলেও দ্বিতীয় দিনে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমে অনুপস্থিত হয় ৩জন। এভাবে শেষ পরীক্ষায় অনুপস্থিতির সংখ্যা দাঁড়ায় ১৮ জনে।  শেষ পর্যন্ত ১৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। এতে করে ১৮ জন পরীক্ষার্থী শিক্ষা জীবন থেকে ঝরে পড়ে। এ নিয়ে বিদ্যালয় গুলোর শিক্ষকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে দীর্ঘা এম এল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের (অনুপস্থিত) পরীক্ষার্থী অশোক কির্তনিয়া বলেন, নতুন কেন্দ্র নাজিরপুর টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ  ৩০ থেকে ৩২ কিলোমিটার দুরত্বের কারনে এবার পরীক্ষা দিতে যেতে পারিনি। তাছাড়া আমি ওখানে থেকে যে পরীক্ষা দিবো তার ব্যায় আমার বাবা বহন করতে পারবে না। যদি আবারও লরা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা হয় তাহলে আগামী বছর পরীক্ষা দিবো।

লড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী লাবন্য মল্লিক বলেন, আমি পরীক্ষা দেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করে কেন্দ্র পরিবর্তন হয়ে নাজিরপুর টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ হওয়ায় আমি আর পরীক্ষা দিতে পারলাম না। ৩৪/৩৫ কিলো মিটার দূরে গিয়ে পরীক্ষা দেয়া সম্ভব না। এখানে যাতায়াত ব্যবস্থা খুবই খারাপ। তাছাড়া বড় একটি নদী খেয়া পার হয়ে যেতে হয়। আমরা সকালে রওয়ানা দিয়ে পরীক্ষার হলে যেতে ৩ ঘন্টা লেগে যেতো। এভাবে পরীক্ষা দেয়া সম্ভব না। যদি  কখনও লড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ,তাহলে আবার পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেবো। না হলে আর পরীক্ষা দেয় হবে না।

এ বিষয়ে মানিক নগর কারিগরি ইনষ্টিটিউট এর পরীক্ষায় অনুপস্থিত শিক্ষার্থী রনজিত বিশ্বাস বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জানতে পারছি এতো দূরে গিয়ে পরীক্ষা দেয়ার খরচ মেটাতে না পারায় পরীক্ষা দেয় নাই। এবার লড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি ভোকেশনাল ১৮ জন পরীক্ষার্থী ছিলো। শেষ পর্যন্ত আমাদের মাত্র ৭ জন পরীক্ষা দিয়েছে।

এ বিষয়ে লড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের  ট্রেড ইন্সট্রাক্টর (ইলেকট্রিক্যাল) দিপঙ্কর সমাদ্দর বলেন, এভাবে কেন্দ্র কেটে নেয়ায় পরীক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েছে। তিনটি স্কুল দিয়ে এবার সব কটি পরীক্ষা দিয়েছে মাত্র ১৩ জন। আর গত দশ বছর লড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থাকায় প্রতি বছর প্রায় ৫০/৬০ পরীক্ষা দিতো। ফলাফলও ভালো করতো।

এ বিষয়ে লড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রভাষ কান্তি বিশ্বাস বলেন, আমার বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল পরীক্ষার রেজিষ্ট্রেশন করেছিলো ৩৪ জন। পরীক্ষা কেন্দ্র নাজিরপুর সদরে চলে যাওয়ায় মাত্র ১৭ জন শিক্ষার্থী ফর্মফিলাপ করে। ১৩ শিক্ষার্থী আর ফর্মফিলাপ করে নাই। এ থেকে শেষ পর্যন্ত মাত্র ৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়।

এ বিষয়ে পিরোজপুর মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো.ইদ্রিস আলী আযিযী বলেন, আমার এই বিষয়টা জানা ছিলো না। এ ব্যাপারে খোঁজ খবর নিবো। আমি খোঁজ খবর নিয়ে এ ব্যাপারে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবো।

উল্লেখ্য , ২০১৩ সালে লরা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র অনুমোদন দেয়া হয়। ২০২৩ সাল পর্যন্ত এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ কেন্দ্রে লড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দীর্ঘা এম এল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মানিক নগর কারিগরি ইনষ্টিটিউট এর কারিগরি পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতো।


আরও খবর



শিকলে বাঁধা যুবকের দুর্বিষহ জীবন, চিকিৎসা করবে কে?

