আজঃ শুক্রবার ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩
শিরোনাম

বিচার বিভাগকে গতিশীল করার উদ্যোগ নেওয়া হবে : প্রধান বিচারপতি

প্রকাশিত:বুধবার ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, বিচার বিভাগকে আরও গতিশীল করতে উদ্যোগ নেওয়া হবে।

আজ বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিমকোর্টে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি এ কথা বলেন।

ওবায়দুল হাসান বলেন, সামাজিক পরিবর্তন না আনলে শুধু বিচার এবং আইন-আদালত করে সমাজকে সঠিক পথে আনা যাবে না। মামলাজট কমানোটাই বড় চ্যালেঞ্জ। আরেকটি হচ্ছে দুর্নীতি। দুর্নীতি যাতে কমানো যায়, সে উদ্যোগ নিতে হবে।

প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, সুপ্রিমকোর্টের উভয় বিভাগ ও অধস্তন আদালতে সহকর্মী সবার প্রতি আহ্বান থাকবে, তারা প্রত্যেকেই যেন এই বিচার বিভাগের কাজটি, বিচারের কাজটি নিজের মনে করেন। মামলা নিষ্পত্তির সংখ্যা যদি আমরা বাড়াতে পারি, তাহলে মামলাজট অনেকাংশেই কমে যাবে। মামলাজট বা মামলার দীর্ঘসূত্রতা যাতে ক্রোনিক (দীর্ঘস্থায়ী) না হয়ে যায়, সেই চেষ্টা করব।

শুধু বিচারকদের নিয়েই বিচার বিভাগ নয় উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, আমাদের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত আছেন আইনজীবীরা, তাদের সহকারীরা, অধস্তন আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং আরও স্টাফ। সবাই যদি আন্তরিক হন, তাহলে বিচারপ্রার্থী মানুষের কষ্ট লাঘব হবে। বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) এবং মেডিয়েশনের (মধ্যস্থতা) মাধ্যমে অনেক মামলা নিস্পত্তি হতে পারে।


আরও খবর



সাময়িক বরখাস্ত এডিসি হারুন

প্রকাশিত:সোমবার ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:সোমবার ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

শাহবাগ থানায় নিয়ে ছাত্রলীগ নেতাদের নির্মম নির্যাতনের ঘটনায় ডিএমপির রমনা বিভাগ থেকে প্রত্যাহারের পরদিন সাময়িক বরখাস্ত হলেন বিসিএস পুলিশ ক্যাডার ৩১ ব্যাচের কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে সোমবার বিকালে এ সংক্রান্ত আদেশ জারি হয়েছে। অবশ্য এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও এডিসি হারুন বরখাস্ত হচ্ছেন বলে গণমাধ্যমকে জানান।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, যেহেতু ডিএমপির অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার হারুন-অর-রশীদকে জনস্বার্থে সরকারি কর্ম হতে বিরত রাখা আবশ্যক ও সমীচীন, সেহেতু হারুন-অর-রশীদকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ (২০১৮ সালের ৫৭ নং আইন) এর ৩৯ (১) ধারার বিধান মোতাবেক অদ্য ১১ সেপ্টেম্বর থেকে সরকারি চাকরি হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। 

আরও পড়ুন>> মামলা নয়, ডিএমপির বিভাগীয় তদন্তে আস্থা রাখতে চায় ছাত্রলীগ

সাময়িক বরখাস্তকালীন তিনি পুলিশ অধিদপ্তরে সংযুক্ত থাকবেন এবং বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন। জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো।

গত শনিবার রাতে নারীঘটিত বিষয় নিয়ে ফজলুল হক হল ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈম ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিমকে থানায় ধরে এনে নির্যাতন করেন এডিসি হারুন। এতে নাঈমের পাঁচ দাঁত উপড়ে যায়। বর্তমানে তিনি আশঙ্কামুক্ত হলেও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

আজ বেলা সাড়ে বারোটার দিকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। প্রায় আড়াইঘন্টা এ বৈঠক চলে। শেষে বেরিয়ে দলটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ডিএমপির তদন্ত কমিটির ওপর আস্থা রাখছি। এই ঘটনায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের রক্তক্ষরণ হয়েছে। 

আরও পড়ুন>> এডিসি হারুনকে গ্রেপ্তারের দাবি সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের

পরে বিকালে ডিএমপির যুগ্মকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার গণমাধ্যমকে বলেছেন, 'কোনো ব্যক্তির দায় পুলিশ নেয় না। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতাকে মারধরের ঘটনায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পর কাকে কতটুকু দায়ী করবে তার ভিত্তিতে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কেউ চাকরিচ্যুত হতে পারে কেউবা তিরস্কারও হতে পারে।


আরও খবর



দেশের ১৯ জেলায় তীব্র ঝড়ের পূর্বাভাস

প্রকাশিত:বুধবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০23 | হালনাগাদ:বুধবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০23 | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

ঢাকাসহ দেশের ১৯ জেলায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। একই সঙ্গে হতে পারে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি। বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, ঢাকা, রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, বগুড়া, টাঙ্গাইল, পাবনা, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেট জেলার ওপর দিয়ে দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। তাই এসব এলাকার নদীবন্দরকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। 

আরও পড়ুন>> উখিয়ায় ক্যাম্পে রোহিঙ্গা নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

এর আগে, মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় অপর এক বার্তায় আবহাওয়া অফিস জানায়, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ঢাকা, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।


আরও খবর
ঢাকাসহ ১৪ জেলায় ঝড়ের পূর্বাভাস

শুক্রবার ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩




প্রধানমন্ত্রী‌কে জন্ম‌দি‌নের শু‌ভেচ্ছা জানা‌লেন মো‌দি

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে উষ্ণ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বৃহস্প‌তিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সরকারপ্রধান‌কে এক বার্তায় জন্ম‌দি‌নের শু‌ভেচ্ছা জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন তাদের ফেসবুকে জানায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বৃহস্প‌তিবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জন্মদিনের উষ্ণ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তি‌নি বাংলা‌দে‌শের প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য এবং সাফল্য কামনা ক‌রে‌ছেন।

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন শেখ হাসিনা। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছার জ্যেষ্ঠ সন্তান।

১৯৮১ সাল থেকে দেশের অন্যতম প্রাচীন দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। দেশের দীর্ঘ সময়ের প্রধানমন্ত্রী তিনি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ।

২০০৯ সাল থেকে টানা তিন মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। বঙ্গবন্ধুকন্যা এখন চতুর্থ দফায় দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমা‌নে তি‌নি যুক্তরা‌ষ্ট্রে অবস্থান কর‌ছেন।


আরও খবর



আগামী সেপ্টেম্বরে ঢাকায় আসছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ

প্রকাশিত:বুধবার ৩০ আগস্ট ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ৩০ আগস্ট ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
কূটনৈতিক প্রতিবেদক

Image

১১ সেপ্টেম্বর ঢাকায় আসছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁ। দীর্ঘ তিন দশক পর এটিই দেশটির কোনো প্রেসিডেন্টের প্রথম সফর। এর আগে ১৯৯০ সালে ফ্রান্সের তদানীন্তন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া মিতেরাঁ বাংলাদেশ সফর করেছিলেন।

বুধবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা ও প্যারিসের একাধিক কূটনৈতিক সূত্র ম্যাক্রোঁর বাংলাদেশ সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। দিল্লিতে অনুষ্ঠেয় জি-টোয়েন্টি শীর্ষ সম্মেলন শেষে ঢাকায় আসবেন তিনি।

সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ বাংলাদেশে আসছেন। ঢাকায় অবস্থানের সময় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। এর পাশাপাশি ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে গিয়ে জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।

তবে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁর ঢাকা সফরের ব্যাপ্তি খুব বেশিদিন নয়। জানা গেছে, ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকা সফরে এসে ১২ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরবেন তিনি।

এর আগে ২০২১ সালের নভেম্বরে প্যারিসে দ্বিপক্ষীয় সফরে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন ইম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁকে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানান তিনি। শেখ হাসিনার ফ্রান্স সফরের সময় বাংলাদেশ ও ফ্রান্স দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদারের জন্য ব্যবসা, বিনিয়োগ ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় জোর দিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে প্যারিসের এলিসি প্রাসাদে দুই শীর্ষ নেতার বৈঠকের পর দুই দেশ প্রতিরক্ষা সহযোগিতার সম্মতিপত্রে সই করে।

কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপট ও বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ম্যাক্রোঁর ঢাকা সফর গুরুত্বপূর্ণ ও কৌতুহলোদ্দীপক।


