বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ মার্চ) দুপুরে এ কথা জানান বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান।
দলের স্থায়ী কমিটির এক সদস্য জানান, গত বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে আড়ম্বরপূর্ণ নৈশভোজের মাধ্যমে ১০ বছরের পুরনো সংগঠন ‘জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি’ (ন্যাশনাল কমিটি ফর সিভিল রাইটস) সক্রিয় করেন ফরহাদ মজহার ও শওকত মাহমুদ। হঠাৎ করেই ইনসাফ কায়েম কমিটি সক্রিয় করার মধ্য দিয়ে আবারও বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বে অস্বস্তি সৃষ্টি হয়। দলের সিনিয়র নেতারাও শওকত মাহমুদের সক্রিয়তার সমালোচনা করেন।
স্থায়ী কমিটির ওই সদস্য উল্লেখ করেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সিদ্ধান্তেই শওকত মাহমুদকে দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের কিছু নেতাকে গভীর নজরদারিতে রেখেছে বিএনপি, শওকত মাহমুদ ছিলেন তাদের অন্যতম।’
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) বিকাল ৩টার দিকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক মো. তাইফুল ইসলাম টিপু জানান, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজে লিপ্ত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক দলের ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
গত ১৬ মার্চ বনানীর হোটেলে ‘ইনসাফ কমিটি’র ভোজে যোগ দিয়েছিলেন সাবেক কয়েকজন সেনা কর্মকর্তা, শিক্ষক ও রাজনীতিক। সেখানে বিএনপির কোনও নেতা উপস্থিত না হলেও দলের ঘনিষ্ট মাহমুদুর রহমান মান্না ও অলি আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। আরও কয়েকজন নেতার সেখানে উপস্থিত হওয়ার কথা থাকলেও তারা ওই ভোজ পরিহার করেন।
গতকাল সোমবার (২০ মার্চ) অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও শওকত মাহমুদ প্রসঙ্গে আলোচনা হয় বলে বৈঠকসূত্রে জানা গেছে। তবে কোনও-কোনও সদস্য তাকে বহিষ্কারের বিষয়ে দ্বিমতও প্রকাশ করেছেন বলেও জানিয়েছে সূত্রটি।
এদিকে স্থায়ী কমিটির বৈঠক প্রসঙ্গে আজ মঙ্গলবার সকালে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, বৈঠকে গত রবিবার (১৯ মার্চ) পদ্মা সেতুর শিবচর প্রান্তে ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনায় ২১ জনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়। বৈঠকে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয় এবং পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়।
তিনি আরও জানান, বাসটির ফিটনেস সার্টিফিকেট নেই এবং রুট পারমিট বাতিল হয়েছিল, তারপরও মহাসড়কে যাত্রী পরিবহন করার ফলে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে, এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থায়ী কমিটি। সভা মনে করে এই দুর্ঘটনার জন্য সরকারের সড়ক বিভাগ সম্পূর্ণ দায়ী। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার সকল দায় নিয়ে সেতুমন্ত্রীর অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত বলেও উল্লেখ করেন বিএনপি মহাসচিব।