প্রকাশিত:রবিবার ১৭ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৭ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
রেদওয়ানুল হক মিলন, ঠাকুরগাঁও

Image

জরাজীর্ণ ছোট একচালা ঘরের খুঁটির সঙ্গে বাঁধা যুবক। বিড়বিড় করে কি যেন একটা বলছে। এক সময়ের টগবগে যুবক এখন চার দেওয়ালে বন্দি। খুপড়ি ঘরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটে তাঁর। একটি দু'টিন বছর নয় এভাবে ছয় বছর ধরে শিকল বন্দি। পায়ে সঙ্গে শিকল যেন নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে দাড়িঁয়েছে তাঁর। লোহার শিকল পরা অবস্থায় দিনের শুরু হয় আর বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে। এর পর রাত। তবুও যেন শিকল থেকে মুক্তি মিলছে না তাঁর। এভাবেই হাসি-কান্নার মধ্য দিয়েই কাটছে তাঁর শিকলে বাঁধা জীবন।

আর আদুরের সন্তানের চিকিৎসায় সাধ্যমতো চেষ্টা করছেন দরিদ্র পরিবার। বসতভিটা ছাড়া নিজের বলতে আর কিছুই নেই তাদের। গায়ের মহাজনের কাছে ধারকার্য করে চিকিৎসা করিয়েছেন। তবুও সুস্থ্য করা যায়নি পঁয়ত্রিশ বছর বয়সী মিলনকে।

মিলন হক ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া ইউনিয়নের পূর্ব কুজিশহর গ্রামের মফিজ উদ্দীন ও শাহেদা বেগম দম্পত্তির ছেলে।

প্রাথমিক পর্যন্ত লেখাপড়া করা মিলন আর পাঁচ শিশুর মতো ছিল হাসি-কান্না হইহুল্লোড়ে মাতিয়ে রাখত সবাইকে। মজার দুষ্টুমিতে মায়ের কাছে আসত হাজারো অভিযোগ। জন্মের ৯ বছর বয়সে গলায় টিউমার ধরা পড়ে মিলনের। চিকিৎসা নেওয়ার পরে কিছুদিন সুস্থ হলেও আবার শুরু হয় অসুস্থতা। পঁয়ত্রিশ বছর জীবনে পচিশ বছর অসুস্থ থাকলেও ছয় বছর চার দেওয়াল আর পায়ে শিকলই তার সঙ্গী। তবে বৃদ্ধা মা মারা গেলে কে দেখবে তাকে? এমন চিন্তায় প্রতিনিয়তই ডুকরে ডুকরে কাঁদছে মা শাহেদা বেগম।

স্বপ্ন ছিলো মিলন হক পড়াশোনা করে চাকরি করে সংসারের হাল ধরবেন। কিন্তু অসুস্থতার কারণে প্রাথমিকেই থমকে গেছে তাঁর জীবন। অপরিচিতদের সঙ্গে স্বাভাবিক আচরণ করলেও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অস্বাভাবিক আচরণ করেন। অনেক সময় নানা ভাবে বিড়ম্বনায় ফেলে স্থানীয়দের। পরিবারে উপার্জনক্ষম মানুষ না থাকায় হচ্ছে না উন্নত চিকিৎসা।

স্বামী ব্রেন স্টোক করে প্যারালাইস, ছেলে শেকলে বাধাঁ। স্বামী সন্তানের মুখের খাবার জোগার করবেন না চিকিৎসা করাবেন এই দোটানায় চলছে শাহেদা বেগম। মানুষের বাড়িতে কাজ করে দু-মুঠো ভাতের জোগাড় করেন তিনি। চিকিৎসা করার আর্থিকভাবে ক্ষমতা নেই। তবে সুচিকিৎসা পেলে ভালো হবে মিলন এমন স্বপ্ন দেখেন তার মা। কিন্তু তার এই স্বপ্নে বাদ সেধেছে টাকা। কারণ টাকা ছাড়া এখন কিছুই মেলে না। তাই ছেলে সুস্থ করতে বিত্তবানদের সাহায্য চান তিনি।

স্থানীয়রা জানান, মিলনের পরিবার খুবই গরিব। চিকিৎসা দুরের কথা ঠিকমতো একবেলা খাবারে জোগানো দায়। তার বাবা ব্রেইন স্ট্রোক করে দীর্ঘ দিন ধরে শয্যাশায়ী। ছেলেও শিকলে বন্দি। মিলনের প্রয়োজন উন্নত চিকিৎসার। তা না হলে পরিবারটার জন্য সামনে আরো কঠিন হয়ে দাড়াবে।

শাহেদা বেগম বলেন, দিনে ও রাতে ছেলের পায়ে, কখনো হাতে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে ঘুমানোর ব্যবস্থা করি। এ দৃশ্য মা হয়ে সহ্য করতে পারছি না। গরীব মানুষ, ঠিকমতো সংসার চালানোই কঠিক হয়ে পড়েছে। ছেলের উন্নত চিকিৎসা করব কীভাবে?

