সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে এবার দেশের দুর্গম দ্বীপ কুতুবদিয়া বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হলো। গতকাল বুধবার রাত সোয়া ৯ টার দিকে জাতীয় গ্রীড থেকে ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালক (জনসংযোগ) মোহাম্মদ শামিম হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কক্সবাজারের কতুবদিয়ায় প্রথমবারের মতো গ্রীডভিত্তিক বিদ্যুতের আওতায় আসার ফলে ওই এলাকার আর্থ সামাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যাপক উন্নয়ন হবে বলে আশা করছেন দুর্গম এই দ্বীপের বাসিন্দারা।
দেশব্যাপী শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনতে ২০২০ সালে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে 'হাতিয়া দ্বীপ, নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়া দ্বীপ শতভাগ নির্ভরযোগ্য ও টেকসই বিদ্যুতায়ন' প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পটির মেয়াদ রয়েছে।
আরও পড়ুন: চেলসিকে হারিয়ে সেমিফাইনালের পথে রিয়াল
মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন এই দ্বীপে স্বাভাবিক লাইন নির্মানের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহের কোন সুযোগ না থাকায় সাবমেরিন ক্যাবল ব্যাবহার করা হয়েছে। এটি ব্যয়বহুল হওয়া সত্ত্বেও শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনতে সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা।
কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ি থেকে মগনামা ঘাট পর্যন্ত ৩৩ কেভি রিভার ক্রসিংসহ লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। সেখান থেকে সাগরের তলদেশে ফাইবার অপটিকসহ ৫ কিলোমিটার ডাবল সার্কিট সাবমেরিন লাইন নির্মাণের মাধ্যমে কুতুবদিয়ায় বিদ্যুত সরবরাহ করা হয়। গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুৎ দিতে কুতুবদিয়ায় নির্মিত হয়েছে দুই কিলোমিটার বিতরণ লাইন।
দ্বীপটির প্রায় ২১৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় বর্তমানে প্রায় ২ লাখ মানুষ বসবাস করেন। এখানে ১৯৮০ সালে জেনারেটরের মাধ্যমে প্রায় ৬০০ গ্রাহকের মধ্যে সান্ধ্যকালীন কয়েক ঘণ্টার জন্য বিদ্যুৎ ব্যবস্থা চালু করা হয়।
১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে বিদ্যুতের খুঁটি ভাঙায় সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর বিভিন্ন সময় স্বল্প আকারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। ২০০৫ সালে দেড় কিলোমিটার লাইন মেরামত করে দুটি জেনারেটরের মাধ্যমে উপজেলা সদর ও কিছু এলাকায় সন্ধ্যার পর কয়েক ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে পিডিবি।
এর আগে গত বছরের নভেম্বর মাসে ওই প্রকল্পের আওতায় নোয়াখালির হাতিয়া দ্বীপে প্রায় ১০,০০০ জন গ্রাহক বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছেন।