এমদাদুল হক, বগুড়া
বগুড়ায় ঈদকে সামনে রেখে জমজমাট হয়ে উঠেছে নকল প্রসাধনীর ব্যবসা। বছরজুড়ে সবারই প্রয়োজন পড়ে নানা ধরণের প্রসাধনীর। বাঙালির উৎসবগুলোতে বিশেষ করে ঈদ এলেই এর কদর আরও বাড়ে।
সাধারণ ব্যবহারকারী বা ক্রেতারা কোনভাবে বুঝতে পারবেন না নকল ও আসল প্রসাধনীর পার্থক্য। আর এই সুযোগেই ভোক্তাদের চরম ঝুঁকিতে ফেলে ফায়দা লুটছে নকল প্রসাধনীর অসাধু ব্যবসায়ীরা।
বগুড়ার নিউ মার্কেট ও চুড়িপট্টির অনেক প্রসাধনী ব্যবসায়ী ও বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বহু দিন থেকেই নকল প্রসাধনী তৈরি হয়ে আসছে। উত্তরাঞ্চলের প্রাণকেন্দ্র হওয়ায় এখানে প্রসাধনীর আলাদা একটা বাজার রয়েছে। শহরের চুড়িপট্টিতে সবচেয়ে বেশি নকল প্রসাধনীর বেচাকেনা হয়। এরমধ্যে আবার পাইকারিই বেশি। প্রতিষ্ঠিত ব্রান্ডের প্রসাধনীগুলো প্রায় অর্ধেক দামে বেচাকেনা হয়। এসব নকল প্রসাধনীর বেশিরভাগ ক্রেতাই আবার মফস্বল এলাকার।
গ্রাম-গঞ্জের হাট-বাজারের প্রসাধনীর বিক্রেতেরাই মূলত পাইকারিতে সস্তায় এসব পণ্য কিনে থাকেন। শহরের বড় বড় বিপণী বিতানগুলোতেও সাধারণের চোখ ফাঁকি দিয়ে রমরমাভাবে চলছে এসব নকল প্রসাধনীর কারবার। এছাড়াও নকল প্রসাধনী বেশিরভাগ আসে ঢাকার চক বাজার থেকে।
আর বিদেশি যেসব প্রসাধনী বাজারে পাওয়া যায় তার মধ্যে বেশিরভাগই নকল। বিক্রেতারা আরও বলছেন, বিভিন্ন ব্রান্ডের ব্যবহৃত পুরাতন জারগুলো ফেরিওয়ালার কাছ থেকে কিনে ধুয়ে-মুছে পরিস্কার করে তাতেই ভরা হয় নকল প্রসাধনী। নতুন ঝকঝকে প্যাকেটে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন ব্যবহারকারীরা। এসব জারে উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে আটা, ময়দা আর ক্ষতিকর কেমিকেল।
খুব যত্নের সঙ্গে আটকানো হয় এসব কৌটার মুখ। বেশিভাগ ক্ষেত্রে উৎপদান ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ সিল মেরে নতুন বলে চালিয়ে দেওয়া হয়, যা একজন সাধারণ মানুষের পক্ষে বুঝে ওঠা একেবারেই অসম্ভব। অনেকেই না জেনে-বুঝেই নকল ও মানহীন পণ্য কিনছেন।
এদিকে বিয়ে বা বিভিন্ন অনুষ্ঠান এবং আসছে ঈদ উৎসবে তরুণীরা যাবেন শহরের বিভিন্ন বিউটি পার্লারে। সেখানে তারা লিপস্টিক, লিপ লাইনার, আইলাইনার, মার্সকারা, আইসেট, কাজল, ফাউন্ডিশন, শাইনিং মেকআপ এবং ত্বকের ধরণ বুঝে বিভিন্ন ধরনের মেকআপে নানা ধরণের প্রসাধনী নিয়ে থাকেন।
ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর বগুড়া কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক ইফতেখারুল আলম রিজভী বলেন, ঈদ উৎসবে নকল প্রসাধনী ও মানহীন মেহেদী বিক্রি বন্ধে আরও অভিযান পরিচালনা করা হবে। যেসব দোকানে বিএসটিআই ও বিডিএসবিহীন মেদেহী পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।