তিনি আরো বলেন, ভিটেমাটি ছাড়া আর কিছু নেই তাদের। স্বামী বিছানায় পড়ে আছে। একদিন কাজে না গেলে মুখে খাবার উঠেনা। যা ছিল সব শেষ হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, বিষয়টি সত্যিই হৃদয়বিদারক। অতি দ্রুতই মিলন হকের খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজ ট্যাগ: ঠাকুরগাঁও

আরও খবর



অবন্তিকার আত্মহত্যা: আম্মান ও দ্বীন ইসলাম রিমান্ডে

প্রকাশিত:সোমবার ১৮ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৮ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আদালত প্রতিবেদক

Image

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকার আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলায় গ্রেপ্তার সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীর দুই দিন এবং সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

সোমবার (১৮ মার্চ) বেলা ১১টায় কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আবু বকর সিদ্দিকের আদালতে তোলা হয়। এ সময় সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীর পাঁচ দিন এবং সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের দুই দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। পরে আম্মানের দুই দিন এবং সহকারী প্রক্টরের একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

বাদীপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ নূরু উর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে বেলা পৌনে ১১টার দিকে একটি সাদা প্রাইভেটকারে করে তাদেরকে আদালতে হাজির করে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ। এরপর মাথায় হেলমেট ও মুখে মাস্ক পরা অবস্থায় তাদেরকে আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. মজিবুর রহমানের কক্ষে রাখা হয়।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাত ১০টার দিকে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও আম্মান সিদ্দিকী নামের এক সহপাঠীকে দায়ী করে গলায় ফাঁস নেন জবির আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকা। স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। শনিবার (১৬ মার্চ) ময়নাতদন্ত শেষে বিকেল ৩টার দিকে প্রথম জানাজা ও পৌনে ৪টার দিকে দ্বিতীয় জানাজা শেষে বাবার কবরের পাশে দাফন করা হয় অবন্তিকাকে।

নিহত অবন্তিকা কুমিল্লা নগরীর শাসনগাছা এলাকার মৃত জামাল উদ্দিনের মেয়ে। তার বাবা কুমিল্লা সরকারি কলেজের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক ছিলেন। তার মা তাহমিনা শবনম কুমিল্লা পুলিশ লাইনস উচ্চ বিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক ছিলেন। ২০২৩ সালের ১২ এপ্রিল তার বাবা অধ্যাপক জামাল উদ্দিন মৃত্যুবরণ করেন। অবন্তিকার একটি ছোট ভাই রয়েছে। সে চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। এ ঘটনায় অবন্তিকার মা বাদী হয়ে দুইজনকে আসামি করে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করেন।


আরও খবর



বাড়ি ছাড়তে হবে সালাম মুর্শেদীকে

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ | অনলাইন সংস্করণ
আদালত প্রতিবেদক

Image

খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সহসভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদীকে গুলশানের বাড়ি ছাড়তে হবে বলে রায় দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সংসদ সদস্য আবদুস সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে গুলশান২ নম্বরে অবস্থিত বাড়িটি দখলে রাখার অভিযোগ নিয়ে করা রিটের ওপর রায় ঘোষণা করা হয়।

আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। তিনি বলেন, রায়ের কপি হাতে পাওয়ার দিন থেকে ৯০ দিনের মধ্যে সালাম মুর্শেদীকে বাড়ি ছাড়তে হবে। দুদক থেকে আমরা যে কমপ্লায়েন্টসগুলো দিয়েছি, তার ভিত্তিতে আমরা মামলা দায়ের করেছি। যে তথ্য-উপাত্ত আমাদের কাছে ছিল, তাতে সালাম মুর্শেদীকে আসামি করার মতো যথেষ্ট ছিল না। এখন সালাম মুর্শেদী হোক আর যেই হোক, তদন্ত কর্তৃপক্ষ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।


আরও খবর