আরও খবর



টেকসই সমাধান খুঁজতে দুই দলকেই বসতে হবে

প্রকাশিত:শনিবার ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

Image

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে একটি টেকসই পথ বের করতে খোলা মনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে এগিয়ে আসতে হবে। নির্বাচনকালীন সংকট নিরসনে স্থায়ী সমাধান খুঁজতে আওয়ামী লীগ-বিএনপিকে বসতে হবে। সমস্যা নিয়ে বিতর্ক না বাড়িয়ে সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থার সংকট দূর করতে হবে।

রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিরপেক্ষ ভূমিকায় থাকার সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে। এই কাজগুলো করতে পারলে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ তৈরি হবে, যা গণতন্ত্রের প্রথম ধাপ। এজন্য সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগী হয়ে কাজ করতে হবে। আর যদি এই কাজগুলো করা না যায় তাহলে কেবল বিদেশিদের তৎপরতার মাধ্যমে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রত্যাশা করা অবান্তর হবে। এতে দেশ বিপজ্জনক পরিস্থিতির দিকে যেতে পারে।

শনিবার রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে আয়োজিত এক সেমিনারে বিশেষজ্ঞ ও রাজনৈতিক দলের নেতারা এই মতামত দেন। সোসাইটি ফর গ্লোবাল অ্যান্ড বাংলাদেশ স্টাডিজ (এসজিবিএস) এবং এক্সপার্টস একাডেমি লিমিটেড বাংলাদেশ : গণতান্ত্রিক অগ্রগতির পথ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে। ইউএনবি সম্পাদক ফরিদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এসজিবিএসের নির্বাহী পরিচালক উপস্থাপক মিথিলা ফারজানা। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) ব্যুরো প্রধান জুলহাস আলম।

সেমিনারে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, দেশের প্রধান সমস্যা হচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করছে না। আমরা বাইরের দেশের হস্তক্ষেপের কথা বলছি। কিন্তু এর পেছনের কারণ কী? আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর একে অপরের প্রতি আস্থা নেই। এ অবস্থায় আমরা গণতন্ত্র পাব কি না তা নিয়ে আলোচনা করছি। এটা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যকর করার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে।

জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, রাজনীতিবিদরা এখনো গণতন্ত্রের সংজ্ঞা নির্ধারণ করতে পারেননি। যখন যারা ক্ষমতায় আসে তখন তাদের মতো গণতন্ত্রের ব্যাখ্যা দেয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে বলছে গণতন্ত্র আছে, ক্ষমতার বাইরে গেলেই বলবে গণতন্ত্র নেই। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, রাজনীতিকদের হাতে খুব বেশি কিছু নেই। এখন দেশ চালায় আমলারা। ডিসি-এসপিরা দেশ চালায়। দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সাত-আটশ কর্মচারীর একজন পিয়নেরও যে ক্ষমতা আছে, আমাদের (রাজনীতিবিদদের) তা নেই। প্রধানমন্ত্রীর নিম্নমানের একজন সহকারী জেলায় গেলেও ডিসিরা অভ্যর্থনা দেওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে থাকে। আমরা গেলে তারা খবরও রাখে না। আমলারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। তাদের কখনো অসুবিধা হয় না। সমস্যা হয় রাজনীতিবিদদের। সরকার না থাকলে লাখ লাখ মানুষ মারা যাবে বলা হচ্ছে। কিন্তু আমলাদের কিছু হবে না। কারণ যেই আমলা বঙ্গবন্ধুর সময়ে ছিলেন, তিনি খন্দকার মোশতাকের সময়েও ছিলেন আবার বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার উপদেষ্টা হয়ে সব সুযোগ-সুবিধা নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। মোশতাকের মন্ত্রিসভায় আওয়ামী লীগের ২৩ সদস্য ছিলেন। পরে তাদের অনেকেই আওয়ামী লীগে ফিরে এসেছেন। বহাল তবিয়তে বিজয়ের মালা নিয়ে ঘুরেছেন। তিনি বলেন, এই প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করেছি আমরা।

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও রাষ্ট্রদূত শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ দায়িত্বশীল প্রতিবেশী, নির্ভরশীল দেশ হিসাবে বিশ্বে স্বীকৃতি পেয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আমাদের একটা ভূমিকা রয়েছে। একই সঙ্গে আসিয়ান, ব্রিকস, জি-২০ তে বাংলাদেশের আমন্ত্রণ পাওয়া বাংলাদেশের বিশ্ব ভূ-রাজনীতিতে, আঞ্চলিক রাজনীতিতে যে একটা মতামত রয়েছে এরই বার্তা দেয়। এটা আমাদের জন্য বড় অর্জন। তবে অনেক বেশি পথ বাকি আছে।

