টাঙ্গাইলের
মির্জাপুর উপজেলা সদরের বাইমহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটু বৃষ্টিতেই বাধে জলাবদ্ধতা।
আশেপাশে বন্যার পানি না থাকলেও বিদ্যালয়ের মাঠে থৈ থৈ করে পানি। জুতা পায়ে শিক্ষার্থীরা
স্কুলে যেতে পারে না। দিনের পর দিন বন্ধ রয়েছে খেলাধুলা। এদিকে, প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত
মানোন্নয়নসহ সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিশেষ অবদান রাখায় জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে বিদ্যালয়টি।
৬ শতাধিক ক্ষুদে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারী জলাবদ্ধতার কারণে চরম বিপাকে পড়েছেন।
বিদ্যালয়ে ঘুরে
দেখা গেছে, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব একাব্বর হোসেন ঢাকা-টাঙ্গাইল পুরাতন জাতীয় মহাসড়ক
সংলগ্ন মির্জাপুর উপজেলা সদরে ১৯৭৩ সালে ২৩ নং বাইমহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি
প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এর ১০০ গজের মধ্যে রয়েছে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়, উপজেলা
পরিষদ, সহকারী কমিশনারের (ভূমি) অফিস, উপজেলা শিক্ষা অফিস ও পৌরসভার কার্যালয়সহ সরকারি
অধিদপ্তরের সব অফিস। বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক হোসনেয়ারা বেগমের একক প্রচেষ্টায়
বিদ্যালয়টি উপজেলা, জেলা, অঞ্চল, বিভাগ ও জাতীয় পর্যায়ে সুনাম অর্জন করেছে। প্রাথমিক
শিক্ষার গুণগত পরিবর্তন, শিশুদের ঝরে পড়ারোধ এবং সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিশেষ ভূমিকা রাখায়
জাতীয় পর্যায়ে ২০১৮ সালে এবং ২০১৯ সালে পুরস্কার লাভ করে।
বিদ্যালয়ের
শিক্ষক, অভিভাবক এবং ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা জানান, বর্তমানে নানাবিধ সমস্যায় বিদ্যালয়টি
জর্জরিত। শিক্ষক স্বল্পতা, ভবন, আসবাবপত্র ও শ্রেণিকক্ষের অভাব, নেই ওয়াশব্লক, খাবার
পানির অভাব, খেলার মাঠ ও সীমানা প্রাচীর নেই। রাস্তা পারাপারে নিরাপত্তা নেই। এতে প্রায়ই
দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। এখন প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে জলাবদ্ধতা। এতে
শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। সমস্যা দূরীকরণের জন্য শিক্ষামন্ত্রী,
সচিব, জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা অফিসার ও স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হলেও বিদ্যালয়ের
সমস্যা সমাধান হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তারা।
এ ব্যাপারে
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লাইলী আক্তার ও সহকারী শিক্ষক মো. ফরহাদ হোসেন
বলেন, ‘জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার প্রাপ্ত বিদ্যালয়টি এখন নানা সমস্যায় জর্জরিত।
প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে জলাবদ্ধতা। বিদ্যালয়ের সার্বিক সমস্যা দ্রুত সমাধানের
জন্য আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সার্বিক সহযোগিতা চেয়েছি।’
উপজেলা শিক্ষা
অফিসার মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন বলেন, ‘বাইমহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি একটি স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিদ্যালয়টি একাধিকবার পরিদর্শন করেছেন। বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের
জন্য বরাদ্দ চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে অল্প দিনের মধ্যে
সমস্যা সমাধান করা হবে।’