নির্বাচন কমিশনার মোঃ আনিছুর রহমান বলেছেন, বিএনপি নির্বাচন কমিশনকে মানে না, নির্বাচন কমিশনের উপর আস্থাও রাখতে পারেনা এবং কথা বলতেও রাজি নয়। নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য বিএনপিসহ দেশের ৪৪টি দলকেই নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কিন্তু বিএনপি কোনভাবেই নির্বাচন কমিশনের নিমন্ত্রণ গ্রহণ করেননি। এরপর নির্বাচন কমিশনের আর কিছুই করার নেই।
রাজনৈতিক দলগুলোকে দাওয়াত দেয়া হয়েছে, দাওয়াত গ্রহণ করা এবং সাড়া দেয়া না দেয়া তাদের বিষয়। কেউ দাওয়াতে না আসলে নির্বাচন কমিশনের করার কিছুই নেই। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার দায়িত্ব রাজনৈতিক দলগুলোর। রাজনৈতিক বিষয় সমাধান করা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব নয়।
নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আমরা ওই সীমাবদ্ধতার ভেতরে থেকেই কাজ করতে চাই।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) সকালে জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে লক্ষ্মীপুর -৩ (সদর) আসনের উপ-নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মতবিনিময় সভার প্রাক্কালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
এ সময় তিনি আরও বলেন, নির্বাচন নিয়ে কোন শঙ্কা নেই, প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। সংবিধান অনুযায়ী নভেম্বরের প্রথমার্ধ্বে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। কোন প্রকার দ্বৈব দূর্বিপাক না হলে এর কোন নড়চড় হবেনা।
বর্তমান সময়ে ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি অপেক্ষাকৃত কম হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিত করা নির্বাচন কমিশনের কাজ নয়। এক্ষেত্রে যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তাদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। তবে স্থানীয় প্রশাসন নির্বাচনপূর্ব সময়ে এ ব্যাপারে জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে মোটিভেশনাল প্রোগ্রাম করতে পারে। নির্বাচনে কেন্দ্রে কোন সমস্যা না হবার নিশ্চয়তাসহ সব ভোটারদের নির্বিঘ্নে ভোট প্রদানের নিশ্চয়তার বার্তা পৌঁছাতে প্রশাসন কাজ করতে পারে।
লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের উপ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ নির্বাচনে কোন প্রার্থী বা কোন দল কোনরকম প্রভাববিস্তার বা অনিয়ম করার খবর পেলেই নিয়ম অনুযায়ী শাস্তির আওতায় আনা হবে। প্রয়োজনে ভোট বন্ধ করে দেয়া হবে। এ নির্বাচনে সাদাকে সাদা,আর কালোকে কালো হিসেবেই দেখা হবে।
আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য এই উপ-নির্বাচন বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হবে নির্বাচন কমিশনের জন্য। অতএব উপনির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হওয়ার কোন বিকল্প নাই।
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন নির্বাচন কমিশনের সচিব জাহাংগীর আলম। উপস্থিত ছিলেন- পুলিশ সুপার তারেক বিন রশিদ, লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের উপ-নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কুমিল্লা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ফরহাদ হোসেন প্রমুখ।
উল্লেখ্য আগামী ৫ নভেম্বর লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে উপ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন কুমিল্লার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ফরহাদ হোসেন।
এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৩ হাজার ৭৪৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৯ হাজার ৯৬ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৯৪ হাজার ৬৪৮ জন। মোট ১১৫ টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।