স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। বিভিন্ন নির্বাচনে ভোটের হিসাব অনুযায়ী, উভয় দলই বড় জনসমর্থন নিয়ে নির্বাচিত হয়েছে। এজন্য একটি দল অন্য দলকে নির্মূল করে দেবে, এটা হবে না। একটি দলকে নিশ্চিহ্ন করে অন্য দল দেশ শাসন করবে, এটা সম্ভব নয়। আর এটা করতে গেলে বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। তিনি মনে করেন, বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে ক্ষমতাসীনদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করা উচিত।

নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ মেজর জেনারেল (অব.) এম আবদুর রশিদ বলেন, কিছু দল বিদেশি শক্তির ওপর নির্ভর করে আগামী নির্বাচন আয়োজনের চেষ্টা করছে। আমরা আমাদের ভাগ্য নির্ধারণের দায়িত্ব অন্যদের দিয়ে দিচ্ছি। এটা গণতন্ত্র হতে পারে না।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আসন্ন নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হলে ভোট গ্রহণের পুরো প্রক্রিয়াটি কারসাজিমুক্ত ও গ্রহণযোগ্য করতে হবে। এটি করবে কতগুলো প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে প্রথম ও প্রধান হলো নির্বাচন কমিশন। তারপর আছে সরকার তথা প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গণমাধ্যম, নাগরিক সমাজ। এদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষাপাতহীনভাবে কাজ করার ওপর নির্ভর করবে নির্বাচন প্রক্রিয়া সঠিক কি না। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো এই প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরপেক্ষতার অভাব। নির্বাচন কমিশনই আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে করা হয়েছে। প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে ব্যাপক দলীয়করণ হয়েছে। আমরা আইনকে অস্ত্রে পরিণত করে ফেলেছি। পালটাপালটি অভিযোগ না করে আলাপ-আলোচনা অব্যাহত রাখতে হবে।

মূল প্রবন্ধে জুলহাস আলম বলেন, বাণিজ্য স্বার্থ আদায়, অবকাঠামো উন্নয়নে প্রযুক্তি ও বিনিয়োগ আনয়নসহ বহুবিধ কারণে নিজেদের লাভ-লোকসানের হিসাব মিলিয়ে এগোতে না পারলে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে বাংলাদেশকে। সেক্ষেত্রে জাতীয় রাজনীতি ও অর্থনীতিও পড়বে চ্যালেঞ্জের মুখে। জ্বালানি নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ তার মধ্যে অন্যতম। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে কৌশলগত অবস্থানের হিসাব-নিকাশে ভুল করলে দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার গতিপথও জটিলতার আবর্তে পড়ে যেতে বাধ্য। তিনি বলেন, দিনশেষে রাজনীতিই ভরসা, রাজনৈতিক প্রক্রিয়াতেই আস্থা রাখতে হবে।

প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান বলেন, গণতন্ত্রের সংকট দেশে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে বাধা সৃষ্টি করেছে। রাজনৈতিক দলগুলো এর জন্য দায়ী। রাজনীতিবিদরা কি বলতে পারবেন, তারা প্রশাসন ও প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিচ্ছেন? এটাই বর্তমান সংকটের মূল কারণ। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে এখন দেশের স্বার্থে একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথ খুঁজে বের করতে হবে।

আওয়ামী লীগের সংসদ-সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, চিন্তার মতপার্থক্য, বিপরীতমুখী চিন্তা এগুলো থাকবে। এর মধ্যেই একটা সমাধানের জায়গায় আসতে হবে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আমাদের নতুন সময় পত্রিকার ইমেরিটাস সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান, ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান, আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, ক্ষমতাসীন দলের সংসদ-সদস্য নাহিম রাজ্জাক, ফেমার সভাপতি মুনিরা খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাদেকা হালিম, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ পিএসসির সদস্য অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, সাংবাদিক আজিজুল হক ভূঁইয়া, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ও যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলে ফাহিম, এক্সপার্ট একাডেমির উপদেষ্টা সিরাজুল ইসলাম এবং আর্টিকেল ১৯-এর আঞ্চলিক পরিচালক ফারুক ফয়সল প্রমুখ।


আরও খবর